পরিচ্ছেদঃ ২২. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাত নিষিদ্ধ সময়ের বিবরণ
যে সকল সময়ে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) নিষিদ্ধ তার বর্ণনা। নিষিদ্ধ সময় পাঁচটিঃ
১. সূর্যোদয়ের সময়
২. সূর্যাস্তের সময়
৩. ফজরের (ফজরের) সালাতের পর
৪. ’আসরের সালাতের পর
৫. সূর্য ঠিক মাথার উপরে থাকার সময়।
১০৩৯-[১] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন সূর্য উদয়ের ও অস্ত যাওয়ার সময় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ের জন্য অন্বেষণ না করে।
একটি বর্ণনার ভাষা হলো, তিনি বলেছেন, ’’যখন সূর্য গোলক উদিত হয় তখন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ত্যাগ করবে, যে পর্যন্ত সূর্য বেশ স্পষ্ট হয়ে না উঠবে। ঠিক এভাবে আবার যখন সূর্য গোলক ডুবতে থাকে তখন সালাত আদায় করা থেকে বিরত থাকবে, যে পর্যন্ত সূর্য সম্পূর্ণভাবে ডুবে না যায়। আর সূর্য উঠার ও অস্ত যাওয়ার সময় সালাতের ইচ্ছা করবে না। কারণ সূর্য শায়ত্বনের (শয়তানের) দু’ শিং-এর মধ্যখান দিয়ে উদয় হয়। (বুখারী, মুসলিম) [1]
بَابُ أَوْقَاتِ النَّهْيِ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَتَحَرَّى أَحَدُكُمْ فَيُصَلِّيَ عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَلَا عِنْدَ غُرُوبِهَا»
وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ: «إِذَا طَلَعَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فدعوا الصَّلَاة حَتَّى تبرز. فَإِذا غَابَ حَاجِبُ الشَّمْسِ فَدَعُوا الصَّلَاةَ حَتَّى تَغِيبَ وَلَا تَحَيَّنُوا بِصَلَاتِكُمْ طُلُوعَ الشَّمْسِ وَلَا غُرُوبَهَا فَإِنَّهَا تطلع بَين قَرْني الشَّيْطَان»
ব্যাখ্যাঃ তোমদের কেউ যেন অন্বেষণ না করে। এ বাক্যের দু’টি অর্থ হতে পারে-
১. সালাত আদায়ের জন্য সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময়ের জন্য অপেক্ষা করবে না অর্থাৎ বেছে বেছে এ সময়ে সালাত আদায় করবে না।
২. এ সময়ে এটা মনে করে সালাত আদায় করবে না যে, এ সময় সালাতের জন্য উত্তম।
হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, এ হাদীসের মর্মার্থ নিয়ে ‘আলিমদের মাঝে মতের অমিল রয়েছে। কেউ বলেনঃ এর মর্ম হলো ফাজর (ফজর) ও ‘আসরের পর ঐ ব্যক্তির জন্য সালাত আদায় করা মাকরূহ যে ব্যক্তি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায় করার ইচ্ছা করে।
কিছু আহলে যাহির এ মত গ্রহণ করেছেন। ইবনুল মুনযির এ মতকে শক্তিশালী বলে ব্যক্ত করেছেন। আবার কেউ বলেনঃ এ হাদীসের মর্ম হলো ফাজরের (ফজরের) পরে সূর্যোদয় পর্যন্ত এবং ‘আসরের পরে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা মাকরূহ, সূর্যোদয়ের সময় ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায় করার ইচ্ছা করুক আর নাই করুক। আর এটাই অধিকাংশ ‘আলিমদের অভিমত।
সূর্য গোলকের উপরিভাগকে হাজিবুশ্ শামস্ বলা হয়। কেননা সূর্যোদয়ের সময় এটা প্রথমে প্রকাশ পায় তাই তাকে মানুষের ভ্রূর সাথে তুলনা করা হয়েছে। ‘তখন তোমরা সালাত আদায় পরিত্যাগ কর’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য ফারযের (ফরযের/ফরজের) ক্বাযা এবং ঐ ওয়াক্তদ্বয়ের সালাত ব্যতীত অন্য সালাত। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সালাতের কথা ভুলে যায় অথবা ঘুমিয়ে পরে তার যখন সালাতের কথা স্মরণ হবে বা ঘুম থেকে জাগবে তখনই তার সালাতের সময়। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আরো বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের আগে ফাজরের (ফজরের) এক রাক্‘আত পেল এবং সূর্যাস্তের পূর্বে ‘আসরের এক রাক্‘আত পেল সে ঐ ওয়াক্তের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেল।
অতএব আলোচিত হাদীসের মর্ম হলো সালাত আদায়ের জন্য সূর্যোদয়ের ও সূর্যাস্তের সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে না। ‘কেননা তা শায়ত্বনের (শয়তানের) দু’ শিং-এর মাঝ দিয়ে উদয় হয়’। সূর্যোদয়ের সময় শায়ত্বন (শয়তান) তার বরাবর দাঁড়িয়ে থাকে। সূর্য পূজারীরা সূর্যোদয়কালে যখন সূর্যকে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে তখন ঐ সিজদা্ শায়ত্বনের (শয়তানের) জন্যই হয়ে থাকে। যাতে মু’মিনের ‘ইবাদাত সূর্য পূজারীদের সাথে সাদৃশ্য না হয় এজন্য উক্ত সময়ে সালাত আদায় করতে নিষেধ করা হয়েছে।
পরিচ্ছেদঃ ২২. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাত নিষিদ্ধ সময়ের বিবরণ
১০৪০-[২] ’উকবাহ্ ইবনু ’আমির (রাঃ)থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তিন সময় রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে ও মুর্দা দাফন করতে আমাদেরকে বারণ করেছেন। প্রথম হলো সূর্য উদয়ের সময়, যে পর্যন্ত না তা সম্পূর্ণ উদিত হয়। দ্বিতীয় হলো দুপুরে একবারে সূর্য ঠিক স্থির হওয়ার সময় থেকে সূর্য ঢলার আগ পর্যন্ত। আর তৃতীয় হলো সূর্য ডুবে যাবার সময় যে পর্যন্ত না তা ডুবে যায়। (মুসলিম)[1]
بَابُ أَوْقَاتِ النَّهْيِ
وَعَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ قَالَ: ثَلَاثُ سَاعَاتٍ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ينهانا أَن نصلي فِيهِنَّ أَو نَقْبُرَ فِيهِنَّ مَوْتَانَا: حِينَ تَطْلُعُ الشَّمْسُ بَازِغَةً حَتَّى تَرْتَفِعَ وَحِينَ يَقُومُ قَائِمُ الظَّهِيرَةِ حَتَّى تَمِيلَ الشَّمْسُ وَحِينَ تَضَيَّفُ الشَّمْسُ لِلْغُرُوبِ حَتَّى تغرب. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: অত্র হাদীসের শিক্ষাঃ নিষিদ্ধ সময়ে মৃতের জন্য জানাযা পড়া এবং মৃত ব্যক্তিকে দাফন করাও নিষেধ। ইমাম আহমাদ এ মত পোষণ করেন এবং তাই সঠিক।
(قَائِمُ الظَّهِيرَةِ) হতে উদ্দেশ্য সূর্য যখন মাথার উপরে স্থির হয়। কেউ বলেছেন, এ থেকে উদ্দেশ্য মুসাফির ব্যক্তি যখন সূর্যের তেজের কারণে যাত্রা বিরতি করে ঐ সময়কে قَائِمُ الظَّهِيرَةِ বলে। ইমাম নাবাবী বলেনঃ এর অর্থ হলো ঐ সময় যখন দন্ডায়মান ব্যক্তির ছায়া পূর্ব বা পশ্চিম দিকে না ঢলে। আমীর ইয়ামানী বলেনঃ বর্ণিত তিন সময়ে সালাত আদায়ের নিষেধাজ্ঞা ফরয ও নফল সব সালাতকেই শামিল করে। তবে ফরয সালাতকে পূর্বে বর্ণিত হাদীস (ভুলে যাওয়া ব্যক্তির জন্য স্মরণ হলেই তার সালাতের সময়, যে ব্যক্তি সূর্যোদয়ের পূর্বে ও সূর্যাস্তের পূর্বে এক রাক্‘আত পেলো সে সালাত পেলো) দ্বারা এ নিষেধাজ্ঞার আওতা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। অতএব ঐ নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র নফল সালাতের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
পরিচ্ছেদঃ ২২. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাত নিষিদ্ধ সময়ের বিবরণ
১০৪১-[৩] আবূ সা’ঈদ আল্ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ ফাজ্রের (ফজরের) সালাতের পর সূর্য উঠে উপরে চলে না আসা পর্যন্ত আর কোন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) নেই। আর ’আসরের সালাতের পর সূর্য না ডুবা পর্যন্ত কোন সালাত নেই। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ أَوْقَاتِ النَّهْيِ
وَعَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا صَلَاةَ بَعْدَ الصُّبْحِ حَتَّى تَرْتَفِعَ الشَّمْسُ وَلَا صَلَاةَ بَعْدَ الْعَصْرِ حَتَّى تَغِيبَ الشَّمْسُ»
ব্যাখ্যা: (لَا صَلَاةَ بَعْدَ الصُّبْحِ) ফাজরের (ফজরের) পর সালাত নেই। অর্থাৎ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বিশুদ্ধ নয়। এখানে নেতিবাচক শব্দের অর্থ হলো নিষেধাজ্ঞাসূচক। এখানে যেন বলা হচ্ছে তোমরা ফজরের পরে সালাত আদায় করবে না। আর بَعْدَ الصُّبْحِ ফজরের পরে এর উদ্দেশ্য হলো ফজরের ফরয সালাত আদায়ের পরে।
হাদীসের শিক্ষা: উল্লেখিত দু’ ওয়াক্তে অর্থাৎ ফজরের সালাত আদায়ের পরে এবং ‘আসরের সালাত আদায়ের পরে নফল সালাত আদায় করা হারাম। ইমাম আবূ হানীফার মতে সকল ধরনের নফল সালাত এ দু’ সময়ে অবৈধ। আর ইমাম শাফি‘ঈর মতে কারণবশতঃ যে নফল সালাত আদায় করা হয় যেমন মসজিদে প্রবেশ করে তাহ্ইয়্যাতুল মাসজিদ সালাত আদায় করা। এ ধরনের নফল সালাত অবৈধ নয়। তবে ইমাম আবূ হানীফার মতে এ দু’ সময়েও ক্বাযা সালাত, জানাযার সালাত ও তিলাওয়াতের সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) বৈধ।
পরিচ্ছেদঃ ২২. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাত নিষিদ্ধ সময়ের বিবরণ
১০৪২-[৪] ’আমর ইবনু ’আবাসাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদীনায় তাশরীফ আনলে আমিও মদীনায় চলে আসলাম। তাঁর কাছে প্রবেশ করলাম। অতঃপর আমি বললাম, আমাকে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বললেন, ফজরের (ফজরের) সালাত আদায় করো। এরপর সালাত হতে বিরত থাকো যতক্ষণ পর্যন্ত সূর্য উঠে উপরে না আসে। কেননা, সূর্য উদয় হয় শায়ত্বনের (শয়তানের) দু’ শিং-এর মাঝখান দিয়ে। আর এ সময় কাফিরগণ (সূর্য পূজারীরা) একে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে। তারপর সালাত পড়ো। কেননা এ সময়ে (আল্লাহর কাছে বান্দার) সালাতের উপস্থিতির সাক্ষ্য দেয়া হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত ছায়া বর্শার উপর উঠে না আসে ও জমিনের উপর না পড়ে (অর্থাৎ ঠিক দুপুরের সময়), এ সময়ও সালাত হতে বিরত থাকো। এজন্য যে এ সময় জাহান্নামকে গরম করা হয়। তারপর ছায়া যখন সামান্য ঢলে যাবে তখন সালাত আদায় করো। সালাতের সময়টা মালায়িকাহ্’র (ফেরেশতাদের) উপস্থিতি ও সাক্ষ্য দেয়ার সময় যে পর্যন্ত তুমি ’আসরের সালাত আদায় না করবে। তারপর আবার সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) হতে বিরত থাকবে সূর্য ডুবা পর্যন্ত। কারণ সূর্য শায়ত্বনের (শয়তানের) দু’ শিং-এর মাঝখান দিয়ে অস্ত যায়। এ মুহূর্তে সূর্য পূজক কাফিররা সূর্যকে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে।
’আমর ইবনু ’আবাসাহ্ (রাঃ) বলেন, আমি আবার আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রসূল! উযূর ব্যাপারে কিছু বয়ান করুন। তিনি বললেন, তোমাদের যে লোক উযূর পানি তুলে নিবে, কুলি করবে, নাকে পানি দিয়ে ঝেড়ে নেবে। তাতে তার চেহারার, মুখের ও নাকের ছিদ্রের পাপরাশি ঝরে যায়। সে যখন তার চেহারাকে আল্লাহর নির্দেশ মতো ধুয়ে নেয় তখন তার চেহারার পাপরাশি তার দাড়ির পাশ দিয়ে পানির সঙ্গে পড়ে যায়। আর সে যখন তার দু’টি হাত কনুই পর্যন্ত ধুয়ে নেয় তখন দু’হাতের পাপ তার আঙ্গুলের মাথা দিয়ে বের হয়ে পানির ফোটার সঙ্গে পড়ে যায়। তারপর সে যখন তার মাথা মাসেহ করে তখন তার মাথার পাপরাশি চুলের পাশ দিয়ে পানির সঙ্গে পড়ে যায়। আর যখন সে তার দু’ পা গোছাদ্বয়সহ ধৌত করে তখন তার দু’ পায়ের পাপ তার আঙ্গুলের পাশ দিয়ে পানির সঙ্গে পড়ে যায়। তারপর সে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) সমাপ্ত করে যখন দাঁড়ায় ও সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে এবং আল্লাহর উপযুক্ত প্রশংসা ও গুণগান বর্ণনা করে, আল্লাহর জন্যে নিজের মনকে নিবেদিত করে, তাহলে সালাতের শেষে তার অবস্থা তেমন (নিষ্পাপ) হয়ে যায় যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল। (মুসলিম)[1]
بَابُ أَوْقَاتِ النَّهْيِ
وَعَن عَمْرو بن عبسة قَالَ: قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ فَقَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِ فَقُلْتُ: أَخْبِرْنِي عَنِ الصَّلَاةِ فَقَالَ: «صَلِّ صَلَاةَ الصُّبْحِ ثُمَّ أقصر عَن الصَّلَاة حَتَّى تَطْلُعُ الشَّمْسُ حَتَّى تَرْتَفِعَ فَإِنَّهَا تَطْلُعُ حِينَ تَطْلَعُ بَيْنَ قَرْنَيْ شَيْطَانٍ وَحِينَئِذٍ يَسْجُدُ لَهَا الْكُفَّارُ ثُمَّ صَلِّ فَإِنَّ الصَّلَاةَ مَشْهُودَةٌ مَحْضُورَةٌ حَتَّى يَسْتَقِلَّ الظِّلُّ بِالرُّمْحِ ثُمَّ أَقْصِرْ عَنِ الصَّلَاةِ فَإِنَّ حِينَئِذٍ تُسْجَرُ جَهَنَّمُ فَإِذَا أَقْبَلَ الْفَيْءُ فَصَلِّ فَإِنَّ الصَّلَاةَ مَشْهُودَةٌ مَحْضُورَةٌ حَتَّى تُصَلِّيَ الْعَصْرَ ثُمَّ أَقْصِرْ عَنِ الصَّلَاةِ حَتَّى تَغْرُبَ الشَّمْسُ فَإِنَّهَا تَغْرُبُ بَيْنَ قَرْنَيْ شَيْطَانٍ وَحِينَئِذٍ يسْجد لَهَا الْكفَّار» قَالَ فَقلت يَا نَبِيَّ اللَّهِ فَالْوُضُوءُ حَدِّثْنِي عَنْهُ قَالَ: «مَا مِنْكُم رجل يقرب وضوءه فيتمضمض ويستنشق فينتثر إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا وَجْهِهِ وَفِيهِ وَخَيَاشِيمِهِ ثُمَّ إِذَا غَسَلَ وَجْهَهُ كَمَا أَمَرَهُ اللَّهُ إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا وَجْهِهِ مِنْ أَطْرَافِ لِحْيَتِهِ مَعَ الْمَاءِ ثُمَّ يَغْسِلُ يَدَيْهِ إِلَى الْمِرْفَقَيْنِ إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا يَدَيْهِ مِنْ أَنَامِلِهِ مَعَ الْمَاءِ ثُمَّ يَمْسَحُ رَأْسَهُ إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا رَأْسِهِ مِنْ أَطْرَافِ شَعْرِهِ مَعَ الْمَاءِ ثُمَّ يَغْسِلُ قَدَمَيْهِ إِلَى الْكَعْبَيْنِ إِلَّا خَرَّتْ خَطَايَا رِجْلَيِهِ مِنْ أَنَامِلِهِ مَعَ الْمَاءِ فَإِنْ هُوَ قَامَ فَصَلَّى فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَمَجَّدَهُ بِالَّذِي هُوَ لَهُ أَهْلٌ وَفَرَّغَ قَلْبَهُ لِلَّهِ إِلَّا انْصَرَفَ مِنْ خَطِيئَتِهِ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّهُ» . رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (أَخْبِرْنِي عَنِ الصَّلَاةِ) ‘আমাকে সালাত সম্পর্কে অবহিত করুন’ অর্থাৎ সালাতের সময় সম্পর্কে অবহিত করুন।
(حَتّى تَرْتَفِعَ) ‘তা সূর্য উপরে উঠা পর্যন্ত।’ এ থেকে বুঝা যায় সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) বৈধ হওয়ার জন্য সূর্য উদয় হওয়াই যথেষ্ঠ নয়। বরং সূর্যোদয় হয়ে তা প্রকাশমান হতে হবে। তথা বর্শার দৈর্ঘ্য পরিমাণ উপরে উঠতে হবে যেমন আবূ দাঊদ ও নাসায়ীতে বর্ণিত হয়েছে
(مَشْهُوْدَةٌ مَحْضُوْرَةٌ) ইমাম নাবাবী বলেনঃ এর অর্থ হল ঐ সালাতে মালাক (ফেরেশতা) উপস্থিত হয় ফলে তা কবূল হওয়া এবং রহমাত অর্জনের সম্ভাবনা বেশী। মুল্লা ‘আলী কারী বলেনঃ এর অর্থ হল ঐ সালাতের সাওয়াব লিখার জন্য মালাক উপস্থিত হয় এবং যে ঐ সালাত আদায় করে তার পক্ষে সাক্ষী হয়।
(حَتّى يَسْتَقِلَّ الظِّلُّ بِالرُّمْحِ) ইমাম নাবাবী বলেনঃ এর অর্থ হলো বর্শার ছায়া তার বরাবরে উত্তর দিকে থাকবে। পূর্ব বা পশ্চিম দিকে ঝুঁকে থাকবে না। সিন্দী বলেনঃ বর্শার ছায়া ছোট হয়ে তা তার নীচে চলে আসবে। এ থেকে উদ্দেশ্য হলো সূর্য মাথার উপরে উঠে যাবে।
(تُسْجَرُ جَهَنَّمُ) জাহান্নাম অগ্নি দিয়ে পূর্ণ করা হয়। ইমাম খাত্ত্বাবী মা‘আলিমে ১ম খন্ডের ২৭৬ পৃষ্ঠায় বলেনঃ জাহান্নাম অগ্নি দিয়ে পূর্ণ করা, সূর্য শায়ত্বনের (শয়তানের) দুই শিংয়ের মাঝে থাকে এগুলো এমন বিষয় যার অর্থ আমরা অবহিত হতে পারি না। তবে এগুলোর প্রতি ঈমান আনা ওয়াজিব। আর সে অনুযায়ী কর্ম সম্পাদন করা জরুরী।
(فَإِذَا أَقْبَلَ الْفَيْءُ) ছায়া যখন পূর্ব দিকে প্রকাশ পায় শুধুমাত্র সূর্য ঢলে পড়ার পরের ছায়াকে আরবীতে فَيْ বলে। আর সূর্য ঢলার আগে ও পরের উভয় ছায়াকে ظل বলা হয়।
(حَتّى تُصَلِّيَ الْعَصْرَ) ‘আসরের সালাত আদায় করা পর্যন্ত। এ থেকে বুঝা যায় যে, ‘আসরের ওয়াক্ত প্রবেশ করলেই নফল সালাত আদায় করা অবৈধ হয় না। যতক্ষণ না ‘আসরের সালাত আদায় করা হয়। তেমনিভাবে একজনের ‘আসরের সালাত আদায়ের ফলে অন্যের জন্য নফল সালাত অবৈধ হবে না যতক্ষণ না সে নিজে ‘আসরের সালাত আদায় করবে। এমনকি যদি কোন ব্যক্তি ‘আসরের সালাতের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার পর তা আদায় করতে বিলম্ব করে তা হলে সালাত আদায়ের পূর্বে নফল সালাত অদায় করা মাকরূহ হবে না।
(فَالْوُضُوءُ حَدِّثْنِي عَنْهُ) উযূর ফাযীলাত সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। (مِنْ أَنَامِلِه) ‘তার আঙ্গুলের মাথা থেকে (গুনাহ ঝড়ে যায়)।’
(فَرَّغَ قَلْبَه لِلّهِ) ‘তার অন্তরকে আল্লাহর জন্য খালি করে’ তার অন্তরকে আল্লাহর সমীপে উপস্থিত করে অর্থাৎ সালাতরত অবস্থায় একমাত্র আল্লাহর ধ্যানে নিমগ্ন থাকে অন্য কিছুর দিকে মনোনিবেশ করে না।
(كَهَيْئَتِه يَوْمَ وَلَدَتْهُ أُمُّه) ‘তার অবস্থা তেমন হয়ে যায় যেদিন তার মা তাকে প্রসব করেছিল’ অর্থাৎ মায়ের পেট থেকে ভূমিষ্ট হওয়ার সময় যেমন নিষ্পাপ ছিল সেই রকম নিষ্পাপ হয়ে যায়।
পরিচ্ছেদঃ ২২. প্রথম অনুচ্ছেদ - সালাত নিষিদ্ধ সময়ের বিবরণ
১০৪৩-[৫] কুরায়ব (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু ’আব্বাস, মিস্ওয়ার ইবনু মাখরামাহ্ ও ’আবদুর রহমান ইবনু আযহার (রাঃ)তারা সকলে তাকে ’আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর কাছে পাঠালেন। তারা তাকে বলে দিলেন, ’আয়িশাকে তাদের সালাম দিয়ে ’আসরের সালাতের পর দু’ রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করার ব্যাপারে প্রশ্ন করতে। কুরায়ব বলেন, আমি ’আয়িশার নিকট হাযির হলাম। ঐ তিনজন যে খবর নিয়ে আমাকে পাঠালেন আমি সে খবর তার কাছে পৌঁছালাম। ’আয়িশাহ্ (রাঃ) বললেন, উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করো। অতঃপর তাদের কাছে গেলাম, তারপর তারা আমাকে উম্মু সালামাহ্ (রাঃ)-এর কাছে পাঠালেন। অতঃপর উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) বললেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি এ দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। তারপর আমি দেখলাম, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই এ দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করছেন। তিনি (এ দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করে) ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলেন, আমি খাদিমকে রসূলের দরবারে পাঠালাম এবং তাকে বলে দিলাম, তুমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে গিয়ে বলবে যে, উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) বলছেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনাকে বলতে শুনেছি এ দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। অথচ আমি আপনাকে এ দু’ রাক্’আত সালাত আদায় করতে দেখেছি। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে আবূ উমাইয়্যার মেয়ে! তুমি ’আসরের পরে দু’ রাক্’আত সালাত আদায়ের ব্যাপারে প্রশ্ন করেছ। ’আবদুল ক্বায়স গোত্রের কিছু লোক (ইসলামী শিক্ষা ও দীনের হুকুম আহকাম জানার জন্য) আমার কাছে আসে। (তাদের দীনের ব্যাপারে আহকাম বলতে বলতে) তারা আমাকে যুহরের পরের দু’ রাক্’আত সুন্নাত সালাত আদায় করা থেকে ব্যস্ত রাখেন। সেটাই এ দু’ রাক্’আত (যে দু’ রাক্’আত সালাত এখন ’আসরের পরে পড়লাম)। (বুখারী, মুসলিম)[1]
بَابُ أَوْقَاتِ النَّهْيِ
وَعَنْ كُرَيْبٍ: أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ وَالْمِسْوَرَ بْنَ مخرمَة وَعبد الرَّحْمَن بن أَزْهَر رَضِي اللَّهُمَّ عَنْهُم وأرسلوه إِلَى عَائِشَةَ فَقَالُوا اقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامُ وَسَلْهَا عَن [ص:329] الرَّكْعَتَيْنِ بعدالعصرقال: فَدَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ فَبَلَّغْتُهَا مَا أَرْسَلُونِي فَقَالَتْ سَلْ أُمَّ سَلَمَةَ فَخَرَجْتُ إِلَيْهِمْ فَرَدُّونِي إِلَى أم سَلمَة فَقَالَت أم سَلمَة رَضِي اللَّهُمَّ عَنْهَا سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَنْهَى عَنْهُمَا ثُمَّ رَأَيْتُهُ يُصَلِّيهِمَا ثُمَّ دَخَلَ فَأَرْسَلْتُ إِلَيْهِ الْجَارِيَةَ فَقُلْتُ: قُولِي لَهُ تَقُولُ أُمُّ سَلَمَةَ يَا رَسُولَ اللَّهِ سَمِعْتُكَ تَنْهَى عَنْ هَاتين وَأَرَاكَ تُصَلِّيهِمَا؟ قَالَ: «يَا ابْنَةَ أَبِي أُمَيَّةَ سَأَلْتِ عَنِ الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعَصْرِ وَإِنَّهُ أَتَانِي نَاسٌ مِنْ عَبْدِ الْقَيْسِ فَشَغَلُونِي عَنِ الرَّكْعَتَيْنِ اللَّتَيْنِ بعد الظّهْر فهما هَاتَانِ»
ব্যাখ্যা: (سَلْهَا عَن الرَّكْعَتَيْنِ بعدالعصر) ‘‘তাকে ‘আসরের পরের দু’ রাক্‘আত সালাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর’’। অন্য বর্ণনায় এতটুকু বর্ণিত আছে যে, তুমি তাকে বলবে, আমাদের নিকট সংবাদ পৌঁছে যে, আপনি এ দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করে থাকেন, অথচ আমাদের নিকট এ মর্মে সংবাদ পৌঁছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা আদায় করতে নিষেধ করেছেন।
(سَلْ أُمَّ سَلَمَةَ) ‘‘তুমি এ বিষয়ে উম্মু সালামাকে জিজ্ঞেস কর’’- এতে এ বিষয়ের প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ‘আলিমের জন্য মুস্তাহাব হল, যখন তার নিকট কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় আর সে জানে যে, এ বিষয়ে তার চেয়ে অভিজ্ঞ লোক রয়েছেন যিনি ঐ বিষয়ে প্রকৃত ও বাস্তব বিষয় অবহিত আছেন তাহলে ঐ বিষয়ে জানার জন্য তার নিকট প্রেরণ করা যদি তা সম্ভব হয়। আর এতে অন্যের মর্যাদার স্বীকৃতিও রয়েছে।
(سَمِعْتُكَ تَنْهى عَنْ هَاتين وَأَرَاكَ تُصَلِّيهِمَا) ‘‘আপনাকে এ দু’ রাক্‘আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করা থেকে বারণ করতে শুনেছি অথচ আমি আপনাকে তা আদায় করতে দেখছি’’ এর কারণ কি? এতে এ শিক্ষা রয়েছে যে, অনুসারী ব্যক্তি যদি অনুসৃত ব্যক্তির মধ্যে এমন কিছু দেখতে পায় যা তার সাধারণ অভ্যাসের বিরোধী, তাহলে ভদ্রতার সাথে তাকে তা অবহিত করা। যদি তিনি তা ভুল করে থাকেন তবে তা পরিহার করবেন। আর যদি ইচ্ছকৃতভাবেই করে থাকেন এবং এর কোন কারণ থাকে তাহলে তিনি তা অনুসারীকে অবহিত করবেন যাতে সে তা থেকে উপকৃত হতে পারে।
(فَشَغَلُونِي عَنِ الرَّكْعَتَيْنِ اللَّتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ) তারা আমাকে যুহরের পরের দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করা থেকে ব্যাস্ত রেখেছিল। এতে বুঝা যায়, দু’টি কল্যাণমূলক কাজের মাঝে যদি সংঘর্ষ দেখা দেয় তাহলে অধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আগে সম্পাদন করতে হবে। এজন্যই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সুন্নাত সালাত বাদ রেখে আগত লোকদের মাঝে ইসলাম সম্পর্কে কথাবার্তা বললেন।
(فَهُمَا هَاتَانِ) ‘‘এ দু’ রাক্‘আত সেই সালাত’’। অর্থাৎ ‘আসরের পরে আমি যে দু’ রাক্‘আত সালাত আদায় করেছি তা হলো সেই দুই রাক্‘আত যা আমি যুহরের পরে ব্যাস্ততার কারণে আদায় করতে পারিনি। তা আমি এখন আদায় করলাম। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অভ্যাস ছিল যে, তিনি ‘ইবাদাত জাতীয় কোন কাজ একবার করলে তা আর পরিত্যাগ করতেন না। তাই এ দু’ রাক্‘আত সালাত তিনি অভ্যাসে পরিণত করে নিয়েছিলেন। এতে প্রমাণ পাওয়া যায়, যুহরের সালাতের পরের দু’ রাক্‘আত সুন্নাত ‘আসরের সালাতের পরেও ক্বাযা হিসেবে আদায় করা যায়।
যদি প্রশ্ন তোলা হয় যে, এটি তো রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন খাস। কেননা আবূ দাঊদে ও বায়হাক্বীতে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আসরের পর সালাত আদায় করতেন কিন্তু তিনি অন্যদের তা আদায় করতে বারণ করতেন। তিনি সাওমে বিশাল পালন করতেন অথচ অন্যদের তা পালন করতে বারণ করতেন।
ইমাম আহমাদ, ইবনু হিব্বান ও ত্বহাবী উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেনঃ আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! যদি তা ছুটে যায় তবে আপনি কি তা ক্বাযা করবেন? তিনি বললেনঃ না।
এর জবাব এই যে, সকল বিষয়েই রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণ আসল নিয়ম, যতক্ষণ না কোন বিষয় তাঁর জন্য খাস হওয়ার সঠিক দলীল পাওয়া যায়। উল্লেখিত ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসের সানাদের একজন রাবী মুহাম্মাদ ইবনু ইসহাক্ব তিনি মুদাল্লিস। তাছাড়া ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) রসূলের তা ধারাবাহিকভাবে আদায় করাকে রসূলের জন্য খাস মনে করতেন, ক্বাযা করাকে তাঁর জন্য খাস মনে করতেন না।
আর উম্মু সালামাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীসটিও যথাযথ দলীলযোগ্য নয়।
হাফিয ইবনু হাজার (রহঃ) বলেনঃ উল্লেখিত সময়ে সালাত আদায় করা ও তা আদায় করতে নিষেধ করা এ দুই বর্ণনার মধ্যে মূলত কোন সংঘর্ষ নেই। কেননা যাতে সালাত আদায় করার বর্ণনা রয়েছে তার কারণ বিদ্যমান রয়েছে। অতএব কারণবশতঃ যা আদায় করা হবে তা ঐ হাদীসের সাথে যুক্ত হবে যা রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারণবশতঃ আদায় করেছিলেন। আর ঐ সালাত নিষিদ্ধ থাকবে যার কোন কারণ নেই।