পরিচ্ছেদঃ ১৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সিজদা্ ও তার মর্যাদা

৯০২-[১৬] ’আবদুর রহমান ইবনু শিবল (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাজদায় কাকের মতো ঠোঁকর মারতে, হিংস্র প্রাণীর মতো জমিনে হাত বিছিয়ে দিতে ও উটের মতো মসজিদের মধ্যে নিজের জন্য স্থান নির্দিষ্ট করে নিতে নিষেধ করেছেন। (আবূ দাঊদ, নাসায়ী ও দারিমী)[1]

عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ شِبْلٍ قَالَ: نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَن نَقْرَةِ الْغُرَابِ وَافْتِرَاشِ السَّبُعِ وَأَنْ يُوَطِّنَ الرَّجُلُ الْمَكَانَ فِي الْمَسْجِدِ كَمَا يُوَطِّنُ الْبَعِيرُ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ والدارمي

عن عبد الرحمن بن شبل قال: نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن نقرة الغراب وافتراش السبع وان يوطن الرجل المكان في المسجد كما يوطن البعير. رواه ابو داود والنساىي والدارمي

ব্যাখ্যা: (نُقْرَةِ الْغُرَابِ) ‘‘কাকের ন্যায় ঠোকর মারা’’ তথা ধীরস্থিরতাকে পরিহার করা, সাজদাকে এমনভাবে হালকা করা এতটুকু সময় নিয়ে কাক যেমন খাবারের উদ্দেশে তার ঠোঁটকে মাটিতে মারে।

খাত্ত্বাবী বলেনঃ ব্যক্তি সাজদায় ধীরস্থিরতা অবলম্বন করে না তার কপালকে মাটিতে এমনভাবে রাখে বা এমনভাবে মাটিকে স্পর্শ করে যেন পাখির ঠোঁকরের মতো।

(اِفْتِرَاشِ السَّبُعِ) ‘‘হিংস্র জন্তুর ন্যায় হাতের বাহু মাটিতে বিছানো’’। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেনঃ সাজদাতে হাতের বাহুকে বিছাতে এবং জমিন থেকে বাহুকে উঁচু না করা যেমনিভাবে হিংস্র প্রাণী কুকুর, বাঘ ইত্যাদি বাহু বিছিয়ে দিয়ে বসে।

ইবনু হাজার আল আসক্বালানী বলেনঃ এভাবে নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য হলো এভাবে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় শুধুমাত্র লোক দেখানো, শুনানো ও প্রসিদ্ধতার জন্য হয়ে থাকে (সত্যিকার সালাত আদায় হয় না)।


হাদিসের মানঃ হাসান (Hasan)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সিজদা্ ও তার মর্যাদা

৯০৩-[১৭] ’আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে ’আলী! আমি আমার জন্য যা ভালোবাসি তোমার জন্যও তা ভালোবাসি এবং আমার জন্য যা অপছন্দ করি তোমার জন্যও তা অপছন্দ করি। তুমি দু’ সাজদার মাঝখানে (কুকুরের মতো) হাত খাড়া করে দিয়ে দুই পায়ের উপর বসো না। (তিরমিযী)[1]

وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا عَلِيُّ إِنِّي أُحِبُّ لَكَ مَا أُحِبُّ لِنَفْسِي وَأَكْرَهُ لَكَ مَا أَكْرَهُ لِنَفْسِي لَا تقع بَين السَّجْدَتَيْنِ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن علي قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «يا علي اني احب لك ما احب لنفسي واكره لك ما اكره لنفسي لا تقع بين السجدتين» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: ইবনু মাজাহ্ মারফূ' সূত্রে আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তুমি সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে তোমার মাথা উঠাবে তুমি কুকুরের মতো বসবে না।

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তিনটি বিষয়ে নিষেধ করেছেনঃ সালাতে (সাজদার জন্য) মুরগীর মতো ঠোঁকর মারতে আর কুকুরের মতো ইক্আ করতে।

ইক্আ যেটি নিষেধ, তা হলো পায়ের গোড়ালি খাড়া করে আর দু’ নিতম্ব ও দু’ হাত মাটির উপর রাখা।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সিজদা্ ও তার মর্যাদা

৯০৪-[১৮] ত্বালক্ব ইবনু ’আলী আল হানাফী (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ সে বান্দার সালাতের প্রতি সুদৃষ্টি দেন না, যে বান্দা সালাতের রুকূ’ ও সাজদায় তার পিঠ সোজা রাখে না। (আহমাদ)[1]

وَعَن طلق بن عَليّ الْحَنَفِيّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «لَا يَنْظُرُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلَى صَلَاةِ عَبْدٍ لَا يُقِيمُ فِيهَا صُلْبَهُ بَيْنَ ركوعها وسجودها» . رَوَاهُ أَحْمد

وعن طلق بن علي الحنفي قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «لا ينظر الله عز وجل الى صلاة عبد لا يقيم فيها صلبه بين ركوعها وسجودها» . رواه احمد

ব্যাখ্যা: (خُشُوْعِهَا) দ্বারা উদ্দেশ্য রুকূ' আর রুকূ‘কে খুশু' বলার উদ্দেশ্য হলো এটা বিনয় ও নম্রতা প্রকাশকারীর অবস্থা বা চিত্র।

হাদীসে আরো এসেছে, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা সেই বান্দার সালাতের প্রতি ভ্রূক্ষেপ করেন না যে রুকূ, সাজদার মাঝে পিঠ সোজা করে না।

হাদীসটি রুকূ‘তে ধীরস্থিরতা যে ওয়াজিব তা প্রমাণ করে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer

পরিচ্ছেদঃ ১৪. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - সিজদা্ ও তার মর্যাদা

৯০৫-[১৯] নাফি’ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু ’উমার (রাঃ) বলতেন, যে ব্যক্তি সালাতের সাজদায় নিজের কপাল জমিনে রাখে সে যেন তার হাত দু’টিকেও জমিনে ওখানে রাখে যেখানে কপাল রাখে। তারপর যখন সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে উঠবে তখন নিজের হাত দু’টিও উঠায়। কারণ যেভাবে মুখমণ্ডল সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে ঠিক সেভাবে দু’ হাতও সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে। (মালিক)[1]

وَعَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ يَقُولُ: مَنْ وَضَعَ جَبْهَتَهُ بِالْأَرْضِ فَلْيَضَعْ كَفَّيْهِ عَلَى الَّذِي وَضَعَ عَلَيْهِ جَبْهَتَهُ ثُمَّ إِذَا رَفَعَ فَلْيَرْفَعْهُمَا فَإِنَّ الْيَدَيْنِ تَسْجُدَانِ كَمَا يَسْجُدُ الْوَجْهُ. رَوَاهُ مَالك

وعن نافع ان ابن عمر كان يقول: من وضع جبهته بالارض فليضع كفيه على الذي وضع عليه جبهته ثم اذا رفع فليرفعهما فان اليدين تسجدان كما يسجد الوجه. رواه مالك

ব্যাখ্যা: মারফূ' সূত্রে তথা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌঁছেছে উলাইয়্যাহ্ আইয়ূব হতে, তিনি নাফি' হতে, তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’ হাত সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে যেমনটি চেহারা সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে যখন তোমাদের কেউ সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করে সে যেন তার হাতদ্বয় রাখে আর যখন সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) হতে মাথা উঠাবে তখন হাতদ্বয় যেন উঠায়।

সাজদায় তার হাতের তালুদ্বয় ঐ স্থানে রাখবে যেখানে তার কপাল রেখেছে।

আর ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর হাদীসের এ বক্তব্য ‘আব্বাস (রাঃ)-এর হাদীসের দিকে ইঙ্গিত করে যেখানে বলা হয়েছে, বান্দা যখন সিজদা্ করে সে যেন সাতটি অঙ্গের উপর সিজদা্ করে আর সাতটি অঙ্গ হচ্ছে চেহারা, দু’ হাতের তালু দু’ হাঁটু এবং দু’ পা।

হাদীসটি আরো নির্দেশ করে যে, হাতের আঙ্গুলগুলো যেন ক্বিবলামুখী হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৪: সালাত (كتاب الصلاة) 4. Prayer
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে