পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
খুলা’ শব্দটি ’আরবী خُلْعُِ الثوب থেকে নেয়া হয়েছে, ’আরবেরা এ কথা তখনই বলে اذا ازاله যখন কাপড় খুলে ফেলানো হয়। কেননা নারী পুরুষের পোষাক স্বরূপ, অনুরূপ পুরুষও নারীর পোষাক স্বরূপ। আল্লাহর বাণী : ’’স্ত্রীগণ তোমাদের পোষাক স্বরূপ তোমরাও তাদের পোষাক।’’ (সূরা আল বাকারাহ্ ২ : ১৮৭)
ইসলামের পরিভাষায় মহিলা তার স্বামীর নিকট থেকে কোনো কিছুর (মোহরের) বিনিময়ে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নেয়াকে খুলা’ বলা হয়।
কুরআন ও সহীহ হাদীসে খুলা’ করার বৈধতা রয়েছে। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ ’’অতঃপর যদি তোমাদের ভয় হয় যে, তারা উভয়েই আল্লাহর নির্দেশ বজায় রাখতে পারবে না, তাহলে সেক্ষেত্রে স্ত্রী যদি কিছু বিনিময় দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয় তবে উভয়ের কারো পাপ হবে না।’’ (সূরা আল বাকারহ্ ২ : ১২৯)
নিম্নের বিশুদ্ধ হাদীসটিসহ একাধিক বিশুদ্ধ হাদীসও খুলা’ বৈধ হওয়ার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। খুলা’ তালাক কিনা? এ নিয়ে ফুকাহায়ে কিরামের মাঝে ইখতিলাফ বিদ্যমান।
ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-সহ কতিপয় ইমামের মতে খুলা’ তালাক। পক্ষান্তরে ইমাম আহমাদসহ আরো কতিপয় ফকীহরে মতে খুলা’ তালাক নয়। বরং ’ফাস্খে নিকাহ’ বা বিবাহ বাতিল করা। পূর্বে উল্লেখিত আভিধানিক অর্থের দিকে লক্ষ্য রেখেও বলা যায়। খুলা’ হলো বিবাহ খুলে ফেলানো।
মিশকাতের আধুনিক ভাষ্যগ্রন্থ আনোয়ারুল মিশকাতের ব্যাখ্যাকার ইমাম আহমাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, তিনি বলেছেন, খুলা’ তালাক নয়, বরং ’বিচ্ছেদ।’ কেননা আল্লাহর কালামে বলা হয়েছে- অর্থাৎ ’’তালাক দু’বার ..., অতঃপর সে যদি তালাক দেয়’’- (সূরা আত্ব তালাক ৬৫ : ২৯-৩০)। এ শেষ বাক্যের পূর্বে খুলা’র কথা বর্ণনা করা হয়েছে। এতে বুঝা যায় যে, খুলা’ তালাক নয়। কেননা প্রথমে ২ তালাক, খুলা’কে যদি তালাক ধরা হয় তাহলে সেটা এক তালাক, পরের বাক্যে (এক) তালাক উল্লেখ হয়েছে, এতে মোট ৪ তালাক হয়। অথচ এটা কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়। সুতরাং খুলা’ তালাক নয় বরং ’ফাসখে নিকাহ’ বা বিবাহ ভঙ্গ মাত্র। অবশ্য খুলা’কে ত্বলাক (তালাক)ের বর্ণনার মধ্যেই উল্লেখ করা হয়েছে মাত্র।
তালাক ও তাহলীল গ্রন্থকার হাফিয ইবনু কইয়িম-এর বরাত দিয়ে লিখেছেন, তিনি বলেন, খুলা’ যে তালাক নয়, তার প্রমাণ হলো ত্বলাক (তালাক)ের ক্ষেত্রে আল্লাহ তা’আলা যে তিনটি বিধানের কথা বলেছেন, যেগুলোর সব কটি খুলা’তে পাওয়া যায় না। সে তিনটি নিম্নরূপ :
(১) ত্বলাক (তালাক)ে রজ্’ই-এর পর স্বামী তার স্ত্রীকে ’ইদ্দাতের মধ্যে বিনা বিবাহ ও (বিনা বাধায়) ফিরিয়ে নিতে পারবে। কিন্তু খুলা’ হলে স্ত্রীর সম্মতি ব্যতীত তা পারবে না।
(২) ’তালাক’ তিন পর্যন্ত সীমিত। তালাক সংখ্যা পূর্ণ হয়ে গেলে স্ত্রীর অন্য স্বামীর সাথে বিবাহ ও মিলন না হওয়া পর্যন্ত প্রথম স্বামী তাকে ফিরিয়ে নিতে পারবে না। কিন্তু খুলা’য় স্ত্রীকে অপর কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ না হয়েই প্রথম স্বামীর কাছে নতুন বিবাহের মাধ্যমে ফিরে যেতে পারবে।
(৩) খুলা’র ’ইদ্দত হলো এক ঋতু। পক্ষান্তরে সহবাসকৃত স্ত্রীর ’ইদ্দত হলো তিন তুহর।
(’তালাক ও তাহলীল’ ১১-১২ পৃঃ, ড. আসাদুল্লাহ আল গালীব)
এ ছাড়াও ঋতুকালে কিংবা পবিত্রকালে, ঋতু পরবর্তী সহবাসকৃত কিংবা সহবাসহীন, সকল অবস্থায়ই খুলা’ করতে পারে, কিন্তু ঋতুকালে তালাক দেয়ার বিধান নেই। অনুরূপ ঋতুর পর সহবাসের পূর্বে তালাক দিতে হবে সহবাসের পরে নয়।
স্বামী স্ত্রী উভয়ের যদি দাম্পত্য জীবন মনোমালিন্য, অসহনীয় এবং অপছন্দনীয় হয়; স্বামী যদি বিচ্ছিন্ন হতে চায় তবে সেটা তার হাতে এবং সে তা প্রয়োগ করবে। আর যদি স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হতে চায়, তবে তার হাতে রয়েছে খুলা’ এবং সে এটা প্রয়োগ করবে। সুতরাং খুলা’ ও তালাক ভিন্ন বস্তু তা স্পষ্ট।
(ফিকহুস্ সুন্নাহ্ ২য় খন্ড, পৃঃ ২৯৯, বৈরুত)
৩২৭৪-[১] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাবিত ইবনু কয়স-এর স্ত্রী (হাবীবাহ্ বিনতু সাহল) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! সাবিত ইবনু কয়স-এর আচার-ব্যবহার ও দীনদারীর ব্যাপারে আমার কোনো অভিযোগ নেই, কিন্তু ইসলামের ছায়ায় থেকে আমার দ্বারা স্বামীর অবাধ্যতা (কুফরী) মোটেই অনুচিত। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন- তুমি কি (মোহরে প্রাপ্ত) খেজুরের বাগান তাকে ফিরিয়ে দিতে সম্মত আছ? সে বলল- জি, হ্যাঁ। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্বামীকে বললেন, তুমি তোমার খেজুরের বাগান ফেরত নিয়ে তাকে এক তালাক দিয়ে দাও। (বুখারী)[1]
بَابُ الْخُلْعِ وَالطَّلَاقِ
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ: أَنَّ امْرَأَةَ ثَابِتِ بْنِ قِيسٍ أَتَتِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ ثَابِتُ بْنُ قَيْسٍ مَا أَعْتِبُ عَلَيْهِ فِي خُلُقٍ وَلَا دِينٍ وَلَكِنِّي أَكْرَهُ الْكُفْرَ فِي الْإِسْلَامِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَتَرُدِّينَ عَلَيْهِ حَدِيقَتَهُ؟» قَالَتْ: نَعَمْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اقْبَلِ الْحَدِيقَةَ وَطَلِّقْهَا تَطْلِيقَةً» . رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: সাবিত ইবনু কায়স-এর স্ত্রীর নামের ব্যাপারে ইখতিলাফ রয়েছে। অধিক গ্রহণযোগ্য মত হলো তার নাম হাবীবাহ্ বিনতু সাহল। ইবনু হাজার আসকালানী (রহঃ) ‘তাকরীব’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন তিনি সাহবিয়্যাহ্ ছিলেন, তিনি তার স্বামী সাবিত ইবনু কয়স-এর সাথে খুলা‘ করেন। এর পর উবাই ইবনু কা‘ব তাকে বিবাহ করেন।
সাবিত-এর স্ত্রী হাবীবাহ্ বিনতু সাহল (রাঃ) তার স্বামীর ব্যাপারে অভিযোগ করলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্বামীর মোহর বাবদ দেয়া দু’টি খেজুর বাগান ফেরত দেয়া, অতঃপর সাবিতকে তা গ্রহণপূর্বক তাকে তালাক দেয়ার নির্দেশ করেন।
এখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর أمْر বা নির্দেশ واجب (আবশ্যক) অর্থে নয়, বরং إرشاد ও إصلاح তথা দিক নির্দেশনা ও সংশোধন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
মুল্লা ‘আলী কারী (রহঃ) বলেনঃ এ হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, খুলা‘ ‘ফাসখে নিকাহ’ নয়, বরং ‘তালাক’। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৭৫-[২] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার তিনি স্বীয় স্ত্রীকে মাসিক (ঋতুস্রাব) অবস্থায় তালাক দেন। এ বিষয়টি ’উমার (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট জানালেন। এটা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে বললেন, সে যেন তাকে রুজু করে (অর্থাৎ- প্রত্যাহার করে) নেয় এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাকে নিজের কাছে রেখে দেয়। অতঃপর একান্তই তালাক দিতে চাইলে, তবে এক ঋতুস্রাব হতে পবিত্রাবস্থায় উপনীত হলে সহবাসের পূর্বে সে তালাক দিতে পারে। এটাই ত্বলাক (তালাক)ের ’ইদ্দত, আল্লাহ তা’আলা যা নির্দেশ করেছেন। অপর বর্ণনায় আছে- তাকে রজ্’আহ্ (প্রত্যাহার) করার আদেশ দাও। অতঃপর (একান্ত প্রয়োজনে) সে যেন পবিত্রাবস্থায় অথবা গর্ভাবস্থায় তালাক দেয়। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْخُلْعِ وَالطَّلَاقِ
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: أَنَّهُ طَلَّقَ امْرَأَةً لَهُ وَهِيَ حَائِضٌ فَذَكَرَ عُمَرُ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَغَيَّظَ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ: «ليراجعها ثمَّ يمْسِكهَا حَتَّى تطهر ثمَّ تحيض فَتطهر فَإِن بدا لَهُ أَنْ يُطْلِّقَهَا فَلْيُطْلِّقْهَا طَاهِرًا قَبْلَ أَنْ يَمَسَّهَا فَتِلْكَ الْعِدَّةُ الَّتِي أَمَرَ اللَّهُ أَنْ تُطْلَّقَ لَهَا النِّسَاءُ» . وَفِي رِوَايَةٍ: «مُرْهُ فَلْيُرَاجِعْهَا ثُمَّ لْيُطَلِّقْهَا طَاهِرًا أَوْ حَامِلًا»
ব্যাখ্যা: তালাক দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন করার শারী‘আত ব্যবস্থা। এটা কখন ও কিভাবে প্রয়োগ করতে হবে এবং তা কিভাবে কার্যকর হবে ইসলামে তার সুবিধিবদ্ধ বিধান রয়েছে। স্ত্রীকে ঋতুকালীন সময়ে কখনো তালাক প্রদান করা যাবে না। ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার তার স্ত্রীকে ঋতুস্রাবের সময় তালাক প্রদান করেছিলেন, যা শারী‘আতসিদ্ধ নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ খবর পেয়ে ভীষণভাবে রাগান্বিত হয়ে যান এবং তার তালাক অকার্যকর করে দিয়ে স্ত্রীকে ফেরত আনতে নির্দেশ করেন। অতঃপর তার প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন যে, একান্তই তালাক দেয়ার প্রয়োজন হলে ঋতুস্রাব অতিবাহিত হয়ে, প্রথম পবিত্রকালে তালাক না দিয়ে দ্বিতীয় পবিত্রকালে তালাক দিবে।
ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ দ্বিতীয় তুহর বা পরবর্তী পবিত্রকাল পর্যন্ত তালাককে বিলম্বিত করার নির্দেশনার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। তন্মধ্যে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য কারণ হলো- ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার স্ত্রীর সাথে মনের দূরত্বের কারণেই তালাক দিয়েছিলেন। আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রীকে ফেরত এনে তার সাথে স্বাভাবিক সংসার জীবন যাপনের দীর্ঘ সুযোগ করে দিয়েছেন, যাতে এই সময়ের মধ্যে তার সাথে দৈহিক মিলন ঘটায়, এতে তার মনের সঞ্চিত রাগ ও ঘৃণা দূর হয়ে যায় যা ত্বলাকের মূল কারণ, এটা নিঃশেষ হয়ে গেলে ত্বলাকের আর প্রয়োজনই যেন না হয় এবং তাকে স্ত্রী হিসেবে রেখে দেয়।
মুসলিম উম্মাহ ঋতুস্রাবকালে তালাক প্রদানকে হারাম বলেছেন। এ অবস্থায় তালাক প্রদান করলে গুনাহগার হবে এবং তাকে রজ্‘আহ্ করতে হবে, অর্থাৎ স্ত্রীকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে।
ইমাম আবূ হানীফাহ্, ইমাম আহমাদ, ইমাম শাফি‘ঈসহ জুমহূর ইমাম ও ফুকাহার মতে এই রজ্‘আহ্ মুস্তাহাব, ওয়াজিব নয়। অবশ্য ইমাম মালিক ও তার অনুসারীগণ ওয়াজিব বলেছেন।
হাদীসে যে তুহর বা পবিত্রকালে (স্বামী-স্ত্রী) সহবাস হয়নি সেই সময় তালাক দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এর কারণ পরবর্তীতে যাতে গর্ভ প্রকাশিত হয়ে লজ্জিত হতে না হয় এবং প্রসবকাল পর্যন্ত ‘ইদ্দতও দীর্ঘ না হয়। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ফাতহুল বারী ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৯০৮; শারহে মুসলিম ৯/১০ খন্ড, হাঃ ১৪৭১)
পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৭৬-[৩] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আল্লাহ ও তার রসূলকে গ্রহণের অধিকার দিয়েছেন, অতঃপর আমরা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে গ্রহণ করে নিয়েছি, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটা আমাদের ওপর (তালাক) হিসেবে গণ্য করেননি। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْخُلْعِ وَالطَّلَاقِ
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: خَيَّرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَاخْتَرْنَا اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَلَمْ يَعُدَّ ذَلِكَ عَلَيْنَا شَيْئًا
ব্যাখ্যা: উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর বর্ণনা (خَيَّرَنَا رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইখতিয়ার দিয়েছেন, এর অর্থ হলো আমরা উম্মাহাতুল মু’মিনদের অধিকার বা স্বাধীনতা দিয়েছেন যে, ইচ্ছা করলে আমরা আল্লাহর রসূলকে গ্রহণ করে থাকতে পারি, ইচ্ছা করলে তাকে ত্যাগ করে চলে যেতে পারি।
সহীহ মুসলিমের এক বর্ণনায়: خَيَّرَ نِسَاءَه ‘তার স্ত্রীদের ইখতিয়ার দিয়েছিলেন’ বাক্য ব্যবহার হয়েছে, উভয়ের অর্থ ও উদ্দেশ্য একই।
‘আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেনঃ (فَاخْتَرْنَا اللّٰهَ وَرَسُوْلَه فَلَمْ يَعُدَّ ذٰلِكَ عَلَيْنَا شَيْئًا) ‘আমরা (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ) আল্লাহ ও তাঁর রসূলকেই গ্রহণ করলাম, তিনি এটাকে আমাদের ওপর কোনো তালাক গণ্য করেননি। অর্থাৎ এ কথা দ্বারা স্ত্রী তালাক হয়ে যায় না। এক তালাক, দুই তালাক কিংবা তিন তালাক রজ্‘ই কিংবা বায়েন কোনো তালাকই হয় না। এটাই অধিকাংশ সাহাবীর মত। ইমাম আবূ হানীফাহ্, ইমাম শাফি‘ঈ- এই মতই ব্যক্ত করেছেন। পক্ষান্তরে সাহাবীগণের মধ্যে ‘আলী, যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) ফুকাহাগণের মধ্যে ইমাম মালিক সহ কতিপয় ইমাম ও ফাকীহ বলেন, এতে এক তালাক রজ্‘ই পতিত হবে।
‘আল্লামা বাগাভী (রহঃ) নাবী পত্নীদের ইখতিয়ার প্রদান সংক্রান্ত আয়াতে তাফসীরে বলেন-
اخْتَلَفَ الْعُلَمَاءُ فِي هٰذَا الْخِيَارِ، هَلْ كَانَ ذٰلِكَ تَفْوِيضَ الطَّلَاقِ إِلَيْهِنَّ حَتّٰى يَقَعَ بِنَفْسِ الِاخْتِيَارِ أَمْ لَا؟
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের যে ইখতিয়ার দিয়েছিলেন তা নিয়ে ‘উলামাদের মাঝে ইখতিলাফ রয়েছে। সেটা কি তাদের প্রতি ত্বলাকেব তাফবীয ছিল যে, তারা ওটা গ্রহণ করলে তা পতিত হতো আর গ্রহণ না করলে পতিত হতো না?
হাসান বাসরী, কাতাদাহ প্রমুখসহ অধিকাংশ আহলে ‘ইলমের মত হলো, কুরআনের এ আয়াতে ত্বলাকে তাফবীযের কথা বলা হয়নি। বরং এখানে নাবী পত্নীগণকে দুনিয়ার সুখ সামগ্রী অথবা আল্লাহ ও তাঁর রসূল (তথা আখিরাত) এ দুয়ের যে কোনো একটিকে গ্রহণের ইখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে। যার কারণে এর তাৎক্ষণিক জওয়াব নয়, বরং চিন্তা ভাবনা করে প্রয়োজনে অভিভাবকের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্তের কথা বলা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে বলেন, তুমি তাড়াহুড়া করো না, বরং ধীরস্থির মতো তোমার পিতা-মাতার সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিবে। এটা যদি ত্বলাকে তাফবীয হতো তাহলে উত্তরটি তাৎক্ষণিক প্রয়োজন ছিল। (মিরকাতুল মাফাতীহ; ফাতহুল বারী ৯ম খন্ড, হাঃ ৫২৬২)
পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৭৭-[৪] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোনো ব্যাপারে (হালালকে) হারাম করলে কাফফারা দিতে হবে, ’’নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে (জীবনীতে) রয়েছে উত্তম আদর্শ’’। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْخُلْعِ وَالطَّلَاقِ
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: فِي الْحَرَامِ يُكَفَّرُ لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ الله أُسْوَة حَسَنَة
ব্যাখ্যা: কেউ যদি ইচ্ছা করে কোনো বৈধ জিনিস নিজের ওপর হারাম ঘোষণা দেয় তবে তা ভঙ্গ করলে কাফফারা দিতে হবে। কেননা এটা কসমের পর্যায় হয়ে যায়, কসম ভঙ্গ করলে যেমন কাফফারা দিতে হয় এটাও ঠিক তাই। এর প্রমাণ দিতে গিয়ে ইবনু ‘আব্বাস কুরআনের এই আয়াত পাঠ করেন : ‘‘আল্লাহর রসূলের মধ্যে তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ।’’ (সূরা আল আহযাব ৩৩ : ২১)
‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস মূলতঃ এটাই বুঝাতে চেয়েছেন, কেউ যদি আল্লাহর হালালকৃত বস্তুকে স্বেচ্ছায় নিজের ওপর হারাম করে নেয় তার ওপর কসমের কাফফারা ধার্য হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নিজের ওপর আল্লাহর দেয়া হালাল বস্তুকে হারাম করে নিয়েছিলেন তখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে তার কাফফারা আদায়ের নির্দেশ প্রদান করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘হে নাবী! আল্লাহ আপনার জন্য যা হালাল করেছেন তা কেন নিজের ওপর হারাম করে নিচ্ছেন?’’ (সূরা আত্ তাহরীম ৬৫ : ০১)। (ফাতহুল বারী ৮ম খন্ড, হাঃ ৪৯০৮; মিরকাতুল মাফাতীহ)
এ বিষয়ে সামনের হাদীসে বিস্থাতির আলোচনা আসছে।
পরিচ্ছেদঃ ১১. প্রথম অনুচ্ছেদ - খুল্‘ই (খুলা‘ তালাক) ও তালাক প্রসঙ্গে
৩২৭৮-[৫] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী যায়নাব বিনতু জাহশ-এর নিকট তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (কিছু সময় বেশি) অবস্থান করতেন। অতঃপর একদিন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর নিকট মধু পান করেন। এ সংবাদ পেয়ে আমি ও হাফসাহ্ উভয়ে পরামর্শ করলাম যে, আমাদের মধ্যে যার নিকটই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত হবেন, সে যেন বলে, আমি আপনার (মুখ) হতে মাগাফীর-এর (দুর্গন্ধযুক্ত ফলের রস যা মৌমাছি সঞ্চয়ন করে) গন্ধ পাচ্ছি, আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁদের [’আয়িশাহ্ ও হাফসাহ্ (রাঃ)] কোনো একজনের নিকট পৌঁছলে একজন বললেন। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি যায়নাব বিনতু জাহশ-এর নিকট মধু খেয়েছি। আমি শপথ করছি, আর কক্ষনো মধু খাবো না, কিন্তু তুমি এটা কাউকেও বলো না। মূলত তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সহধর্মিণীগণের সন্তুষ্টি কামনার্থে এটা (শপথ) করেছিলেন। এমতাবস্থায় কুরআন মাজীদের আয়াত নাযিল হয়- ’’হে নবী! আল্লাহ যা তোমার জন্য হালাল করেছেন তা তুমি কেন হারাম করছ? (এর দ্বারা) তুমি তোমার স্ত্রীদের সন্তুষ্টি পেতে চাও?’’ (সূরা আত্ তাহরীম ৬৬ : ১)। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ الْخُلْعِ وَالطَّلَاقِ
وَعَنْ عَائِشَةَ: أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَمْكُثُ عِنْدَ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ وَشَرِبَ عِنْدَهَا عَسَلًا فَتَوَاصَيْتُ أَنَا وَحَفْصَةُ أَنَّ أَيَّتَنَا دَخَلَ عَلَيْهَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلْتَقُلْ: إِنِّي أَجِدُ مِنْكَ رِيحَ مَغَافِيرَ أَكَلْتَ مَغَافِيرَ؟ فَدَخَلَ عَلَى إِحْدَاهُمَا فَقَالَتْ لَهُ ذَلِكَ فَقَالَ: «لَا بَأْسَ شَرِبْتُ عَسَلًا عِنْدَ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ فَلَنْ أَعُودَ لَهُ وَقَدْ حَلَفْتُ لَا تُخْبِرِي بِذَلِكِ أَحَدًا» يَبْتَغِي مرضاة أَزوَاجه فَنَزَلَتْ: (يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ الله لَك تبتغي مرضاة أَزوَاجك)
الْآيَة
ব্যাখ্যা: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধু পছন্দ করতেন। ‘আস্র নামাযের পর তিনি প্রত্যেক স্ত্রীর খোঁজ খবর নেয়ার জন্য তাদের ঘরে যেতেন। এ সময় তার স্ত্রী যায়নাব বিনতু জাহ্শ তাকে মধু পান করাতেন। মানব স্বভাবসুলভ কারণে অন্যান্য স্ত্রীদের অনেকের কাছেই এটা অপছন্দনীয় ছিল। উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) এবং হাফসাহ্ (রাঃ) উভয় মিলে ফন্দি আটলেন এবং যুক্তি পাকালেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যার কাছেই আসে সে বলবে আপনার কাছ থেকে মাগাফীরের গন্ধ পাচ্ছি। আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন?
যুক্তি মোতাবেক যথাসময়ে তারা তাই করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু বুঝে উঠতে পারলেন না, তিনি বললেনঃ আমি তো মধুপান করেছি মাত্র। অতঃপর তিনি শপথ করে বললেন, ঠিক আছে আমি আর মধু পান করবো না, তুমি এ কথা আর কাউকে বলো না। এটা ছিল স্ত্রীদের কতিপয়ের মন খুশির জন্য। আল্লাহ তার এ কথা পছন্দ করলেন না। সাথে সাথে আয়াত নাযিল করলেন,
يٰاَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللّٰهُ لَكَ تَبْتَغِىْ مَرْضَاةَ أَزْوَاجِكَ
‘‘হে নাবী! আল্লাহ আপনার জন্য যা বৈধ করেছেন তা আপনি হারাম করছেন কেন? আপনি স্ত্রীদের সন্তুষ্টি খুঁজছেন?’’ (সূরা আত্ তাহরীম ৬৬ : ০১)
মাগাফীর হলো এক প্রকার কাঁটাযুক্ত বৃক্ষের ফলের নির্যাস যা মিষ্ট অথচ ভীষণ দুর্গন্ধযুক্ত।
ইবনুল মালিক বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর হালাল বস্তু নিজের ওপর হারাম করে নেয়াটা ছিল পদস্খলন বা আকস্মিক ভুল, পাপ বা গুনাহের কাজ নয়। এটা ছিল খেলাফে আওলা বা উত্তমতার পরিপন্থী।
সুতরাং আল্লাহর বাণী: لِمَ تُحَرِّمُ এবং عَفَا اللّٰهُ عَنْكَ বাক্য দ্বারা তার নিন্দা জানানো হয়েছে।
হাদীস দ্বারা স্পষ্ট বুঝা যায় যে, মধু হারাম করার কারণে অত্র আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু আরেকটি সহীহ হাদীসে এসেছে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাফসার গৃহে মধু পান করেছিলেন, তখন উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ্, সফিয়্যাহ্, সাওদাহ্ এরা মিলে পূর্বে উল্লেখিত যুক্তি পাকিয়েছিলেন।
‘আল্লামা বাগাভী (রহঃ) উক্ত আয়াতের শানে নুযূল বর্ণনা করতে গিয়ে মুফাস্সিরীনদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রীদের মধ্যে পালা বণ্টন করতেন। হাফসাহ্ (রাঃ)-এর পালার দিন এলে তিনি তার বাপের সাক্ষাৎ যাওয়ার অনুমতি প্রার্থনা করলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি প্রদান করলেন তিনি বাপের বাড়ী চলে গেলেন। হাফসাহ্ (রাঃ) যখন চলে গেলেন তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারিয়াহ্ আল ক্বিবত্বিয়্যাহ্ (রাঃ)-কে ডেকে পাঠালেন। মারিয়াহ্ আল ক্বিবত্বিয়্যাহ্ (রাঃ) আসলে তিনি তাকে হাফসাহ্ (রাঃ)-এর ঘরে প্রবেশ করালেন এবং তার সাথে মিলিত হলেন। ইতোমধ্যে হাফসাহ্ (রাঃ) যখন ফিরে এলেন, এসে দেখেন তার ঘরের দরজা বন্ধ। তিনি অগত্যা দরজায় বসে রইলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর্মাক্ত অবস্থায় ঘর থেকে বের হলেন- এ অবস্থা দেখে হাফসাহ্ (রাঃ) কাঁদতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞেস করলেন- তুমি কাঁদছো কেন? উত্তরে হাফসাহ্ (রাঃ) বললেন, এজন্যই কি আপনি আমাকে বাপের বাড়ী যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন? আমার পালার দিন, আমার বিছানায় একজন দাসীকে প্রবেশ করিয়েছেন? আপনি কি আমার মর্যাদা এবং আমার সম্মানের কথা ভাবেন না? আপনি স্ত্রীদের একজনের সাথে এই আচরণ করবেন?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে কি আল্লাহ তা‘আলা আমার জন্য হালাল করে দেননি? (হে হাফসাহ্!) তুমি থামো! তাকে (মারিয়াহ্ আল ক্বিবত্বিয়্যাহ্ (রাঃ)) আমার জন্য হারাম করে নিলাম। আমি তোমার সন্তুষ্টি চাই, তবে তুমি এ কথা স্ত্রীদের অন্য কাউকে বলো না- তখন আল্লাহ তা‘আলা يٰاَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ এ আয়াত নাযিল করেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)