পরিচ্ছেদঃ ৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - যে নারীদেরকে বিয়ে করা হারাম
৩১৮১-[২২] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, বংশগত বা রক্ত সম্পর্কের কারণে এবং বৈবাহিক বন্ধনের কারণে সাত শ্রেণীর রমণীর সাথে বিবাহ হারাম করা হয়েছে। অতঃপর তিনি কুরআন মাজীদের আয়াত, অর্থাৎ- ’’তোমাদের ওপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাগণকে (বিবাহ করতে)’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ২৩) শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেন। (বুখারী)[1]
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: حُرِّمَ مِنَ النَّسَبِ سَبْعٌ وَمِنَ الصِّهْرِ سَبْعٌ ثُمَّ قَرَأَ: (حُرِّمَتْ عَلَيْكُم أُمَّهَاتكُم)
الْآيَة. رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: বংশীয় সূত্রে যারা মুহরিমাহ্, অর্থাৎ যাদের সাথে বিবাহ হারাম। তারা হলো মা, কন্যা, বোন, ফুফী, খালা, ভাতিজি ও ভাগ্নি। ‘আল্লামা নববী (রহঃ) বলেছেনঃ বৈবাহিক সূত্রে যাদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া হারাম। তারা হলো শাশুড়ী, পুত্র বধূ (স্ত্রীর পূর্ব স্বামীর পক্ষের ছেলে) সে সূত্রে, নাতবধু, নাতনী এবং এর অধস্তন যারা রয়েছে সকলেই এর অন্তর্ভুক্ত। পিতার স্ত্রী, দাদার স্ত্রী ও তার ঊর্ধ্বমুখী সকলেই, স্ত্রীর কন্যা (যে স্ত্রীর সাথে সহবাস হয়েছে তার পূর্ব স্বামীর পক্ষের কন্যা) স্ত্রীর উপস্থিতিতে তার বোন এবং খালা, ফুফীও এর অন্তর্ভুক্ত হবে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - যে নারীদেরকে বিয়ে করা হারাম
৩১৮২-[২৩] ’আমর ইবনু শু’আয়ব (রহঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কোনো (বিবাহিতা) স্ত্রীর সাথে সহবাস করে, তাহলে ঐ স্ত্রীর (পূর্ব স্বামীর) মেয়েকে বিবাহ করা হালাল নয়। আর যদি সহবাস না করে থাকে, তবে সে (তালাক দিয়ে ’ইদ্দত পালন শেষে) ঐ স্ত্রীর (পূর্ব স্বামীর) মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কোনো রমণীকে বিয়ে করে, তাদের মধ্যে সহবাস হোক অথবা না হোক উভয় অবস্থায় উক্ত স্ত্রীর মা-কে (শাশুড়িকে) বিয়ে করা তার জন্য হালাল নয়। (তিরমিযী; ইমাম তিরমিযী তাঁর সুনান-এ বলেন, বর্ণনার নীতি অনুযায়ী হাদীসটি সহীহ নয়; কারণ হাদীসটি ইবনু লাহী’আহ্ ও মুসান্না ইবনুস্ সববাহ ’আমর ইবনু শু’আয়ব হতে বর্ণনা করেছেন। তারা উভয়ে হাদীস বর্ণনায় দুর্বল, অর্থাৎ- বর্ণনাকারীর স্বীকৃত গুণাবলীর ত্রুটি-বিচ্যুতিতে দুর্বল)[1]
وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَيُّمَا رَجُلٍ نَكَحَ امْرَأَةً فَدَخَلَ بهَا فَلَا يَحِلُّ لَهُ نِكَاحُ ابْنَتِهَا وَإِنْ لَمْ يَدْخُلْ بِهَا فَلْيَنْكِحِ ابْنَتَهَا وَأَيُّمَا رَجُلٍ نَكَحَ امْرَأَةً فَلَا يَحِلُّ لَهُ أَنْ يَنْكِحَ أُمَّهَا دَخَلَ أَوْ لَمْ يَدْخُلْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ لَا يَصِحُّ مِنْ قِبَلِ إِسْنَادِهِ إِنَّمَا رَوَاهُ ابْنُ لَهِيعَةَ وَالْمُثَنَّى بْنُ الصَّبَّاحِ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ وَهُمَا يُضَعَّفَانِ فِي الْحَدِيثِ
ব্যাখ্যা: অধিকাংশ বিদ্বানদের এ কথার উপর ‘আমল রয়েছে যে, যখন কেউ কোনো মহিলাকে বিবাহ করবে, অতঃপর সহবাসের পূর্বেই তাকে তালাক দিবে, তবে তার জন্য তার কন্যাকে বিবাহ করা হালাল। অন্যদিকে কেউ যদি কোনো মহিলাকে বিবাহ করে এবং সহবাসের পূর্বে স্ত্রী তালাক দেয় তবে তার জন্য উক্ত স্ত্রীর মাকে বিবাহ করা বৈধ নয়। যেমন আল্লাহ তা‘আলার কথা- ‘‘তোমাদের স্ত্রীদের মায়েদেরকে তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে.....’’- (সূরা আন্ নিসা ৪ : ২৩)। আর এটাই ইমাম শাফি‘ঈ, আহমাদ ও ইসহক (রহঃ)-এর কথা। হাফিয তাঁর ‘আত্ তাকরীব’ গ্রন্থে বলেছেন যে, এটা ইমাম আবূ হানীফাহ্ (রহঃ)-এর কথা। হিদায়াহ্ গ্রন্থে তাঁর [হাফিয ‘আসকালানী (রহঃ)] বরাতে রয়েছে, স্ত্রীর মাকে বিবাহ করা যাবে না, চাই তার কন্যার সাথে সহবাস হোক বা না হোক। যেমন আল্লাহর কথা তোমাদের স্ত্রীদের মায়েদেরকে তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে। এখানে সহবাস শর্ত করা হয়নি। অনুরূপভাবে সহবাসকৃত স্ত্রীদের কন্যাদের সাথেও বিবাহ বৈধ নয়। কারণ এক্ষেত্রে সহবাস শর্ত করা হয়েছে। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১১১৭; মিরকাতুল মাফাতীহ)