পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - মোজার উপর মাসাহ করা

মাসাহ বলা হয় ভিজানো হাত কোন অঙ্গের উপর বুলানো। خُفٌّ খুফ বলা হয় চামড়ার তৈরি পাদুকা যা পায়ের গ্রন্থীদ্বয় আবৃত রাখে। আর جَوْرَبٌ হলো ঠাণ্ডা থেকে বাঁচার জন্য চুল, পশম বা মোটা চিকন চামড়া দ্বারা তৈরি মোজা যা টাকনুর উপরিভাগ পর্যন্ত আবৃত রাখে। মোজার উপর মাসাহ করার বিষয়টি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মুতাওয়াতির সূত্রে প্রমাণিত। হাসান আল্ বসরী (রহঃ) বলেন, আমার নিকট এ মর্মে হাদীস পৌঁছেছে যে, সত্তরজন সাহাবী বলেছেন যে, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মোজার উপর মাসাহ করতেন।


৫১৭-[১] শুরায়হ্ ইবনু হানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ’আলী ইবনু আবূ ত্বালিব (রাঃ)-কে মোজার উপর মাসাহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি [’আলী (রাঃ)] উত্তরে বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসাফিরের জন্য তিনদিন তিনরাত এবং মুক্বীমের জন্য একদিন একরাত নির্ধারণ করে দিয়েছেন। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَسْحِ عَلَى الْخُفَيَّنِ

عَن شُرَيْح بن هَانِئ قَالَ: سَأَلْتُ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنِ الْمَسْحِ عَلَى الْخُفَّيْنِ فَقَالَ: جَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثَلَاثَةٌ أَيَّامٍ وَلَيَالِيَهُنَّ لِلْمُسَافِرِ وَيَوْمًا وَلَيْلَةً لِلْمُقِيمِ. رَوَاهُ مُسلم

عن شريح بن هانى قال: سالت علي بن ابي طالب رضي الله عنه عن المسح على الخفين فقال: جعل رسول الله صلى الله عليه وسلم ثلاثة ايام ولياليهن للمسافر ويوما وليلة للمقيم. رواه مسلم

ব্যাখ্যা: মোজার উপর মাসাহ করা জায়িয। মুক্বীমের (বাড়ী থাকা অবস্থায়) জন্য একদিন ও একরাত এবং মুসাফিরের জন্য তিনদিন ও তিনরাত। আর এ মাস্আলায় প্রায় সকল ‘আলিমগণ একমত হয়েছেন। দশের অধিক সাহাবীগণের থেকে এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification

পরিচ্ছেদঃ ৯. প্রথম অনুচ্ছেদ - মোজার উপর মাসাহ করা

৫১৮-[২] মুগীরাহ্ ইবনু শু’বাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে তাবূক যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন। মুগীরাহ্ বলেন, একদিন ফজরের (ফজরের) সালাতের আগে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পায়খানার উদ্দেশে বের হলেন। আর আমি তাঁর পেছনে একটি পানির পাত্র বহন করে গেলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বেরিয়ে আসার পর আমি তাঁর দুই হাতের কব্জির উপর পানি ঢালতে লাগলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর দুই হাত ও চেহারা ধুলেন। তখন তাঁর গায়ে একটি পশমের জুববাহ্ ছিল। তিনি তাঁর (জুববার আস্তিন গুটিয়ে) হাত দু’টি খুলতে চাইলেন। কিন্তু জুববার আস্তিন খুব চিকন ছিল। তাই জুববার ভেতর দিক দিয়েই তাঁর হাত দু’টি বের করে নিজের দুই কাঁধের উপর রেখে দিলেন এবং হাত দু’টি (কনুই পর্যন্ত) ধুলেন। অতঃপর মাথার সামনের দিক (কপাল) ও পাগড়ীর উপর মাসাহ করলেন। তারপর আমি তাঁর মোজাগুলো খুলতে চাইলাম। তিনি বললেন, এগুলো এভাবে থাকতে দাও, আমি এগুলো পবিত্রাবস্থায় (অর্থাৎ- উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করে) পরেছি। তিনি এগুলোর উপর মাসাহ করলেন। অতঃপর তিনি সওয়ারীর উপর আরোহণ করলেন, আমিও আরোহণ করলাম এবং আমরা একটা দলের কাছে পৌঁছে গেলাম। তখন তারা সালাতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন, আর ’আবদুর রহমান ইবন ’আওফ (রাঃ) তাদের সালাতের ইমামাত করছিলেন এবং তাদের নিয়ে এক রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায়ও করে ফেলেছিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আগমন বুঝতে পেরে তিনি পেছনে সরে আসতে চাইলেন। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্থানে (স্থির থাকতে) ইশারা করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে দুই রাক্’আতের মধ্যে এক রাক্’আত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) পেলেন। তিনি সালাম ফিরালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে গেলেন এবং আমিও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে গেলাম। আর এক রাক্’আত ছুটে যাওয়া সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আমরা আদায় করলাম। (মুসলিম)[1]

بَابُ الْمَسْحِ عَلَى الْخُفَيَّنِ

وَعَن عُرْوَة بن الْمُغيرَة بن شُعْبَة عَن أَبِيه قَالَ: أَنَّهُ غَزَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَزْوَةَ تَبُوكَ. قَالَ الْمُغِيرَةُ: فَتَبَرَّزَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قِبَلَ الْغَائِط فَحملت مَعَه إدواة قَبْلَ الْفَجْرِ فَلَمَّا رَجَعَ أَخَذْتُ أُهَرِيقُ عَلَى يَدَيْهِ من الإدواة فَغسل كفيه وَوَجْهَهُ وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ مِنْ صُوفٍ ذَهَبَ يَحْسِرُ عَن ذِرَاعَيْهِ فَضَاقَ كم الْجُبَّة فَأخْرج يَده مِنْ تَحْتِ الْجُبَّةِ وَأَلْقَى الْجُبَّةَ عَلَى مَنْكِبَيْهِ وَغسل ذِرَاعَيْهِ وَمسح بناصيته وعَلى الْعِمَامَة وعَلى خفيه ثُمَّ رَكِبَ وَرَكِبْتُ فَانْتَهَيْنَا إِلَى الْقَوْمِ وَقَدْ قَامُوا فِي الصَّلَاة يُصَلِّي بِهِمْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ وَقَدْ رَكَعَ بِهِمْ رَكْعَةً فَلَمَّا أَحَسَّ بِالنَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسلم ذهب يتَأَخَّر فَأَوْمأ إِلَيْهِ فصلى بهم فَلَمَّا سلم قَامَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقُمْتُ فَرَكَعْنَا الرَّكْعَة الَّتِي سبقتنا. رَوَاهُ مُسلم

وعن عروة بن المغيرة بن شعبة عن ابيه قال: انه غزا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم غزوة تبوك. قال المغيرة: فتبرز رسول الله صلى الله عليه وسلم قبل الغاىط فحملت معه ادواة قبل الفجر فلما رجع اخذت اهريق على يديه من الادواة فغسل كفيه ووجهه وعليه جبة من صوف ذهب يحسر عن ذراعيه فضاق كم الجبة فاخرج يده من تحت الجبة والقى الجبة على منكبيه وغسل ذراعيه ومسح بناصيته وعلى العمامة وعلى خفيه ثم ركب وركبت فانتهينا الى القوم وقد قاموا في الصلاة يصلي بهم عبد الرحمن بن عوف وقد ركع بهم ركعة فلما احس بالنبي صلى الله عليه وسلم ذهب يتاخر فاوما اليه فصلى بهم فلما سلم قام النبي صلى الله عليه وسلم وقمت فركعنا الركعة التي سبقتنا. رواه مسلم

ব্যাখ্যা: বর্ণিত হাদীস থেকে প্রমাণ হয় যে, পায়খানা করে উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করা উত্তম। সালাতের পূর্বে প্রস্রাব-পায়খানার প্রয়োজন দেখা দিলে আগে সেই প্রয়োজন পূর্ণ করে নিবে। তারপর সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করবে।

এ হাদীস থেকে আরো প্রমাণ হয় যে, সালাতের মধ্যে ইশারা করা জায়িয আছে। আরো প্রমাণ হয় যে, মাসবুকের জন্য ইমামকে অনুসরণ করা জরুরী, তার ক্বিয়ামে, রুকূ‘তে ও সাজদায় এবং বসায়। আর মাসবূক ইমাম হতে পৃথক হবে ইমামের সালাম ফিরানোর পর।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-৩: পাক-পবিত্রতা (كتاب الطهارة) 3. Purification
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে