পরিচ্ছেদঃ ১৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাশাহুদ
উল্লেখ্য যে, আত্তাহিয়্যাতুকে তাশাহুদ বলার কারণ এতে তাওহীদ ও রিসালাত (রিসালাত) সম্পর্কে সাক্ষ্য উচ্চারিত হয় আর সকল দু’আ ও আযকার হতে এ দু’আটি সবচেয়ে দামী ও মর্যাদাপূর্ণ।
৯০৬-[১] ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশাহুদ পড়ার জন্য বসলে তাঁর বাম হাত বাম পায়ের হাঁটুর উপর এবং ডান হাত ডান হাঁটুর উপর রাখতেন। এ সময় তিনি তিপ্পান্নের মতো করার জন্য আঙ্গুল বন্ধ করে রাখতেন, তর্জনী দিয়ে (শাহাদাত) ইশারা করতেন। (মুসলিম)[1]
بَابُ التَّشَهُّدِ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَعَدَ فِي التَّشَهُّدِ وَضَعَ يَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُسْرَى وَوَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى رُكْبَتِهِ الْيُمْنَى وَعَقَدَ ثَلَاثًا وَخمسين وَأَشَارَ بالسبابة
পরিচ্ছেদঃ ১৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাশাহুদ
৯০৭-[২] আর এক বর্ণনায় আছে, যখন সালাতের মধ্যে বসতেন দু’ হাত দু’ হাঁটুর উপর রাখতেন এবং ডান হাতের বৃদ্ধার নিকট যে আঙ্গুল রয়েছে (তর্জনী) তা উঠাতেন। তা দিয়ে দু’আ (ইশারা) করতেন। আর তাঁর বাম হাত বাম হাঁটুর উপর বিছানো থাকতো।[1]
بَابُ التَّشَهُّدِ
وَفِي رِوَايَةٍ: كَانَ إِذَا جَلَسَ فِي الصَّلَاةِ وَضَعَ يَدَيْهِ عَلَى رُكْبَتَيْهِ وَرَفَعَ أُصْبُعَهُ الْيُمْنَى الَّتِي تلِي الْإِبْهَام يَدْعُو بِهَا وَيَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى رُكْبَتِهِ بَاسِطَهَا عَلَيْهَا. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: দু’ হাতকে দু’ হাঁটুর উপর রাখার উদ্দেশ্য হলো সালাতকে অনর্থক কোন কিছু থেকে হিফাযাত করা আর শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ্য রাখা।
রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ইশারার মাধ্যমে তাওহীদের স্বীকৃতি দিতেন, এর দ্বারা দলীল সাব্যস্ত হয় না যে, শাহাদাত আঙ্গুল উঠাতেন ‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’’ বলার সময়, বরং এখানে ইশারা করার হিকমাত বর্ণনা করা হয়েছে আর তা হলো তাওহীদ।
(ثَلَاثَةً وَخَمْسِيْنَ) - তিপ্পান্ন গণনার মতো আঙ্গুলসমূহ বন্ধ করা। এর চিত্র কয়েকভাবে।
প্রথমত কনিষ্ঠা, অনামিকা মধ্যমা অঙ্গুলি বন্ধ করে তর্জনীকে খাড়া রাখা আর বৃদ্ধাঙ্গুলিকে তর্জনীর গোড়ার সাথে লেগে রাখা।
দ্বিতীয়ত সকল আঙ্গুলকে মুষ্টিবদ্ধ করবে নিরাপদে আর তর্জনী দ্বারা ইশারা করবে।
আর এর স্বপক্ষে মুসলিমের হাদীস রয়েছে যা, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাতে বসতেন ডান হাতের তালু ডান রানের উপর রাখতেন এবং সকল আঙ্গুলকে মুষ্টিবদ্ধ বা বন্ধ করতেন আর বৃদ্ধাঙ্গুলের পাশে যে আঙ্গুল আছে তথা তর্জনী দ্বারা ইশারা করতেন।
তৃতীয়ত কনিষ্ঠা, অনামিকা বন্ধ করে তর্জনীকে খাড়া রেখে বৃদ্ধা আঙ্গুল ও মধ্যমাকে গোল করা তথা বৃদ্ধা আঙ্গুল ও মধ্যকার মাথাকে পরস্পরে মিলিয়ে বৃত্তের মতো করা।
যেমনটি ওয়ায়িল-এর হাদীস সামনে আসছে।
চতুর্থত ডান হাত ডান রানের উপর রেখে তর্জনী দ্বারা ইশারা করা। আর বৃদ্ধা আঙ্গুল মধ্যমার উপর রাখবে। যেমনটি ‘আবদুল্লাহ ইবনুয্ যুবায়র এর হাদীস সামনে আসছে।
আর এ বিভিন্ন পদ্ধতি সংক্রান্ত হাদীসগুলোর মধ্যে কোন মতবিরোধ নেই প্রত্যেক পদ্ধতি জায়িয রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন পদ্ধতি করতেন।
আমি (ভাষ্যকার) বলি, বায়হাক্বী ও অন্যান্য রিওয়ায়াতের হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য তর্জনীর ইশারা দ্বারা তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা দেয়া এটা বলা উদ্দেশ্য না যে, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ বলার সময় ইশারা করবে।
আর সাহাবীগণ ইশারা দ্বারা হিকমাত বর্ণনা উদ্দেশ্য নিতেন সময় নির্ধারণের উদ্দেশ্য নিতেন না।
এ সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সুস্পষ্ট প্রমাণ করে ইশারা তর্জনী দ্বারা, ইশারা হবে বৈঠকের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তথা সালাম দেয়া পর্যন্ত আর এটার প্রাধান্য বর্ণনার মতো।
পরিচ্ছেদঃ ১৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাশাহুদ
৯০৮-[৩] ’আবদুল্লাহ ইবনুয্ যুবায়র (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাশাহুদ অর্থাৎ- আত্তাহিয়্যাতু পড়ার জন্য বসলে নিজের ডান হাত ডান রানের উপর এবং বাম হাত বাম রানের উপর রাখতেন। শাহাদাত আঙ্গুল উঠিয়ে ইশারা করতেন। এ সময় তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বৃদ্ধা আঙ্গুল মধ্যমা আঙ্গুলের নিকটে রাখতেন। বাম হাতের তালু দিয়ে বাম হাঁটু জড়িয়ে ধরতেন। (মুসলিম)[1]
بَابُ التَّشَهُّدِ
وَعَن عبد الله بن الزبير قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا قَعَدَ يَدْعُو وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُمْنَى وَيَدَهُ الْيُسْرَى عَلَى فَخِذِهِ الْيُسْرَى وَأَشَارَ بِأُصْبُعِهِ السَّبَّابَةِ وَوَضَعَ إِبْهَامَهُ عَلَى أُصْبُعِهِ الْوُسْطَى ويلقم كَفه الْيُسْرَى ركبته. رَوَاهُ مُسلم
ব্যাখ্যা: (وَيُلْقِمُ كَفَّهُ الْيُسْرى رُكْبَتَه) - বাম হাতের তালু বাম হাঁটুকে জড়িয়ে ধরবে।
ইবনু হাজার বলেন ইতিপূর্বে যে হাদীসগুলো বর্ণিত হয়েছে সেগুলোর সাথে এই হাদিসের কোন মতবিরোধ নেই তথা অন্য হাদীসে এসেছে হাতের তালু রানের উপর রাখবে আর এ হাদীসে হাঁটুর উপর রাখার কথা বলা হয়েছে সুন্নাত হলো তালুর পেটকে হাঁটুদ্বয়ের কাছাকাছি রানের উপর রাখবে, এমনভাবে আঙ্গুলের মাথাসমূহ হাঁটুর উপর প্রসারিত হয়েছে আর এটাই হচ্ছে সুন্নাতের পরিপূর্ণতা।
ইমাম নাবাবী বলেন, ‘উলামাগণের ইজমা হয়েছে যে, বাম হাত বাম হাঁটুর নিকট বা বাম হাঁটুর উপর রাখা মুস্তাহাব। আর কেউ কেউ বলেছেন, আঙ্গুলসমূহ হাঁটুর উপর রাখবে।
পরিচ্ছেদঃ ১৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাশাহুদ
৯০৯-[৪] ’আবদুল্লাহ ইবনু মাস্’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতাম তখন এ দু’আ পাঠ করতাম, ’’আসসালা-মু ’আলাল্ল-হি ক্ববলা ’ইবা-দিহী, আসসালা-মু ’আলা- জিবরীলা, আসসালা-মু ’আলা- মীকায়ীলা, আসসালা-মু ’আলা- ফুলা-নিন’’- (অর্থাৎ- আল্লাহর ওপর সালাম তাঁর বান্দাদের ওপর পাঠাবার আগে, জিবরীলের উপর সালাম, মীকায়ীল-এর ওপর সালাম। সালাম অমুকের উপর। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শেষ করলেন, আমাদের দিকে ফিরে বললেন, ’’আল্লাহর ওপর সালাম’’ বলো না। কারণ আল্লাহ তো নিজেই সালাম (শান্তিদাতা)।
অতএব তোমাদের কেউ সালাতে বসে বলবে, ’’আততাহিয়্যাতু লিল্লা-হি ওয়াস্ সলাওয়া-তু ওয়াত্ব ত্বইয়্যিবা-তু আসসালা-মু ’আলায়কা আইয়্যুহান নাবিইয়্যু ওয়ারহমাতুল্ল-হি ওয়াবার-কা-তুহু আসসালা-মু ’আলায়না ওয়া’আলা- ’ইবা-দিল্লা-হিস্ স-লিহীন’’
(অর্থাৎ- সব সম্মান, ’ইবাদাত, উপাসনা ও পবিত্রতা আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার ওপর আল্লাহর সব নেক বান্দাদের ওপর সালাম)।
তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কোন ব্যক্তি এ কথাগুলো বললে এর বারাকাত আকাশ ও মাটির প্রত্যেক নেক বান্দার কাছে পৌঁছবে। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ’’আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ’আবদুহূ ওয়া রসূলুহু’’- (অর্থাৎ- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বূদ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রসূল।)
তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এরপর আল্লাহর বান্দার কাছে যে দু’আ ভালো লাগে সে দু’আ পাঠ করে আল্লাহর মহান দরবারে আকুতি মিনতি জানাবে। (বুখারী ও মুসলিম)[1]
بَابُ التَّشَهُّدِ
وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُلْنَا السَّلَامُ عَلَى اللَّهِ قبل عباده السَّلَام على جِبْرِيل السَّلَام على مِيكَائِيل السَّلَام على فلَان وَفُلَان فَلَمَّا انْصَرَفَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ قَالَ: «لَا تَقُولُوا السَّلَامُ عَلَى اللَّهِ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّلَامُ فَإِذَا جَلَسَ أَحَدُكُمْ فِي الصَّلَاةِ فَلْيَقُلِ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ فَإِنَّهُ إِذَا قَالَ ذَلِكَ أَصَابَ كُلَّ عَبْدٍ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ ثُمَّ لْيَتَخَيَّرْ مِنَ الدُّعَاءِ أَعْجَبَهُ إِلَيْهِ فيدعوه»
ব্যাখ্যা: এটা শারী‘আতসম্মত যে, সালাতে সালামের পূর্বে দুনিয়া ও আখিরাত সংক্রান্ত দু‘আ চাওয়া বৈধ যদি সেখানে গুনাহের সংমিশ্রণ না থাকে। যেমন আখিরাত সংক্রান্ত ‘‘হে আল্লাহ! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও’’ বা দুনিয়া সংক্রান্ত ‘‘হে আল্লাহ! আমাকে সুন্দরী স্ত্রী দান করো এবং অফুরন্ত সম্পদ।’’
তবে যে চাওয়া যাবে প্রয়োজনীয় বিষয়াদি যা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ-এর হাদীস রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘তোমরা আল্লাহর নিকট চাও তোমাদের প্রয়োজনীয় বিষয়াদি এমন কি জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে ও তোমাদের রান্নার পাতিলের লবণের জন্যও।’’
পরিচ্ছেদঃ ১৫. প্রথম অনুচ্ছেদ - তাশাহুদ
৯১০-[৫] ’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আত্তাহিয়্যাতু শিক্ষা দিতেন, যেভাবে তিনি আমাদেরকে কুরআন মাজীদের সূরাহ্ শিক্ষা দিতেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন, ’’আততাহিয়্যা-তুল মুবা-রাকা-তুস্ সলাওয়া-তু ওয়াততাইয়্যিবা-তু লিল্লা-হি। আসসালা-মু ’আলায়কা আইয়্যুহান্ নাবিয়্যু ওয়া রহমাতুল্ল-হি ওয়া বারাকা-তুহু। আসসালা-মু ’আলায়না- ওয়া ’আলা- ’ইবা-দিল্লা-হিস্ স-লিহীন। আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ’আবদুহূ ওয়ারসূলুহু’’।[1]
মাসাবীহ সংকলক বলেন, সালা-মুন ’আলায়কা এবং সালা-মুন ’আলায়না- ’আলিফ’ ’লাম’ ছাড়া বুখারী, মুসলিম ও এদের সংকলন হুমায়দীর কিতাবে কোথাও নেই। কিন্তু জামি’উল উসূল প্রণেতা তিরমিযী হতে এভাবে বর্ণনা করেছেন।[2]
[2] সহীহ : তিরমিযী ২৯০, নাসায়ী ১১৭৪, ১২৭৮, ইবনু মাজাহ্ ৯০০, আহমাদ ২৮৯২, সহীহ ইবনু হিব্বান ১৯৫২।
بَابُ التَّشَهُّدِ
وَعَن عبد الله بن عَبَّاس أَنَّهُ قَالَ: كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُعَلِّمُنَا التَّشَهُّدَ كَمَا يُعَلِّمُنَا السُّورَةَ مِنَ الْقُرْآنِ فَكَانَ يَقُولُ: «التَّحِيَّاتُ الْمُبَارَكَاتُ الصَّلَوَاتُ الطَّيِّبَاتُ لِلَّهِ السَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ» . رَوَاهُ مُسْلِمٌ وَلَمْ أَجِدْ فِي الصَّحِيحَيْنِ وَلَا فِي الْجَمْعِ بَين الصَّحِيحَيْنِ: «سَلام عَلَيْك» و «سَلام عَلَيْنَا» بِغَيْرِ أَلْفٍ وَلَامٍ وَلَكِنْ رَوَاهُ صَاحِبُ الْجَامِع عَن التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: আমাদেরকে তাশাহুদ শিক্ষা দিতেন যেমনভাবে কুরআনের সূরাহ্ শিক্ষা দিতেন এটা পরিপূর্ণ গুরুত্ব বহন করছে এবং তাশাহুদ পড়া ওয়াজিব তা প্রমাণ করছে।
(اَلسَّلَامُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ) মুসলিম, আবূ দাঊদ, ইবনু মাজাহ্ এবং আহমাদ-এর এক রিওয়ায়াতে ‘আলিফ’ ‘লাম’ সহকারে বর্ণিত হয়েছে। আর তিরমিযী, নাসায়ী, শাফি‘ঈ এবং আহমাদ-এর অন্য রিওয়ায়াতে ‘আলিফ’ ‘লাম’ ছাড়া سَلَامٌ বর্ণিত হয়েছে।
ইমাম নাবাবী বলেনঃ দু’টিই বৈধ তবে আলিফ সহকারে اَلسَّلَامُ পড়াটা বেশী উত্তম।
(وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللهِ) আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল, এটা শুধু ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) একাই বর্ণনা করেছেন আর অন্য সকল রাবী যেমন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ), ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস্‘ঊদ, জাবির (রাঃ), ‘আবদুল্লাহ ইবনুয্ যুবায়র- সবাই এ শব্দে বর্ণনা করেছেন যে, (وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَرَسُوْلُهٗ) ‘‘আর আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বান্দা ও রসূল’’।