পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বাগান ও জমিনের বর্গা (পরস্পর সেচকার্য করা ও ভাগে কৃষিকাজ, বর্গাচাষ করা)

২৯৭২-[১] ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের খেজুর বাগান ও জমিন খায়বারের ইয়াহূদীদেরকে দিয়েছিলেন। তারা নিজেদের অর্থায়নে তাতে চাষাবাদ করবে; আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ফল ও ফসলের অর্ধেক পাবেন। (মুসলিম)[1]

বুখারীর বর্ণনায় রয়েছে, অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারকে ইয়াহূদীদের দিয়েছিলেন, তারা তাতে পরিশ্রম করবে ও শস্য ফলাবে, আর তারা উৎপাদনের অর্ধেকের অধিকারী হবে।

بَابُ الْمُسَاقَاةِ وَالْمُزَارَعَةِ

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَفَعَ إِلَى يَهُودِ خَيْبَرَ نَخْلَ خَيْبَرَ وَأَرْضَهَا عَلَى أَنْ يَعْتَمِلُوهَا مِنْ أَمْوَالِهِمْ وَلِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَطْرُ ثَمَرِهَا. رَوَاهُ مُسْلِمٌ
وَفِي رِوَايَةِ الْبُخَارِيِّ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَعْطَى خَيْبَرَ الْيَهُودَ أَنْ يَعْمَلُوهَا ويزرعوها وَلَهُم شطر مَا يخرج مِنْهَا

عن عبد الله بن عمر: ان رسول الله صلى الله عليه وسلم دفع الى يهود خيبر نخل خيبر وارضها على ان يعتملوها من اموالهم ولرسول الله صلى الله عليه وسلم شطر ثمرها. رواه مسلم وفي رواية البخاري: ان رسول الله صلى الله عليه وسلم اعطى خيبر اليهود ان يعملوها ويزرعوها ولهم شطر ما يخرج منها

ব্যাখ্যা: (المساقة) বলতে কোনো বৃক্ষের ব্যাপারে কোনো লোককে এভাবে কর্মী নিয়োগ করা যে, সে পানি দেয়া ও লালন-পালনের মাধ্যমে বৃক্ষের রক্ষনাবেক্ষণ করবে এ শর্তের উপর যে, আল্লাহ তা‘আলা যে ফল দান করবেন বর্গাদাতা ও গ্রহীতার মাঝে নির্দিষ্ট অংশ বণ্টন হবে, যেমনটি আবাদী জমির ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। (মিরকাতুল মাফাতীহ)

শারহে মুসলিমে আছে,

أَنَّ رَسُولَ اللّٰهِ ﷺ عَامَلَ أَهْلَ خَيْبَرَ بِشَطْرِ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا مِنْ ثَمَرٍ أَوْ زَرْعٍ وَفِي رِوَايَةٍ عَلٰى أَنْ يَعْتَمِلُوهَا مِنْ أَمْوَالِهِمْ وَلِرَسُولِ اللّٰهِ ﷺ شَطْرُ ثَمَرِهَا.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের ভূমিকে তার অধিবাসীদের নিকট বর্গা দিয়েছেন, তাতে উৎপন্ন ফল ও ফসলের অর্ধেকের বিনিময়ে। অপর বর্ণনায় রয়েছে, খায়বারের অধিবাসীদের সুযোগ দিয়েছেন এ শর্তে যে, তারা নিজ ব্যয়ে চাষ করবে এবং উৎপাদিত ফলের অর্ধেক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রদান করবে।

এ হাদীসগুলোতে বর্গা দেয়ার বৈধতা রয়েছে- এ ব্যাপারে মত পেশ করেছেন মালিক, সাওরী, লায়স, শাফি‘ঈ, আহমাদ; মুহাদ্দিসদের মাঝে সমস্ত ফাকীহগণ, আহলুয্ যাহির ও জুমহূর বিদ্বানগণ। আবূ হানীফাহ্ বলেন, বর্গা দেয়া বৈধ হবে না এবং তিনি এ হাদীসগুলোর ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে যে, খায়বারকে বলপূর্বক বিজয় দান করা হয়েছে, তার অধিবাসীরা ছিল আল্লাহর রসূলের দাস। সুতরাং তিনি যা গ্রহণ করেছেন, তা তারই এবং যা ছেড়ে দিয়েছেন তা তারই।

জুমহূর এ হাদীসগুলোর বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর (أُقِرُّكُمْ مَا أَقَرَّكُمْ اللّٰهُ) ‘‘আল্লাহ তোমাদের যতক্ষণ পর্যন্ত স্বীকৃতি দান করবে আমি তোমাদেরকে স্বীকৃতি দান করব।’’ এ উক্তির মাধ্যমে দলীল গ্রহণ করেছেন। এটা ঐ ব্যাপারে স্পষ্ট যে, নিশ্চয় এরা দাস ছিল না। কাযী বলেনঃ খায়বারের ক্ষেত্রে তারা মতানৈক্য করেছে তাকে বলপূর্বকভাবে, নাকি সন্ধির মাধ্যমে, নাকি যুদ্ধ ছাড়া সেখান থেকে তার অধিবাসীদেরকে বিতাড়নের মাধ্যমে বিজয় হয়েছে? নাকি তার কিছু অংশের সাথে সন্ধি করে এবং কিছু অংশকে বলপূর্বকভাবে? তিনি এমন বলেন, সর্বশেষ উক্তিটি বর্ণিত উক্তিসমূহের মাঝে সর্বাধিক বিশুদ্ধ মত। আর তা মালিক এবং তার অনুসারীদের বর্ণনা, ইবনু ‘উয়ায়নাহ্ মত পেশ করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিটি উক্তির পক্ষেই দলীল বর্ণিত হয়েছে।

মুসলিম-এর এক বর্ণনাতে আছে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন খায়বারের উপর বিজয় লাভ করলেন, তখন সেখান হতে ইয়াহূদীদের বের করে দেয়ার ইচ্ছা করলেন, কেননা তখন তা আল্লাহ, তাঁর রসূল এবং মুসলিমদের। এটা ঐ ব্যক্তির পক্ষে প্রমাণ বহন করছে যে ব্যক্তি বলেছে বলপূর্বকভাবে খায়বার বিজয় হয়েছে। কেননা মুসলিমদের হক প্রতিষ্ঠিত হয় কেবলমাত্র বলপূর্বক বিজয়ের ক্ষেত্রে। যে ব্যক্তি বলেছে ‘সন্ধির মাধ্যমে’ তার কথার বাহ্যিক দিক হলো, নিশ্চয় ভূমিটি মুসলিমদের হওয়ার ব্যাপারে তাদের সাথে সন্ধি করা হয়েছে। আর আল্লাহ সর্বাধিক জ্ঞাত।

আর যে বৃক্ষ বর্গা দেয়া বৈধ হবে সেক্ষেত্রে তারা মতানৈক্য করেছে। দাঊদ (রহঃ) বলেনঃ বিশেষ করে খেজুর বৃক্ষের ব্যাপারে বৈধ হবে। শাফি‘ঈ বলেনঃ বিশেষভাবে খেজুর ও আঙ্গুর বৃক্ষের ব্যাপারে বৈধ হবে। মালিক বলেনঃ সকল বৃক্ষের ব্যাপারে বৈধ হবে, এ মতের পক্ষে শাফি‘ঈ (রহঃ)-এরও একটি উক্তি রয়েছে। আর আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞাত।

‘‘ফল বা ফসল’’ অর্থাৎ যেমন ফলের গাছ বর্গা দেয়া বৈধ, তেমনি ফসলের ক্ষেতও বর্গা দেয়া বৈধ। ইবনু আবূ লায়লা, আবূ ইউসুফ, মুহাম্মাদ ও সকল সুফীগণ, মুহাদ্দিসদের মাঝে যারা ফাকীহ তারা আহমাদ, ইবনু খুযায়মাহ্, ইবনু শুরায়হ ও অন্যান্যগণ বলেন, ফলের বৃক্ষ বর্গা দেয়া এবং শস্যক্ষেত্র বর্গা দেয়া একত্রে বৈধ এবং এদের হতে প্রতিটি আলাদাভাবেও বৈধ। (শারহে মুসলিম ৯/১০ম খন্ড, হাঃ ১৫৫১)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বাগান ও জমিনের বর্গা (পরস্পর সেচকার্য করা ও ভাগে কৃষিকাজ, বর্গাচাষ করা)

২৯৭৩-[২] উক্ত [ইবনু ’উমার (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বর্গার লেনদেন করতাম, আর তাতে কোনো প্রকার আপত্তি আছে বলে জানতাম না, যতক্ষণ পর্যন্ত না রাফি’ ইবনু খদীজ বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা নিষেধ করেছেন। অতঃপর তার কারণে আমরা তা পরিত্যাগ করলাম। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُسَاقَاةِ وَالْمُزَارَعَةِ

وَعنهُ قَالَ: كُنَّا نخبر وَلَا نَرَى بِذَلِكَ بَأْسًا حَتَّى زَعَمَ رَافِعُ ابْن خَدِيجٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْهَا فَتَرَكْنَاهَا مِنْ أَجْلِ ذَلِكَ. رَوَاهُ مُسلم

وعنه قال: كنا نخبر ولا نرى بذلك باسا حتى زعم رافع ابن خديج ان النبي صلى الله عليه وسلم نهى عنها فتركناها من اجل ذلك. رواه مسلم

ব্যাখ্যা : মুহাম্মাদ বিন হাসান, মালিকী মতের অনুসারী একদল এবং অন্যান্যগণ বলেন, স্বর্ণ এবং রৌপ্যের বিনিময়ে, জমিতে উৎপাদিত ফল ও ফসলের এক-চতুর্থাংশের বিনিময়ে এবং এছাড়াও অন্যান্যের বিনিময়ে বর্গা দেয়া বৈধ। আর এটাই প্রণিধানযোগ্য পছন্দনীয় মত। শাফি‘ঈ এবং তার অনুসারীরা স্বর্ণ, রৌপ্য ও অন্যান্যের বিনিময়ে إجارة (ইজারত) বা ভাড়া দেয়া বৈধ হওয়ার ব্যাপারে রাফি‘ বিন খদীজ ও সাবিত বিন যহ্হাক-এর স্পষ্ট বর্ণনার প্রতি নির্ভর করেছে। আর নিষেধাজ্ঞার হাদীসগুলোকে দু’টি ব্যাখ্যায় ব্যাখ্যা করেছে, দু’টির একটি হলো জমি ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে পানি প্রবাহের নিকটবর্তী অংশের শস্য, অথবা জমিনের একটি নির্দিষ্ট অংশের শস্য অথবা উৎপাদিত ফসলের এক-তৃতীয়াংশ, এক-চতুর্থাংশ এবং অনুরূপ নির্ধারণ করা অবৈধ। দ্বিতীয়তঃ নিষেধাজ্ঞার হাদীসসমূহ দ্বারা বর্গা দেয়া অপছন্দনীয় বলে মন্তব্য করেছেন এবং বিনিময় ব্যতীত জমি চাষ করতে দেয়াকে মুস্তাহাব বলেছেন। হাদীসসমূহের মাঝে সমন্বয় সাধন করতে এ দু’টি ব্যাখ্যা অথবা দু’টির যে কোনো একটি ব্যাখ্যা আবশ্যক। বুখারী এবং অন্যান্যগণ এ দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটির দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং ইবনু ‘আব্বাস হতে এ অর্থ বর্ণনা করেছেন। আর আল্লাহ সর্বাধিক ভালো জনেন। (শারহে মুসলিম ৯/১০ম খন্ড, হাঃ ১৫৪৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বাগান ও জমিনের বর্গা (পরস্পর সেচকার্য করা ও ভাগে কৃষিকাজ, বর্গাচাষ করা)

২৯৭৪-[৩] হানযালাহ্ ইবনু কায়স (রহঃ) রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমার দুই চাচা আমাকে বলেছেন, তাঁরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগে জমিন বর্গা দিতেন এরূপে- খালের নিকটের জমিনে যা উৎপাদিত হবে, তা তাদের প্রাপ্য অথবা জমির মালিক অপর কোনো অংশ বাদ রাখতো। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এরূপ করতে নিষেধ করলেন। হান্যালাহ্ (রহঃ) বলেন, আমি রাফি’-কে জিজ্ঞেস করলাম, দিরহাম ও দীনারের বিনিময়ে ভাড়া দেয়া কেমন হয়? তিনি বললেন, এতে কোনো আপত্তি নেই। (রাফি’ অথবা কোনো রাবী অথবা ইমাম বুখারী বলেন) যা হতে নিষেধ করা হয়েছে, তা এরূপই। হালাল-হারামের বিষয়ে অভিজ্ঞ বিজ্ঞ ব্যক্তিরা যদি এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করেন, তবুও তার অনুমতি দেবেন না। যেহেতু তাতে বিপদসমূহের আশঙ্কা রয়েছে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُسَاقَاةِ وَالْمُزَارَعَةِ

وَعَنْ حَنْظَلَةَ بْنِ قَيْسٍ عَنْ رَافِعِ بْنِ خديج قَالَ: أَخْبَرَنِي عَمَّايَ أَنَّهُمْ كَانُوا يُكْرُونَ الْأَرْضَ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَا يَنْبُتُ عَلَى الْأَرْبَعَاءِ أَوْ شَيْءٍ يَسْتَثْنِيهِ صَاحِبُ الْأَرْضِ فَنَهَانَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ ذَلِكَ فَقُلْتُ لِرَافِعٍ: فَكَيْفَ هِيَ بِالدَّرَاهِمِ وَالدَّنَانِيرِ؟ فَقَالَ: لَيْسَ بِهَا بَأْسٌ وَكَأَنَّ الَّذِي نُهِيَ عَنْ ذَلِكَ مَا لَوْ نَظَرَ فِيهِ ذَوُو الْفَهْمِ بِالْحَلَالِ وَالْحَرَامِ لَمْ يُجِيزُوهُ لِمَا فِيهِ مِنَ الْمُخَاطَرَةِ

وعن حنظلة بن قيس عن رافع بن خديج قال: اخبرني عماي انهم كانوا يكرون الارض على عهد النبي صلى الله عليه وسلم بما ينبت على الاربعاء او شيء يستثنيه صاحب الارض فنهانا النبي صلى الله عليه وسلم عن ذلك فقلت لرافع: فكيف هي بالدراهم والدنانير؟ فقال: ليس بها باس وكان الذي نهي عن ذلك ما لو نظر فيه ذوو الفهم بالحلال والحرام لم يجيزوه لما فيه من المخاطرة

ব্যাখ্যা: (يَسْتَثْنِيهِ) যাতে এটা অন্য বর্ণনার অনুকূল হতে পারে, এজন্য তিনি যেন এক-তৃতীয়াংশ এবং এক-চতুর্থাংশ পৃথককরণের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।

(فَقَالَ رَافِعٌ : لَيْسَ بِهَا بَأْسٌ بِالدِّينَارِ وَالدِّرْهَمِ) এ উক্তিটি রাফি‘-এর নিজ ইজতিহাদে হওয়ার সম্ভাবনা রাখছে এবং তা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে ঐ জ্ঞান ভাষ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে হওয়ার সম্ভাবনা রাখছে। অথবা জমি ভাড়া দেয়া সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা মুতালাক বা শর্তহীনভাবে ছিল না, বরং যখন অপরিচিত বস্তু এবং অনুরূপ বস্তু সম্পর্কে হবে। সুতরাং এ থেকে স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিনিময়ে জমি ভাড়া নেয়া বৈধ হওয়ার ব্যাপারে মাসআলাহ্ সাব্যস্ত হলো। হাদীসটির মারফূ‘ হওয়াকে প্রাধান্য দিতে হবে যা আবূ দাঊদ এবং নাসায়ী বিশুদ্ধ সানাদে সা‘ঈদ বিন মুসাইয়্যাব হতে বর্ণনা করেন, তিনি রাফি‘ বিন খদীজ হতে বর্ণনা করেন, নিশ্চয় তিনি বলেনঃ


نَهٰى رَسُولُ اللّٰهِ ﷺ عَنِ الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ وَقَالَ إِنَّمَا يَزْرَعُ ثَلَاثَةٌ رَجُلٌ لَه أَرْضٌ وَرَجُلٌ مَنَحَ أَرْضًا وَرَجُلٌ اكْتَرٰى أَرْضًا بِذَهَبٍ أَوْ فِضَّةٍ

আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাকালাহ্ ও মুযাবানাহ্ নিষেধ করেছেন এবং তিনি বলেন, শস্য ফলাবে তিন ব্যক্তি- এমন ব্যক্তি যার জমি আছে, এমন ব্যক্তি যাকে কোনো বিনিময় ব্যতীত জমি চাষ করতে দেয়া হয়েছে, এমন ব্যক্তি যে স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিনিময়ে জমি ভাড়া নিয়েছে।

তবে নাসায়ী অন্য সানাদে বর্ণনা করেন সে সানাদের মারফূ‘ অংশ হলো মুহাকালাহ্ ও মুযাবানাহ্ নিষেধ করা, এর অবশিষ্ট অংশ সা‘ঈদ বিন মুসাইয়্যাব-এর কথার অন্তর্ভুক্ত। মালিক একে তার মুয়াত্ত্বা গ্রন্থে বর্ণনা করেন। শাফি‘ঈ তার থেকে, তিনি ইবনু শিহাব থেকে, তিনি সা‘ঈদ বিন মুসাইয়্যাব হতে বর্ণনা করেন।
 

(الْمُخَاطَرَةِ) অর্থাৎ ধ্বংসের দিকে উঁকি দেয়া। লায়স-এর এ উক্তি জুমহূরের মতের অনুকূল, অর্থাৎ জমিন ভাড়া দেয়া সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞাতে এরূপ চাপিয়ে দেয়া যা ধোঁকা ও অজ্ঞতার দিকে বর্তায়। শর্তহীনভাবে জমি ভাড়া দেয়া সম্পর্কে না, এমনকি স্বর্ণ ও রৌপ্যের মাধ্যমে না। অতঃপর জুমহূর (অর্থাৎ অধিকাংশ ‘আলিম) জমি হতে উৎপাদিত অংশের মাধ্যমে জমি ভাড়া জায়িয হওয়া সম্পর্কে মতানৈক্য করেছেন। যারা বৈধ হওয়ার ব্যাপারে মত পোষণ করেছেন তারা নিষেধাজ্ঞার হাদীসগুলোকে নাহিয়ে তানযিহীর উপর চাপিয়েছেন, এর উপর প্রমাণ বহন করছে ইবনু ‘আব্বাস-এর উক্তি, যেমন তিনি বলেন, (وَلٰكِنْ أَرَادَ أَنْ يَرْفُقَ بَعْضُهُمْ بِبَعْضٍ) অর্থাৎ- ‘‘তবে তাদের কতক কতকের উপর দয়া করার ইচ্ছা করবে।’’ আর যারা জমি হতে উৎপাদিত কোনো অংশের মাধ্যমে জমি ভাড়া দেয়া বৈধ বলেনি তারা বলেছে, জমি ভাড়া দেয়া সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞাকে ঐ কথার উপর চাপিয়ে দিতে হবে, যখন জমির মালিক জমির কোনো অংশকে শর্ত করবে অথবা নদীর পাশে যা উৎপন্ন হবে তা জমির মালিকের জন্য শর্ত করবে। এর প্রতিটিতে ধোঁকা ও অজানা থাকার কারণে।

মালিক বলেন, নিষেধাজ্ঞাকে ঐ অবস্থার উপর চাপিয়ে দিতে যখন জমি ভাড়া খাদ্য অথবা খেজুরের মাধ্যমে সংঘটিত হবে, যাতে খাদ্যের বিক্রয় খাদ্যের মাধ্যমে না হয়।
ইবনুল মুনযির বলেনঃ মালিক যা বলেছে তা ঐ কথার উপর চাপিয়ে দিতে হবে। যখন (الْمُكْرٰى بِه) ‘‘যার মাধ্যমে ভাড়া দেয়া হয়েছে’’ জমিন হতে উৎপন্ন দ্রব্যের অংশ স্বরূপ খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত হবে, অতঃপর ব্যক্তি যখন নিজ যিম্মায় নির্দিষ্ট খাদ্যের মাধ্যমে অথবা উপস্থিত খাদ্যের মাধ্যমে ভাড়া নিবে এবং জমির মালিক তা নিয়ে নিবে তখন বৈধতা হতে কোনো বাধা দানকারী থাকবে না। আল্লাহ সর্বাধিক ভালো জানেন। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৩৪৬-২৩৪৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বাগান ও জমিনের বর্গা (পরস্পর সেচকার্য করা ও ভাগে কৃষিকাজ, বর্গাচাষ করা)

২৯৭৫-[৪] রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মদীনায় সর্বাধিক জমিনের মালিক ছিলাম। আমাদের মধ্যে কেউ তার জমিন এভাবে বর্গা দিতো আর বলতো যে, জমিনের এ অংশ আমার আর ঐ অংশ তোমার অথচ কখনও কখনও এ স্থানে ফসল উৎপাদিত হতো, আর ঐ স্থানে হতো না। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে এটা নিষেধ করলেন। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُسَاقَاةِ وَالْمُزَارَعَةِ

وَعَن رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ قَالَ: كُنَّا أَكْثَرَ أَهْلِ الْمَدِينَةِ حَقْلًا وَكَانَ أَحَدُنَا يُكْرِي أَرْضَهُ فَيَقُولُ: هَذِهِ الْقِطْعَةُ لِي وَهَذِهِ لَكَ فَرُبَّمَا أَخْرَجَتْ ذِهِ وَلَمْ تُخْرِجْ ذِهِ فَنَهَاهُمُ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

وعن رافع بن خديج قال: كنا اكثر اهل المدينة حقلا وكان احدنا يكري ارضه فيقول: هذه القطعة لي وهذه لك فربما اخرجت ذه ولم تخرج ذه فنهاهم النبي صلى الله عليه وسلم

ব্যাখ্যা : (حَقْلًا) উত্তম পানি। একমতে বলা হয়েছে- চাড়া গাছ যখন তার নলা মোটা হয়ে শক্ত হওয়ার পূর্বে তার পাতা বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত হয়, অতঃপর শস্যের উপর প্রয়োগ করা হয়, এ হতেই مُحَاقَلَةَ (মুহাকালাহ্) শব্দের উৎপত্তি। অতঃপর একে مزارعة উপর প্রয়োগ করা হয়েছে। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৩৩২)

(هٰذِهِ الْقِطْعَةُ لِىْ) এ অংশ আমার অর্থাৎ এ অংশে যে ফসল উৎপাদন হবে তা আমার। (وَهٰذِه لَكَ) এ অংশ তোমার অর্থাৎ এ অংশে যা উৎপাদন হবে তা তোমার।

(فَرُبَّمَا أَخْرَجَتْ ذِهْ وَلَمْ تُخْرِجْ ذِهْ) কখনো কখনো এ অংশে ফসল হতো আর ঐ অংশে ফসল হতো না।

(فَنَهَاهُمُ النَّبِىِّ ﷺ) ফলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে নিষেধ করলেন। অর্থাৎ ধোঁকা তথা একপক্ষের ক্ষতিতে নিপতিত হওয়ার আশঙ্কা থাকার কারণে এ পদ্ধতিতে জমি বর্গা দেয়া নিষেধ করলেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বাগান ও জমিনের বর্গা (পরস্পর সেচকার্য করা ও ভাগে কৃষিকাজ, বর্গাচাষ করা)

২৯৭৬-[৫] ’আমর হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ত্বাঊসকে বললাম, আপনি যদি জমিন বর্গা দেয়া ছেড়ে দিতেন! কেননা, ’উলামাগণ মনে করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা বারণ করেছেন। তিনি বললেন, হে ’আমর! আমি কৃষকদের দান করি এবং সাহায্যও করি। আমাদের ’উলামাগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী ব্যক্তি ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা নিষেধ করেননি। তবে নিশ্চয় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কথা বলেছেন, তোমাদের কারো পক্ষে মুসলিম ভাইকে (বিনিময় ব্যতীত ধাররূপে) জমিন দেয়া, তার ওপর নির্দিষ্ট কর গ্রহণ করার চেয়ে উত্তম। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُسَاقَاةِ وَالْمُزَارَعَةِ

وَعَن عَمْرو قَالَ: قلت لطاووس: لَوْ تُرِكَتِ الْمُخَابَرَةُ فَإِنَّهُمْ يَزْعُمُونَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْهُ قَالَ: أَيْ عَمْرٌو إِنِّي أُعْطِيهِمْ وَأُعِينُهُمْ وَإِنَّ أَعْلَمَهُمْ أَخْبَرَنِي يَعْنِي ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ ينْه عَنهُ وَلَكِن قَالَ: «أَلا يَمْنَحْ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَأْخُذَ عَلَيْهِ خَرْجًا مَعْلُومًا»

وعن عمرو قال: قلت لطاووس: لو تركت المخابرة فانهم يزعمون ان النبي صلى الله عليه وسلم نهى عنه قال: اي عمرو اني اعطيهم واعينهم وان اعلمهم اخبرني يعني ابن عباس ان النبي صلى الله عليه وسلم لم ينه عنه ولكن قال: «الا يمنح احدكم اخاه خير له من ان ياخذ عليه خرجا معلوما»

ব্যাখ্যা: (إِنَّ أَعْلَمَهُمْ) অর্থাৎ মদীনাবাসী ও তার যুগে যে সকল সাহাবীগণ ছিল তাদের মাঝে অধিক জ্ঞানী। (أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ لَمْ يَنْهَ عَنهُ) অর্থাৎ- রাফি‘-এর হাদীসে উল্লেখিত পদ্ধতিতে জমি ভাড়া দেয়া হত।

(مَعْلُومًا) আকাশের বৃষ্টি এবং জমিনের উৎকর্ষতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকার কারণে, নির্দিষ্ট কর গ্রহণ না করে বিনা ভাড়ায় জমি চাষ করার সুযোগ দিতে উৎসাহ প্রদান করেছেন যাতে তার সম্পদ হাত ছাড়া হয়ে না যায়।

তূরিবিশতী বলেনঃ চাষাবাদের ঐ হাদীসগুলো যা লেখক বর্ণনা করেছেন এবং হাদীসের কিতাবসমূহে ঐ সকল আরও যত হাদীস প্রমাণিত আছে সে হাদীসগুলোর বাহ্যিকরূপে পরস্পর বিরোধী ও বৈপরীত্য আছে। এ হাদীসগুলোর মাঝে সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে সামষ্টিক কথা হলো যে, রাফি‘ বিন খদীজ নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে অনেক হাদীস শুনেছে এবং তার কারণ বিভিন্ন। অতঃপর সকল হাদীসগুলোকে তিনি একই সূত্রে শৃঙ্খলিত করেছেন। অতঃপর এ কারণেই তিনি একবার বলেন, আমি আল্লাহর রসূলকে বলতে শুনেছি। কখনো বলেন, আমার কাছে আমার চাচা সম্পর্কিত ব্যক্তি এবং অন্য ব্যক্তি হাদীস বর্ণনা করেছেন। আমার দু’ চাচা আমার কাছে সংবাদ দিয়েছেন ঐ সকল হাদীসগুলোতে ত্রুটি হলো এটাই যে, তারা বিশৃঙ্খল শর্ত করত, অনির্ধারিত ভাড়ায় তারা পারস্পরিক লেনদেন করত। ফলে তাদের এ থেকে নিষেধ করা হয়।

কতকে আছে, তারা জমি ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে পরস্পরে বিতর্ক করত, পরিশেষে এ বিষয় তাদেরকে পারস্পরিক মুখোমুখী হওয়ার দিকে ঠেলে দিত। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটাই যদি তোমাদের অবস্থা হয় তাহলে শস্যক্ষেত্র ভাড়া দিবে না আর যায়দ বিন সাবিত এটা তার হাদীসে বর্ণনা করেছেন। আর কতক হাদীসে আছে, নিশ্চয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম ব্যক্তি তার ভাইয়ের কাছ থেকে জমি বাবদ নির্দিষ্ট ভূমিকর গ্রহণ করা। অতঃপর আকাশের বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাবে অথবা জমির উৎকর্ষতা পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার ফলে অযথা তার সম্পদ চলে যাবে। ফলে পরস্পর বিভেদ ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। আর ইবনু ‘আব্বাস-এর হাদীস হতে এটা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে, যার ভূমি আছে সে যেন চাষ করে অথবা তার ভাইকে বিনা ভাড়ায় চাষ করতে দেয়। আর ওটা হলো মানবতা ও সহযোগিতার পন্থা। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বাগান ও জমিনের বর্গা (পরস্পর সেচকার্য করা ও ভাগে কৃষিকাজ, বর্গাচাষ করা)

২৯৭৭-[৬] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তির কোনো জমিন আছে সে যেন তা চাষ করে অথবা তার ভাইকে চাষ করতে দেয়। যদি সে তা না করে, তবে যেন সে তার জমিন ধরে রাখে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُسَاقَاةِ وَالْمُزَارَعَةِ

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ كَانَتْ لَهُ أَرْضٌ فَلْيَزْرَعْهَا أَوْ لِيَمْنَحْهَا أَخَاهُ فَإِنْ أَبَى فَلْيُمْسِكْ أرضه»

وعن جابر قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من كانت له ارض فليزرعها او ليمنحها اخاه فان ابى فليمسك ارضه»

ব্যাখ্যা: মুযহির বলেনঃ মানুষের সম্পদ থেকে উপকার সাধন হওয়া উচিত। অতএব যার জমি আছে সে তা চাষ করবে যাতে তা থেকে তার উপকার লাভ হয়। অথবা তা তার ভাইকে চাষ করতে দিবে যাতে তাত্থেকে তার সাওয়াব অর্জিত হয়। এ দু’ পন্থায় কোনো পন্থা উপকার না নিয়ে সে যদি তার জমি আটকিয়ে রাখে রাখুক। এটা তার জন্য ধমকি।

ইমাম নববী (রহঃ) বলেনঃ ইমাম শাফি‘ঈ এবং তাঁর অনুসারীদের মতে স্বর্ণ বা রূপার বিনিময়ে জমি ভাড়া দেয়া বৈধ। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions

পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বাগান ও জমিনের বর্গা (পরস্পর সেচকার্য করা ও ভাগে কৃষিকাজ, বর্গাচাষ করা)

২৯৭৮-[৭] আবূ উমামাহ্ আল বাহিলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি একটি লাঙ্গল ও চাষযোগ্য কিছু যন্ত্রপাতি দেখে বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে জাতির ঘরেই এগুলো ঢুকবে, সে জাতিতেই আল্লাহ লাঞ্ছনা প্রবেশ করাবেন। (বুখারী)[1]

بَابُ الْمُسَاقَاةِ وَالْمُزَارَعَةِ

وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ وَرَأَى سِكَّةً وَشَيْئًا مِنْ آلَةِ الْحَرْثِ فَقَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «لَا يَدْخُلُ هَذَا بَيْتَ قوم إِلَّا أدخلهُ الذل» . رَوَاهُ البُخَارِيّ

وعن ابي امامة وراى سكة وشيىا من الة الحرث فقال: سمعت النبي صلى الله عليه وسلم يقول: «لا يدخل هذا بيت قوم الا ادخله الذل» . رواه البخاري

ব্যাখ্যা: কাশমীহানী-এর বর্ণনাতে (إِلَّا أَدْخَلَهُ الذُّلَّ) এসেছে, আর আবূ নু‘আয়ম-এর উল্লেখিত বর্ণনাতে إِلَّا أَدْخَلُوا عَلٰى أَنْفُسَِهِمْ ذُلًّا لَا يَخْرُجُ عَنْهُمْ إِلٰى يَوْمِ الْقِيَامَةِ এসেছে- এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো জমিনের অধিকারসমূহ হতে তাদের ওপর যা আবশ্যক হয়ে পড়ে, শাসকগণ জমির কারণে যে অধিকার তাদের কাছ থেকে দাবী করে থাকে জমিতে কাজ করা সর্বপ্রথম যিম্মীদের ওপর সূচনা লাভ করে, তখন সাহাবীগণ ঐ কাজে আত্মনিয়োগ করা অপছন্দ করতেন।

ইবনুত্ তীন বলেনঃ এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তরফ হতে অদৃশ্য সম্পর্কে সংবাদ প্রদান। কেননা বর্তমান দৃশ্য হলো- অধিকাংশ নির্যাতন চাষীদের ওপর বর্তায়। (ফাতহুল বারী ৫ম খন্ড, হাঃ ২৩২১)

কিছু বিদ্বানগণ বলেন যে, হাদীসের বাহ্যিক অর্থে চাষের মধ্যে যিল্লাতি বলে বুঝা যায়। প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি তেমন নয়। কেননা তাতে মানুষের কল্যাণ নিহিত আছে, তাই চাষ করা মুস্তাহাব যা সহীহ হাদীস দ্বারা সাব্যস্ত।

অত্র হাদীসে এ কথা বলার কারণ এই যে, সাহাবীগণ যাতে জিহাদ পরিত্যাগ করে চাষের কাজে মনোযোগী না হয়ে পরে। কেননা তাতে কাফিরদের বিজয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এটাই হলো বড় যিল্লাতি। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع) 12. Business Transactions
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে