পরিচ্ছেদঃ ৪৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু’ ঈদের সালাত
১৪৫১-[২৬] ইবনু জুরায়জ (রহঃ) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, ’আত্বা (রহঃ) আমার কাছে ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস ও জাবির ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। তাঁরা দু’জনেই বলেছেন, (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জীবদ্দশায়) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সালাতের জন্য আযান দেয়া হত না। ইবনু জুরায়জ বলেন, এর কিছুদিন পর আমি আবার ’আত্বা (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম। ’আত্বা (রহঃ) তখন বললেন, জাবির ইবনু ’আবদুল্লাহ (রাঃ) আমাকে বলেছেন। ঈদুল ফিতরের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের জন্য আযানের প্রয়োজন নেই। ইমাম (সালাতের জন্য) বের হবার সময়েও না। বের হয়ে আসার পরেও না। (এভাবে) ইক্বামাত(ইকামত/একামত) ও কোন আহবানও নেই। না অন্য কিছু আছে। এ দিন না কোন আহবান আছে। আর কোন ইক্বামাত(ইকামত/একামত)। (মুসলিম)[1]
عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ: أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ عَنِ ابْن عَبَّاس وَجَابِر ابْن عَبْدِ اللَّهِ قَالَا: لَمْ يَكُنْ يُؤَذَّنُ يَوْمَ الْفِطْرِ وَلَا يَوْمَ الْأَضْحَى ثُمَّ سَأَلْتُهُ يَعْنِي عَطَاءً بَعْدَ حِينٍ عَنْ ذَلِكَ فَأَخْبَرَنِي قَالَ: أَخْبَرَنِي جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ أَنْ لَا أَذَانَ لِلصَّلَاةِ يَوْمَ الْفِطْرِ حِينَ يَخْرُجُ الْإِمَامُ وَلَا بعد مَا يَخْرُجُ وَلَا إِقَامَةَ وَلَا نِدَاءَ وَلَا شَيْءَ لَا نِدَاءَ يَوْمَئِذٍ وَلَا إِقَامَةَ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ
ব্যাখ্যা: (وَلَا إِقَامَةَ وَلَا نِدَاءَ) ইক্বামাত ও ডাকাডাকি কিছুই নেই, এ বক্তব্যটি প্রমাণ করে ঈদের সালাতের বিষয়েও ইমামকে কোন কিছু বলা যাবে না।
পরিচ্ছেদঃ ৪৭. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - দু’ ঈদের সালাত
১৪৫২-[২৭] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরের দিন (ঈদগাহে গিয়ে) প্রথমে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আরম্ভ করতেন। সালাত আদায় করা শেষ হলে (খুতবাহ্ প্রদানের জন্য) মানুষের দিকে ফিরে দাঁড়াতেন। তাঁরা নিজ নিজ জায়গায় বসে থাকতেন। বস্ত্ততঃ যদি কোথাও সৈন্য বাহিনী পাঠাবার প্রয়োজন থাকত তাহলে তা মানুষদেরকে বলে (বাহিনী পাঠিয়ে) দিতেন। অথবা জনগণের প্রয়োজনের ব্যাপারে কোন কথা থাকলে, সে ব্যাপারে নির্দেশ দিয়ে দিতেন। তিনি খুতবায় বলতেন, ’তোমরা সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দাও, ’তোমরা সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দাও, ’তোমরা সদাক্বাহ্ (সাদাকা) দাও’। বস্তুতঃ মহিলারাই অধিক পরিমাণে সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করতেন। এরপর তিনি নিজ বাড়ীতে ফিরে আসতেন। এভাবেই (দু’ঈদের সালাত) চলতে থাকল যে পর্যন্ত (মু’আবিয়ার পক্ষ হতে) মারওয়ান ইবনু হাকাম (মদীনার) শাসক নিযুক্ত না হন।
(এ সময় এক ঈদের দিনে) মারওয়ান-এর হাত ধরে আমি ঈদগাহের ময়দানে উপস্থিত হলাম। এসে দেখি কাসির ইবনু সালত মাটি ও কাঁচা ইট দিয়ে একটি মিম্বার তৈরি করেছেন। এ সময় মারওয়ান হাত দিয়ে আমার হাত ধরে টানাটানি আরম্ভ করল আমি যেন মিম্বারে উঠে খুতবাহ্ দেই। আর আমি তাকে সালাত আদায়ের জন্য টানতে লাগলাম। আমি তার এ অবস্থা দেখে বললাম, সালাত দিয়ে শুরু করা কোথায় গেল? সে বলল, না, আবূ সা’ঈদ! আপনি যা জানেন তা এখন নেই। আমি বললাম, কখনো নয়। আমার জান যার হাতে নিবন্ধ তার শপথ করে বলছি। আমি যা জানি এর চেয়ে ভাল কিছু তোমরা কখনো বের করতে পারবে না। বর্ণনাকারী বলেন, এ কথা তিনি তিনবার বললেন, তারপর (ঈদগাহ হতে) চলে গেলেন। (মুসলিম)[1]
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَخْرُجُ يَوْمَ الْأَضْحَى ويم الْفِطْرِ فَيَبْدَأُ بِالصَّلَاةِ فَإِذَا صَلَّى صَلَاتَهُ قَامَ فَأقبل عل النَّاسِ وَهُمْ جُلُوسٌ فِي مُصَلَّاهُمْ فَإِنْ كَانَتْ لَهُ حَاجَة ببعث ذِكْرَهُ لِلنَّاسِ أَوْ كَانَتْ لَهُ حَاجَةٌ بِغَيْرِ ذَلِكَ أَمَرَهُمْ بِهَا وَكَانَ يَقُولُ: «تَصَدَّقُوا تَصَدَّقُوا تَصَدَّقُوا» . وَكَانَ أَكْثَرَ مَنْ يَتَصَدَّقُ النِّسَاءُ ثُمَّ ينْصَرف فَلم يزل كَذَلِك حَتَّى كَانَ مَرْوَان ابْن الْحَكَمِ فَخَرَجْتُ مُخَاصِرًا مَرْوَانَ حَتَّى أَتَيْنَا الْمُصَلَّى فَإِذَا كَثِيرُ بْنُ الصَّلْتِ قَدْ بَنَى مِنْبَرًا مِنْ طِينٍ وَلَبِنٍ فَإِذَا مَرْوَانُ يُنَازِعُنِي يَدَهُ كَأَنَّهُ يَجُرُّنِي نَحْوَ الْمِنْبَرِ وَأَنَا أَجُرُّهُ نَحْوَ الصَّلَاة فَلَمَّا رَأَيْت ذَلِكَ مِنْهُ قُلْتُ: أَيْنَ الِابْتِدَاءُ بِالصَّلَاةِ؟ فَقَالَ: لَا يَا أَبَا سَعِيدٍ قَدْ تُرِكَ مَا تَعْلَمُ قُلْتُ: كَلَّا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَا تأتون بِخَير مِمَّا أعلم ثَلَاث مَرَّات ثمَّ انْصَرف. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: হাদীসটিতে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময় ঈদগাহে মিম্বার ছিল না সর্বপ্রথম এটি চালু করেন মারওয়ান।
১। মিম্বারের চেয়ে সরাসরি জমিনের উপর দাঁড়িয়ে খুতবাহ্ প্রদান করা উত্তম।
২। আর ঈদের ময়দানে পায়ে হেঁটে বের হওয়া উত্তম।
৩। দু’ঈদে তাকবীর পাঠ করা শারী‘আত সম্মত কোন কোন ‘আলিমদের তার নিকট ওয়াজিব তবে অধিকাংশদের মতে সুন্নাহ।
৪। দু’ঈদের খুত্বায় উপস্থিত থাকা ও শ্রবণ করা সুন্নাহ ওয়াজিব না যেমনঃ ‘আবদুল্লাহ বিন সায়িব হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে প্রত্যক্ষ ছিলাম ঈদের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষে তিনি বললেন, আমি খুতবাহ্ প্রদান করছি আর ভাল লাগে সে খুতবাহ্ শেষ শোনার জন্য যেন সে বসে আর যার পছন্দ লাগে চলে যেতে সে যেন যায়। (নাসায়ী, ইবনু মাজাহ ও আবূ দাঊদ)