পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম
২০২৫-[৭] আনাস ইবনু মালিক আল কা’বী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা মুসাফির থেকে অর্ধেক সালাত কমিয়ে দিয়েছেন। এভাবে মুসাফির, দুগ্ধবতী মা ও গর্ভবতী নারীদের জন্য সওম (আপাতত) মাফ করে দিয়েছেন। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ)[1]
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ الْكَعْبِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم: «إِن اللَّهَ وَضَعَ عَنِ الْمُسَافِرِ شَطْرَ الصَّلَاةِ وَالصَّوْمَ عَنِ الْمُسَافِرِ وَعَنِ الْمُرْضِعِ وَالْحُبْلَى» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যা: ইবনু কুদামাহ্ ও যুরকানী (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, সকল ‘উলামাগণ এ মর্মে ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, গর্ভধারিণী ও সন্তানকে দুধদানকারিণী নারী যদি সফর অবস্থায় নিজের ওপর ক্ষতির আশংকায় সিয়াম পালন না করে থাকে, তবে তার ওপর কাযা ওয়াজিব হবে, তবে ফিদয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
‘আল্লামা ইবনুল কুদামাহ্ (রহঃ) বলেন, নিশ্চয়ই গর্ভবতী ও দুধদানকারিণী নারী যখন নিজেদের ক্ষতির আশংকা করবে উভয়ই সিয়াম বর্জন করবে এবং পরবর্তীতে তা কাযা করতে হবে। আর এ মর্মে ‘উলামাগণের মাঝে কোন মতপার্থক্য আছে বলে আমার জানা নেই। কেননা উভয়ই তো প্রকৃতপক্ষে রুগ্ন ব্যক্তির অবস্থায়ই রয়েছে। আর ‘আল্লামা যুরকানী (রহঃ) বলেন, তারা উভয়ই যখন নিজেদের ওপর ক্ষতির আশংকা করবে, তবে তাদের ফিদ্ইয়ার প্রয়োজন নেই এবং এ মর্মেই ঐকমত্য ও ইজমা রয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ৪. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম
২০২৬-[৮] সালামাহ্ ইবনু মুহাব্বাক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (সফরের সময়) যে ব্যক্তির কাছে এমন সওয়ারী থাকবে, যা তাকে তার গন্তব্য পর্যন্ত অনায়াসে ও আরামে পৌঁছে দিতে পারে (অর্থাৎ- সফরে কষ্ট না হয়); যে জায়গায়ই রমাযান (রমজান) মাস আসুক সে ব্যক্তি যেন সওম পালন করে। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ سَلَمَةَ بْنِ الْمُحَبَّقِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ كَانَ لَهُ حَمُولَةٌ تَأْوِي إِلَى شِبْعٍ فَلْيَصُمْ رَمَضَانَ من حَيْثُ أدْركهُ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে নির্দেশসূচক ক্রিয়া (فَلْيَصُمْ) টি মুস্তাহাবের জন্য ব্যবহৃত, এবং তা উত্তম কর্মের উপর উৎসাহ প্রদান করছে। কারণ সাধারণভাবে সফর অবস্থায় সিয়াম পালন না করার উপর পূর্ণাঙ্গ দলীল রয়েছে। অর্থাৎ- সফরে যদি কোন ধরনের কষ্ট বা জটিলতা নাও থাকে তবুও সিয়াম পরিত্যাগ করা যাবে।
কারো মতে এর প্রকৃত অর্থ হলো, যে ব্যক্তি সওয়ার অবস্থায় সফর করবে এবং তার সফরটা এমন সংক্ষিপ্ত হবে যে, ভ্রমণের দিনেই নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবে, সে যেন রমাযানের সিয়াম পালন করে।
এ ক্ষেত্রে আমর বা নির্দেশসূচক ক্রিয়া (فَلْيَصُمْ) টি ওয়াজিবের অর্থে ব্যবহৃত। কেননা জমহূর ‘উলামাগণের নিকট দীর্ঘ সফর ব্যতীত রমাযানের সিয়াম পরিত্যাগ করা বৈধ নয়।