পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মিসওয়াক করা প্রসঙ্গে
৩৮১-[৬] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মিসওয়াক হলো মুখগহ্বর পরিষ্কারকারী এবং আল্লাহর সন্তোষ লাভের মাধ্যম। (শাফি’ঈ, আহমাদ, দারিমী, নাসায়ী; আর ইমাম বুখারী তাঁর সহীহ গ্রন্থে সানাদ ছাড়াই বর্ণনা করেছেন)[1]
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «السِّوَاكُ مَطْهَرَةٌ لِلْفَمِ مَرْضَاةٌ لِلرَّبِّ» . رَوَاهُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ وَالدَّارِمِيُّ وَالنَّسَائِيُّ وَرَوَاهُ البُخَارِيّ فِي صَحِيحه بِلَا إِسْنَاد
ব্যাখ্যা: السواك مطهرة للفهم ‘‘মিসওয়াক হলো মুখ পবিত্রকরণের হাতিয়ার’’। مِسْوَاكُ মিসওয়াক হলো প্রত্যেক সে কাষ্ঠ খন্ড যা দ্বারা ঘর্ষণের মাধ্যমে দাঁত পরিষ্কার করা হয়। আর তা যে মুখমণ্ডল পরিষ্কারের একটি হাতিয়ার তাতে কোন সন্দেহ নেই। মিসওয়াকের ফলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। আর এ হাদীসের উদ্দেশ্য মিসওয়াক ব্যবহারে উৎসাহ প্রদান।
পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মিসওয়াক করা প্রসঙ্গে
৩৮২-[৭] আবূ আইয়ূব (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ চারটি বিষয় নবী-রসূলদের সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত- (১) লজ্জাশীলতা, আর এক বর্ণনায় এর স্থলে খতনার কথা বলা হয়েছে; (২) সুগন্ধি ব্যবহার করা; (৩) মিসওয়াক করা এবং (৪) বিয়ে করা। (তিরমিযী)[1]
وَعَنْ أَبِي أَيُّوبَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَرْبَعٌ مِنْ سُنَنِ الْمُرْسَلِينَ: الْحَيَاءُ وَيُرْوَى الْخِتَانُ وَالتَّعَطُّرُ وَالسِّوَاكُ وَالنِّكَاحُ . رَوَاهُ التِّرْمِذِيّ
ব্যাখ্যা: قوله (أَرْبَعٌ مِنْ سُنَنِ الْمُرْسَلِينَ) রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গণের সুন্নাত চারটি যথাঃ লজ্জাশীলতা, (অন্য বর্ণনায় এর পরিবর্তে খতনা এসেছে) সুগন্ধি ব্যবহার, মিসওয়াক করা এবং বিবাহ করা।
الْحَيَاءُ (আল হায়া-) এ লজ্জা দ্বারা দীনী লজ্জা। যেমন লজ্জাস্থান আবৃত করা, মানবতা যাকে খারাপ মনে করে তাত্থেকে বেঁচে থাকা এবং শারী‘আত অশ্লীলসহ অন্যান্য যেসব কাজকে নিষিদ্ধ করেছে এর দ্বারা জন্মগত লজ্জা উদ্দেশ্য নয়। কেননা এতে সকল মানুষই অংশীদার। আর জন্মগত বা স্বভাবগত বৈশিষ্ট্য নাবীদের সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত হয় না।
الخِتَانُ (আল খিতা-ন) খতনা করা ইবরাহীম (আঃ) থেকে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত সকল নাবীদের সুন্নাত।
تَعَطَّرٌ (তা‘আত্ত্বার) গায়ে এবং কাপড়ে সুগন্ধি ব্যবহার করা।
পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মিসওয়াক করা প্রসঙ্গে
৩৮৩-[৮] ’আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিনে বা রাতে যখনই ঘুম হতে উঠতেন, উযূ (ওযু/ওজু/অজু) করার পূর্বে মিসওয়াক করতেন। (আহমাদ ও আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا يَرْقُدُ مِنْ لَيْلٍ وَلَا نَهَارٍ فَيَسْتَيْقِظُ إِلَّا يَتَسَوَّكُ قَبْلَ أَنْ يَتَوَضَّأَ. رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: দিনে বা রাতের যে কোন সময়ই ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে মিস্ওয়াক করা সুন্নাত।
পরিচ্ছেদঃ ৩. দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ - মিসওয়াক করা প্রসঙ্গে
৩৮৪-[৯] উক্ত রাবী [’আয়িশাহ্ (রাঃ)] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিসওয়াক করতেন। অতঃপর ধুয়ে রাখার জন্য তা আমাকে দিতেন। আমি (ধোয়ার আগে) ঐ মিসওয়াক দিয়ে নিজে মিসওয়াক করতাম। তারপর তা ধুয়ে তাঁকে ((রাঃ)-কে) দিতাম। (আবূ দাঊদ)[1]
وَعَنْهَا قَالَتْ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْتَاكُ فَيُعْطِينِي السِّوَاكَ لِأَغْسِلَهُ فَأَبْدَأُ بِهِ فَأَسْتَاكُ ثُمَّ أَغْسِلُهُ وَأَدْفَعُهُ إِلَيْهِ. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد
ব্যাখ্যা: (فَأَبْدَأُ بِه فَأَسْتَاكُ) ‘‘আমি প্রথমে ঐ মিস্ওয়াক দিয়ে নিজে মিস্ওয়াক করতাম।’’ অর্থাৎ- ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) ঐ মিস্ওয়াক ধোয়ার আগে তা দিয়ে নিজে মিসওয়াক করতেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর থু থু মিশ্রিত মিসওয়াক থেকে বারাকাত হাসিলের জন্য। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন কিছু দ্বারা বারাকাত অর্জন করা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জন্য খাস। অতএব অন্য কোন ব্যক্তির কোন কিছু দ্বারা বারাকাত অর্জন করা বৈধ নয়।
শিক্ষা: (১) অনুমতিক্রমে অন্যের মিস্ওয়াক ব্যবহার করা বৈধ,
(২) মিস্ওয়াক ব্যবহার করার আগে ওপরে তা ধুয়ে নেয়া সুন্নাত।