পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - হায়য-এর বর্ণনা

৫৫১-[৭] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক ঋতুবতী অবস্থায় যৌনসঙ্গম করেছে অথবা কোন স্ত্রীলোকের মলদ্বার দিয়ে যৌনসঙ্গম করেছে অথবা কোন গণকের কাছে গিয়েছে, সে লোক মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওপর যা অবতীর্ণ হয়েছে তার প্রতি অবিশ্বাস করেছে।

কিন্তু শেষের দু’জন ইবনু মাজাহ ও দারিমীর বর্ণনায় রয়েছে, যে ব্যক্তি গণকের কাছে গিয়েছে, সে যা বলেছে তা সত্য বলে বিশ্বাস করেছে, সে কুফরী করেছে (অর্থাৎ- কাফির হয়ে গেছে)। তিরমিযী এ সানাদের সমালোচনা করে বলেছেনঃ হাদীসটি আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে আবূ তামীমাহ্, তাঁর থেকে হাকীম আসরাম ব্যতীত অন্য কোন সূত্রে বর্ণিত হয়েছে বলে আমি জানি না (তবে আবূ তামীমার বিশ্বস্ততা সম্পর্কে কোন কোন মুহাদ্দিস সন্দেহ প্রকাশ করেছেন)।[1]

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَتَى حَائِضًا أَوِ امْرَأَةً فِي دُبُرِهَا أَوْ كَاهِنًا فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِيُّ وَفِي رِوَايَتِهِمَا: «فَصَدَّقَهُ بِمَا يَقُولُ فَقَدْ كَفَرَ»
وَقَالَ التِّرْمِذِيُّ: لَا نَعْرِفُ هَذَا الْحَدِيثَ إِلَّا من حَدِيث حَكِيم الْأَثْرَم عَن أبي تَيْمِية عَن أبي هُرَيْرَة

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من اتى حاىضا او امراة في دبرها او كاهنا فقد كفر بما انزل على محمد» . رواه الترمذي وابن ماجه والدارمي وفي روايتهما: «فصدقه بما يقول فقد كفر» وقال الترمذي: لا نعرف هذا الحديث الا من حديث حكيم الاثرم عن ابي تيمية عن ابي هريرة

ব্যাখ্যা: এ হাদীস থেকে যে শিক্ষা পাওয়া যায় তা’ হলো, ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে অথবা তার মলদ্বার দিয়ে যৌনসঙ্গম অনুমোদিত নয়। তেমনিভাবে গণকের গণনায় বিশ্বাস স্থাপনও নিষিদ্ধ। যে ব্যক্তি এটা অমান্য করে সে প্রকৃতপক্ষে ইসলামে অবিশ্বাস করে।

কোন কোন ‘আলিমের মতে এ হাদীসে হুকুম ধমকের উপর ব্যবহার করে। কারণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি হায়য স্ত্রীর সাথে মিলন করলো, সে যেন এক দিনার সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করে। যদি তার সাথে মিলন করা কুফরী হতো, তবে কাফফারাহ্ দেয়ার আদেশ করতেন না। তার অর্থ এমন নয় যে, ঋতুবতীর সাথে সঙ্গম জায়িয। কেউ করে ফেললে এটা তার কাফফারাহ্। কেউ বলেন এ হাদীস ঐ লোকের ক্ষেত্রে যে হায়য অবস্থায় মিলন করাকে হালাল মনে করলো।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - হায়য-এর বর্ণনা

৫৫২-[৮] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! হায়য অবস্থায় আমার স্ত্রীর সাথে আমার কী কী করা হালাল? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সালোয়ারের উপরিভাগে (নাভীর উপরের অংশে যা করতে চাও কর, তা হালাল)। তবে এটুকু থেকেও বিরত থাকাই উত্তম।[1]

ইমাম মুহয়্যিয়ুস্ সুন্নাহ্ বলেন, এ হাদীসের সানাদ তেমন শক্তিশালী নয়।

وَعَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُول الله مَا تحل لِي مِنِ امْرَأَتِي وَهِيَ حَائِضٌ؟ قَالَ: «مَا فَوْقَ الْإِزَارِ وَالتَّعَفُّفُ عَنْ ذَلِكَ أَفْضَلُ» . رَوَاهُ رَزِينٌ وَقَالَ مُحْيِي السُّنَّةِ: إِسْنَادُهُ لَيْسَ بِقَوِيٍّ

وعن معاذ بن جبل قال: قلت: يا رسول الله ما تحل لي من امراتي وهي حاىض؟ قال: «ما فوق الازار والتعفف عن ذلك افضل» . رواه رزين وقال محيي السنة: اسناده ليس بقوي

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে ঋতুবতী স্ত্রীর সাথে কাপড়ের উপর দিয়ে ফায়দা উঠানো জায়িয প্রমাণ করে, তবে হাদীস থেকে এটাও প্রমাণ হয় যে, কাপড়ের স্থানে (নাভী হতে হাঁটু পর্যন্ত) শরীরের সাথে শরীর লাগানো হারাম। উত্তম হলো কাপড়ের উপরে ফায়দা না উঠানো।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - হায়য-এর বর্ণনা

৫৫৩-[৯] ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যদি তার স্ত্রীর সাথে ঋতুবতী অবস্থায় যৌনসঙ্গম করে, তাহলে সে যেন অর্ধেক দীনার দান করে দেয়। (তিরমিযী, আবূ দাঊদ, নাসায়ী, দারিমী ও ইবনু মাজাহ্)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِذَا وَقَعَ الرَّجُلُ بِأَهْلِهِ وَهِيَ حَائِضٌ فَلْيَتَصَدَّقْ بِنِصْفِ دِينَارٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَأَبُو دَاوُد النَّسَائِيّ والدارمي وَابْن مَاجَه

وعن ابن عباس قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «اذا وقع الرجل باهله وهي حاىض فليتصدق بنصف دينار» . رواه الترمذي وابو داود النساىي والدارمي وابن ماجه

ব্যাখ্যা: উক্ত হাদীসে হায়য স্ত্রীর সাথে মিলন করলে অর্ধেক দীনার সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করতে বলা হয়েছে, কিন্তু অন্য রিওয়ায়াতে এক দীনার উল্লেখ হয়েছে। এর উত্তর হলো যে, এটা কোন বর্ণনাকারী হতে সংক্ষিপ্ত হয়েছে বা তার থেকে ভুল সংঘটিত হয়েছে। তারপর এ হাদীসের সানাদে খুসায়ফ নামে এক রাবী রয়েছে, যিনি স্মৃতিশক্তিতে দুর্বল ছিলেন। তাঁর শেষ জীবনে হাদীস বর্ণনায় কিছু ভুল পরিলক্ষিত হয়। আর এক দীনার সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করার হাদীস অধিক শক্তিশালী ও বিশুদ্ধ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ১২. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - হায়য-এর বর্ণনা

৫৫৪-[১০] উক্ত রাবী [’আবদুল্লাহ ইবনু ’আব্বাস (রাঃ)] হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (যৌনসঙ্গমকালে হায়যের রক্ত) লাল থাকলে এক দীনার ও পীতবর্ণ দেখা দিলে অর্ধেক দীনার সদাক্বাহ্ (সাদাকা) আদায় করতে হবে। (তিরমিযী)[1]

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِذَا كَانَ دَمًا أَحْمَرَ فَدِينَارٌ وَإِذَا كَانَ دَمًا أَصْفَرَ فَنِصْفُ دِينَارٍ» . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ

وعن ابن عباس عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: «اذا كان دما احمر فدينار واذا كان دما اصفر فنصف دينار» . رواه الترمذي

ব্যাখ্যা: হায়িযাহ্ স্ত্রীর সাথে লাল রংয়ের রক্ত থাকাকালীন মিলন করলে এক দীনার সদাক্বাহ্ (সাদাকা) করবে। আর যদি রং হলুদ বর্ণের হয় তবে অর্ধ দীনার কাফ্ফারাহ দিবে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ৪ পর্যন্ত, সর্বমোট ৪ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে