পরিচ্ছেদঃ ৩৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২২৭-[৯] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের জন্যে ক্বিয়ামুল লায়ল (তাহাজ্জুদের সালাত) আদায় করা আবশ্যক। কারণ এটা তোমাদের পূর্বের নেক লোকদের অভ্যাস। (তাছাড়াও এ) ক্বিয়ামুল লায়ল আল্লাহর নৈকট্য লাভ আর পাপের কাফফারাহ্। তোমাদেরকে পাপ থেকেও (এ ক্বিয়ামুল লায়ল) ফিরিয়ে রাখে। (তিরমিযী)[1]

عَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «عَلَيْكُمْ بِقِيَامِ اللَّيْلِ فَإِنَّهُ دَأْبُ الصَّالِحِينَ قَبْلَكُمْ وَهُوَ قُرْبَةٌ لَكُمْ إِلَى رَبِّكُمْ وَمَكْفَرَةٌ لِلسَّيِّئَاتِ وَمَنْهَاةٌ عَنِ الْإِثْمِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

عن ابي امامة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «عليكم بقيام الليل فانه داب الصالحين قبلكم وهو قربة لكم الى ربكم ومكفرة للسيىات ومنهاة عن الاثم» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: ক্বিয়ামুল লায়ল দ্বারা সালাতুত্ তাহাজ্জুদ উদ্দেশ্য। এ সালাত নাবী-রসূল, নেককার সালিহীন ও আল্লাহর ওলীদের আদত, শান এবং ধারাবাহিক ‘আমল। একে আদতে কাদীমাহ্-ও বলা হয়। এ বিশেষ ‘আমল গুনাহ মিটিয়ে দেয় বা গুনাহের কাফফারাহ হয়। তাকে অন্যায় ও পাপ থেকেও ফিরিয়ে রাখে, যেমন আল্লাহর বাণীঃ ‘নিশ্চয় সালাত (মানুষকে) অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে।’ সর্বোপরি এটা একটা রোগ প্রতিরোধক স্বাস্থ্যসম্মত বিধানও বটে। সুতরাং হাদীসের অর্থ হলোঃ ক্বিয়ামুল লায়লের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয়, এটা অশ্লীল গর্হিত ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখে এবং মানব দেহকে রোগ ব্যাধি থেকে মুক্ত ও পবিত্র রাখে।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২২৮-[১০] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ তিন প্রকার লোকদের প্রতি নজর করে আল্লাহ তা’আলা হাসেন (অর্থাৎ তাদের ওপর খুশী হন)। ঐ লোক, যে রাতে উঠে (তাহাজ্জুদের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করেন। (দ্বিতীয়) ঐ লোক, যারা সালাতে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ায়। (তৃতীয়) ঐ লোকজন, যারা (দীনের) দুশমনদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্যে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। (শারহুস্ সুন্নাহ্)[1]

وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ثَلَاثَةٌ يَضْحَكُ اللَّهُ إِلَيْهِمْ الرَّجُلُ إِذَا قَامَ بِاللَّيْلِ يُصَلِّي وَالْقَوْمُ إِذَا صَفُّوا فِي الصَّلَاةِ وَالْقَوْمُ إِذَا صَفُّوا فِي قِتَالِ الْعَدُوِّ. رَوَاهُ فِي شَرْحِ السّنة

وعن ابي سعيد الخدري قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ثلاثة يضحك الله اليهم الرجل اذا قام بالليل يصلي والقوم اذا صفوا في الصلاة والقوم اذا صفوا في قتال العدو. رواه في شرح السنة

ব্যাখ্যা: এখানে আল্লাহর হাসি অর্থ হলো তার সন্তুষ্টি এবং কল্যাণের ইচ্ছা। কেউ বলেছেন, তার প্রশস্ত দয়া ও অনুগ্রহ নিয়ে বান্দার দিকে এগিয়ে আসা বা নিকট হওয়া। অথবা আল্লাহ তার মালায়িকাহকে খুশি ও হাসির নির্দেশ প্রদান করা। ইমাম ইবনু হিব্বান (রহঃ) বলেছেন, এটা (আল্লাহর) নির্দেশকে তার কর্মের দিকে সম্পর্ক করা, ‘আরাবী ভাষার কথপকথনে এটা অধিকহারে ব্যবহার হয়ে থাকে। আরব্য পরিভাষায় বলা হয় হাসি বা অনুরূপ কার্য যদি আল্লাহর দিকে সম্পর্কিত হয় তখন সেটা অপরের দ্বারা সম্পাদনের অর্থ দেয়। মুহাক্কিক ‘উলামাদের মাযহাব হলো এটা সিফাতে সিমাইয়া, সাদৃশ্যবিহীন তার সত্যতা ও যথার্থতা স্বীকৃত। যেমন ইমাম মালিক (রহঃ)-কে ‘ইস্‌তাওয়া’ অর্থাৎ আল্লাহ ‘আরশে সমাসীন’ এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি উত্তরে বলেন, ‘ইসতাওয়া’ এটাতো জানা, কিন্তু তার ধরণ ও প্রকৃতি অজানা বিষয়, তবে তার উপর ঈমান গ্রহণ ওয়াজিব। আর এতদ বিষয়ে প্রশ্ন করা বিদ্‘আত। সুতরাং আল্লাহর হাসির ধরণ প্রকৃতি ও অর্থ তার জন্য যেভাবে প্রযোজ্য ও শোভন সেভাবেই।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২২৯-[১১] ’আমর ইবনু ’আবাসাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ আল্লাহ তা’আলা শেষ রাত্রেই বান্দার বেশী নিকটতম হন। তাই সে সময় তোমরা আল্লাহর যিকরকারীদের মাঝে শামিল হওয়ার চেষ্টা করতে যদি পারো অবশ্যই করো। (তিরমিযী; তিনি বলেছেন, এ হাদীসটি হিসেবে হাসান সহীহ, সানাদগত দিক থেকে গরীব)[1]

وَعَن عَمْرو بن عبسة قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَقْرَبُ مَا يَكُونُ الرَّبُّ مِنَ الْعَبْدِ فِي جَوْفِ اللَّيْلِ الْآخِرِ فَإِنِ اسْتَطَعْتَ أَنْ تَكُونَ مِمَّنْ يَذْكُرُ اللَّهَ فِي تِلْكَ السَّاعَةِ فَكُنْ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيب إِسْنَادًا

وعن عمرو بن عبسة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اقرب ما يكون الرب من العبد في جوف الليل الاخر فان استطعت ان تكون ممن يذكر الله في تلك الساعة فكن» . رواه الترمذي وقال: هذا حديث حسن صحيح غريب اسنادا

ব্যাখ্যা: ইতিপূর্বে আল্লাহ তা‘আলার দুনিয়ার আসমানে অবতরণ সংক্রান্ত হাদীসের ব্যাখ্যা যেভাবে হয়ে গেছে, রাত গভীরে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়কারীর নিকটে হওয়া সংক্রান্ত অত্র হাদীসটির ব্যাখ্যাও ঠিক একইরূপ। এখানে আল্লাহর নিকটে হওয়া মানে তার রহমাত, মাগফিরাত ইত্যাদি নিকটে হওয়া। এ কথার প্রমাণ বিভিন্নভাবে পাওয়া যায়, যেমন আল্লাহর বাণীঃ وَاسْجُدْ وَاقْتَرِبْ ‘সিজদা্ কর এবং নৈকট্য অর্জন কর’- (সূরাহ্ আল ‘আলাক্ব ৯৬ : ১৯)। এতে আরো জ্ঞাতব্য যে, আল্লাহর দয়া এবং তাওফীক বান্দার ‘আমলের উপর অগ্রগামী এবং ‘আমলের কারণও এটাই। আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাওফীক না হলে বান্দার দ্বারা কখনো কোন কল্যাণ সম্পাদিত হতো না।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩০-[১২] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ঐ লোকের ওপর রহমত নাযিল করুন যে রাতে উঠে তাহাজ্জুদের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে। আবার নিজের স্ত্রীকেও সালাতের জন্যে জাগায়। যদি স্ত্রী না উঠে তাহলে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়। আল্লাহ ঐ মহিলার প্রতিও রহমত করেন যে রাত্রে উঠে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করে। আবার তার স্বামীকেও তাহাজ্জুদের সালাত আদায়ের জন্যে উঠায়। যদি স্বামী ঘুম থেকে না উঠে তাহলে সে তার মুখে পানি ছিটে দেয়। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী)[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رَحِمَ اللَّهُ رَجُلًا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّى وَأَيْقَظَ امْرَأَتَهُ فَصَلَّتْ فَإِنْ أَبَتْ نَضَحَ فِي وَجْهِهَا الْمَاءَ. رَحِمَ اللَّهُ امْرَأَةً قَامَتْ مِنَ اللَّيْلِ فَصَلَّتْ وَأَيْقَظَتْ زَوْجَهَا فَصَلَّى فَإِنْ أَبَى نَضَحَتْ فِي وَجْهِهِ المَاء» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ

وعن ابي هريرة قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «رحم الله رجلا قام من الليل فصلى وايقظ امراته فصلت فان ابت نضح في وجهها الماء. رحم الله امراة قامت من الليل فصلت وايقظت زوجها فصلى فان ابى نضحت في وجهه الماء» . رواه ابو داود والنساىي

ব্যাখ্যা: এখানেও সালাত দ্বারা তাহাজ্জুদের সালাত উদ্দেশ্য। এ হাদীসে স্ত্রীকে জাগানোর কথা বলা হয়েছে কিন্তু সামনে আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী ও আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে ‘আহল’ বা পরিবারের কথা বলা হয়েছে, সে মোতাবেক সন্তান-সন্ততি ও পরিবারের অন্যান্য নিকটতম ব্যক্তিও এর অন্তর্ভুক্ত হয়। এটা মূলত এই কথা যে, যার কাছে কোন কল্যাণ পৌঁছেছে তার উচিত সে কল্যাণ অপরের নিকটেও পৌঁছানো। নিজে যা পছন্দ করে অপরের জন্য তাই পছন্দ করা উচিত। সুতরাং রাত্রিকালীন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের মহা পুরস্কার আপনজনদের যেন পৌঁছে এটা সেই প্রয়াস।

মুখে পানি পিছানোর কথা বলা হয়েছে এজন্য যে, এটা শ্রেষ্ঠ এবং অতীব সম্মানিত অঙ্গ। সাথে সাথে এর দ্বারা তন্দ্রা ও নিদ্রাও দূরীভূত হয়। উযূ-গোসলের জন্য ফরয হিসেবে ধৌত করার এটি প্রথম অঙ্গ, এতে দু’টি চোখ রয়েছে যা নিদ্রার যন্ত্র বিশেষ। মহিলা ও তার স্বামী এবং পরিবারের লোকদের জাগানোর এ ব্যবস্থা বরবে। তবে এতে ইশারা পাওয়া যায় যে, রাতের ক্বিয়ামুল লায়ল করা, অপরকে জাগিয়ে তোলা ইত্যাদি কাজে পুরুষ অগ্রণী এবং অধিক হকদার।

এ হাদীসে সালাতুল লায়ল-এর ফাযীলাত, তার জন্য অন্যকে জাগানোর ফাযীলাত, জাগানোর ক্ষেত্রে সুন্দর সহনশীল আচরণ এবং পূর্ণ হৃদ্যতা ইত্যাদির কথা তুলে ধরা হয়েছে। আরো বিধৃত হয়েছে যে, আল্লাহ অনুগ্রহ কারো জন্য খাস নয় বরং তা সর্বজনীন।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩১-[১৩] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! কোন্ সময়ের দু’আ আল্লাহর নিকট বেশী কবূল হয়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, মাঝরাতের শেষ ভাগের দু’আ। আর ফরয সালাতের পরের দু’আ। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ قَالَ: قِيلَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيُّ الدُّعَاءِ أَسْمَعُ؟ قَالَ: «جَوْفُ اللَّيْلِ الآخر ودبر الصَّلَوَات المكتوبات» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابي امامة قال: قيل: يا رسول الله اي الدعاء اسمع؟ قال: «جوف الليل الاخر ودبر الصلوات المكتوبات» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: কোন্ দু‘আ অধিক শোনা হয়? এর অর্থ হলো আল্লাহ কবূল করার জন্য অধিক শুনে থাকেন কোন্ সময়ের দু‘আ? এরই উত্তর হলো ‘মধ্যরাত’ বা শেষ রাতের দু‘আ। ইমাম খাত্ত্বাবী বলেন, এর অর্থ হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশের দু‘আ।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩২-[১৪] আবূ মালিক আল আশ্’আরী (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ জান্নাতে এমনসব কক্ষ আছে যার বাইরের জিনিস ভেতর থেকে আর ভেতরের জিনিস বাইরে থেকে দেখা যায়। আর এ বালাখানা আল্লাহ তা’আলা ঐসব ব্যক্তির জন্যে তৈরি করে রেখেছেন, যারা অন্য ব্যক্তির সঙ্গে নরম কথা বলে। (গরীব-মিসকীনকে) খাবার দেয়। প্রায়ই (নফল) সওম পালন করে। রাত্রে এমন সময় (তাহাজ্জুদের) সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে যখন অনেক মানুষ ঘুমিয়ে থাকে। (বায়হাক্বীর শু’আবুল ঈমান)[1]

وَعَنْ أَبِي مَالِكٍ الْأَشْعَرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ فِي الْجَنَّةِ غُرَفًا يُرَى ظَاهِرُهَا مِنْ بَاطِنِهَا وَبَاطِنُهَا مِنْ ظَاهِرِهَا أَعَدَّهَا اللَّهُ لِمَنْ أَلَانَ الْكَلَامَ وَأَطْعَمَ الطَّعَامَ وَتَابَعَ الصِّيَامَ وَصَلَّى بِاللَّيْلِ وَالنَّاسُ نيام» . رَوَاهُ الْبَيْهَقِيّ فِي شعب الْإِيمَان

وعن ابي مالك الاشعري قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ان في الجنة غرفا يرى ظاهرها من باطنها وباطنها من ظاهرها اعدها الله لمن الان الكلام واطعم الطعام وتابع الصيام وصلى بالليل والناس نيام» . رواه البيهقي في شعب الايمان

ব্যাখ্যা: জান্নাতের নির্মাণ সামগ্রী অথবা তার নির্মাণশৈলী এমন আলোকভেদী হবে যে, তার অভ্যন্তর থেকে বাইরের বস্তুসমূহ দেখা যাবে, আবার বাইরে থেকেও তার ভিতরের সব কিছু দেখা যাবে। এমন বর্ণনার জান্নাত লাভের জন্য শর্ত হলোঃ

১। মিষ্টভাষী হওয়া, নরম কথা বলা, মানুষের সাথে সহনশীল হওয়া, আর জাহিল ব্যক্তিরা তার সাথে খরাপ কথা বলতে চেষ্টা করলে তাদের সালাম দিয়ে বিদায় নেয়া ইত্যাদি।

২। যারা অভুক্তকে খাদ্য খাওয়ায়, অর্থাৎ অভাব অনটনের সময় দরিদ্র ফকীর মানুষকে খাদ্য দান করে।

৩। যারা ধারাবাহিক সওম পালন করেন। এই সওম দ্বারা উদ্দেশ্য ফরয সওম ছাড়া অন্য সাওম। আর ধারাবাহিক বলতে একের পর এক। ইবনু মালিক বলেন, সেটা হলো ইবনু ‘উমার (রাঃ), আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) ও অন্যান্যদের সওমের ন্যায় সওম। যেমন প্রতি মাসে তিনটি সাওম, মাসের প্রথম মধ্য ও শেষ তারিখের সওম। এ ছাড়াও সোম ও বৃহস্পতিবারের সওম, ‘আরাফার সওম, ‘আশূরার সওম ইত্যাদি। সর্বোপরি উদ্দেশ্য হলো অধিকহারে সওম পালন করা। তবে সওমে বিসাল ও সওমুদ্ দাহর নয়।

৪। জান্নাতের ঐ কক্ষের বাসিন্দার আরো গুণাবলী হবে এই যে, দুনিয়ার মানুষ যখন গভীর ঘুমে নিমগ্ন থাকবে তখন তারা আরামের ঐ ঘুমকে বর্জন করে রাতের তাহাজ্জুদ সালাতে নিমগ্ন হবে।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ৩৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - ক্বিয়ামুল লায়ল-এর প্রতি উৎসাহ দান

১২৩৩-[১৫] ইমাম তিরমিযীও এ ধরনের বর্ণনা ’আলী (রাঃ) হতে নকল করেছেন। কিন্তু এদের সূত্রে ’কোমল কথা বলে’-এর স্থানে ’মধুর কথা বলে’ উদ্ধৃত হয়েছে। উভয় বাক্যের অর্থ একই।[1]

وَرَوَى التِّرْمِذِيُّ عَنْ عَلِيٍّ نَحْوَهُ وَفِي رِوَايَتِهِ: «لمن أطاب الْكَلَام»

وروى الترمذي عن علي نحوه وفي روايته: «لمن اطاب الكلام»

ব্যাখ্যা: এ হাদীসের ভাষা এবং ব্যাখ্যা পূর্বের হাদীসের ন্যায়।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৭ পর্যন্ত, সর্বমোট ৭ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে