পরিচ্ছেদঃ ১১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাকবীরে তাহরীমার পর যা পড়তে হয়
৮২০-[৯] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীর তাহরীমা (আল্লা-হু আকবার) দ্বারা সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শুরু করতেন। তারপর পাঠ করতেন, ’’ইন্না সলা-তী ওয়ানুসুকী ওয়া মাহ্ইয়া-ইয়া ওয়ামামা-তী লিল্লা-হি রব্বিল ’আ-লামীন, লা- শারীকা লাহূ ওয়াবিযা-লিকা উমিরতু ওয়াআনা- আও্ওয়ালুল মুসলিমীন, আল্লা-হুম্মাহদিনী লিআহসানিল আ’মা-লি’’ ওয়া ’’আহসানিল আখলা-ক্বি লা- ইয়াহদী লিআহসানিহা- ইল্লা- আনতা ওয়াক্বিনী সায়য়্যিয়াল আ’মা-লি ওয়া সায়য়্যিয়াল আখলা-ক্বি লা- ইয়াক্বী সায়য়্যিয়াহা- ইল্লা- আন্তা’’-
(অর্থাৎ- আমার সালাত, আমার কুরবানী, আমার জীবন, আমার মৃত্যু আল্লাহ তা’আলার জন্য। তাঁর কোন শরীক নেই। আর এর জন্যই আমি আদিষ্ট হয়েছি। আমিই হলাম এর প্রতি প্রথম আনুগত্যশীল। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে পরিচালিত কর উত্তম কাজ ও উত্তম চরিত্রের পথে। তুমি ছাড়া উত্তম পথে আর কেউ পরিচালিত করতে পারবে না। আমাকে খারাপ কাজ ও বদ চরিত্র হতে রক্ষা কর। তুমি ছাড়া এর খারাবি থেকে কেউ আমাকে বাঁচাতে পারবে না।)। (নাসায়ী)[1]
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا اسْتَفْتَحَ الصَّلَاةَ كَبَّرَ ثُمَّ قَالَ: «إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ لَا شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أَمَرْتُ وَأَنَا مِنَ الْمُسلمين اللَّهُمَّ اهدني لِأَحْسَنِ الْأَعْمَالِ وَأَحْسَنِ الْأَخْلَاقِ لَا يَهْدِي لِأَحْسَنِهَا إِلَّا أَنْتَ وَقِنِي سَيِّئَ الْأَعْمَالِ وَسَيِّئَ الْأَخْلَاقِ لَا يَقِي سَيِّئَهَا إِلَّا أَنْتَ» . رَوَاهُ النَّسَائِيُّ
ব্যাখ্যা: (ثُمَّ قَالَ إِنَّ صَلَاتِىْ وَنُسُكِىْ.....) ‘‘তারপর তিনি পাঠ করতেন- ইন্না স্বলাতী ওয়া নুসুকী..... শেষ পর্যন্ত।’’ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) শুরু করার সময় তাকবীর তাহরীমা দেয়ার পর যে সমস্ত দু‘আ পাঠ করতেন তন্মধ্যে এটি একটি দু‘আ।
এতে জানা যায় যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দু‘আ পাঠ করতেন। আর এটিই সুন্নাত।
পরিচ্ছেদঃ ১১. তৃতীয় অনুচ্ছেদ - তাকবীরে তাহরীমার পর যা পড়তে হয়
৮২১-[১০] মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ্ (রাঃ)বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নফল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে দাঁড়ালে বলতেন, ’’আল্লা-হু আকবার, ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযী ফাত্বারাস্ সামা-ওয়া-তি ওয়াল আরযা হানীফাওঁ ওয়ামা আনা- মিনাল মুশরিকীন’’- (অর্থাৎ- আল্লাহ বড় মহামহিম। আমি সে সত্তার দিকেই আমার মুখ ফিরিয়েছি যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।)।
ইমাম নাসায়ী বলেন, অবশিষ্ট হাদীস তিনি (উল্লিখিত) জাবির (রাঃ)-এর হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। তবে ’তিনি’ পরিবর্তে বলেছেন, ’’আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’’। এরপর তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলতেন, ’’আল্লা-হুম্মা আনতাল মালিকু, লা- ইলা-হা ইল্লা- আনতা সুবহা-নাকা ওয়া বিহামদিকা’’- (অর্থাৎ- হে আল্লাহ! তুমিই বাদশাহ। তুমি ছাড়া সত্যিকার কোন মা’বূদ নেই। তুমি পবিত্র। সব প্রশংসা তোমার জন্য।)। এরপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্বিরাআত (কিরআত) শুরু করতেন। (নাসায়ী)[1]
وَعَن مُحَمَّد بن مسلمة قَالَ: إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا قَامَ يُصَلِّي تَطَوُّعًا قَالَ: «اللَّهُ أَكْبَرُ وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِي فَطَرَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْض حَنِيفا مُسلما وَمَا أَنَا مِنَ الْمُشْرِكِينَ» . وَذَكَرَ الْحَدِيثَ مِثْلَ حَدِيثِ جَابِرٍ إِلَّا أَنَّهُ قَالَ: «وَأَنَا مِنَ الْمُسْلِمِينَ» . ثُمَّ قَالَ: «اللَّهُمَّ أَنْتَ الْمَلِكُ لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ» ثُمَّ يَقْرَأُ. رَوَاهُ النَّسَائِيّ
ব্যাখ্যা: (إِذَا قَامَ يُصَلِّىْ تَطَوُّعًا قَالَ اللّهُ أَكْبَرُ وَجَّهْتُ وَجْهِىَ.....) ‘‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নফল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করতে দাঁড়াতেন তখন বলতেনঃ আল্লা-হু আকবার ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া.....।’’
‘আল্লামা মুল্লা ‘আলী আলক্বারী বলেনঃ অত্র হাদীসের প্রকাশমান অর্থ এই যে, নফল বা সুন্নাত সালাতের প্রারম্ভে ‘‘ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া.....’’ শেষ পর্যন্ত পাঠ করবে। আর এটিই আমাদের মাযহাব।
লাম্‘আতের লেখক বলেনঃ এ দু‘আটি নফল সালাতের জন্য খাস।
আমি (‘উবায়দুল্লাহ মুবারাকপূরী) বলছিঃ আবকারুল মিনান-এর লেখক তার স্বীয় গ্রন্থে (১১৬ পৃঃ) বলেনঃ এ হাদীসে বর্ণিত দু‘আটি নফলের জন্য খাস হওয়ার দলীল নেই। কেননা অনেক বিশুদ্ধ বর্ণনা দ্বারা সাব্যস্ত আছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘‘ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া’’ দু‘আটি ফরয সালাতেও পাঠ করেছেন। তাছাড়া হানাফী ভাইয়েরা যে দু‘আটি ফরয সালাতে পাঠ করেন ‘‘সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা ওয়া বিহামদিকা.....’’ এ দু‘আটি ইমাম আত্ তিরমিযী ও আবূ দাঊদ, আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে সালাতে দাঁড়াতেন তখন তাকবীর দিয়ে বলতেন- ‘‘সুবহা-নাকা আল্লা-হুম্মা.....’’ আর রাতের সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) তো নফল সালাত (সালাত/নামায/নামাজ)। তাহলে ঐ দু‘আটিও নফলের জন্য খাস হয়ে যায়। অতএব অত্র হাদীসে বর্ণিত দু‘আটি নফল সালাতের জন্য খাস তাদের এ দাবী সঠিক নয়। আল্লাহ অধিক ভালো জানেন।