২৯৭৬

পরিচ্ছেদঃ ১৩. প্রথম অনুচ্ছেদ - বাগান ও জমিনের বর্গা (পরস্পর সেচকার্য করা ও ভাগে কৃষিকাজ, বর্গাচাষ করা)

২৯৭৬-[৫] ’আমর হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ত্বাঊসকে বললাম, আপনি যদি জমিন বর্গা দেয়া ছেড়ে দিতেন! কেননা, ’উলামাগণ মনে করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা বারণ করেছেন। তিনি বললেন, হে ’আমর! আমি কৃষকদের দান করি এবং সাহায্যও করি। আমাদের ’উলামাগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ জ্ঞানী ব্যক্তি ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা নিষেধ করেননি। তবে নিশ্চয় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ কথা বলেছেন, তোমাদের কারো পক্ষে মুসলিম ভাইকে (বিনিময় ব্যতীত ধাররূপে) জমিন দেয়া, তার ওপর নির্দিষ্ট কর গ্রহণ করার চেয়ে উত্তম। (বুখারী ও মুসলিম)[1]

بَابُ الْمُسَاقَاةِ وَالْمُزَارَعَةِ

وَعَن عَمْرو قَالَ: قلت لطاووس: لَوْ تُرِكَتِ الْمُخَابَرَةُ فَإِنَّهُمْ يَزْعُمُونَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَهَى عَنْهُ قَالَ: أَيْ عَمْرٌو إِنِّي أُعْطِيهِمْ وَأُعِينُهُمْ وَإِنَّ أَعْلَمَهُمْ أَخْبَرَنِي يَعْنِي ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ ينْه عَنهُ وَلَكِن قَالَ: «أَلا يَمْنَحْ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَأْخُذَ عَلَيْهِ خَرْجًا مَعْلُومًا»

وعن عمرو قال: قلت لطاووس: لو تركت المخابرة فانهم يزعمون ان النبي صلى الله عليه وسلم نهى عنه قال: اي عمرو اني اعطيهم واعينهم وان اعلمهم اخبرني يعني ابن عباس ان النبي صلى الله عليه وسلم لم ينه عنه ولكن قال: «الا يمنح احدكم اخاه خير له من ان ياخذ عليه خرجا معلوما»

ব্যাখ্যা: (إِنَّ أَعْلَمَهُمْ) অর্থাৎ মদীনাবাসী ও তার যুগে যে সকল সাহাবীগণ ছিল তাদের মাঝে অধিক জ্ঞানী। (أَنَّ النَّبِىَّ ﷺ لَمْ يَنْهَ عَنهُ) অর্থাৎ- রাফি‘-এর হাদীসে উল্লেখিত পদ্ধতিতে জমি ভাড়া দেয়া হত।

(مَعْلُومًا) আকাশের বৃষ্টি এবং জমিনের উৎকর্ষতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকার কারণে, নির্দিষ্ট কর গ্রহণ না করে বিনা ভাড়ায় জমি চাষ করার সুযোগ দিতে উৎসাহ প্রদান করেছেন যাতে তার সম্পদ হাত ছাড়া হয়ে না যায়।

তূরিবিশতী বলেনঃ চাষাবাদের ঐ হাদীসগুলো যা লেখক বর্ণনা করেছেন এবং হাদীসের কিতাবসমূহে ঐ সকল আরও যত হাদীস প্রমাণিত আছে সে হাদীসগুলোর বাহ্যিকরূপে পরস্পর বিরোধী ও বৈপরীত্য আছে। এ হাদীসগুলোর মাঝে সমন্বয় সাধনের ক্ষেত্রে সামষ্টিক কথা হলো যে, রাফি‘ বিন খদীজ নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে অনেক হাদীস শুনেছে এবং তার কারণ বিভিন্ন। অতঃপর সকল হাদীসগুলোকে তিনি একই সূত্রে শৃঙ্খলিত করেছেন। অতঃপর এ কারণেই তিনি একবার বলেন, আমি আল্লাহর রসূলকে বলতে শুনেছি। কখনো বলেন, আমার কাছে আমার চাচা সম্পর্কিত ব্যক্তি এবং অন্য ব্যক্তি হাদীস বর্ণনা করেছেন। আমার দু’ চাচা আমার কাছে সংবাদ দিয়েছেন ঐ সকল হাদীসগুলোতে ত্রুটি হলো এটাই যে, তারা বিশৃঙ্খল শর্ত করত, অনির্ধারিত ভাড়ায় তারা পারস্পরিক লেনদেন করত। ফলে তাদের এ থেকে নিষেধ করা হয়।

কতকে আছে, তারা জমি ভাড়া দেয়ার ক্ষেত্রে পরস্পরে বিতর্ক করত, পরিশেষে এ বিষয় তাদেরকে পারস্পরিক মুখোমুখী হওয়ার দিকে ঠেলে দিত। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এটাই যদি তোমাদের অবস্থা হয় তাহলে শস্যক্ষেত্র ভাড়া দিবে না আর যায়দ বিন সাবিত এটা তার হাদীসে বর্ণনা করেছেন। আর কতক হাদীসে আছে, নিশ্চয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিম ব্যক্তি তার ভাইয়ের কাছ থেকে জমি বাবদ নির্দিষ্ট ভূমিকর গ্রহণ করা। অতঃপর আকাশের বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যাবে অথবা জমির উৎকর্ষতা পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার ফলে অযথা তার সম্পদ চলে যাবে। ফলে পরস্পর বিভেদ ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হওয়া সম্ভাবনা রয়েছে। আর ইবনু ‘আব্বাস-এর হাদীস হতে এটা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়েছে যে, যার ভূমি আছে সে যেন চাষ করে অথবা তার ভাইকে বিনা ভাড়ায় চাষ করতে দেয়। আর ওটা হলো মানবতা ও সহযোগিতার পন্থা। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১২: ক্রয়-বিক্রয় (ব্যবসা) (كتاب البيوع)