পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানৎ

৩৪৩৫-[১০] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গুনাহ সংক্রান্ত কাজে কোনো মানৎ নেই। আর তার কাফফারা হলো শপথের কাফফারার ন্যায়। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসায়ী)[1]

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا نَذْرَ فِي مَعْصِيَةٍ وَكَفَّارَتُهُ كَفَّارَةُ الْيَمِينِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيّ

عن عاىشة قالت: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا نذر في معصية وكفارته كفارة اليمين» . رواه ابو داود والترمذي والنساىي

ব্যাখ্যা: খত্ত্বাবী (রহঃ) ‘‘মা‘আলিম’’ গ্রন্থে বলেন, যদি হাদীস সহীহ হয় তাহলে কাফফারা অবশ্যই ওয়াজিব হবে। তবে গুনাহের কাজের মানৎ করলে তা আদায় করতে হবে না। যদিও হাদীসের গবেষকরা হাদীসটি মাকতূ‘ হিসেবে মন্তব্য করেছেন তথা য‘ঈফ। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৪৩৬)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور) 15. Oaths and Vows

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানৎ

৩৪৩৬-[১১] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোনো অমূলক জিনিসের মানৎ করল, তার কাফফারা কসমের কাফফারার ন্যায়। আর যে কোনো গুনাহের কাজের মানৎ করল, তার কাফফারাও কসমের কাফফারার ন্যায়। আর যে এমন কাজের মানৎ করল যা আদায় করার সে সামর্থ্য রাখে না, তার কাফফারাও কসমের কাফ্ফারার ন্যায়। আর যে ব্যক্তি এমন কাজের মানৎ করল যা আদায় করার সামর্থ্য রাখে, তাহলে সে যেন অবশ্যই তা আদায় করে। (আবূ দাঊদ ও ইবনু মাজাহ; কোনো কোনো রাবী এ হাদীসটিকে ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)-এর ওপর মাওকূফ করেছেন)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ نَذَرَ نَذْرًا لم يسمه فَكَفَّارَتُهُ كَفَّارَةُ يَمِينٍ. وَمَنْ نَذَرَ نَذْرًا لَا يُطِيقُهُ فَكَفَّارَتُهُ كَفَّارَةُ يَمِينٍ. وَمَنْ نَذَرَ نَذْرًا أَطَاقَهُ فَلْيَفِ بِهِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَه وَوَقفه بَعضهم على ابْن عَبَّاس

وعن ابن عباس ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: «من نذر نذرا لم يسمه فكفارته كفارة يمين. ومن نذر نذرا لا يطيقه فكفارته كفارة يمين. ومن نذر نذرا اطاقه فليف به» . رواه ابو داود وابن ماجه ووقفه بعضهم على ابن عباس

ব্যাখ্যা: (مَنْ نَذَرَ نَذْرًا لَمْ يُسَمِّه) তথা মানৎকারী বলল, আমি মানৎ করলাম এবং কোনো মানৎ নির্দিষ্ট করল না তার সওম না অন্য কিছু। হাদীসে প্রমাণিত হয়, যে মানৎ উল্লেখ হয় না তার কাফফারা কসমের কাফফারার ন্যায়। ইমাম নববী বলেন, হাদীসের মর্মার্থের ব্যাপারে ‘উলামাগণের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে। জুমহূরদের মতে এটা প্রযোজ্য জিদ বা একগুয়েমীর ক্ষেত্রে মানৎকারী ইচ্ছা করলে মানৎ পুরা করতে পারে, আবার কাফফারাও দিতে পারে।

ইমাম মালিক এবং অনেকে মানৎ দ্বারা ‘আম্ মানৎ পোষণ করেছেন। আর ফুকাহায়া সকল প্রকার মানৎকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং তারা বলেন, সকল প্রকার মানতে মানৎকারীর স্বাধীনতা রয়েছে ইচ্ছা করলে পুরা করবে অথবা কসমের কাফফারা দিবে।

ইমাম শাওকানী বলেনঃ দৃশ্যত হাদীসের ভাষ্য এমন মানতের ক্ষেত্রে উল্লেখ হয়নি। আর নামীয় মানৎ যদি আনুগত্যশীল হয় তবে বাস্তবায়নে অসাধ্য হয় তাহলে কসমের কাফফারা হবে। আর যদি সাধ্যের মধ্যে হয় তাহলে সে মানৎ পুরা করা ওয়াজিব, চাই তা শারীরিকের মাধ্যমে হোক বা অর্থের মাধ্যমে হোক। আর যদি নামীয় মানৎ পাপমুক্ত হয় তা পুরো করতে হবে ও বাস্তবায়নও হবে না এবং কাফ্ফারাও অপরিহার্য হবে না। আর যদি মানৎ মুবাহ তথা বৈধ হয় এবং সাধ্যের মধ্যে তাহলে অধিকতর সঠিক মত হলো তা বাস্তবায়ন হবে। আর যদি সাধ্যের বাইরে হয় তাহলে কাফফারা লাগবে। আর এটাই সহীহ হাদীসগুলোর মর্মার্থ। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৪৩৬)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور) 15. Oaths and Vows

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানৎ

৩৪৩৭-[১২] সাবিত ইবনুয্ যহহাক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে বুওয়ানাহ্ নামক স্থানে একটি উট যাবাহ করার মানৎ করল। অতঃপর সে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন, জাহিলিয়্যাত যুগে কি সেখানে কোনো প্রতিমার পূজা-অর্চনা হত? সাহাবীগণ বললেন, না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো জিজ্ঞেস করলেন, সে অঞ্চলে কি কাফিরদের কোনো মেলা বসত। সাহাবীগণ বললেন, না। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি তোমার মানৎ আদায় কর। কেননা, যে কাজে আল্লাহ তা’আলার নাফরমানী হয়, এমন মানৎ পূরণ করতে নেই এবং আদম সন্তান যে জিনিসের মালিক নয়, সেই জিনিসের মানৎ করলে তা পূর্ণ করতে হয় না। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن ثَابت بن الضَّحَّاك قَالَ: نَذَرَ رَجُلٌ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ يَنْحَرَ إِبِلًا بِبُوَانَةَ فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَلْ كَانَ فِيهَا وَثَنٌ مِنْ أَوْثَانِ الْجَاهِلِيَّةِ يُعْبَدُ؟» قَالُوا: لَا قَالَ: «فَهَلْ كَانَ فِيهِ عِيدٌ مِنْ أَعْيَادِهِمْ؟» قَالُوا: لَا فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أوف بِنَذْرِك فَإِنَّهُ لَا وَفَاءَ لِنَذْرٍ فِي مَعْصِيَةِ اللَّهِ وَلَا فِيمَا لَا يَمْلِكُ ابْنُ آدَمَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن ثابت بن الضحاك قال: نذر رجل على عهد رسول الله صلى الله عليه وسلم ان ينحر ابلا ببوانة فاتى رسول الله صلى الله عليه وسلم فاخبره فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «هل كان فيها وثن من اوثان الجاهلية يعبد؟» قالوا: لا قال: «فهل كان فيه عيد من اعيادهم؟» قالوا: لا فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اوف بنذرك فانه لا وفاء لنذر في معصية الله ولا فيما لا يملك ابن ادم» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: (لَا وَفَاءَ لِنَذْرٍ فِىْ مَعْصِيَةِ اللّٰهِ) যে কাজে আল্লাহর নাফরমানী হয় এমন মানৎ পুরা করতে নেই। হাদীস সুস্পষ্ট প্রমাণ করে বৈধ ক্ষেত্রে মানৎ করা বিশুদ্ধ যখন পাপ কাজে মানৎ নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং এটা ব্যতিরেকে অন্য স্থানে বৈধ। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৩০৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور) 15. Oaths and Vows

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানৎ

৩৪৩৮-[১৩] ’আমর ইবনু শু’আয়ব তাঁর পিতার মাধ্যমে দাদা [’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণনা করেন। জনৈকা মহিলা এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি মানৎ করেছি যে, (আপনি জিহাদ শেষে আগমনকালে) আমি আপনার সামনে দফ বাজাব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার মানৎ পুরো কর। (আবূ দাঊদ)[1]

আর রযীন আরো অতিরিক্ত বর্ণনা করেন। মহিলাটি বলল, জাহিলিয়্যাত যুগে লোকেরা যেখানে পশু যাবাহ করত আমি সে সকল অঞ্চলে পশু যাবাহ করার মানৎ করেছি। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, জাহিলিয়্যাত যুগে সে সকল স্থানে কি কোনো দেব-দেবী ছিল? যেগুলোর পূজা-অর্চনা করা হতো। তখন মহিলাটি বলল, না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো জিজ্ঞেস করলেন, সেখানে কি কাফিরদের কোনো মেলা আয়োজন হতো? মহিলাটি বলল, না। এবার তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তবে তোমার মানৎ আদায় করতে পার।

وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جده رَضِي الله عَنهُ أَنَّ امْرَأَةً قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي نَذَرْتُ أَنْ أَضْرِبَ عَلَى رَأْسِكَ بِالدُّفِّ قَالَ: «أَوْفِي بِنَذْرِكِ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَزَادَ رَزِينٌ: قَالَتْ: وَنَذَرْتُ أَنْ أَذْبَحَ بِمَكَانِ كَذَا وَكَذَا مَكَانٌ يَذْبَحُ فِيهِ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ فَقَالَ: «هَلْ كَانَ بِذَلِكِ الْمَكَانِ وَثَنٌ مِنْ أَوْثَانِ الْجَاهِلِيَّةِ يُعْبَدُ؟» قَالَتْ: لَا قَالَ: «هَلْ كَانَ فِيهِ عِيدٌ مِنْ أَعْيَادِهِمْ؟» قَالَتْ: لَا قَالَ: «أَوْفِي بِنَذْرِك»

وعن عمرو بن شعيب عن ابيه عن جده رضي الله عنه ان امراة قالت: يا رسول الله اني نذرت ان اضرب على راسك بالدف قال: «اوفي بنذرك» . رواه ابو داود وزاد رزين: قالت: ونذرت ان اذبح بمكان كذا وكذا مكان يذبح فيه اهل الجاهلية فقال: «هل كان بذلك المكان وثن من اوثان الجاهلية يعبد؟» قالت: لا قال: «هل كان فيه عيد من اعيادهم؟» قالت: لا قال: «اوفي بنذرك»

ব্যাখ্যা: খত্ত্বাবী বলেনঃ দফ বাজানো ‘ইবাদাতের কাজ নয় যা মানতের সাথে সংশ্লিষ্ট, বরং এটা একটি মুবাহ কাজ (দফ এক প্রকার বাদ্যযন্ত্র দেখতে অনেকটা গোল চালনীর মতো, যা একদিক হতে আওয়াজ করা বা বাজানো যায়)।

আর বিশেষ করে দফ বাজানো হতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সামনে, যখন তিনি যুদ্ধের ময়দান হতে বিজয়বেশে ফিরে আসতেন আনন্দ প্রকাশের জন্য আর তা কাফিরদের জন্য ছিল কষ্টকর এবং মুনাফিকদের জন্য ছিল লাঞ্ছনার। এজন্য বিবাহের অনুষ্ঠানে দফ বাজানোকে মুস্তাহাব করা হয়েছে বৈধ আনন্দোৎসব প্রকাশের জন্য অবৈধ লাম্পট্য হতে মুক্তির জন্য। আর এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ ব্যক্তবের সাথে সাদৃশ্য রাখে। (اهْجُوا قُرَيْشًا ; فَإِنَّهُ أَشَدُّ عَلَيْهِمْ مِنْ رَشْقِ النَّبْلِ) তোমরা কাফিরদের ব্যঙ্গনবিশ বা ব্যঙ্গাত্মক কর, কারণ এটা তীর নিক্ষেপের চেয়েও তাদের ওপর কঠিন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور) 15. Oaths and Vows

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানৎ

৩৪৩৯-[১৪] আবূ লুবাবাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন, আমার পূর্ণাঙ্গ তওবা্ এটাই হবে যে, আমি আমার বংশীয় আবাসস্থল পরিত্যাগ করব, যে ঘরে আমি এ পাপকার্যে লিপ্ত হয়েছি এবং আমি আমার সমস্ত ধন-সম্পদ সাদাকাস্বরূপ প্রদান করব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার জন্য এক-তৃতীয়াংশই যথেষ্ট। (রযীন)[1]

وَعَن أبي لبَابَة: أَنَّهُ قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ مِنْ تَوْبَتِي أَنْ أَهْجُرَ دَارَ قَوْمِي الَّتِي أَصَبْتُ فِيهَا الذَّنْبَ وَأَنْ أَنْخَلِعَ مِنْ مَالِي كُلِّهِ صَدَقَةً قَالَ: «يُجْزِئُ عَنْكَ الثُّلُثُ» . رَوَاهُ رزين

وعن ابي لبابة: انه قال للنبي صلى الله عليه وسلم: ان من توبتي ان اهجر دار قومي التي اصبت فيها الذنب وان انخلع من مالي كله صدقة قال: «يجزى عنك الثلث» . رواه رزين

ব্যাখ্যা: আবূ লুবাবাহ্, তিনি হলেন কিফায়াহ্ ইবনু ‘আবদুল মুনযীর আল আনসারী আল আওসী, তিনি তার উপনাম আবূ লুবাবাহ্ নামে বেশী পরিচিত ছিলেন, তিনি  বদর যুদ্ধে শরীক ছিলেন, কারও মতে অংশগ্রহণ করেননি।

হাদীসের ভাষ্যে ঘটনার বিবরণ, আবূ লুবাবাহ্ আল আনাসারী -এর পরিবার-পরিজন ও বিষয়-সম্পত্তি ইয়াহূদী এলাকায় ছিল বলে তার উক্ত সম্প্রদায়ের সাথে বাহ্যিক হৃদ্যতা ছিল যে সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুবায়যাকে ২৫ দিন ধরে অবরোধ করে রেখেছিলেন। তখন তারা ভীত হলো এবং রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলল, আবূ লুবাবাকে আমাদের কাছে পাঠান, আমরা তার সাথে পরামর্শ করব। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তাদের কাছে পাঠালেন, তারা আবূ লুবাবাকে কেঁদে কেঁদে জিজ্ঞেস করল, যদি আমরা নিজেদেরকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট সোপর্দ করি তাহলে তিনি আমাদের সঙ্গে কি আচরণ করবেন? তখন আবূ লুবাবাহ্ নিজের গলার উপর হাত বুলে এদিকে ইঙ্গিত করলেন যে, তিনি তোমাদের যাবাহ (হত্যা) করবেন। এই গোপনীয়তা প্রকাশ করতেই তার মনে জাগল যে, তিনি তো বিরাট আমানাতের খিয়ানাত করে ফেলেছেন এবং নিজের কৃতকর্মের জন্য ভীষণ অনুতপ্ত হলেন আর বললেন, সে আল্লাহর ও রসূলের খিয়ানাত করেছে- এ প্রসঙ্গে কুরআনের আয়াত নাযিল হয়েছে, يٰاَيُّهَا الَّذِينَ اٰمَنُوا لَا تَخُونُوا اللّٰهَ وَالرَّسُولَ وَتَخُونُوا أَمَانَاتِكُمْ ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা খিয়ানাত করো না আল্লাহর সাথে ও রসূলের সাথে এবং খিয়ানাত করো না নিজেদের পারস্পারিক আমানাতে জেনে শুনে’’- (সূরা আল আনফাল ৮ : ২৭)।

এ ঘটনার পর আবূ লুবাবাহ্ মসজিদের মধ্যে প্রবেশ করলেন এবং নিজকে মসজিদের একটি খুঁটির সাথে বেঁধে নিলেন যতদিন পর্যন্ত আমার তাওবাহ্ কবুল না করেন আল্লাহ ততদিন পর্যন্ত, খানাপিনা আমার জন্য হারাম এভাবে যতদিন থাকলেন। অতঃপর বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন আর আল্লাহ তার তাওবাহ্ কবুল করলেন, তাকে বলা হলো আপনার তাওবাহ্ আল্লাহ কবুল করেছেন নিজকে মুক্ত করুন। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম আমি নিজকে বাঁধনমুক্ত করব না যতক্ষণ না বাঁধনমুক্ত করেন। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং এসে তার বন্ধন খুলে দিলেন। এ সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কথাটি বলেছিলেন যা হাদীসে বর্ণিত।
(‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ২৩০৯)

হাদীসে দলীল প্রমাণিত হয় যে, মানৎকারীর ওপর তার সকল সম্পদ সাদাকা করা আবশ্যিক হয় না।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور) 15. Oaths and Vows

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানৎ

৩৪৪০-[১৫] জাবির ইবনু ’আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি মক্কা বিজয়ের দিন দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমি মহান আল্লাহ তা’আলার নিকট এই মানৎ করেছি যে, আল্লাহ তা’আলা যদি আপনাকে মক্কা বিজয় দান করেন, তাহলে আমি বায়তুল মাকদিসে দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করব। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এখানে (মসজিদুল হারামে) সালাত আদায় করে নাও। লোকটি পুনরায় আবেদন করল। এবারও বললেন, এ জায়গায় সালাত আদায় করে নাও। লোকটি তৃতীয়বারও সে কথার পুনরাবৃত্তি করল। এমতাবস্থায় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার মনোষ্কামনা পূরণ কর। (আবূ দাঊদ, দারিমী)[1]

وَعَن جَابر بن عبد الله: أَنَّ رَجُلًا قَامَ يَوْمَ الْفَتْحِ فَقَالَ: يَا رَسُول الله لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ إِنْ فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْكَ مَكَّةَ أَنْ أُصَلِّيَ فِي بَيْتِ الْمَقْدِسِ رَكْعَتَيْنِ قَالَ: «صلى الله عَلَيْهِ وَسلم هَهُنَا» ثمَّ عَاد فَقَالَ: «صل هَهُنَا» ثُمَّ أَعَادَ عَلَيْهِ فَقَالَ: «شَأْنَكَ إِذًا» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد والدارمي

وعن جابر بن عبد الله: ان رجلا قام يوم الفتح فقال: يا رسول الله لله عز وجل ان فتح الله عليك مكة ان اصلي في بيت المقدس ركعتين قال: «صلى الله عليه وسلم ههنا» ثم عاد فقال: «صل ههنا» ثم اعاد عليه فقال: «شانك اذا» . رواه ابو داود والدارمي

ব্যাখ্যা: (قَالَ : صَلِّ هٰهُنَا) তুমি এখানে তথা মক্কার মসজিদে হারামে সালাত আদায় কর, কেননা এটা অধিক ফযীলতপূর্ণ। এতদসত্ত্বেও এখানে সালাত আদায় করা সহজ।
إِذًا জওয়াব এবং প্রতিদান। যখন তুমি এখানে সালাতে আদায় করতে অস্বীকার করছ তাহলে তুমি তাই কর যা মানৎ করেছ বায়তুল আকসায় সালাত আদায় করতে।
হিদায়াহ্ ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলা হয়েছে, যদি কেউ মানৎ করে মসজিদে নববীতে সালাত আদায় করবে আর সে যদি মসজিদে হারামে সালাত আদায় করে তাহলে তার মানৎ আদায় হবে তবে যদি মসজিদে আকসা মানৎ আদায় করে তাহলে মানৎ আদায় হবে না। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (صَلَاةٌ فِي مَسْجِدِي هٰذَا خَيْرٌ مِنْ أَلْفِ صَلَاةٍ فِيمَا سِوَاهُ إِلَّا الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ) আমরা এই মসজিদে সালাত আদায় অন্য মসজিদের চেয়ে এক হাজার গুণ, তবে মসজিদে হারাম ব্যতিরেকে। হ্যাঁ যদি মসজিদে হারামে সালাত আদায় করার মানৎ করে আর মসজিদে নববীতে সালাত আদায় করে তাহলে মানৎ আদায় হবে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور) 15. Oaths and Vows

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানৎ

৩৪৪১-[১৬] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’উকবা ইবনু ’আমির (রাঃ)-এর বোন মানৎ করল যে, সে পদব্রজে হজে/হজ্জে যাবে অথচ তার সে শক্তি-সামর্থ্য নেই। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার বোনের পায়ে হাঁটার প্রতি আল্লাহ তা’আলা মুখাপেক্ষী নন। সুতরাং সে যেন সওয়ারীতে আরোহণ করে যায় এবং (কাফফারা স্বরূপ) একটি উট যাবাহ করে। (আবূ দাঊদ ও দারিমী)[1]

আবূ দাঊদ-এর অপর এক বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে মহিলাকে আরোহণ করে যাওয়ার পরে একটি কুরবানী করার নির্দেশ করেছিলেন। আবূ দাঊদ-এর অন্য আরেকটি বর্ণনায় আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমার বোনের এ কষ্টের দরুন কোনো সাওয়াব দেবেন না। সুতরাং সে যেন আরোহণ করে হজে/হজ্জে যায় এবং মানতের কাফফারা আদায় করে।

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ أُخْتَ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ مَاشِيَة وَأَنَّهَا لَا تطِيق ذَلِكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ لَغَنِيٌّ عَنْ مَشْيِ أُخْتِكَ فَلْتَرْكَبْ وَلْتُهْدِ بَدَنَةً» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالدَّارِمِيُّ وَفِي رِوَايَةٍ لِأَبِي دَاوُدَ: فَأَمَرَهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ تَرْكَبَ وَتُهْدِيَ هَدْيًا وَفِي رِوَايَةٍ لَهُ: فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ لَا يَصْنَعُ بِشَقَاءِ أُخْتِكَ شَيْئًا فَلْتَرْكَبْ ولتحج وتكفر يَمِينهَا»

وعن ابن عباس: ان اخت عقبة بن عامر رضي الله عنهم نذرت ان تحج ماشية وانها لا تطيق ذلك فقال النبي صلى الله عليه وسلم: «ان الله لغني عن مشي اختك فلتركب ولتهد بدنة» . رواه ابو داود والدارمي وفي رواية لابي داود: فامرها النبي صلى الله عليه وسلم ان تركب وتهدي هديا وفي رواية له: فقال النبي صلى الله عليه وسلم: «ان الله لا يصنع بشقاء اختك شيىا فلتركب ولتحج وتكفر يمينها»

ব্যাখ্যা: (وَتُهْدِىَ هَدْيًا) সর্বনিম্ন কুরবানী হলো ছাগল আর সর্বোচ্চ হলো উট, তবে ছাগল যথেষ্ট হবে আর উটের কুরবানী ভালো।

কাযী (রহঃ) বলেনঃ পায়ে হেঁটে হজ্জ/হজ করা যখন অন্যতম নৈকট্যৈর উদ্দেশ্য হয় তাতে মানৎ ওয়াজিব হয়। ফলে অন্য সকল ‘আমলও অন্তর্ভুক্ত হবে তা ছেড়ে দেয়া বৈধ না, তবে যে অপারগ ছেড়ে দেয়ার জন্য তাকে ফিদ্ইয়াহ্ দিতে হবে, ওয়াজিবের ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। ‘আলী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বক্তব্য উট কুরবানী দিতে হবে। আবার কারও মতে ছাগল, যেমন কেউ মীকাত অতিক্রম করে তার জন্য ছাগল আর উটের বিষয়টি নুদুব তথা ভালো। আবার কারও মতে, কোনো কিছু ওয়াজিব না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পছন্দের দৃষ্টিভঙ্গিতে বলেছেন, ওয়াজিব দৃষ্টিতে না। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور) 15. Oaths and Vows

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানৎ

৩৪৪২-[১৭] ’আব্দুল্লাহ ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ’উকবা ইবনু ’আমির (হজে/হজ্জের সফরকালীন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলেন, তাঁর বোন এই মানৎ করেছে যে, সে খালি পায়ে এবং অনাবৃত মাথায় হজ্জ/হজ করবে। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাকে বল, সে যেন মাথা ঢেকে নেয় এবং সওয়ার হয়ে হজ্জ/হজ আদায় করে, অতঃপর তিনটি সওম পালন করে। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ, দারিমী)[1]

وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ عُقْبَةَ بن عَامر سَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ أُخْتٍ لَهُ نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ حَافِيَةً غَيْرَ مُخْتَمِرَةٍ فَقَالَ: «مُرُوهَا فَلْتَخْتَمِرْ وَلْتَرْكَبْ وَلْتَصُمْ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ والدارمي

وعن عبد الله بن مالك ان عقبة بن عامر سال النبي صلى الله عليه وسلم عن اخت له نذرت ان تحج حافية غير مختمرة فقال: «مروها فلتختمر ولتركب ولتصم ثلاثة ايام» . رواه ابو داود والترمذي والنساىي وابن ماجه والدارمي

ব্যাখ্যা: الخار বলতে যা দ্বারা মহিলার মাথা ঢাকে। فَلْتَخْتَمِرْ কেননা মহিলাদের মাথা খুলে রাখাটা লজ্জাস্থান। আর এটা পাপ কাজ, তাতে কোনো মানৎ নেই। لْتَرْكَبْ সওয়ার হয়ে হজ্জ/হজ করে তার অপারগতার জন্য। ইমাম খত্ত্বাবী বলেনঃ (وَلْتَصُمْ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ) এ তিনটি সওম কুরবানীর বদলে। আবার কারও মতে তিনটি সওম মাথা না ঢাকার মানতের কারণে। কেননা পাপের মানৎ করেছিল। সুতরাং ওয়াজিব হয়েছে কসমের কাফফারা। এটা তাদেরই দলীল যারা পাপের নজর মানা কাফফারা ওয়াজিব, তবে বায়হাক্বী এর সানাদে মতানৈক্য রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। (‘আওনুল মা‘বূদ ৫ম খন্ড, হাঃ ৩২৮৪)


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور) 15. Oaths and Vows

পরিচ্ছেদঃ ১. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মানৎ

৩৪৪৩-[১৮] সা’ঈদ ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, দুই আনসারী ভাই কারো কাছ থেকে মীরাস (উত্তরাধিকার) পেল। অতঃপর এক ভাই অপর ভাইয়ের নিকট তা ভাগ-বণ্টন করার অনুরোধ করল। তখন সে বলল, যদি তুমি আমার নিকট পুনরায় বণ্টনের কথা বল, তাহলে আমার সমস্ত ধন-সম্পদ কা’বার জন্য দান করে দেব। অতঃপর ’উমার তাকে বললেন, কা’বাহ্ তোমার ধন-সম্পদের মুখাপেক্ষী নন। সুতরাং তুমি তোমার কসমের কাফফারা আদায় কর এবং তোমার ভাইয়ের সাথে এ ব্যাপারে কথাবার্তা বল। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, কসম ও মানৎ পূরণ করতে নেই- রবে্র নাফরমানীর কাজে, আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করার ব্যাপারে এবং এমন জিনিসে, যার মালিক তুমি নও। (আবূ দাঊদ)[1]

وَعَن سعيد بن الْمسيب: أَنَّ أَخَوَيْنِ مِنَ الْأَنْصَارِ كَانَ بَيْنَهُمَا مِيرَاثٌ فَسَأَلَ أَحَدُهُمَا صَاحِبَهُ الْقِسْمَةَ فَقَالَ: إِنْ عُدْتَ تَسْأَلُنِي الْقِسْمَةَ فَكُلُّ مَالِي فِي رِتَاجِ الْكَعْبَةِ فَقَالَ لَهُ عُمَرُ: إِنَّ الْكَعْبَةَ غَنِيَّةٌ عَنْ مَالِكَ كَفِّرْ عَنْ يَمِينِكَ وَكَلِّمْ أَخَاكَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا يَمِينَ عَلَيْكَ وَلَا نَذْرَ فِي مَعْصِيَةِ الرَّبِّ وَلَا فِي قَطِيعَةِ الرَّحِمِ وَلَا فِيمَا لَا يملك» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

وعن سعيد بن المسيب: ان اخوين من الانصار كان بينهما ميراث فسال احدهما صاحبه القسمة فقال: ان عدت تسالني القسمة فكل مالي في رتاج الكعبة فقال له عمر: ان الكعبة غنية عن مالك كفر عن يمينك وكلم اخاك فاني سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «لا يمين عليك ولا نذر في معصية الرب ولا في قطيعة الرحم ولا فيما لا يملك» . رواه ابو داود

ব্যাখ্যা: নিহায়াহ্ গ্রন্থে الرِّتَاجُ অর্থ এখানে উদ্দেশ্য কা‘বাহ্ ঘর। কারণ যে কা‘বাহ্ ঘরের উদ্দেশে উৎসর্গ দরজার জন্য না। দরজা দ্বারা রূপক অর্থ গ্রহণ করা হয়েছে, কেননা দরজা দিয়ে প্রবেশ করে।

ত্বীবী বলেন, (لَا يَمِيْنَ عَلَيْكَ) এর মর্মার্থ তুমি যা মানৎ করেছ তা পুরো করতে হবে না, আর মানৎকে কসম নামে। এজন্য বলা হয়েছে, কসমের মাধ্যমে যা অপরিহার্য হয় মানতের মাধ্যমে তাই হয়।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১৫: কসম ও মানৎ (كتاب الأيمان والنذور) 15. Oaths and Vows
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৯ পর্যন্ত, সর্বমোট ৯ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে