পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৩৪-[১] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’ প্রকার গাছ থেকে (প্রকৃত) মদ প্রস্তুত হয়- সেটা হলো খেজুর ও আঙ্গুর। (মুসলিম)[1]
بَابُ بَيَانِ الْخَمْرِ وَوَعِيْدِ شَارِبِهَا
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: الْخَمْرُ مِنْ هَاتَيْنِ الشَّجرتينِ: النخلةِ والعِنَبَةِ . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: এটা দলীল হিসেবে প্রমাণিত যে, মাদক জাতীয় তৈরি করা হয় খেজুর, আঙ্গুর, কিসমিস ও অন্যান্য ফল থেকে যাকে মদ বলে। এটা হারাম যখন তা নেশাগ্রস্ত করে। এটা জুমহূরের মাযহাব। আর এটা নিষেধ করে না মদ তৈরি করাকে বীজ, মধু, গম ইত্যাদি থেকে। এগুলো শব্দ সহীহ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত।
ত্বীবী বলেনঃ হাদীসের মুখ্য অর্থ এটা নয় যে, কেবলমাত্র এ দু’ জিনিস দ্বারাই মদ তৈরি হয়। বরং হাদীসের অর্থ হলো যে, যে সমস্ত জিনিস থেকে মদ প্রস্তুত হয় খেজুর ও আঙ্গুর তাদের মধ্যে অন্যতম। আর ‘উমার -এর সাথে আরো পাঁচটি যোগ করেছেন। মদ হলো যা আকলকে বা বিবেককে বিকৃত করে বা লোপ করে তোলে। (শারহে মুসলিম ১৩শ খন্ড, হাঃ ১৯৮৫)
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৩৫-[২] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ’উমার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মিম্বারের উপর (দাঁড়িয়ে) খুৎবা প্রদানকালে বললেনঃ নিশ্চয় মদ হারাম সাব্যস্ত (নাযিল) হয়েছে। আর তা সাধারণত পাঁচ প্রকারের জিনিস দ্বারা প্রস্তুত হয়; যথা- আঙ্গুর, খেজুর, গম, যব ও মধু। আর মদ তা-ই যা জ্ঞান-বুদ্ধিকে বিলুপ্ত করে দেয়। (বুখারী)[1]
بَابُ بَيَانِ الْخَمْرِ وَوَعِيْدِ شَارِبِهَا
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: خطَبَ عمرُ رَضِي الله عَنهُ عَلَى مِنْبَرَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: إِنَّهُ قَدْ نَزَلَ تَحْرِيمُ الْخَمْرِ وَهِيَ مِنْ خَمْسَةِ أَشْيَاءَ: الْعِنَبِ وَالتَّمْرِ وَالْحِنْطَةِ والشعيرِ والعسلِ وَالْخمر مَا خامر الْعقل . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: (نَزَلَ تَحْرِيْمُ الْخَمْرِ وَهِىَ مِنْ خَمْسَةِ) উদ্দেশ্য হলো বস্তুতঃ ঐ পাঁচ প্রকার জিনিস থেকে মদ তৈরি হয়, তবে এ পাঁচ প্রকার জিনিস থেকেই যে মদ তৈরি হয় এমনটি খাস না।
‘উমার মিম্বারে ভাষণ দিয়েছেন যা সাহাবীদের সামনে কেউ বিষয়টিকে অস্বীকার করেননি। তিনি সূরা আল মায়িদার আয়াতের ব্যাখ্যা করেছেন, ‘‘হে মু’মিনগণ! এই যে, মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য নির্ধারক শরসমূহ- এসব শায়ত্বনের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব এগুলো থেকে বেঁচে থাক যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।’’ (সূরা আল মায়িদাহ্ ৫ : ৯০)
‘উমার ইচ্ছা পোষণ করেন : সতর্কতার যে এ আয়াত থেকে মদ শুধু আঙ্গুরের মাধ্যমে নয় বরং অন্যান্য থেকেও প্রস্তুত হয়। আর আনাস -এরও হাদীস সমর্থন করে।
সুনানে ‘আরবাতে এসেছে, নু‘মান বিন বাশীর বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি, তিনি বলেনঃ
إِنَّ الْخَمْرَ مِنَ الْعَصِيرِ وَالزَّبِيبِ وَالتَّمْرِ وَالْحِنْطَةِ وَالشَّعِيرِ وَالذُّرَةِ وَإِنِّي أَنْهَاكُمْ عَنْ كُلِّ مُسْكِرٍ
নিশ্চয় মদ রস থেকে, কিসমিস, খেজুর, গম, যব এবং বীজ থেকে আর আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছি প্রত্যেক নেশাদ্রব্য জিনিস থেকে। (ফাতহুল বারী ১০ম খন্ড, হাঃ ৫৫৮৮)
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৩৬-[৩] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদ যখন হারাম করা হয় তখন আমাদের মাঝে আঙ্গুরের তৈরি মদ খুব কমই পেতাম। আমাদের মদ সাধারণত কাঁচা ও পাকা খেজুর হতেই প্রস্তুত হয়। (বুখারী)[1]
بَابُ بَيَانِ الْخَمْرِ وَوَعِيْدِ شَارِبِهَا
وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: لَقَدْ حُرِّمَتِ الْخَمْرُ حِينَ حُرِّمَتْ وَمَا نَجِدُ خَمْرَ الْأَعْنَابِ إِلَّا قَلِيلًا وَعَامة خمرنا الْبُسْر وَالتَّمْر. رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: এতে সংবাদ রয়েছে যে, মদ হারাম হয়েছে। যখন আল্লাহ তা‘আলা মদ হারামের ব্যাপারে কুরআনের আয়াত নাযিল করেছেন আর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ও তা হারামের ব্যাপারে বলেছেন। আর যখন সাহাবীরা বললেন, আমাদেরকে আদেশ করা হয়েছে। অথবা হারাম হয়েছে বা অনুরূপ জাতীয় শব্দ, তাহলে বুঝতে হবে তা মারফূ‘ হাদীস তথা রসূল পর্যন্ত পৌঁছেছে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৩৭-[৪] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বিত্’ই (মধুর প্রস্তুতকৃত মদ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ যে কোনো নেশা সৃষ্টিকারী পানীয় হারাম। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ بَيَانِ الْخَمْرِ وَوَعِيْدِ شَارِبِهَا
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ الْبِتْعِ وَهُوَ نَبِيذُ الْعَسَلِ فَقَالَ: «كُلُّ شَرَابٍ أَسْكَرَ فَهُوَ حَرَامٌ»
ব্যাখ্যা: ইমাম নববী বলেনঃ এতে স্পষ্ট যে, সকল প্রকারের নেশাগ্রস্ত নাবীয বা পানীয় হারাম আর মদ চাই আঙ্গুর থেকে হোক বা খেজুর। কাচা পাকা খেজুর, কিসমিস, যব, বীজ, মধু বা অন্য দ্রব্য থেকে হোক না কেন। এটা আমাদের মাযহাব এ মতে মালিক, আহমাদ, জুমহূররা রায় দিয়েছেন।
তবে আবূ হানীফাহ্ বলেনঃ আঙ্গুর ও খেজুরের ফলে পানীয় হারাম চাই তা কম হোক বা বেশী হোক। তবে যদি তা করা হয় আর তাতে এক-তৃতীয়াংশ কমে আসে তাহলে হারাম হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৩৮-[৫] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেশা উদ্রেককারী প্রত্যেক জিনিসই ’মদ’ আর প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী জিনিসই হারাম। আর যে ব্যক্তি দুনিয়াতে মদ পান করেছে এবং অবিরত পান করতে থাকে এবং তা থেকে তওবা্ না করেই মৃত্যুবরণ করেছে, তাহলে সে পরকালে তা (জান্নাতী সুপেয় মদ) পান করতে পারবে না। (মুসলিম)[1]
بَابُ بَيَانِ الْخَمْرِ وَوَعِيْدِ شَارِبِهَا
وَعَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «كُلُّ مُسْكِرٍ خَمْرٌ وَكُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ وَمَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ فِي الدُّنْيَا فَمَاتَ وَهُوَ يُدْمِنُهَا لَمْ يَتُبْ لَمْ يَشْرَبْهَا فِي الْآخِرَةِ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা : (لَمْ يَتُبْ لَمْ يَشْرَبْهَا فِى الْاٰخِرَةِ) এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ধমকানো ও কঠিন শাস্তি।
নিহায়াতে বলা হয়েছে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না, কেননা মদ জান্নাতের পানীয়। যখন তা আখিরাতে পান করতে পারবে না তাহলে সে জান্নাতেই প্রবেশ করতে পারবে না। ইমাম নববী বলেনঃ জান্নাতে প্রবেশ করবে তবে তার জন্য সেখানে মদ হারাম হবে। কারণ এটা জান্নাতের পানীয় বস্তু। আর এই পাপিষ্টের জন্য এটা হারাম হবে, কেননা সে দুনিয়াতে পান করেছে।
আবার কেউ কেউ বলেছেন তার নাফস্ এটা চাইতে ভুলে যাবে, কেননা প্রবৃত্তি যা চাবে তাই পাবে। আবার কারো মতে স্মরণ হলেও তার মন তা চাবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৩৯-[৬]- জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন ইয়ামান থেকে জনৈক ব্যক্তি এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ’জোয়ার’ হতে প্রস্তুতকৃত মদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করল, যা ’মিয্র’ বলে পরিচিত তাদের দেশে পান করা হয়। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, তা কি নেশা উদ্রেক করে? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, নেশা উদ্রেককারী এমন প্রত্যেক জিনিসই হারাম। আর আল্লাহ তা’আলার ওয়া’দাহ্ হলো, যে ব্যক্তি কোনো নেশা সৃষ্টিকারী জিনিস পান করবে, তিনি তাকে ’ত্বীনাতুল খবাল’ পান করাবেন। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন : হে আল্লাহর রসূল! ’ত্বীনাতুল খবাল’ কি জিনিস? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তা জাহান্নামীদের শরীরের ঘাম অথবা বলেছেন, জাহান্নামীদের রক্ত ও পুঁজ। (মুসলিম)[1]
بَابُ بَيَانِ الْخَمْرِ وَوَعِيْدِ شَارِبِهَا
وَعَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَجُلًا قَدِمَ مِنَ الْيَمَنِ فَسَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ شَرَابٍ يَشْرَبُونَهُ بِأَرْضِهِمْ مِنَ الذُّرَةِ يُقَالُ لَهُ الْمِزْرُ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أوَ مُسْكِرٌ هُوَ؟» قَالَ: نَعَمْ قَالَ: «كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ إِنَّ عَلَى اللَّهِ عَهْدًا لِمَنْ يَشْرَبُ الْمُسْكِرَ أَنْ يَسْقِيَهُ مِنْ طِينَةِ الْخَبَالِ» . قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا طِينَةُ الْخَبَالِ؟ قَالَ: «عَرَقُ أَهْلِ النَّارِ أَوْ عُصَارَةُ أَهْلِ النَّارِ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: আল্লাহ প্রতিজ্ঞা করে বলেন, তিনি তাঁর সম্মান ও মর্যাদার প্রতিজ্ঞা করেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৪০-[৭] আবূ কাতাদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁচা ও শুকনা খেজুরকে মিশিয়ে এবং শুকনা আঙ্গুর ও শুকনা খেজুরকে মিশিয়ে এবং কাঁচা ও তাজা খেজুরকে মিশিয়ে পানীয় (নবীয বা শরবত) প্রস্তুত করতে নিষেধ করেছেন। অতঃপর বলেছেনঃ প্রত্যেকটি দিয়ে পৃথক পৃথকভাবে পানীয় তৈরি করতে পারো। (মুসলিম)[1]
بَابُ بَيَانِ الْخَمْرِ وَوَعِيْدِ شَارِبِهَا
وَعَنْ أَبِي قَتَادَةَ: أَنَّ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْ خَلِيطِ التَّمْرِ وَالْبُسْرِ وَعَنْ خَلِيطِ الزَّبِيبِ وَالتَّمْرِ وَعَنْ خَلِيطِ الزَّهْوِ وَالرُّطَبِ. وَقَالَ: «انْتَبِذُوا كُلَّ وَاحِدٍ عَلَى حِدَةٍ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা : বিপরীত জাতীয় জিনিসকে একত্রে মিশ্রিত করে ভিজানোর নিষেধের কারণ হলো তাতে দ্রুত মাদকতা সৃষ্টি হয়।
আর ইমাম মালিক ও আহমাদ বলেনঃ দু’ বিপরীত জাতীয় জিনিস মিশ্রিত করে ভিজানোর পর মাদকতা সৃষ্টি না হলেও তা হারাম। হাদীসের ভাষ্যমতে, আর আবূ হানীফাহ্ ও শাফি‘ঈ-এর মতে মাদকতা সৃষ্টি না হলে হারাম হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৪১-[৮] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো, মদকে সিরকা বানিয়ে নেয়া জায়িয আছে কিনা? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ না। (মুসলিম)[1]
بَابُ بَيَانِ الْخَمْرِ وَوَعِيْدِ شَارِبِهَا
وَعَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ عَنِ الْخَمْرِ يُتَّخَذُ خَلًّا؟ فَقَالَ: «لَا» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: এটা সুস্পষ্ট দলীল যে, শাফি‘ঈ ও জুমহূরের নিকট মদকে সিরকা বানানো জায়িয নেই আর তা সিরকা করলেও পবিত্র হয় না। আর অন্য কোনো জিনিস মিশ্রিত করে সিরকায় পরিণত করলেও ওটা পাক ও হালাল হবে না। তবে রোদ্রের তাপে পরিবর্তিত হলে কারো মতে পবিত্র হবে। আবার কারো মতে পবিত্র হবে না। আর সবারই ঐকমত্য যদি নিজে নিজেই পরিবর্তন হয় তাহলে পবিত্র বলে গণ্য হবে। (শারহে মুসলিম ১৩শ খন্ড, হাঃ ১৯৮৩)
পরিচ্ছেদঃ ৬. প্রথম অনুচ্ছেদ - মদের বর্ণনা ও মধ্যপায়ীকে ভীতিপ্রদর্শন করা
৩৬৪২-[৯] ওয়ায়িল আল হাযরামী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ত্বারিক ইবনু সুওয়াইদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মদ ব্যবহারের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তা ব্যবহার করতে নিষেধ করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তবে আমি যদি তা ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তা প্রতিষেধক নয়; বরং স্বয়ং ব্যাধি। (মুসলিম)[1]
بَابُ بَيَانِ الْخَمْرِ وَوَعِيْدِ شَارِبِهَا
وَعَنْ وَائِلٍ الْحَضْرَمِيِّ أَنَّ طَارِقَ بْنَ سُوَيْدٍ سَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ الْخَمْرِ فَنَهَاهُ. فَقَالَ: إِنَّمَا أَصْنَعُهَا لِلدَّوَاءِ فَقَالَ: «إِنَّهُ لَيْسَ بِدَوَاءٍ وَلَكِنَّهُ دَاءٌ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ
ব্যাখ্যা: এটা সুস্পষ্ট দলীল যে, মদ পান করা তা দ্বারা সিরকা তৈরি করা হারাম। আর এটাও সুস্পষ্ট যে, এটা ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করে চিকিৎসা করাও হারাম। কেননা তা ঔষধ নয়।
অনুরূপ পিপাসিত ব্যক্তির জন্য পান করা হারাম। তবে যদি কোনো গ্রাসে গলায় কোনো কিছু হয় এবং গোঙ্গানি শুরু হয় আর এমতাবস্থায় মদ ব্যতীত অন্য পানীয় বস্তু না থাকে তাহলে মদ গলাধঃকরণ করা বৈধ হবে। (শারহে মুসলিম ১৩শ খন্ড, হাঃ ১৯৮৪)