পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১৪-[১৬] আবূ খলদাহ্ আয্ যুরাক্বী হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন আমরা আমাদের সাথি এক ব্যক্তি দেউলিয়াগ্রস্ত হয়ে পড়লে তার ব্যাপারে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। তিনি বললেন, এ জাতীয় বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, কোনো ব্যক্তি দেউলিয়া হয়ে মৃত্যুবরণ করলে তার কাছে যে ব্যক্তি তার কোনো বস্তু হুবহু সংরক্ষিত পায়, সেই তার অগ্রাধিকারী হবে। (শাফি’ঈ ও ইবনু মাজাহ)[1]
عَنْ أَبِي خَلْدَةَ الزُّرَقِيِّ قَالَ: جِئْنَا أَبَا هُرَيْرَةَ فِي صَاحِبٍ لَنَا قَدْ أَفْلَسَ فَقَالَ: هَذَا الَّذِي قَضَى فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَيُّمَا رَجُلٍ مَاتَ أَوْ أَفْلَسَ فَصَاحِبُ الْمَتَاعِ أَحَقُّ بِمَتَاعِهِ إِذَا وَجَدَهُ بِعَيْنِه» . رَوَاهُ الشَّافِعِي وَابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: উল্লেখিত আলোচনা ২৮৯৯ নং হাদীস দ্রষ্টব্য।
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১৫-[১৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মু’মিন তার ঋণের কারণে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে থাকে যতক্ষণ না তার পক্ষ হতে তা পরিশোধ করা হয়। (শাফি’ঈ, আহমাদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী; আর তিরমিযী বলেন, হাদীসটি গরীব)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عَلَيْهِ وَسلم: «نَفْسُ الْمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ بِدَيْنِهِ حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ» . رَوَاهُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ غَرِيب
ব্যাখ্যাঃ ত্ববারানীতে ইবনু উমার (রাঃ)-এর বর্ণনায় রয়েছে, ঋণ দু’ প্রকারঃ
১. যে ব্যক্তি তার ওপর থাকা ঋণ পরিশোধের ইচ্ছা নিয়ে মৃত্যুবরণ করল, আমি (নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার অভিভাবক।
২. যে ব্যক্তি ঋণ পরিশোধের ইচ্ছা না করে (আত্মসাৎ করার ইচ্ছায়) মৃত্যুবরণ করল। এর কারণে সেদিন তার নেকী হতে কর্তন করা হবে, যেদিনে কোনো দিরহাম ও দীনার থাকবে না।
‘আল্লামা শাওকানী (রহঃ) বলেন, এমন অর্থবোধক অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটা বলেছেন, ঋণী ব্যক্তির ওপর জানাযা নিষিদ্ধ হওয়ার পর যখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে অনেক দেশে বিজয় দান করলেন এবং প্রচুর সম্পদ অর্জিত হলো। তখন তিনি ঋণগ্রস্ত ব্যক্তির জাযানাহ্ আদায় করতেন এবং বায়তুল মাল হতে তাদের ঋণ পরিশোধ করতেন। আর এটাই যাকাত বণ্টনের আটটি খাতের একটি। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৩য় খন্ড, হাঃ ১০৭৮)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১৬-[১৮] বারা ইবনু ’আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি ঋণের দায়ে আবদ্ধ থাকবে। কিয়ামত দিবসে তার রবের কাছে সে নিঃসঙ্গ অবস্থায় থাকার অভিযোগ করতে থাকবে। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]
وَعَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «صَاحِبُ الدَّيْنِ مَأْسُورٌ بِدَيْنِهِ يَشْكُو إِلَى رَبِّهِ الْوَحْدَةَ يَوْمَ الْقِيَامَة» . رَوَاهُ فِي شرح السّنة
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১৭-[১৯] অপর এক হাদীসে বর্ণিত রয়েছে, মু’আয (রাঃ) ঋণ নিতেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট তাঁর পাওনাদারগণ উপস্থিত হলে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দেনা পরিশোধের জন্য মু’আয-এর সমস্ত সম্পদ বিক্রি করে দিলেন। এমনকি মু’আয (রাঃ) দেউলিয়া হয়ে পড়লেন। মাসাবীহুস্ সুন্নাহ্’তে হাদীসটি মুরসালরূপে বর্ণিত হয়েছে, মূল কিতাবসমূহে হাদীসটি পাওয়া যাইনি, তবে ’মুনতাকা’ কিতাবে তা বর্ণিত আছে।[1]
وَرُوِيَ أَنَّ مُعَاذًا كَانَ يَدَّانُ فَأَتَى غُرَمَاؤُهُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَاعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَالَهُ كُلَّهُ فِي دَيْنِهِ حَتَّى قَامَ مُعَاذٌ بِغَيْرِ شَيْءٍ. مُرْسَلٌ هَذَا لَفْظُ الْمَصَابِيحِ. وَلَمْ أَجِدْهُ فِي الْأُصُول إِلَّا فِي الْمُنْتَقى
ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে এ মর্মে দলীল পাওয়া যায় যে, কোনো ব্যক্তি দেউলিয়া হলে কিংবা মারা গেলে, ঋণের পাওনাদারের পাওনা সন্ধান করলে বিচারক মৃতব্যক্তির সম্পদ বিক্রি করতে পারবেন। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১৮-[২০] ’আব্দুর রহমান ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, মু’আয ইবনু জাবাল তরুণ দানশীল ছিলেন- কোনো কিছু গচ্ছিত রাখতেন না। এমনকি তিনি ঋণে দায়বদ্ধ হয়ে পড়লেন, ফলে তাঁর সমস্ত সম্পত্তি ঋণে নিমজ্জিত হয়ে গেল। এমতাবস্থায় তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে অনুরোধ করলেন- তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যেন তাঁর পাওনাদারগণের কাছে সুপারিশ করেন। পাওনাদারগণের পক্ষে প্রাপ্যের দাবি মাওকূফ করা যদি সম্ভব হতো, তবে অবশ্যই মু’আয-এর জন্য তা ছেড়ে দিতেন। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুপারিশ করেছিলেন। পরিশেষে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পাওনাদারগণের জন্য মু’আয (রাঃ)-এর সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করে দিলেন। এমনকি মু’আয(রাঃ) দেউলিয়া হয়ে পড়লেন। (সা’ঈদ তাঁর ’সুনান’ গ্রন্থে মুরসালরূপে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন)[1]
وَعَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: كَانَ مُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ شَابًّا سَخِيًّا وَكَانَ لَا يُمْسِكُ شَيْئًا فَلَمْ يَزَلْ يُدَانُ حَتَّى أَغَرَقَ مَالَهُ كُلَّهُ فِي الدَّيْنِ فَأَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَكَلَّمَهُ لِيُكَلِّمَ غُرَمَاءَهُ فَلَوْ تَرَكُوا لِأَحَدٍ لَتَرَكُوا لِمُعَاذٍ لِأَجْلِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَبَاعَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَالَهُ حَتَّى قَامَ مُعَاذٌ بِغَيْرِ شَيْءٍ. رَوَاهُ سعيد فِي سنَنه مُرْسلا
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯১৯-[২১] শারীদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সামর্থ্যবান ব্যক্তি গড়িমসি করলে তাকে লজ্জিত করা এবং শাস্তি দেয়া জায়িয। ’আব্দুল্লাহ ইবনু মুবারক বলেছেন, লজ্জিত করার অর্থ তার প্রতি কঠোর বাক্য প্রয়োগ করা, আর শাস্তি দেয়ার অর্থ তাকে জেলখানায় রাখা। (আবূ দাঊদ ও নাসায়ী)[1]
وَعَنِ الشَّرِيدِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَيُّ الْوَاجِدِ يُحِلُّ عِرْضَهُ وَعُقُوبَتَهُ» قَالَ ابْنُ الْمُبَارَكِ: يُحِلُّ عِرْضَهُ: يُغَلَّظُ لَهُ. وَعُقُوبَتَهُ: يُحْبَسُ لَهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيّ
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯২০-[২২] আবূ সা’ঈদ আল খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট একটি জানাযা উপস্থিত করা হলো তার সালাত আদায়ের জন্য। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের সাথী মৃত ব্যক্তির ওপর কোনো ঋণ আছে কি? লোকেরা বলল, জি হ্যাঁ। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, ঋণ পরিশোধের কোনো ব্যবস্থা রেখে গেছে কি? লোকেরা বলল, জি না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযার সালাত আদায় করে নাও। তখন ’আলী ইবনু আবূ ত্বালিব(রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! তার ঋণ পরিশোধের দায়িত্ব আমি নিলাম। অতঃপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার জানাযার সালাত আদায় করলেন।
অপর এক বর্ণনায় আরো আছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ’আলী -কে বললেন, আল্লাহ তা’আলা তোমাকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দান করুন, যেভাবে তুমি তোমার মুসলিম ভাইকে মুক্ত করেছো। যে কোনো মুসলিম তার ভাইকে ঋণ হতে মুক্ত করবে, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা’আলা তাকে মুক্তি দান করবেন। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: أَتَى النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِجِنَازَةٍ لِيُصَلِّيَ عَلَيْهَا فَقَالَ: «هَلْ عَلَى صَاحِبِكُمْ دَيْنٌ؟» قَالُوا: نَعَمْ قَالَ: «هَلْ تَرَكَ لَهُ مِنْ وَفَاءٍ؟» قَالُوا: لَا قَالَ: «صَلُّوا عَلَى صَاحِبِكُمْ» قَالَ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ: عَلَيَّ دَيْنُهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَتَقَدَّمَ فَصَلَّى عَلَيْهِ. وَفِي رِوَايَةٍ مَعْنَاهُ وَقَالَ: «فَكَّ اللَّهُ رِهَانَكَ مِنَ النَّارِ كَمَا فَكَكْتَ رِهَانَ أَخِيكَ الْمُسْلِمِ لَيْسَ مِنْ عَبْدٍ مُسْلِمٍ يَقْضِي عَنْ أَخِيهِ دَيْنَهُ إِلَّا فَكَّ اللَّهُ رِهَانَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» . رَوَاهُ فِي شَرْحِ السُّنَّةِ
ব্যাখ্যা: নিশ্চয় ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিদের আত্মাগুলো ঋণের জন্য দায়ী থাকবে, যেমনটা দুনিয়াতে ছিল। আর মানুষেরা কিয়ামতের দিন তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী থাকবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘‘প্রত্যেক আত্মা তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী’’- (সূরা আল মুদ্দাসসির ৭৪ : ৩৮)। (মিরকাতুল মাফাতীহ)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯২১-[২৩] সাওবান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তির মৃত্যু হবে অহংকারমুক্ত, খিয়ানাতমুক্ত ও ঋণমুক্ত অবস্থায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও দারিমী)[1]
وَعَنْ ثَوْبَانَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ مَاتَ وَهُوَ بَرِيءٌ مِنَ الْكِبْرِ وَالْغُلُولِ وَالدَّيْنِ دَخَلَ الْجَنَّةَ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَه والدارمي
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীস থেকে বুঝা যায় যে, হাদীসে উল্লেখিত তিনটি বিষয় থেকে যে মুক্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ না করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ খন্ড, হাঃ ১৫৭২)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯২২-[২৪] আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বান্দা আল্লাহ তা’আলার নিকট উপস্থিত হলে কবীরা গুনাহসমূহের পরেই সর্বশ্রেষ্ঠ গুনাহগার সাব্যস্ত হবে এমতাবস্থায় মৃত্যুবরণ করা যে, সে ঋণগ্রস্ত অথচ তা পরিশোধের ব্যবস্থা রেখে যায়নি। (আহমাদ ও আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ أَبِي مُوسَى عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ أَعْظَمَ الذُّنُوبِ عِنْدَ اللَّهِ أَنْ يَلْقَاهُ بِهَا عَبْدٌ بَعْدَ الْكَبَائِرِ الَّتِي نَهَى اللَّهُ عَنْهَا أَنْ يَمُوتَ رَجُلٌ وَعَلَيْهِ دَيْنٌ لَا يَدَعُ لَهُ قَضَاءً» . رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: আল্লাহর অবাধ্যতা হলো, কবীরা গুনাহের কাজ, কিন্তু ঋণ নেয়া আল্লাহর অবাধ্যতা নয়। বরং কর্জ কিংবা ঋণ দেয়া বৈধ। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অতি কঠিনভাবে বলেছেন সে ব্যক্তির জন্য, যে ঋণ রেখে মারা যায় এবং তা পরিশোধের জন্য কোনো সম্পদ রেখে যায় না, যা দ্বারা মানুষের পাওনা পরিশোধ করা যায়। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৩৪০)
পরিচ্ছেদঃ ৯. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - দেউলিয়া (দারিদ্র্য) হওয়া এবং ঋণীকে অবকাশ দান
২৯২৩-[২৫] ’আমর ইবনু ’আওফ আল্ মুযানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিমদের পরস্পর আপোস-মীমাংসাকে ইসলাম অনুমোদন করে। কিন্তু যে মীমাংসা হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করবে, তা জায়িয নয়। মুসলিমগণ পরস্পরের মধ্যে যে শর্ত করবে, তা অবশ্যই পালন করতে হবে। কিন্তু যে শর্ত ও চুক্তি হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল করবে তা জায়িয হবে না। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ ও আবূ দাঊদ; আবূ দাঊদ বর্ণনা করেন ’শর্তসমূহ’ পর্যন্ত)[1]
وَعَن عَمْرو بن عَوْف الْمُزَنِيِّ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الصُّلْحُ جَائِزٌ بَيْنَ الْمُسْلِمِينَ إِلَّا صُلْحًا حَرَّمَ حَلَالًا أَوْ أَحَلَّ حَرَامًا وَالْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ إِلَّا شَرْطًا حَرَّمَ حَلَالًا أَوْ أَحَلَّ حَرَامًا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَأَبُو دَاوُدَ وَانْتَهَتْ رِوَايَته عِنْد قَوْله «شروطهم»
ব্যাখ্যা: ‘নায়নুল আওত্বার’-এ রয়েছে, উল্লেখিত বক্তব্যটা সব ধরনের মীমাংসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, তবে আলোচ্য হাদীস যা আলাদা করেছে তা ব্যতীত। তিরমিযীর অপর বর্ণনায় রয়েছে যে, মুসলিমদের মাঝে মীমাংসা করা বৈধ। তবে সে মীমাংমা ছাড়া যার দ্বারা হালাল হারাম হয়ে যাবে এবং হারাম হালাল হয়ে যাবে। আর তিরমিযী এ হাদীসকে সহীহ বলেছেন। তবে অধিকাংশ বর্ণনায় ‘‘হাসান’’ হুকুম লাগানো হয়েছে। (‘আওনুল মা‘বূদ ৬ষ্ঠ খন্ড, হাঃ ৩৫৯১)