পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফাহ্ ও মুযদালিফা হতে ফিরে আসা
২৬১৬-[১৩] ইয়া’কূব ইবনু ’আসিম ইবনু ’উরওয়াহ্ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি শারীদ (ইবনু সুওয়াইদ)-কে বলতে শুনেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে (’আরাফাহ্ হতে) রওয়ানা হয়েছি। মুযদালিফায় না পৌঁছা পর্যন্ত তাঁর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর) পা কোথাও মাটি স্পর্শ করেনি। (আবূ দাঊদ)[1]
عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُرْوَةَ أَنَّهُ سمع الشَّريدَ يَقُولُ: أَفَضْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَمَا مَسَّتْ قَدَمَاهُ الْأَرْضَ حَتَّى أَتَى جمْعاً. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: বর্ণিত হাদীসের সাথে বৈপরীত্য সৃষ্টি হয় যে হাদীসটি শায়খাইন, ইমাম আবূ দাঊদ ও ইমাম নাসায়ী (রহঃ) উসামাহ্ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আরাফাহ্ হতে ফিরে এসে শা‘ব নামক স্থানে প্রসাব করলেন।
অন্য বর্ণনায় আছে যখন শা‘ব নামক স্থানে আসলেন তখন সওয়ারীকে বসালেন। অতঃপর প্রসাব-পায়খানা করার পর উযূ করলেন কিন্তু পূর্ণাঙ্গ উযূ করলেন না। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হালকাভাবে উযূ করলেন। আমি বললাম, সালাত? তিনি বললেন, সামনে। তারপর সওয়ার হলেন। যখন মুযদালিফায় আসলেন, নেমে উযূ করলেন এবং পরিপূর্ণ উযূ করলেন। অতঃপর সালাতের ইক্বামাত দেয়া হলো তারপর মাগরিবের সালাত (সালাত/নামাজ/নামায) আদায় করলেন।
সমাধানঃ শারীদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ‘আরাফাহ্ হতে মুযদালিফা পর্যন্ত ভ্রমণের বর্ণনা দিয়েছে যে, তিনি ঐ দূরত্ব পর্যন্ত সওয়ারী হয়েছেন কিন্তু দুই পা দিয়ে দ্রুত হাঁটেননি। এর অর্থ এই নয় যে, তিনি উট থেকে নামেননি। সুতরাং কোন বৈপরীত্য নেই।
শারীদের ওপর উসামার হাদীস প্রাধান্য পাবে, কেননা উট থেকে নামার প্রমাণ রয়েছে। আর হ্যাঁ-বোধক, না-বোধকের উপর প্রাধান্য পায়। আর উসামাহ্ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সওয়ারী হয়েছেন তিনি তাঁর সম্পর্কে বেশি ভাল জানেন কিন্তু শারীদ তাঁর উট থেকে নামা দেখেননি। এজন্য তিনি নাকচ করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৫. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - ‘আরাফাহ্ ও মুযদালিফা হতে ফিরে আসা
২৬১৭-[১৪] ইবনু শিহাব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে সালিম (রহঃ) (’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ)-এর পুত্র) বলেছেন, যে বছর হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ ’আব্দুল্লাহ ইবনুয্ যুবায়র-এর বিরুদ্ধে সৈন্য-সামন্ত নিয়ে মক্কায় পৌঁছেন, (আমার পিতা) ’আব্দুল্লাহকে জিজ্ঞেস করলেন, ’আরাফার দিনে ’আরাফার ময়দানে আমরা হজের কাজ কিভাবে সম্পন্ন করবো? সালিমই (তাৎক্ষণিক) বলেন, আপনি যদি সুন্নাতের অনুসারী হয়ে করতে চান, তাহলে ’আরাফার দিন সকালে শীঘ্র সালাত (সালাত/নামাজ/নামায) আদায় করবেন (যুহর ও ’আসর এক সাথে তথা যুহরের প্রথম সময়ে)। তখন (আমার পিতা) ’আব্দুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) বললেন, সে (সালিম) সঠিক বলেছে, কেননা সাহাবীগণ সুন্নাত অনুসারে যুহর ও ’আসর একত্রে সালাত (সালাত/নামাজ/নামায) আদায় করতেন।
রাবী ইবনু শিহাব বলেন, আমি সালিমকে জিজ্ঞেস করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এটা করেছেন (অর্থাৎ- যুহর ও ’আসর একত্রে আদায় করেছেন)? তখন সালিম (রহঃ) বললেন, তাঁরা কি রসূলের সুন্নাত ব্যতীত অন্য কিছুর অনুসরণ করতেন? অর্থাৎ- করতেন না। (বুখারী)[1]
وَعَن ابنِ شهابٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي سَالِمٌ أَنَّ الْحَجَّاجَ بْنَ يُوسُفَ عَامَ نَزَلَ بِابْنِ الزُّبَيْرِ سَأَلَ عَبْدَ اللَّهِ: كَيْفَ نَصْنَعُ فِي الْمَوْقِفِ يَوْمَ عَرَفَةَ؟ فَقَالَ سَالِمٌ إِنْ كُنْتَ تُرِيدُ السُّنَّةَ فَهَجِّرْ بِالصَّلَاةِ يَوْمَ عَرَفَةَ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ: صَدَقَ إِنَّهُمْ كَانُوا يَجْمَعُونَ بَيْنَ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ فِي السُّنَّةِ فَقُلْتُ لِسَالِمٍ: أَفَعَلَ ذَلِكَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالَ سَالِمٌ: وَهل يتَّبعونَ فِي ذلكَ إِلا سنَّتَه؟ رَوَاهُ البُخَارِيّ
ব্যাখ্যা: হাদীসটি ‘আরাফার ময়দানে অবস্থান করার সময় করণীয় ‘আমলের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে। আর তা হচ্ছে; যুহর ও ‘আসরের সালাতকে একত্রিত করে যুহরের আওয়াল (প্রথম) ওয়াক্তে পড়া। এভাবে সাহাবীগণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাহ অনুযায়ী যুহর ও ‘আসরের সালাত (সালাত/নামাজ/নামায) একত্রিত করে আদায় করতেন।
খাম্বায় কংকর নিক্ষেপ করাঃ অর্থাৎ- খাম্বাতে কংকর নিক্ষেপ করার সময় অথবা তার হুকুম। খাম্বা তিনটিঃ প্রথম খাম্বা, দ্বিতীয় খাম্বা এবং শেষের খাম্বা। বলা হয়েছে যে, আদম (আঃ) ও ইব্রাহীম (আঃ) যখন ইবলীসের সম্মুখীন হন তখন তাকে কংকর নিক্ষেপ করেন।