পরিচ্ছেদঃ ২. প্রথম অনুচ্ছেদ - দণ্ডবিধির ব্যাপারে সুপারিশ
ইমাম মুসলিম (রহঃ) ’দণ্ডবিধির ব্যাপারে সুপারিশ নিষেধ’ এর মাধ্যমে তিনি অনেক হাদীস নিয়ে এসেছেন। আর এটা বনী ইসরাঈলের ধ্বংসের কারণ। আর সকল ’উলামারা ঐকমত্য হয়েছেন শাসকের নিকট পৌঁছার পর হাদ্দ বাস্তবায়ন না করার সুপারিশ হারাম আর শাসকের নিকট বিচার পৌঁছার পূর্বে সুপারিশ বৈধ যদি সুপারিশকৃত ব্যক্তি খুব খারাপ এবং মানুষকে কষ্টদানকারী না হয়। এরূপ যদি হয় তাহলে সুপারিশ বৈধ নয়। আর পাপীদের ক্ষেত্রে কোনো হাদ্দ নেই, আর ওয়াজিব হলো তাকে শাসানো এবং তাকে ভয় দেখানোর ব্যাপারে সুপারিশ বৈধ চাই প্রশাসকের নিকট পৌঁছুক বা না পৌঁছুক। আর সুপারিশ করা বৈধ যদি সুপারিশকৃত ব্যক্তি মানুষকে কষ্টদায়ক না হয়।
৩৬১০-[১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন মাখযূমী গোত্রের জনৈকা নারীর চুরির ব্যাপারে কুরায়শগণ অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে পড়েছিল। তারা (পরস্পরের মধ্যে) বলল, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এ এতদসম্পর্কে কে সুপারিশ করবে? তারাই পুনরায় বলল, উসামাহ্ ইবনু যায়দ ব্যতীত কে আছে, এ ব্যাপারে সাহস করার? কেননা সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অত্যন্ত আস্থাভাজন। অতঃপর উসামাহ্ তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এতদসম্পর্কে জানালেন। এতদশ্রবণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ক্রোধান্বিত হয়ে) বললেন, তুমি আল্লাহ তা’আলার দণ্ডবিধিতে এই সুপারিশ করছ?
অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়িয়ে বক্তব্যদানকালে বললেন, হে লোক সকল! নিঃসন্দেহে তোমাদের পূর্বেকার লোকেরা এ আচরণেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে যে, যদি তাদের মধ্যে কোনো সম্মানী লোক চুরি করত, তাহলে তাকে মাফ করে দিত। আর যদি কোনো অসহায় দরিদ্র শ্রেণীর লোক চুরি করত, তবে তার ওপর দণ্ড কার্যকর করত। আল্লাহর কসম! যদি মুহাম্মাদের কন্যা ফাত্বিমাহ্ও চুরি করত, তাহলে অবশ্যই আমি তার হাত কেটে দিতাম। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
আর মুসলিম-এর এক বর্ণনাতে আছে, ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেছেনঃ মাখযূমী গোত্রের জনৈকা নারী লোকেদের নিকট হতে কোনো জিনিসপত্র ধার নিলে, পরে তা দিতে অস্বীকার করত। এজন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত কাটার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর উক্ত নারীর আত্মীয়-স্বজনেরা উসামাহ্ -এর নিকট এসে (অনুরোধের জন্য) আলোচনা করল। তখন উসামাহ্ এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে আলোচনা করলেন। অতঃপর অবশিষ্ট ঘটনা পূর্বোল্লিখিত হাদীসের ন্যায় হুবহু বর্ণিত হয়েছে।
بَابُ الشَّفَاعَةِ فِى الْحُدُوْدِ
عَن عائشةَ رَضِي الله عَنْهَا أَنَّ قُرَيْشًا أَهَمَّهُمْ شَأْنُ الْمَرْأَةِ الْمَخْزُومِيَّةِ الَّتِي سَرَقَتْ فَقَالُوا: مَنْ يُكَلِّمُ فِيهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالُوا: وَمَنْ يَجْتَرِئُ عَلَيْهِ إِلَّا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ حِبُّ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَلَّمَهُ أُسَامَةُ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَتَشْفَعُ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللَّهِ؟» ثُمَّ قَامَ فَاخْتَطَبَ ثُمَّ قَالَ: «إِنَّمَا أَهْلَكَ الَّذِينَ قَبْلَكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوا إِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الشَّرِيفُ تَرَكُوهُ وَإِذَا سَرَقَ فِيهِمُ الضَّعِيفُ أَقَامُوا عَلَيْهِ الْحَدَّ وَايْمُ اللَّهِ لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ لَقَطَعْتُ يَدَهَا» . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ. وَفِي روايةٍ لمسلمٍ: قالتْ: كانتِ امرأةٌ مخزوميَّةٌ تَسْتَعِيرُ الْمَتَاعَ وَتَجْحَدُهُ فَأَمَرَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَطْعِ يَدِهَا فَأَتَى أَهْلُهَا أُسَامَةَ فَكَلَّمُوهُ فَكَلَّمَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِقَطْعِ يَدِهَا فَأَتَى أَهْلُهَا أُسَامَةَ فَكَلَّمُوهُ فَكَلَّمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيهَا ثمَّ ذكرَ الحديثَ بنحوِ مَا تقدَّمَ
ব্যাখ্যা: (وَايْمُ اللّٰهِ لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ سَرَقَتْ) ‘‘আল্লাহর কসম, যদি ফাত্বিমাহ্ চুরি করত’’ দ্বারা দলীল প্রমাণিত হয় কসম তলব না করলেও কসম করা বৈধ আর কোনো বিষয় বা কোনো কিছু হয় তাহলে কসম করা মুস্তাহাব- এ ব্যাপারে অসংখ্য প্রমাণ রয়েছে। আর সকল ‘উলামাহ্ বলেছেন, ঐ মহিলার হাত কাটা হয়েছিল। (শারহে মুসলিম ১১শ খন্ড, হাঃ ১৬৮৮)