পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৬১-[৯] জাবির (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক কুরবানীর দিনে দু’টি ছাই রঙের শিংওয়ালা খাসী দুম্বা কুরবানী করলেন। ওদের ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)মুখী করে বললেন
’ইন্নী ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযা ’আলা- মিল্লাতি ইব্রা-হীমা হানীফাও্ ওয়ামা- আনা- মিনাল মুশরিকীন, ইন্না সলা-তী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহ্ইয়া-ইয়া ওয়া মামা-তী লিল্লা-হি রব্বিল ’আ-লামীন, লা- শারীকা লাহূ, ওয়াবিযা-লিকা আমারতু ওয়া আনা- মিনাল মুসলিমীন, আল্ল-হুম্মা মিনকা ওয়ালাকা ’আন্ মুহাম্মাদিন ওয়া উম্মাতিহী, বিসমিল্লা-হি ওয়াল্ল-হু আকবার’’ বলে যাবাহ করতেন।
(আহমাদ, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ ও দারিমী। কিন্তু আহমাদ, আবূ দাঊদ ও তিরমিযী বর্ণনা করেছেন, নিজ হাতে যাবাহ করলেন এবং বললেন, ’’বিসমিল্লা-হি ওয়াল্ল-হু আক্বার, আল্ল-হুমা হা-যা- ’আন্নী, ওয়া ’আমমান লাম ইউযাহহি মিন উম্মাতী’’’ [অর্থাৎ হে আল্লাহ এ কুরবানী আমার পক্ষ থেকে কবূল করো। কবূল করো আমার উম্মাতগণের মধ্য থেকে যারা কুরবানী করতে পারেনি তাদের পক্ষ হতে।])[1]
عَنْ جَابِرٍ قَالَ: ذَبَحَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الذَّبْحِ كَبْشَيْنِ أَقْرَنَيْنِ أَمْلَحَيْنِ موجئين فَلَمَّا وجههما قَالَ: «إِنِّي وجهت وَجْهي للَّذي فطر السَّمَوَات وَالْأَرْضَ عَلَى مِلَّةِ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أَمَرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ اللَّهُمَّ مِنْكَ وَلَكَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَأُمَّتِهِ بِسْمِ اللَّهِ وَاللَّهُ أَكْبَرُ ثُمَّ ذَبَحَ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ وَأَبُو دَاوُدَ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَفِي رِوَايَةٍ لِأَحْمَدَ وَأَبِي دَاوُدَ وَالتِّرْمِذِيِّ: ذَبَحَ بِيَدِهِ وَقَالَ: «بِسْمِ اللَّهِ وَاللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُمَّ هَذَا عَنِّي وَعَمَّنْ لَمْ يُضَحِّ من أمتِي»
ব্যাখ্যা: (مَوْجُئين) যার দু’ অন্ডকোষ বের করে নেয়া হয়েছে। খাত্ত্বাবী বলেন, এটা প্রমাণ করে যে, খাসী কুরবানী করা অপছন্দ না অবশ্য কেউ অপছন্দ করেছে অঙ্গ কম হওয়ার কারণে। আর এই ত্রুটি দোষের না, কেননা খাসীতে গোশ্ত (গোশত/গোস্ত/গোসত) বৃদ্ধি পায় আর সুস্বাদু হয় এবং গন্ধকে দূরীভূত করে। আর হাদীস প্রমাণ করে যে, কুরবানীর পশু যাবাহের সময় কুরআনের এ আয়াত ...إِنِّي وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي ‘‘আমি একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর দিকে আমার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছি যিনি আকাশমন্ডলী আর পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন। আর আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই’’- (সূরাহ্ আল আন্‘আম ৬ : ৭৯) পড়া ভাল। এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে কুরবানী ওয়াজিব না হাদীসের ভাষ্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানী তার পক্ষ হতে যথেষ্ট যারা কুরবানী দেয়নি চাই তারা কুরবানীর দেয়ার সামর্থ্যবান হোক বা না হোক।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৬২-[১০] হানাশ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ’আলী (রাঃ)-কে দু’টি দুম্বা কুরবানী করতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম। এটাই কি (অর্থাৎ দু’টি কোন)? ’আলী (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তাঁর পক্ষ হতে কুরবানী করার জন্য ওয়াসীয়াত করে গেছেন। তাই আমি তার পক্ষ হতে একটি দুম্বা কুরবানী করছি। (আবূ দাঊদ, তিরমিযী)[1]
وَعَنْ حَنَشٍ قَالَ: رَأَيْتُ عَلِيًّا رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ يُضَحِّي بِكَبْشَيْنِ فَقُلْتُ لَهُ: مَا هَذَا؟ فَقَالَ: (إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَوْصَانِي أَنْ أُضَحِّيَ عَنْهُ فَأَنَا أُضَحِّي عَنْهُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ وَرَوَى التِّرْمِذِيُّ نَحْوَهُ
ব্যাখ্যা: হাদীস প্রমাণ করে মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে কুরবানী করা বৈধ। তিরমিযী বলেন, কিছু সংখ্যক ‘উলামারা অনুমতি দিয়েছেন মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে কুরবানী বৈধ তারা বিষয়টিকে তেমন খারাপ চোখে দেখেন না। আর ‘আবদুল্লাহ ইবনু মোবরক বলেন, আমার নিকট বেশী পছন্দ যে মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে সম্পূর্ণ সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করে দিবে কুরবানী না করে। আর যদি কুরবানী করে সম্পূর্ণটায় সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করে দিবে সেখান হতে কোন কিছু ভক্ষণ করবে না। আর যারা মৃত ব্যক্তির পক্ষ হতে কুরবানী বৈধ মনে করে তা দলীল সম্মত আর যারা নিষেধ করেছে তাদের কোন দলীল নেই। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে প্রমাণিত, তিনি দু’টি দুম্বা কুরবানী দিতেন একটি নিজের ও পরিবারের পক্ষ হতে আর অন্যটি তাঁর উম্মাতের পক্ষ হতে যারা তার জন্য তাওহীদ স্বীকৃতি দিয়েছে আর এ কথা ধ্রুব সত্য যে, তাঁর উম্মাতের অনেক লোক মারা গেছেন। তাঁর সময়কালে তিনি তার কুরবানীর পশুতে জীবিত ও মৃত সকলকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন আর যে দুম্বটি তাঁর উম্মাতের জীবিত মৃত সকলের পক্ষ হতে কুরবানী করেছেন এমন কোন প্রমাণ নেই যে, এই দুম্বাটির গোশত সম্পূর্ণ দান করেছেন অথবা তিনি তা হতে খাননি বা নির্ধারিত অংশ মৃত ব্যক্তির জন্য সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করেছেন। বরং আবূ রাফি' বলেন, নিশ্চয় রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ দু’টি হতে সকল মিসকীনকে খাইয়েছেন এবং তিনি নিজে ও তাঁর পরিবার খেয়েছেন হাদীসটি আহমাদ বর্ণনা করেছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৬৩-[১১] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর (জানোয়ারের) চোখ, নাক ভালভাবে দেখে নেয়ার জন্য আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। যে পশুর কানের সম্মুখ ভাগ শেষের ভাগ কাটা গেছে। অথবা যে পশুর কান গোলাকারভাবে ছিদ্রিত হয়ে গেছে বা যার কান পাশের দিকে থেকে কেটে গিয়েছে সেসব পশু যেন কুরবানী না করি। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী; তবে দারিমী وَالْأُذُنَ ’’কান’’ পর্যন্ত বর্ণনা করেছেন।)[1]
وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ نَسْتَشْرِفَ الْعَيْنَ وَالْأُذُنَ وَأَلَّا نُضَحِّيَ بِمُقَابَلَةٍ وَلَا مُدَابَرَةٍ وَلَا شَرْقَاءَ وَلَا خَرْقَاءَ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ والدارمي وانتهت رِوَايَته إِلَى قَوْله: وَالْأُذن
ব্যাখ্যা: (شَرْقَاءَ) বলতে যার কান লম্বাভাবে কাটা, (خَرْقَاءَ) বলতে যার কান গোলাকারভাবে কাটা। হাদীস প্রমাণ করে যে, এমন পশু কুরবানী নিষেধ যার কান সামনের দিক হতে পেছন দিক হতে লম্বাভাবে গোলাকারভাবে কাটা। জমহূর ‘উলামারা মাকরূহ তথা ঘৃণিত বলে মন্তব্য করেছেন। আবার কেউ কেউ এমন পশু দ্বারা কুরবানী বৈধ বলেছেন। তবে গ্রহণযোগ্য মত হল বৈধ হবে না।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৬৪-[১২] ’আলী (রাঃ) হতে এ হাদীসটিও রিওয়ায়াতকৃত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিং ভাঙ্গা, কান কাটা পশু দিয়ে কুরবানী করতে বারণ করেছেন। (ইবনু মাজাহ)[1]
وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَن نضحي بأعضب الْقرن وَالْأُذن. رَوَاهُ ابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: আল্লামা শাওকানী বলেনঃ হাদীস প্রমাণ করে শিং ভাঙ্গা ও কান কাটা পশু যা অর্ধেকেরও বেশি তা কুরবানী করা বৈধ না। আর জমহূরদের মত হল, স্বাভাবিকভাবে ভাঙ্গা শিং ও কান কাটা পশু কুরবানী দেয়া বৈধ। আমার (ভাষ্যকার) মতে, যদি ভাঙ্গা শিং এর বাইরে হয় তাহলে এমন পশু কুরবানী বৈধ আর যদি ভাঙ্গা ভিতরে বা গোড়ায় হয় তাহলে যেমনটি শাওকানী বলেছেন তাহলে বৈধ না তবে যদি সামান্য ভাঙ্গা হয় তাহলে বৈধ।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৬৫-[১৩] বারা ইবনু ’আযিব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ ধরনের জানোয়ার কুরবানী করা হতে বেঁচে থাকা উচিত? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজ হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে বললেন, চার ধরনের পশু (কুরবানী করা হত) বেঁচে থাকা উচিত। (১) যে পশু স্পষ্ট খোঁড়া। (২) যে পশু স্পষ্ট কানা। (৩) যে পশু সুস্পষ্ট রোগা ও দুর্বল। যে পশুর হাড়ের মজ্জা নেই তথা একেবারেই শুকিয়ে গেছে। (মালিক, আহমাদ, তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ, দারিমী)[1]
وَعَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ: مَاذَا يُتَّقَى مِنَ الضَّحَايَا؟ فَأَشَارَ بِيَدِهِ فَقَالَ: «أَرْبَعًا الْعَرْجَاءُ والبين ظلعها والعرواء الْبَيِّنُ عَوَرُهَا وَالْمَرِيضَةُ الْبَيِّنُ مَرَضُهَا وَالْعَجْفَاءُ الَّتِي لَا تَنْقَى» . رَوَاهُ مَالِكٌ وَأَحْمَدُ وَالتِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ
ব্যাখ্যা: হাদীসটি প্রমাণ করে কুরবানীর পশুতে স্বল্প ত্রুটি গ্রহণযোগ্য। আর শাওকানী বলেন, হাদীসে প্রমাণিত হয় যে, সুস্পষ্ট কানা, লেংড়া অসুস্থতা এমন পশু কুরবানী বৈধ না তবে সামান্যতম হলে তা বৈধ।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৬৬-[১৪] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিংওয়ালা শক্তিশালী দুম্বা কুরবানী করতেন। যে দুম্বা অন্ধকারে দেখত। অন্ধকারে ভক্ষণ করত এবং অন্ধকারে চলত। অর্থাৎ যে দুম্বার চোখ কালো, মুখ কালো এবং পা কালো ছিল। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ)[1]
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُضَحِّي بِكَبْشٍ أَقْرَنَ فَحِيلٍ يَنْظُرُ فِي سَوَادٍ وَيَأْكُلُ فِي سَوَادٍ وَيَمْشِي فِي سَوَادٍ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَأَبُو دَاوُدَ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ
ব্যাখ্যা: আল্লামা শাওকানী বলেন, এ হাদীসে প্রমাণিত হয় যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ষাঁড় কুরবানী করেছেন যেমন খাশী কুরবানী করেছেন। আর উল্লেখিত বৈশিষ্ট্যমন্ডিত পশু কুরবানী করা ভাল।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৬৭-[১৫] বানী সুলায়ম গোত্রের এক সাহাবী মুজাশি’ (রাঃ)হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ ছয় মাস পূর্ণ ভেড়া এক বছর বয়সের ছাগলের কাজ পূরণ করে। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ)[1]
وَعَن مجاشع مِنْ بَنَى سُلَيْمٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقُولُ: «إِنَّ الْجَذَعَ يُوفِي مِمَّا يُوفِي مِنْهُ الثَّنِيُّ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ وَابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: হাদীস প্রমাণ করে জাযা‘আহ্ (যার বসয় ছয়মাস পূর্ণ হয়েছে) এমন ভেঁড়া কুরবানী করা বৈধ যেমন জমহূর মত দিয়েছেন।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৬৮-[১৬] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি। ছয়মাস বয়স অতিবাহিত ভেড়া বেশ উত্তম কুরবানী। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «نِعْمَتِ الْأُضْحِيَّةُ الْجذع من الضَّأْن» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রশংসা করেছেন এমন জাযা‘আর এবং মানুষকে জানালেন কুরবানীতে এটা বৈধ তবে এটা ব্যতিরেকে ছাগলের ক্ষেত্রে বৈধ না।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৬৯-[১৭] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা এক সফরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে ছিলাম। তখন কুরবানীর সময় উপস্থিত হলো। আমরা তখন এক গরুতে সাতজন ও এক উটে দশজন করে (কুরবানীতে) অংশীদার হলাম। (তিরমিযী, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ; ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটি হাসান গারীব।)[1]
وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ فَحَضَرَ الْأَضْحَى فَاشْتَرَكْنَا فِي الْبَقَرَةِ سَبْعَةٌ وَفِي الْبَعِيرِ عَشَرَةٌ. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غريبٌ
ব্যাখ্যা: আর হাদীসে দলীল বিদ্যমান যে, উটে দশ জন করে অংশগ্রহণ করা বৈধ। কুরবানীতে ইসহাক ও ইবনু খুয়ায়মাহ্ এ মতে রায় দিয়েছেন। আর সত্য যে, এটা জমহূরের বিপরীত। তারা বলেন, এটি মানসূখ তথা রহিত হয়েছে যা সুস্পষ্ট।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৭০-[১৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরবানীর দিনে আদম সন্তানগণ এমন কোন কাজ করতে পারে না যা আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত করার (অর্থাৎ কুরবানী করা) চেয়ে বেশী প্রিয় হতে পারে। কুরবানীর সকল পশুর শিং, পশম, এদের ক্ষুরসহ কিয়ামতের (কিয়ামতের) দিন (কুরবানীকারীর নেকীর পাল্লায়) এসে হাজির হবে। কুরবানীর পশুর রক্ত মাটি স্পর্শ করার পূর্বেই আল্লাহর নিকট মর্যাদাকর স্থানে পৌঁছে যায়। তাই তোমরা সানন্দে কুরবানী করবে। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ)[1]
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا عَمِلَ ابْنُ آدَمَ مِنْ عَمَلٍ يَوْمَ النَّحْرِ أَحَبَّ إِلَى اللَّهِ مِنْ إِهْرَاقِ الدَّمِ وَإِنَّهُ لَيُؤْتَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِقُرُونِهَا وَأَشْعَارِهَا وَأَظْلَافِهَا وَإِنَّ الدَّمَ لَيَقَعُ مِنَ الله بمَكَان قبل أَن يَقع بِالْأَرْضِ فيطيبوا بهَا نفسا» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه
ব্যাখ্যা: ইবনু হিব্বান-এর হাদীস ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর হাদীস এভাবে এসেছে, নিশ্চয় (কুরবানী) রক্ত যদি মাটিতে পতিত হয় তাহলে তা আল্লাহর দুর্গে থাকে ক্বিয়ামাতের (কিয়ামতের) দিনে তার মালিককে প্রতিদান দেয়া হবে। হাদীস প্রমাণ করে কুরবানীর দিনে কুরবানী করা আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ‘আমল।
পরিচ্ছেদঃ ৪৮. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - কুরবানী
১৪৭১-[১৯] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ জিলহাজ্জ মাসের প্রথম দশদিন অপেক্ষা আর কোন উত্তম দিন নেই। যে দিন আল্লাহর ’ইবাদাত করার জন্য প্রিয়তর হতে পারে। এ দশদিনের প্রতি দিনের সিয়াম এক বছরের সিয়ামের সমমর্যাদার। এর প্রত্যেক রাতের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ক্বদরের রাতের সালাত সমতুল্য। (তিরমিযী, ইবনু মাজাহ; ইমাম তিরমিযী বলেছেন, হাদীসটির সানাদ দুর্বল।)[1]
وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا مِنْ أَيَّامٍ أَحَبُّ إِلَى اللَّهِ أَنْ يُتَعَبَّدَ لَهُ فِيهَا مِنْ عَشْرِ ذِي الْحِجَّةِ يَعْدِلُ صِيَامُ كُلِّ يَوْمٍ مِنْهَا بِصِيَامِ سَنَةٍ وَقِيَامُ كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْهَا بِقِيَامِ لَيْلَةِ الْقَدْرِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ إِسْنَادُهُ ضَعِيف