পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম

মুসাফির ব্যক্তির জন্য সিয়াম পালনের বিধান বর্ণনা করাই এ অধ্যায়ের মূল উদ্দেশ্য। সফর অবস্থায় সিয়াম পালন করা বা না করা এবং এ দুয়ের কোনটি উত্তম- এ বিষয়ে আলোচ্য অধ্যায়ে বিবরণ রয়েছে।

আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ

فَمَنْ كَانَ مِنْكُمْ مَرِيضًا أَوْ عَلٰى سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ

’’তোমাদের মধ্য যে অসুস্থ কিংবা ভ্রমণে থাকবে, সে অন্যদিনগুলোতে তা পূর্ণ করবে।’’ (সূরা আল বাকারাহ্ ২ঃ ১৮৪)

২০১৯-[১] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হামযাহ্ ইবনু ’আমর আল আসলামী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করেছেন, আমি কি সফরে সওম পালন করব? হামযাহ্ খুব বেশী সওম পালন করতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এটা তোমার ইচ্ছাধীন। চাইলে রাখবে, না চাইলে না রাখবে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ صَوْمِ الْمُسَافِرِ

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: إِنَّ حَمْزَةَ بْنَ عَمْرٍو الْأَسْلَمِيَّ قَالَ لِلنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَصُومُ فِي السَّفَرِ وَكَانَ كَثِيرَ الصِّيَامِ. فَقَالَ: «إِنْ شِئْتَ فَصم وَإِن شِئْت فَأفْطر»

وعن عاىشة رضي الله عنها قالت: ان حمزة بن عمرو الاسلمي قال للنبي صلى الله عليه وسلم اصوم في السفر وكان كثير الصيام. فقال: «ان شىت فصم وان شىت فافطر»

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসে فَقَالَ: إِنْ شِئْتَ فَصُمْ وَإِنْ شِئْتَ فَأفْطِرْ অর্থাৎ- সফর অবস্থায় চাইলে সিয়াম পালন করবে, না চাইলে ছেড়ে দিবে। এখানে সফরে সওম রাখা বা না রাখার ঐচ্ছিকতার দলীল রয়েছে।

সওম রাখা কিংবা না রাখার বিষয়টা মুসাফিরের ইচ্ছাধীন, এটা প্রমাণের ক্ষেত্রে এটি একটি পূর্ণ বিবরণ। এখানে এ বিবরণও রয়েছে যে, সফরে মুসাফির যদি সওম রাখে তবে তা বৈধ, আর এটাই বিদ্বানদের সকলের মত। তবে ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, যে সফরে সওম রাখবে পরবর্তী মুকীম অবস্থায় তাকে আবার কাযা আদায় করতে হবে। তবে অধিকাংশ ‘উলামাগণ যথাক্রমে ইমাম মালিক, শাফি‘ঈ ও আবূ হানীফাহ্ (রহঃ) মনে করেন যে, সফরে সামর্থ্যবান ব্যক্তির সওম রাখাই উত্তম। তাদের মধ্য হতে অনেকেই মনে করেন যে, সফরে অব্যাহতি গ্রহণপূর্বক সওম না রাখাই উত্তম। আর এটা আওযা‘ঈ, আহমাদ ও ইসহাক (রহঃ)-এর মত। আর ইবনু ‘আব্বাস, আবূ সা‘ঈদ, সা‘ঈদ বিন মুসাইয়্যিব, ‘আত্বা, হাসান, মুজাহিদ ও লায়স (রহঃ) প্রমুখগণের মতে এটি সাধারণত ঐচ্ছিক বিষয়। অর্থাৎ- যার ইচ্ছা সে সফরে সওম রাখবে ইচ্ছা না হলে সওম রাখবে না। অন্যরা বলেছেনে যে, এ দুয়ের মাঝে যেটা সহজ সেটাই উত্তম, আল্লাহ তা‘আলার কথা, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের প্রতি সহজ করতে চান।’’ (সূরা আল বাকারাহ্ ২ : ১৮৫)

সফরে যদি কারো পক্ষে সওম না রাখা সহজ হয় তবে তা-ই তার ক্ষেত্রে উত্তম, আর যদি কারো পক্ষে সওম রাখা সহজ হয় তবে তার ক্ষেত্রে তা-ই উত্তম, আর এটাই ‘উমার বিন ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ)-এর কথা এবং ইবনু মুনযির (রহঃ) এ মতকেই পছন্দ করেছেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম

২০২০-[২] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একবার) আমরা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে যুদ্ধে রওনা হলাম। সে সময় রমাযান (রমজান) মাসের ষোল তারিখ অতিবাহিত হয়েছিল। (এ সময়) আমাদের কেউ সওম রেখেছে, আবার কেউ রাখেনি। সায়িমগণ সওমে না থাকা লোকদেরকে খারাপ জানেনি আবার সওমে না থাকা লোকজনও সায়িমগণকে খারাপ মনে করেনি। (মুসলিম)[1]

بَابُ صَوْمِ الْمُسَافِرِ

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: غَزَوْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَسِتَّ عَشْرَةَ مَضَتْ مِنْ شَهْرِ رَمَضَانَ فَمِنَّا مَنْ صَامَ وَمِنَّا مَنْ أَفْطَرَ فَلَمْ يَعِبِ الصَّائِمُ عَلَى الْمُفْطِرِ وَلَا الْمُفْطِرُ عَلَى الصَّائِمِ. رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي سعيد الخدري قال: غزونا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم لست عشرة مضت من شهر رمضان فمنا من صام ومنا من افطر فلم يعب الصاىم على المفطر ولا المفطر على الصاىم. رواه مسلم

ব্যাখ্যা: উল্লেখিত হাদীসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর রমাযানে ভ্রমণের তারিখ নির্ধারণে একাধিক বর্ণনা রয়েছে। সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় রমাযানের ১৮ তারিখের কথা রয়েছে। কোন কোন বর্ণনায় ১২, কোন বর্ণনায় ১৭, কোন বর্ণনায় ১৯ তারিখের কথাও রয়েছে। তবে আল মাগাযী’র প্রসিদ্ধ গ্রন্থগুলোতে রয়েছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের ভ্রমণে রওনা দিয়েছেন রমাযানের ১০ তারিখে, এবং মক্কায় পৌঁছেছেন রামযানের ১৯ তারিখে। এ ভ্রমণে সাহাবীগণের মধ্য কিছু সংখ্যক সিয়াম পালন করছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা অপছন্দ করেননি। আবার অনেকেই সিয়াম ছেড়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি তা অপছন্দ করেননি। সুতরাং প্রমাণিত হয় উভয়টি (সফরে সওম রাখা বা না রাখা) জায়িয। তবে কোন বর্ণনায় কিছু বর্ধিত বর্ণনা রয়েছে যে, সফরে যে সিয়াম পালনে সক্ষম সে সিয়াম পালন করবে এবং তার জন্য এটাই উত্তম। আর যে অক্ষম সে ছেড়ে দিবে এটাই তার জন্য উত্তম। ‘আল্লামা নাবাবী (রহঃ) বলেন যে, অধিকাংশ ‘উলামাগণের মতানুযায়ী সফরে সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য সওম বর্জন করাটাই অধিক অগ্রগণ্য। কারো কারো মতে সফরে সওম রাখা বা না রাখা উভয়েই সমান। তবে অধিকাংশ ‘উলামাগণের কথাই অগ্রগণ্য।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম

২০২১-[৩] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার এক সফরে ছিলেন। এক স্থানে তিনি কিছু লোকের সমাগম ও এক ব্যক্তিকে দেখলেন। (রোদের তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য) ওই লোকটির ওপর ছায়া দিয়ে রাখা হয়েছে। (এ দৃশ্য দেখে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, ওখানে কী হয়েছে? লোকেরা বলল, এ ব্যক্তি সায়িম (দুর্বলতার কারণে পড়ে গেছে)। এ কথা শুনে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সফর অবস্থায় সওম রাখা নেক কাজ নয়। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ صَوْمِ الْمُسَافِرِ

وَعَنْ جَابِرٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ فَرَأَى زِحَامًا وَرَجُلًا قَدْ ظُلِّلَ عَلَيْهِ فَقَالَ: «مَا هَذَا؟» قَالُوا: صَائِمٌ. فَقَالَ: «لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصَّوْمُ فِي السَّفَرِ»

وعن جابر قال: كان رسول الله صلى الله عليه وسلم في سفر فراى زحاما ورجلا قد ظلل عليه فقال: «ما هذا؟» قالوا: صاىم. فقال: «ليس من البر الصوم في السفر»

ব্যাখ্যা: আলোচ্য হাদীসের সমর্থনে ইমাম বুখারী (রহঃ) সহীহুল বুখারীতে একটি অধ্যায় এনেছেন, (باب قول النبي ﷺ لمن ظلل عليه واشتد الحر ليس من البر الصوم في السفر) অর্থাৎ- অধ্যায় : নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কথা যার উপর ছায়া দেয়া আবশ্যক এবং যখন গরম তিব্ররূপ ধারণ করবে তখন সফরে সিয়াম পালন কোন নেক কাজ নয়।

হাফেয আসকালানী (রহঃ) বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ কথার (لَيْسَ مِنَ الْبِرِّ الصَّوْمُ فِى السَّفَرِ) তথা ‘‘সফরে সিয়াম পালন কোন নেক কাজ নয়’’ দ্বারা সফরের কষ্ট ও জটিলতাকেই বুঝানো হয়েছে।

‘আল্লামা ইবনু দাক্বীক (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তির জন্য সফরে সিয়াম পালন করা কঠিন কিংবা অধিক কষ্টকর হবে তার জন্য সফরে সিয়াম পালন করা অনুচিত, আর কষ্টের আধিক্য না থাকলে সিয়াম পালন করাই উত্তম।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম

২০২২-[৪] আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা (একবার) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাঁর সফরসঙ্গী ছিলাম। আমাদের কেউ সায়িম ছিলেন। আবার কেউ সওম রাখেননি। আমরা এক মঞ্জীলে পৌঁছলাম। এ সময় খুব রোদ ছিল। (রোদের প্রখরতায়) সায়িম ব্যক্তিগণ (মাটিতে) ঘুরে পড়ল। যারা সওমরত ছিল না, ঠিক রইল। তারা তাঁবু বানাল, উটকে পানি পান করাল। (এ দৃশ্য দেখে) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সওম না থাকা লোকজন আজ সাওয়াবের ময়দান জিতে নিলো। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ صَوْمِ الْمُسَافِرِ

وَعَنْ أَنَسٍ قَالَ: كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي السَّفَرِ فَمِنَّا الصَّائِمُ وَمِنَّا الْمُفْطِرُ فَنَزَلْنَا مَنْزِلًا فِي وم حَارٍّ فَسَقَطَ الصَّوَّامُونَ وَقَامَ الْمُفْطِرُونَ فَضَرَبُوا الْأَبْنِيَةَ وَسَقَوُا الرِّكَابَ. فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «ذَهَبَ الْمُفْطِرُونَ
الْيَوْمَ بِالْأَجْرِ»

وعن انس قال: كنا مع النبي صلى الله عليه وسلم في السفر فمنا الصاىم ومنا المفطر فنزلنا منزلا في وم حار فسقط الصوامون وقام المفطرون فضربوا الابنية وسقوا الركاب. فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ذهب المفطرون اليوم بالاجر»

ব্যাখ্যা: এখানে الْأَجْرِ বা ‘‘প্রতিদান দ্বারা উদ্দেশ্য হলো পরিপূর্ণ’’ এর দ্বারা সিয়াম পালন প্রতিদানকারীদের নেকীর স্বল্পতা হওয়া উদ্দেশ্য নয়। বরং এখানে উদ্দেশ্য হলো, নিশ্চয় সিয়াম পরিত্যাগ কারীগণ তাদের কাজের পূর্ণ নেকী অর্জন করলেন। অর্থাৎ- তাঁবু খাটানোর জন্য তারা যে পরিশ্রম করেছেন তার পূর্ণ প্রতিদান তারা পাবেন এবং সিয়াম পালনকারীদের মতই তারাও পূর্ণ সাওয়াব পাবেন।

‘আল্লামা কারী (রহঃ) বলেন, الْأَجْرِ বা প্রতিদান দ্বারা পূর্ণ সাওয়াব উদ্দেশ্য। কেননা তাদের ক্ষেত্রে, (যুদ্ধের সফরের ক্ষেত্রে) সিয়াম পালনের তুলনায় তা পরিত্যাগ করাই অধিক উত্তম।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম

২০২৩-[৫] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (মক্কা বিজয়ের বছর) রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনাহ্ হতে মক্কার দিকে রওনা হলেন। (এ সফরে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সওম রেখেছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন (মক্কা হতে দু’ মঞ্জীল দূরে) ’উসফান’-এ (নামক ঐতিহাসিক স্থানে) পৌঁছলেন তখন পানি চেয়ে আনালেন। এরপর তা হাতে ধরে অনেক উঁচুতে উঠালেন। যাতে লোকেরা পানি দেখতে পায়। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সওম ভাঙলেন। এভাবে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কায় পৌঁছলেন। এ সফর হয়েছিল রমাযান (রমজান) মাসে। ইবনু ’আব্বাস বলতেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরে সওম রেখেছেন, আবার ভেঙেছেন। অতএব যার খুশী সওম রাখবে (যদি কষ্ট না হয়)। আর যার ইচ্ছা রাখবে না। (বুখারী, মুসলিম)[1]

بَابُ صَوْمِ الْمُسَافِرِ

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ الْمَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ فَصَامَ حَتَّى بَلَغَ عُسْفَانَ ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ فَرَفَعَهُ إِلَى يَدِهِ لِيَرَاهُ النَّاسُ فَأَفْطَرَ حَتَّى قَدِمَ مَكَّةَ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ. فَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقُولُ: قَدْ صَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَفْطَرَ. فَمن شَاءَ صَامَ وَمن شَاءَ أفطر

وعن ابن عباس قال: خرج رسول الله صلى الله عليه وسلم من المدينة الى مكة فصام حتى بلغ عسفان ثم دعا بماء فرفعه الى يده ليراه الناس فافطر حتى قدم مكة وذلك في رمضان. فكان ابن عباس يقول: قد صام رسول الله صلى الله عليه وسلم وافطر. فمن شاء صام ومن شاء افطر

ব্যাখ্যা: ‘আল্লামা ‘ইয়ায (রহঃ) বলেন, ‘উসফান একটি গ্রাম, যার দূরত্ব মক্কা হতে ৩৩ মাইলেরও বেশি। ‘আল্লামা নাবাবী (রহঃ) তা উল্লেখ করার পর বলেন, মক্কা থেকে তার দূরত্ব ৪ বুর্‌দ পরিমাণ, আর প্রত্যেক বুর্‌দ সমান পাঁচ ফারসাখ। আর প্রতি ফারসাখ সমান তিন মাইল, সেই হিসাবে চার বুর্‌দ হলো ৪৮ মাইল এবং এটাই সঠিক বলে মত দিয়েছেন জমহূর ‘উলামাগণ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting

পরিচ্ছেদঃ ৪. প্রথম অনুচ্ছেদ - মুসাফিরের সওম

২০২৪-[৬] সহীহ মুসলিমের অন্য রিওয়ায়াতে জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ’আসরের পর পানি পান করেছেন।[1]

بَابُ صَوْمِ الْمُسَافِرِ

وَفِي رِوَايَة لمُسلم عَن جَابر رَضِي الله عَنهُ أَنه شرب بعد الْعَصْر

وفي رواية لمسلم عن جابر رضي الله عنه انه شرب بعد العصر

ব্যাখ্যা: (شَرِبَ بَعْدَ الْعَصْرِ) অর্থাৎ- নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেদিন ‘আসর পর্যন্ত সিয়াম অবস্থায় ছিলেন, অতঃপর মানুষদেরকে এ কথা জানানোর জন্য সিয়াম ভঙ্গ করছেন যে, সফরে সিয়াম ভঙ্গ করা বৈধ। এমনকি সিয়াম পালন কঠিন হলে তা ভঙ্গ করাই উত্তম।

জাবির (রাঃ) এর বর্ণনায় অপর শব্দে রয়েছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলা হলো, নিশ্চয়ই মানুষদের ওপর সিয়াম পালন করা অত্যন্ত কষ্টকর হচ্ছে, আর সিয়াম পালনের ক্ষেত্রে আপনি কি সিদ্ধান্ত নেন, তাই তারা লক্ষ্য করছে। অতঃপর ‘আসর সালাতের পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানির পাত্র চাইলেন এবং তা পান করে সিয়াম ভঙ্গ করলেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৭: সওম (রোযা) (كتاب الصوم) 7. Fasting
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৬ পর্যন্ত, সর্বমোট ৬ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে