পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৬-[৩৫] ’উবাদাহ্ ইবনুস্ সামিত (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি এ সাক্ষ্য দিয়েছে যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বূদ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল, আল্লাহ (তাঁর অনুগ্রহে) তার ওপর জাহান্নামের আগুন হারাম করে দিয়েছেন। (মুসলিম)[1]

الفصل الثالث

عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ شَهِدَ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ حَرَّمَ الله عَلَيْهِ النَّار»

عن عبادة بن الصامت رضي الله عنه قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «من شهد ان لا اله الا الله وان محمدا رسول الله حرم الله عليه النار»

Chapter - Section 3


‘Ubada b. as-Samit said:

I heard God's messenger say, “If anyone testifies that there is no god but God and that Muhammad is God's messenger, God will keep him from going to hell."

Muslim transmitted it.


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৭-[৩৬] ’উসমান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি (খাঁটি মনে) এ বিশ্বাস নিয়ে মারা যাবে যে, ’’আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’’ সে অবশ্যই জান্নাতে যাবে। (মুসলিম)[1]

الفصل الثالث

وَعَنْ عُثْمَانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ مَاتَ وَهُوَ يَعْلَمُ أَنَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ دَخَلَ الْجَنَّةَ» . رَوَاهُ مُسلم

وعن عثمان رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «من مات وهو يعلم انه لا اله الا الله دخل الجنة» . رواه مسلم

Chapter - Section 3


‘Uthman b. ‘Affan reported God's messenger as saying, “Whoever dies knowing that there is no god but God will enter paradise."

Muslim transmitted it.

ব্যাখ্যা: (وَهُوَ يَعْلَمُ) হাদীসের এ অংশ দ্বারা মুরজিয়াদের বিশ্বাস, মুখে কালিমাহ্ শাহাদাত উচ্চারণকারী জান্নাতে যাবে যদিও অন্তরে সে তা বিশ্বাস না করে- প্রত্যাখ্যান করার ইঙ্গিত রয়েছে। কেননা অন্য বর্ণনায় রয়েছে غير شاك فيهما এর প্রতি কোন প্রকার সন্দেহ রাখে না। অতএব বুঝা গেল, সন্দেহযুক্ত সাক্ষ্য জান্নাতে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়।

আরো দলীল দেয়া হয় যে, মুখে শাহাদাতায়নের উচ্চারণ ছাড়া শুধুমাত্র অন্তরে মা‘রিফাত অর্জনই যথেষ্ট। যেহেতু হাদীসে শুধু ‘ইলম এর উল্লেখ রয়েছে। এ বিষয়ে আল জামা‘আতের অভিমত হলো মা‘রিফাত অর্জন শাহাদাতায়নের সাথে জড়িত। একটি অন্যটি ব্যতীত কাউকে জাহান্নাম থেকে নাজাত দিতে পারে না, তবে যে ব্যক্তি শাহাদাতায়ন মুখে উচ্চারণ করতে অক্ষম বা উচ্চারণ করার সময় পায়নি মৃত্যু এসে যাওয়ার কারণে তার কথা ভিন্ন।

এ হাদীসে ভিন্নমত পোষণকারীর কোন দলীল নেই। কারণ এ হাদীসের ব্যাখ্যা অন্য হাদীসে এসেছে, ‘‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা‘বূদ নেই’’ এবং ‘‘যে ব্যক্তি সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত আর কোন মা‘বূদ নেই এবং আমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রসূল’’। এ রকম আরো অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে শব্দের পার্থক্যসহ কিন্তু অর্থের মধ্যে রয়েছে সামঞ্জস্য।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৮-[৩৭] জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’টি বিষয় দু’টি জিনিসকে (জান্নাত ও জাহান্নামকে) অনিবার্য করে দেয়। এক সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! এ দু’টি বিষয় কি? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে মৃত্যুবরণ করেছে সে অবশ্যই জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আর যে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে মৃত্যুবরণ করেছে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে। (মুসলিম)[1]

الفصل الثالث

وَعَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ثِنْتَانِ مُوجِبَتَانِ. قَالَ رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الْمُوجِبَتَانِ؟ قَالَ: (مَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ وَمَنْ مَاتَ لَا يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئا دخل الْجنَّة)
(رَوَاهُ مُسلم)

وعن جابر رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: ثنتان موجبتان. قال رجل: يا رسول الله ما الموجبتان؟ قال: (من مات يشرك بالله شيىا دخل النار ومن مات لا يشرك بالله شيىا دخل الجنة) (رواه مسلم)

Chapter - Section 3


Jabir reported that God's messenger said, “Two things have results." On being asked by a man what these two things were, he replied, “He who dies a polytheist will enter hell, and he who dies worshipping God alone will enter paradise."

Muslim transmitted it.

ব্যাখ্যা: ভালো এবং মন্দ উভয়কে مُوْجِبَةٌ (আবশ্যককারী) বলা হয়। আল জামা‘আতের নিকট وجوب এর অর্থ পুরস্কারের ওয়া‘দা এবং শাস্তির অঙ্গীকার। হাদীসে বর্ণিত مُوْجِبَةٌ এর অর্থ কারণ। কেননা প্রকৃত مُوْجِبٌ হলেন মহান আল্লাহ। অতএব শির্ক অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা জাহান্নামে প্রবেশের কারণ। আর তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে মৃত্যুবরণ করা জান্নাতে প্রবেশের কারণ।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৩৯-[৩৮] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা কয়েকজন রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ঘিরে বসা ছিলাম। আমাদের সাথে আবূ বকর ও ’উমার (রাঃ)-ও ছিলেন। হঠাৎ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্য হতে উঠে চলে গেলেন এবং এত বিলম্ব করলেন যাতে আমরা শঙ্কাগ্রস্ত হয়ে পড়লাম। না জানি আমাদের হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে আবার কোন বিপদে পড়লেন কিনা। এতে আমরা ঘাবড়িয়ে গেলাম এবং উঠে বের হয়ে পড়লাম। অবশ্য সকলের মধ্যে আমিই প্রথম ভীত হয়ে পড়েছিলাম। তাই রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সন্ধানে আমি সকলের আগে বের হলাম। এমনকি খুঁজতে খুঁজতে আমি বানী নাজ্জার গোত্রের জনৈক আনসারীর প্রাচীরবেষ্টিত বাগানের নিকট পৌঁছলাম। ভিতরে প্রবেশ করার জন্য তার চারদিকে দরজা খুঁজতে লাগলাম।

হঠাৎ দেখি, বাইরের একটি কূপ হতে একটি ছোট নালা এসে বাগানের মধ্যে প্রবেশ করেছে। তিনি বলেন, আমি জড়োসড়ো হয়ে তাতে প্রবেশ করলাম এবং ধীরে ধীরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যেয়ে পৌঁছলাম। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (আমাকে তাঁর সামনে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে) বললেন, আবূ হুরায়রাহ্ নাকি! আমি বললাম, হাঁ, হে আল্লাহর রসূল! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কি ব্যাপার? (তুমি এখানে?) আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাদের মধ্যে বসা ছিলেন, হঠাৎ উঠে চলে আসলেন। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে আপনাকে ফিরে আসতে না দেখে আমরা ভয় পেয়ে গেলাম। (আল্লাহ না করুন) আমাদের হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে আপনি কোনরূপ বিপদের সম্মুখীন হলেন কিনা। এজন্য আমরা সকলেই ব্যতিব্যাস্ত হয়ে পড়ি এবং সকলের মধ্যে আমিই প্রথম ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ি। অতঃপর (আপনাকে খোঁজ করতে করতে) এ বাগানের দিকে আসি এবং শিয়ালের ন্যায় খুব সরু হয়ে বাগানে প্রবেশ করি। আর অন্যান্যরাও (আপনার জন্য) আমার পেছনে আসছে।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জুতাদ্বয় আমার হাতে তুলে দিয়ে বললেন, হে আবূ হুরায়রাহ্! আমার জুতা দু’টি সাথে নিয়ে যাও! (তুমি আমার কাছে এসেছিলে লোকেরা যেন বুঝতে পারে তার নিদর্শনস্বরূপ) আর বাগানের বাইরে যাদের সাথে তোমার সাক্ষাৎ হবে তাদের মধ্যে যারা সত্য দৃঢ় মনে ’আক্বীদার সাথে এ ঘোষণা দিবে, ’’আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’’, তাদেরকে তুমি জান্নাতের সুসংবাদ দিয়ে দাও।

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) বলেন, (রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এ নিদর্শন নিয়ে বাইরে আসলে) প্রথমেই ’উমার (রাঃ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আবূ হুরায়রাহ্! এ জুতা দু’টি কার? আমি বললাম, এ জুতা দু’টি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ জুতা দু’টি আমার কাছে দিয়ে বলেছেন, যে ব্যক্তি সত্য দৃঢ় মনে ’আক্বীদার সাথে এ সাক্ষ্য দিবে যে, ’’আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’’, আমি যেন তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দেই। এ কথা শুনা মাত্রই ’উমার (রাঃ) আমার বুকের উপর এমন ঘুষি মারলেন যে, আমি চিৎ হয়ে পড়ে গেলাম। অতঃপর ’উমার (রাঃ) আমাকে বললেন, ফিরে যাও, হে আবূ হুরায়রাহ্! তাই আমি কাঁদতে কাঁদতে রসূলের কাছে ফিরে এলাম।

(আমার মনে ’উমারের ভয় ছিল) পিছন ফিরে দেখি ’উমার (রাঃ) আমার সাথে এসে পৌঁছেছেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (কাঁদতে দেখে) জিজ্ঞেস করলেন, হে ’উমার! এমন করলে কেন? ’উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক। আপনি আপনার জুতা দু’টি দিয়ে আবূ হুরায়রাহকে পাঠিয়েছেন এ বলে, যে ব্যক্তি অন্তরের স্থির বিশ্বাসের সাথে এ সাক্ষ্য দিবে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই, তাকে যেন সে জান্নাতের সুসংবাদ দেয়? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হাঁ। ’উমার (রাঃ) বললেন, (হে আল্লাহর রসূল! অনুগ্রহ করে) এরূপ বলবেন না। আমার আশঙ্কা হয় (এ কথা শুনে) পরবর্তী লোকেরা এর উপর নির্ভর করে বসবে (’আমল’ করা ছেড়ে দিবে)। সুতরাং তাদেরকে যথাযথভাবে ’আমল করতে দিন। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঠিক আছে! তাদেরকে ’আমল করতে দাও। (মুসলিম)[1]

الفصل الثالث

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: كُنَّا قُعُودًا حَوْلَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَعنا أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا فِي نَفَرٍ فَقَامَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ بَيْنَ أَظْهُرِنَا فَأَبْطَأَ عَلَيْنَا وَخَشِيَنَا أَنْ يُقْتَطَعَ دُونَنَا وَفَزِعْنَا فَقُمْنَا فَكُنْتُ أَوَّلَ مَنْ فَزِعَ فَخَرَجْتُ أَبْتَغِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى أَتَيْتُ حَائِطًا لِلْأَنْصَارِ لِبَنِي النَّجَّارِ فَدُرْتُ بِهِ هَلْ أَجِدُ لَهُ بَابًا فَلَمْ أَجِدْ فَإِذَا رَبِيعٌ يَدْخُلُ فِي جَوْفِ حَائِطٍ مِنْ بِئْرٍ خَارِجَةٍ وَالرَّبِيعُ الْجَدْوَلُ فاحتفزت كَمَا يحتفز الثَّعْلَب فَدَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَقُلْتُ نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ مَا شَأْنُكَ قُلْتُ كُنْتَ بَيْنَ أَظْهُرِنَا فَقُمْتَ فَأَبْطَأْتَ عَلَيْنَا فَخَشِينَا أَنْ تُقْتَطَعَ دُونَنَا فَفَزِعْنَا فَكُنْتُ أَوَّلَ مَنْ فَزِعَ فَأَتَيْتُ هَذَا الْحَائِطَ فَاحْتَفَزْتُ كَمَا يَحْتَفِزُ الثَّعْلَبُ وَهَؤُلَاء النَّاس ورائي فَقَالَ يَا أَبَا هُرَيْرَة وَأَعْطَانِي نَعْلَيْه قَالَ اذْهَبْ بنعلي هَاتين فَمن لقِيت من وَرَاء هَذَا الْحَائِط يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُهُ فَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ فَكَانَ أَوَّلُ مَنْ لَقِيتُ عُمَرَ فَقَالَ مَا هَاتَانِ النَّعْلَانِ يَا أَبَا هُرَيْرَة فَقلت هَاتَانِ نَعْلَا رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَنِي بِهِمَا مَنْ لَقِيتُ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُهُ بَشرته بِالْجنَّةِ فَضرب عمر بِيَدِهِ بَيْنَ ثَدْيَيَّ فَخَرَرْتُ لِاسْتِي فَقَالَ ارْجِعْ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَرَجَعْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فأجهشت بكاء وركبني عمر فَإِذا هُوَ على أثري فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا لَك يَا أَبَا هُرَيْرَة قلت لقِيت عمر فَأَخْبَرته بِالَّذِي بعثتني بِهِ فَضرب بَين ثديي فَخَرَرْت لاستي قَالَ ارْجع فَقَالَ لَهُ رَسُول الله يَا عُمَرُ مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا فَعَلْتَ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي أَبَعَثْتَ أَبَا هُرَيْرَةَ بِنَعْلَيْكَ مَنْ لَقِيَ يَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مُسْتَيْقِنًا بِهَا قَلْبُهُ بَشَّرَهُ بِالْجَنَّةِ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَلَا تَفْعَلْ فَإِنِّي أَخْشَى أَنْ يَتَّكِلَ النَّاسُ عَلَيْهَا فخلهم يعْملُونَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فخلهم . رَوَاهُ مُسلم

وعن ابي هريرة رضي الله عنه قال: كنا قعودا حول رسول الله صلى الله عليه وسلم معنا ابو بكر وعمر رضي الله عنهما في نفر فقام رسول الله صلى الله عليه وسلم من بين اظهرنا فابطا علينا وخشينا ان يقتطع دوننا وفزعنا فقمنا فكنت اول من فزع فخرجت ابتغي رسول الله صلى الله عليه وسلم حتى اتيت حاىطا للانصار لبني النجار فدرت به هل اجد له بابا فلم اجد فاذا ربيع يدخل في جوف حاىط من بىر خارجة والربيع الجدول فاحتفزت كما يحتفز الثعلب فدخلت على رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال ابو هريرة فقلت نعم يا رسول الله قال ما شانك قلت كنت بين اظهرنا فقمت فابطات علينا فخشينا ان تقتطع دوننا ففزعنا فكنت اول من فزع فاتيت هذا الحاىط فاحتفزت كما يحتفز الثعلب وهولاء الناس وراىي فقال يا ابا هريرة واعطاني نعليه قال اذهب بنعلي هاتين فمن لقيت من وراء هذا الحاىط يشهد ان لا اله الا الله مستيقنا بها قلبه فبشره بالجنة فكان اول من لقيت عمر فقال ما هاتان النعلان يا ابا هريرة فقلت هاتان نعلا رسول الله صلى الله عليه وسلم بعثني بهما من لقيت يشهد ان لا اله الا الله مستيقنا بها قلبه بشرته بالجنة فضرب عمر بيده بين ثديي فخررت لاستي فقال ارجع يا ابا هريرة فرجعت الى رسول الله صلى الله عليه وسلم فاجهشت بكاء وركبني عمر فاذا هو على اثري فقال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم ما لك يا ابا هريرة قلت لقيت عمر فاخبرته بالذي بعثتني به فضرب بين ثديي فخررت لاستي قال ارجع فقال له رسول الله يا عمر ما حملك على ما فعلت قال يا رسول الله بابي انت وامي ابعثت ابا هريرة بنعليك من لقي يشهد ان لا اله الا الله مستيقنا بها قلبه بشره بالجنة قال نعم قال فلا تفعل فاني اخشى ان يتكل الناس عليها فخلهم يعملون قال رسول الله صلى الله عليه وسلم فخلهم . رواه مسلم

Chapter - Section 3


Abu Huraira said:
We were seated around God's messenger, Abu Bakr, ‘Umar and some others being with us, when God's messenger got up and left us. He delayed for some time, which made us fear that he might be attacked by some enemy when we were not with him; so being alarmed we got up. I was the first to be alarmed. I therefore went out to look for God's messenger and came to a garden belonging to the B. an-Najjar, a section of the Ansar, I went round it looking for a gate, but failed to find one. Seeing a rabi’ (i.e. a streamlet) flowing into the garden from a well outside, I drew myself together and went in to where God's messenger was. He said, “Is it Abu Huraira?" I replied, “Yes, messenger of God." He said, “What do you want?" I replied, “You were among us, but got up and went away and delayed for a time, so fearing that you might be attacked by some enemy when we were not with you, we became alarmed. I was the first to be alarmed, so when I came to this garden I drew myself together as a fox does; and these people are following me." Addressing me by name he gave me his sandals and said, “Take away these sandals of mine, and when you meet anyone outside this garden who testifies that there is no god but God, being assured of it in his heart, gladden him by announcing that he will go to paradise." Now the first one I met was ‘Umar. He asked, “What are these sandals, Abu Huraira?” and I replied, “These are God’s messenger’s sandals with which he has sent me to gladden anyone I met who testified that there is no god but God, being assured of it in his heart, with the announcement that he would go to paradise.” Thereupon ‘Umar struck me on the breast and I fell down on my seat.” He then said, “Go back, Abu Huraira”; so I went back to God’s messenger, and I was ready to weep. ‘Umar followed me closely, and there he was behind me. God’s messenger said, “What is the matter with you, Abu Huraira?” I replied, “I met ‘Umar and conveyed to him your message, whereupon he gave me a blow on the breast which made me fall down on my seat and ordered me to go back.” God’s messenger said, “What induced you, ‘Umar, to do what you did?” He replied, “Messenger of God, for whom I would give my father and mother as ransom, did you send Abu Huraira with your sandals to gladden anyone he met who testified that there is no god but God, being assured of it in his heart, with the announcement that he would go to paradise?” He said, “Yes.” ‘Umar said, “You must not do it, for I am afraid that people will trust in it alone; let them go on doing [good] works.” God’s messenger said, “Well let them.”

Muslim transmitted it.

ব্যাখ্যা : রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-কে তার জুতা দু’টো এজন্য দিয়েছিলেন যাতে তার কাছে এ আলামত বিদ্যমান থাকে যে, তিনি সবে মাত্র রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সাক্ষাৎ করে এসেছেন এবং দেয়া সংবাদ সাহাবীগণ গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে। যদিও তার দেয়া সংবাদ তাদের নিকট আলামত ছাড়াও গ্রহণযোগ্য ছিল।

‘‘তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও’’ যার মধ্যে এ গুণ পাওয়া যাবে। অর্থাৎ- যে এ সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মা‘বূদ নেই এবং এর প্রতি অন্তরে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। এতে সত্যের পতাকাবাহীদের এ কথার প্রমাণ পাওয়া যে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও শুধু তাওহীদের প্রতি বিশ্বাসই নাজাতের জন্য যথেষ্ট নয়। অনুরূপ বিশ্বাস ব্যতীত মৌখিক সাক্ষ্যও যথেষ্ট নয়। বরং এ দু’টির সমন্বয় একান্ত জরুরী।

‘উমার (রাঃ) কর্তৃক আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-কে ধাক্কা মেরে তাকে কষ্ট দেয়ার উদ্দেশ্য ছিল না। বরং তার উদ্দেশ্য ছিল তিনি যে কথা বলছেন তা থেকে তাকে বিরত রাখা। উমার (রাঃ)-এর এ আচরণ এবং স্বয়ং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট গিয়ে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করার উদ্দেশে ছিল না। কেননা যে নির্দেশ দিয়ে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ)-কে প্রেরণ করা হয়েছিল তাতে উম্মাতের মনের প্রশান্তি এবং তাদের সুসংবাদ ব্যতীত অন্য কিছু ছিল না। অতএব ‘উমার (রাঃ) মনে করলেন এ সংবাদ তাদের থেকে গোপন রাখাই অধিক কল্যাণকর, যাতে তারা এর উপর নির্ভর করে বসে না থাকে। অতঃপর তিনি যখন বিষয়টি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থাপন করলেন তখন তিনি তার অভিমত সঠিক বলে আখ্যায়িত করলেন। কেননা সাধারণ লোকেদের যখন কোন সুসংবাদ প্রদান করা হয়, তখন তারা তার উপর ভরসা করে বসে থাকে। আর বিশেষ লোকেদেরকে যখন সুসংবাদ দেয়া হয়, তখন তারা আরো বেশী করে কাজে মনোযোগী হয়।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪০-[৩৯] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতের চাবি হচ্ছে ’’আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন ইলাহ নেই’’ বলে (অন্তরের সাথে) সাক্ষ্য দেয়া। (আহমাদ)[1]

الفصل الثالث

عَن مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ: «قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَفَاتِيحُ الْجَنَّةِ شَهَادَةُ أَنْ لَا إِلَه إِلَّا الله» . رَوَاهُ أَحْمد

عن معاذ بن جبل قال: «قال لي رسول الله صلى الله عليه وسلم مفاتيح الجنة شهادة ان لا اله الا الله» . رواه احمد

Chapter - Section 3


Mu'adh b. Jabal reported that God’s messenger said to him, “The keys of paradise are the testimony that there is no god but God.”

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যা: হাদীসে বর্ণিত শাহাদাহ্ মূলত শাহাদাহ্’র জাত বা প্রকৃত উদ্দেশ্য। অর্থাৎ- প্রত্যেকের নিজ শাহাদাহ্ তার জান্নাতে প্রবেশের চাবী। আর শাহাদাহ্ মুতাবিক কার্যাবলী সম্পাদকরা মর্যাদা বৃদ্ধির উপকরণ। অথবা বলা যায় যে, শাহাদাহ্ যেহেতু জান্নাতের দরজাসমূহের চাবী, তাই তা যেন অনেকগুলো চাবীই। সেহেতু হাদীসে مَفَاتِيْحُ শব্দটি বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪১-[৪০] ’উসমান (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যখন ইন্তিকাল হলো, (তাঁর ইন্তিকালে শোকাহত হয়ে) তাঁর সাহাবীগণের মধ্যে কতক লোক অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এমনকি সাহাবীগণের কারো কারো মনে নানারূপ সন্দেহ-সংশয় দেখা দেয়। (তাঁর ইন্তিকালের পর এ দীন টিকে থাকবে কি?) ’উসমান (রাঃ) বলেন, আমিও তাদের অন্যতম ছিলাম। এমতাবস্থায় আমি বসেছিলাম আর ’উমার (রাঃ) আমার পাশ দিয়ে চলে গেলেন এবং আমাকে সালামও দিলেন, অথচ আমি তা টেরও পেলাম না। ’উমার (রাঃ) গিয়ে আমার বিরুদ্ধে আবূ বকরের কাছে অভিযোগ পেশ করলেন। অতঃপর তাঁরা দু’জন আমার নিকট আসলেন এবং উভয়ে আমাকে সালাম করলেন। অতঃপর আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তোমার ভাই ’উমার (রাঃ)-এর সালামের জবাব কেন দিলে না? আমি বললাম, আমি তো এরূপ করিনি। ’উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! নিশ্চয় তুমি এরূপ করেছো। ’উসমান (রাঃ) বললেন, আমি বললাম, আল্লাহর কসম, আমি মোটেই বুঝতে পারিনি আপনি কখন এখান দিয়ে গেছেন ও আমাকে সালাম করেছেন। (কথোপকথন শুনে) আবূ বকর (রাঃ) বললেন, ’উসমান (রাঃ) সত্যই বলেছেন। নিশ্চয়ই আপনাকে কোন দুশ্চিন্তাই হয়তো বিরত রেখেছিল।

তখন আমি বললাম, জ্বি, হতে পারে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সে (ব্যাপারটা) কি? আমি বললাম, আল্লাহ তা’আলা তাঁর রসূলকে উঠিয়ে নিয়ে গেলেন অথচ আমরা তাঁকে একটি বিষয় (মনের অযথা খটকা) হতে বাঁচার উপায় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে পারিনি। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, (চিন্তার কোন বিষয় নয়) আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছি। (এটা শুনে) আমি আবূ বকরের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললাম, আমার মাতা-পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক। আপনিই এ রকম কাজের যোগ্য ব্যক্তি। তারপর আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! এ বিষয়টি হতে মুক্তির উপায় কি? রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে বললেন, যে লোক সে কালিমাহ্ গ্রহণ করলো, যা আমি আমার চাচা (আবূ ত্বালিব)-কে বলেছিলাম এবং তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তার জন্য এটাই হলো মুক্তির মাধ্যম। (আহমাদ)[1]

الفصل الثالث

عَنْ عُثْمَانَ بْنِ عَفَّانَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: إِنَّ رِجَالًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ تُوُفِّيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَزِنُوا عَلَيْهِ حَتَّى كَادَ بَعْضُهُمْ يُوَسْوِسُ قَالَ عُثْمَان وَكنت مِنْهُم فَبينا أَنا جَالس فِي ظلّ أَطَم من الْآطَام مر عَليّ عمر رَضِي الله عَنهُ فَسلم عَليّ فَلم أشعر أَنه مر وَلَا سلم فَانْطَلق عمر حَتَّى دخل على أبي بكر رَضِي الله عَنهُ فَقَالَ لَهُ مَا يُعْجِبك أَنِّي مَرَرْت على عُثْمَان فَسلمت عَلَيْهِ فَلم يرد عَليّ السَّلَام وَأَقْبل هُوَ وَأَبُو بكر فِي وِلَايَةَ أَبِي بَكْرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ حَتَّى سلما عَليّ جَمِيعًا ثمَّ قَالَ أَبُو بكر جَاءَنِي أَخُوك عمر فَذكر أَنه مر عَلَيْك فَسلم فَلم ترد عَلَيْهِ السَّلَام فَمَا الَّذِي حملك على ذَلِك قَالَ قُلْتُ مَا فَعَلْتُ فَقَالَ عُمَرُ بَلَى وَاللَّهِ لقد فعلت وَلكنهَا عبيتكم يَا بني أُميَّة قَالَ قُلْتُ وَاللَّهِ مَا شَعَرْتُ أَنَّكَ مَرَرْتَ وَلَا سَلَّمْتَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ صَدَقَ عُثْمَانُ وَقد شَغَلَكَ عَنْ ذَلِكَ أَمْرٌ فَقُلْتُ أَجْلَ قَالَ مَا هُوَ فَقَالَ عُثْمَان رَضِي الله عَنهُ توفى الله عز وَجل نَبِيَّهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبْلَ أَنْ نَسْأَلَهُ عَنْ نَجَاةِ هَذَا الْأَمْرِ قَالَ أَبُو بكر قد سَأَلته عَن ذَلِك قَالَ فَقُمْت إِلَيْهِ فَقلت لَهُ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي أَنْتَ أَحَقُّ بِهَا قَالَ أَبُو بَكْرٍ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا نَجَاةُ هَذَا الْأَمْرِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ قَبِلَ مِنِّي الْكَلِمَةَ الَّتِي عَرَضْتُ عَلَى عَمِّي فَرَدَّهَا فَهِيَ لَهُ نجاة. رَوَاهُ أَحْمد

عن عثمان بن عفان رضي الله عنه قال: ان رجالا من اصحاب النبي صلى الله عليه وسلم حين توفي النبي صلى الله عليه وسلم حزنوا عليه حتى كاد بعضهم يوسوس قال عثمان وكنت منهم فبينا انا جالس في ظل اطم من الاطام مر علي عمر رضي الله عنه فسلم علي فلم اشعر انه مر ولا سلم فانطلق عمر حتى دخل على ابي بكر رضي الله عنه فقال له ما يعجبك اني مررت على عثمان فسلمت عليه فلم يرد علي السلام واقبل هو وابو بكر في ولاية ابي بكر رضي الله عنه حتى سلما علي جميعا ثم قال ابو بكر جاءني اخوك عمر فذكر انه مر عليك فسلم فلم ترد عليه السلام فما الذي حملك على ذلك قال قلت ما فعلت فقال عمر بلى والله لقد فعلت ولكنها عبيتكم يا بني امية قال قلت والله ما شعرت انك مررت ولا سلمت قال ابو بكر صدق عثمان وقد شغلك عن ذلك امر فقلت اجل قال ما هو فقال عثمان رضي الله عنه توفى الله عز وجل نبيه صلى الله عليه وسلم قبل ان نساله عن نجاة هذا الامر قال ابو بكر قد سالته عن ذلك قال فقمت اليه فقلت له بابي انت وامي انت احق بها قال ابو بكر قلت يا رسول الله ما نجاة هذا الامر فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم من قبل مني الكلمة التي عرضت على عمي فردها فهي له نجاة. رواه احمد

Chapter - Section 3


‘Uthman said that when the Prophet died some of his companions were so grieved that they almost began to harbour doubts. Remarking that he was one of them, ‘Uthman said:

While I was sitting ‘Umar passed me and gave me a salutation, but I did not notice it. ‘Umar complained to Abu Bakr, and the two of them came forward and gave me a salutation; then Abu Bakr asked, “What induced you to refrain from returning the salutation of your brother ‘Umar?” I replied, “I did no such thing.” ‘Umar retorted, “Yes, I swear by God, you did.” I said, “I swear by God that I did not notice you passing me or giving me a salutation.” Abu Bakr then said, “‘Uthman is speaking the truth. Something must have distracted you.” On my replying that it had, he asked me what it was, and I said, “God has taken His Prophet before we asked him wherein this affair provides salvation.” Abu Bakr said that he had asked him about that, so I rose and went to him and said to him, “You for whom I would give my father and mother as ransom are most worthy of it.” Abu Bakr then told me that he had asked, “Messenger of God, wherein does this affair provide salvation?” to which God’s messenger replied, “If anyone accepts from me the confession which I proposed to my paternal uncle* and he rejected, it will be salvation for him.”

Ahmad transmitted it.

* Abu Talib, the uncle who gave protection in Makkah, but did not accept his religion.

ব্যাখ্যা: الوسوسة (ওয়াস্ওয়াসাহ্) বলা হয় মনের কথাকে। আর তা অবশ্যই সংঘটিত বিষয়। মানুষের ‘আকলে যখন কোন ত্রুটি দেখা দেয় এবং এতে সে আবোল-তাবোল কথা বলে এটাকেও الوسوسة বলা হয়। মানুষের মনে যে অন্যায় কথার উদয় হয় অথবা এমন বিষয়ের উদয় হয় যার মধ্যে কোন কল্যাণ নেই তাও الوسوسة। চিন্তার আধিক্যের কারণে। আমিও তাদের একজন ছিলাম যাদের মধ্যে الوسوسة সৃষ্টি হয়েছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ বিষয় হতে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার আগেই আল্লাহ তাঁর মৃত্যু দিলেন। এ কথা দ্বারা তিনি শায়ত্বনের (শয়তানের) الوسوسة হতে মুক্তির উপায়ের বিষয়টি বুঝিয়েছেন।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪২-[৪১] মিক্বদাদ [ইবনু আস্ওয়াদ] (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন, এ জমিনের উপর এমন কোন মাটির অথবা পশমের ঘর (তাঁবু) বাকী থাকবে না, যে ঘরে আল্লাহ রব্বুল ’আলামীন ইসলামের বাণী পৌঁছিয়ে দিবেন না। সম্মানীর ঘরে সম্মানের সাথে আর লাঞ্ছিতের ঘরে লাঞ্ছনার সাথে তা পৌঁছাবেন। আল্লাহ তা’আলা যাদেরকে সম্মানিত করবেন তাদেরকে স্বেচ্ছায় ইসলাম কবূলের উপযুক্ত করে মর্যাদাবান ও গৌরবময় করে দিবেন। পক্ষান্তরে যারা ইসলাম গ্রহণ করবে না, তাদের আল্লাহ তা’আলা লাঞ্ছিত করবেন এবং তারা এ কালিমার প্রতি অনুগত হবার জন্য বাধ্য হবে। আমি (মিক্বদাদ) বললাম, তখন তো সমগ্র বিশ্বে আল্লাহরই দীন (প্রতিষ্ঠিত) হয়ে যাবে। (অর্থাৎ- সকল দীনের উপরই ইসলাম বিজয়ী হবে)। (আহমাদ)[1]

الفصل الثالث

عَن الْمِقْدَاد بن الْأسود قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَقُولُ لَا يَبْقَى عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ بَيْتُ مَدَرٍ وَلَا وَبَرٍ إِلَّا أَدْخَلَهُ اللَّهُ كلمة الاسلام بعز عَزِيز أَو ذل ذليل إِمَّا يعزهم الله عز وَجل فَيَجْعَلُهُمْ مِنْ أَهْلِهَا أَوْ يُذِلُّهُمْ فَيَدِينُونَ لَهَا
رَوَاهُ أَحْمد

عن المقداد بن الاسود قال: سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم: يقول لا يبقى على ظهر الارض بيت مدر ولا وبر الا ادخله الله كلمة الاسلام بعز عزيز او ذل ذليل اما يعزهم الله عز وجل فيجعلهم من اهلها او يذلهم فيدينون لها رواه احمد

Chapter - Section 3


Miqdad reported that he heard God’s messenger say, “There will not remain on the face of the earth a mud-brick house or a camel’s hair tent which God will not cause the confession of Islam to enter bringing both mighty honour and abject abasement. God will either honour the occupants and put them among its adherents, or will humiliate them and they will be subject to it.” Miqdad said, “God will then receive complete obedience.”

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যা: আল্লাহ তা‘আলা প্রতিটি ঘরে ইসলামের কালিমাহ্ প্রবেশ করাবেন। হয়ত ঘরের মালিক ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ না নিয়ে এ কালিমাহ্ গ্রহণ করে সম্মানিত হবেন অথবা প্রতিরোধ যুদ্ধে অংশ নিয়ে বন্দি হয়ে দাসত্ব বরণ করে লাঞ্ছিত হবে। অতঃপর ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় এর আনুগত্য করবে। অথবা জিয্ইয়াহ্ প্রদানের মাধ্যমে তার বশ্যতা স্বীকার করবে। মিক্বদাদ বলেনঃ আমি বললাম তাহলে দীন একমাত্র আল্লাহর হয়ে যাবে। অর্থাৎ- বিষয় যদি এ রকমই হয় তাহলে তো আল্লাহর দীনেরই বিজয় ঘটবে। বলা হয়ে থাকে যে, এটা তখন ঘটবে যখন ‘ঈসা (আঃ)  আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। অতঃপর তিনি দাজ্জালকে হত্যা করবেন। পৃথিবীতে তখন কাফিরদের কোন আস্তানা থাকবে না। বরং সবাই ইসলামের পতাকা তলে সমবেত হবে। হয়তবা তারা স্বেচ্ছায় আগ্রহভরে গ্রহণ করবে। নতুবা অনিচ্ছা সত্ত্বেও বাধ্য হয়ে করবে। তখন শুধুমাত্র আল্লাহর বিধান জারী থাকবে। এর সমর্থনে মুসনাদ আহমাদে আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তার (‘ঈসা (আঃ) এর) যুগে সকল ধর্ম বিলীন হয়ে যাবে। একমাত্র ইসলাম ধর্ম টিকে থাকবে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৩-[৪২] ওয়াহব ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) হতে বর্ণিত। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ’’লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ’’ (আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোন মা’বূদ নেই)- এ বাক্য কি জান্নাতের চাবি নয়? তিনি (ওয়াহব) বললেন, নিশ্চয় (এটা চাবি)! কিন্তু প্রত্যেক চাবির মধ্যেই দাঁত থাকে। তুমি যদি দাঁতওয়ালা চাবি নিয়ে যাও তবেই তো তোমার জন্য (জান্নাতের দরজা) খুলে দেয়া হবে, অন্যথায় তা তোমার জন্য খোলা হবে না। (ইমাম বুখারী তাঁর ’তারজামাতুল বাব’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন)[1]

الفصل الثالث

عَن وهب بن مُنَبّه قِيلَ لَهُ: أَلَيْسَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ مِفْتَاحُ الْجَنَّةِ قَالَ بَلَى وَلَكِنْ لَيْسَ مِفْتَاحٌ إِلَّا لَهُ أَسْنَانٌ فَإِنْ جِئْتَ بِمِفْتَاحٍ لَهُ أَسْنَانٌ فَتَحَ لَكَ وَإِلَّا لَمْ يَفْتَحْ لَكَ. رَوَاهُ الْبُخَارِيُّ فِي تَرْجَمَة بَاب

عن وهب بن منبه قيل له: اليس لا اله الا الله مفتاح الجنة قال بلى ولكن ليس مفتاح الا له اسنان فان جىت بمفتاح له اسنان فتح لك والا لم يفتح لك. رواه البخاري في ترجمة باب

Chapter - Section 3


Wahb b. Munabbih, on being asked whether ‘There is no god but God’ was not the key of paradise, said, “Yes, but every key has wards. If you bring a key with wards the door will be opened for you, otherwise I it will not.”

Bukhari transmitted it in a chapter heading.

ব্যাখ্যা: ‘‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ জান্নাতের চাবী’’ তবে কেউ যেন এ ধোঁকায় পতিত না হয় যে, শুধুমাত্র এ কালিমাহ্ পাঠ করলেই তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেয়া হবে। আর কোন ‘আমল ছাড়াই প্রথম শ্রেণীর জান্নাতীদের সাথে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। প্রত্যেক চাবীরই দাঁত থাকে যা দ্বারা দরজা খোলা যায়? অতএব তুমি যদি এমন চাবী নিয়ে আসতে পারো যাতে দাঁত আছে তাহলেই দরজা খুলবে। আর দাঁত দ্বারা উদ্দেশ্য এমন সৎ ‘আমল যার সাথে কোন অসৎ ‘আমল মিশ্রিত থাকবে না। এ হাদীসে সৎ ‘আমলকে চাবীর দাঁতের সাথে তুলনা করা হয়েছে। আর যদি দন্তহীন চাবী নিয়ে আসো তাহলে তোমার জন্য দরজা খোলা হবে না। ফলে তুমি প্রথম শ্রেণীর লোকেদের সাথে জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে না। আর এটা অধিকাংশের বেলায় প্রযোজ্য। আর সঠিক কথা হলো কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহে জড়িত ব্যক্তি আল্লাহর ইচ্ছাধীন। এটাই আল্ জামা‘আত-এর অভিমত।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৪-[৪৩] আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ উত্তমভাবে (সত্য ও খালিস মনে) মুসলিম হয়, তখন তার জন্য প্রত্যেক সৎ কাজের সাওয়াব দশ গুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত লেখা হয়। আর তার অসৎ কাজ- যা সে করে থাকে, তার অনুরূপই (মাত্র এক গুণই গুনাহ) ’আমলনামায় লেখা হয়, যে পর্যন্ত না সে আল্লাহর দরবারে পৌঁছে। (বুখারী, মুসলিম)[1]

الفصل الثالث

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ:
إِذَا أَحْسَنَ أَحَدُكُمْ إِسْلَامَهُ فَكُلُّ حَسَنَةٍ يَعْمَلُهَا تُكْتَبُ لَهُ بِعشر أَمْثَالهَا إِلَى سبع مائَة ضعف وكل سَيِّئَة يعملها تكْتب لَهُ بِمِثْلِهَا

وعن ابي هريرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا احسن احدكم اسلامه فكل حسنة يعملها تكتب له بعشر امثالها الى سبع ماىة ضعف وكل سيىة يعملها تكتب له بمثلها

Chapter - Section 3


Abu Huraira reported God’s messenger as saying, “When one of you makes a good profession of Islam, every good deed he does will be recorded for him ten to seven hundredfold, and every evil deed he does will be recorded as it is till he meets God.”

(Bukhari and Muslim.)

ব্যাখ্যা: বিশ্বাস ও নিষ্ঠার মাধ্যমে যার ইসলাম সুন্দর হয়, প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সকল দিক থেকেই সে ইসলামের অনুসারী হয়। ‘আমলের সময় আল্লাহ তার নিকটেই আছে এরূপ মনে করে এবং তিনি তাকে দেখছেন এমনটি ভাবে তাহলে তার প্রতিটি ভালো ‘আমলের সাওয়াব দশ থেকে সাতশ’ গুণ লেখা হয়। যদিও বক্তব্যটি উপস্থিত লোকেদের উদ্দেশে দেয়া হয়েছে তথাপি এর হুকুম সর্বব্যাপী। কেননা একজনের প্রতি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন হুকুম বা আদেশ সকলের জন্য প্রযোজ্য। আর এতে নারী পুরুষ, স্বাধীন ও দাস সবাই সমান।

ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ হাদীসে إِلى শব্দটি শেষ সীমা বুঝাবার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থাৎ- সৎ ‘আমলের প্রতিদান কমপক্ষে দশগুণ থেকে সর্বোচ্চ সাতশ’ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে। আর তা কাজ, ব্যক্তি ও অবস্থাভেদে কম-বেশী হবে। এ বৃদ্ধিকরণ সাতশত অতিক্রম করবে না। তবে এ অভিমত নিম্নবর্ণিত আল্লাহর বাণী দ্বারা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ‘‘আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকে আরো বাড়িয়ে দিবেন’’- (সূরাহ্ আল বাক্বারাহ্ ২ঃ ২৬১)।

হাফিয বলেনঃ এ বর্ণনাটির দু’টি অর্থ হতে পারে- (১) এ বৃদ্ধিকরণ সাতশ’ পর্যন্ত হতে পারে। ইমাম বায়যাবী এমনটিই বলেছেন। (২) এ বৃদ্ধিকরণ সাতশ’ বা তারও বেশী হতে পারে। এর সমর্থনে সহীহুল বুখারীতে ‘কিতাবুর্ রিক্বাক্ব’-এ (নাসীহাত পর্বে) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীস রয়েছে। তাতে আছে ‘‘আল্লাহ তার জন্য দশটি নেকী থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বা আরো অনেক বেশী লেখেন’’। অতএব সাতশত গুণ থেকে উদ্দেশ্য আধিক্য। সংখ্যা উদ্দেশ্য নয়, যারা ঈমানের হ্রাস বা বৃদ্ধিকে অস্বীকার করে এ হাদীসটি তাদের অভিমত প্রত্যাখ্যান করে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৫-[৪৪] আবূ উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক লোক রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! ঈমান কী? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যখন তোমাকে নেক (সৎ) কাজ আনন্দ দিবে ও খারাপ (অসৎ) কাজ পীড়া দিবে, তখন তুমি মু’মিন। আবার সে লোকটি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রসূল! খারাপ (অসৎ) কাজ কি? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যখন কোন কাজ করতে তোমার মনে দ্বিধা ও সন্দেহের উদ্রেক করে (তখন মনে করবে এটা গুনাহের কাজ), তখন তা ছেড়ে দিবে। (আহমাদ)[1]

الفصل الثالث

وَعَنْ أَبِي أُمَامَةَ أَنَّ رَجُلًا سَأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَا الْإِيمَانُ قَالَ إِذَا سَرَّتْكَ حَسَنَتُكَ وَسَاءَتْكَ سَيِّئَتُكَ فَأَنْتَ مُؤْمِنٌ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَمَا الْإِثْمُ قَالَ إِذَا حَاكَ فِي نَفْسِكَ شَيْءٌ فَدَعْهُ» . رَوَاهُ أَحْمد

وعن ابي امامة ان رجلا سال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «ما الايمان قال اذا سرتك حسنتك وساءتك سيىتك فانت مومن قال يا رسول الله فما الاثم قال اذا حاك في نفسك شيء فدعه» . رواه احمد

Chapter - Section 3


Abu Umama reported that a man asked God’s messenger what faith was, to which he replied, “When your good deed pleases you and your evil deed grieves you, you are a believer.” He then asked what sin was and received the reply, “When you have a besetting sin, give it up.”

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যাঃ ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ যখন তোমার দ্বারা আনুগত্যের কাজ সম্পাদিত হবে আর এতে তুমি আনন্দিত হবে এ কথা বিশ্বাস করে যে, এ কারণে তুমি পুরস্কৃত হবে। আর তোমার দ্বারা যদি কোন গুনাহের কাজ হয়ে যায় তবে তুমি চিন্তিত হও এটাই আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসের আলামত।

গুনাহের কাজ কি? এ ব্যাপারে যখন কোন স্পষ্ট দলীল ও বিশুদ্ধ প্রমাণাদি থাকার ফলে কোন বিষয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয় ও মনে খটকা লাগে এবং এর বিধান সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া যায়, ফলে মনে প্রশান্তি আসে না বরং মনে এমন ভাবের সৃষ্টি হয় যে, মন তা করতে সায় দেয় না তবে তা পরিত্যাগ করা উচিত। এটা তাদের বেলায় প্রযোজ্য যাদের অন্তঃকরণ পরিষ্কার, হৃদয় পবিত্র। আর সাধারণ লোক যাদের হৃদয় গুনাহের অন্ধকারে নিমজ্জিত তাদের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য নয়। কেননা কোন কোন ক্ষেত্রে ভালো কাজকেই গুনাহের কাজ মনে করতে পারে আবার গুনাহের কাজকেও সাওয়াবের কাজ মনে করে বসতে পারে।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৬-[৪৫] ’আমর ইবনু ’আবাসাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খিদমাতে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! এ দীনে (ইসলামের দা’ওয়াতের ব্যাপারে একেবারে প্রথমদিকে) আপনার সাথে আর কারা ছিলেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আযাদ ব্যক্তি (আবূ বকর) ও একজন গোলাম (বিলাল)। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস বললাম, ইসলাম (তার নিদর্শন) কী? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মার্জিত কথাবার্তা বলা ও (অভুক্তকে) আহার করানো। অতঃপর আমি জিজ্ঞেস করলাম, ঈমান (তার পরিচয়) কী? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (গুনাহের কাজ হতে) ধৈর্য ধরা ও দান করা। তিনি (’আমর) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন্ ইসলাম উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যার হাত ও জিহ্বার অনিষ্ট হতে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে। (’আমর বলেন) আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, কোন্ ঈমান (ঈমানের কোন্ শাখা) উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সৎস্বভাব। (’আমর বলেন) আমি জিজ্ঞেস করলাম, সালাতে কোন্ জিনিস উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, দীর্ঘ সময় নিয়ে ক্বিয়াম (কিয়াম) করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোন্ হিজরত উত্তম। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মহান আল্লাহ যা অপছন্দ করে তুমি এমন কাজ ছেড়ে দিবে। আমি বললাম, কোন্ জিহাদ উত্তম? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, যার ঘোড়ার হাত-পা কর্তিত এবং নিজের রক্ত নির্গত হয়েছে (অর্থাৎ- সে ব্যক্তি সর্বোত্তম যার ঘোড়া যুদ্ধে মারা যায় এবং সেও শহীদ হয়)। আমি বললাম, সর্বোত্তম কোন্ সময়? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উত্তরে বললেন, শেষ রাতের মধ্যভাগ। (আহমাদ)[1]

الفصل الثالث

عَن عَمْرو بن عبسة قَالَ: أَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقُلْتُ يَا رَسُول الله من تبعك عَلَى هَذَا الْأَمْرِ قَالَ حُرٌّ وَعَبْدٌ قُلْتُ مَا الْإِسْلَامُ قَالَ طِيبُ الْكَلَامِ وَإِطْعَامُ الطَّعَامِ قُلْتُ مَا الْإِيمَانُ قَالَ الصَّبْرُ وَالسَّمَاحَةُ قَالَ قُلْتُ أَيُّ الْإِسْلَامِ أَفْضَلُ قَالَ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ قَالَ قُلْتُ أَيُّ الْإِيمَانِ أَفْضَلُ قَالَ خُلُقٌ حَسَنٌ قَالَ قُلْتُ أَيُّ الصَّلَاةِ أَفْضَلُ قَالَ طُولُ الْقُنُوتِ قَالَ قُلْتُ أَيُّ الْهِجْرَةِ أَفْضَلُ قَالَ أَنْ تَهْجُرَ مَا كره رَبك عز وَجل قَالَ قلت فَأَيُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ قَالَ مَنْ عُقِرَ جَوَادُهُ وَأُهْرِيقَ دَمُهُ قَالَ قُلْتُ أَيُّ السَّاعَاتِ أَفْضَلُ قَالَ جَوف اللَّيْل الآخر. . . رَوَاهُ أَحْمد

عن عمرو بن عبسة قال: اتيت رسول الله صلى الله عليه وسلم فقلت يا رسول الله من تبعك على هذا الامر قال حر وعبد قلت ما الاسلام قال طيب الكلام واطعام الطعام قلت ما الايمان قال الصبر والسماحة قال قلت اي الاسلام افضل قال من سلم المسلمون من لسانه ويده قال قلت اي الايمان افضل قال خلق حسن قال قلت اي الصلاة افضل قال طول القنوت قال قلت اي الهجرة افضل قال ان تهجر ما كره ربك عز وجل قال قلت فاي الجهاد افضل قال من عقر جواده واهريق دمه قال قلت اي الساعات افضل قال جوف الليل الاخر. . . رواه احمد

Chapter - Section 3


‘Amr b. ‘Abasa said:
I came to God's messenger and asked, “Who is associated with you in this matter, messenger of God?” He replied, “Both freeman and slave.” I asked what Islam was and he said, I “Pleasant speech and the provision of food.” I asked what faith was and he said, “Endurance and benevolence.” I asked what aspect of Islam was most excellent, and he replied that it was to be seen in him from whose tongue and hand the Muslims were safe. I asked what aspect of faith was most excellent, and he replied that it was a good disposition. I asked what feature of prayer was most excellent, and he replied that it consisted in standing for a long time in [silent] humility. I asked him what aspect of emigration (hijra) was most excellent, and he replied, “Abandoning (an tahjura) what your Lord abhors.” I asked what aspect of jihad was most excellent, and he replied that it was when a man’s steed was wounded and his blood was shed. I asked him which hour was most excellent, and he replied that it was towards the end of the darkest part of the night.

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যা: উত্তম কথা বলা ও খাদ্য খাওয়ানো- এ দু’টি বিষয়ের মধ্যে উত্তম চরিত্রের প্রতি উৎসাহ প্রদান এবং দয়া প্রদর্শনের প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। যদি তা মিষ্টি কথার মাধ্যমেও হয়। ইমাম ত্বীবী বলেনঃ এ হাদীসে ঈমানকে ধৈর্য ও দানশীলতা দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। কেননা ধৈর্য নিষিদ্ধ কাজ পরিত্যাগ করার আর দানশীলতা আদিষ্ট কাজ বাস্তবায়নের প্রমাণ বহন করে। যেমনটি হাসান বসরী (রহঃ) ব্যাখ্যা করেছেন। এ দু’টি অভ্যাসের সাথে উত্তম চরিত্রকে সংযোজন করা হয়েছে। এর ভিত্তি হলো ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর বাণী ‘‘রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চরিত্র ছিল আল-কুরআন’’ অর্থাৎ- তিনি তা পালন করেন আল্লাহ তাঁকে যে আদেশ প্রদান করেছেন, আর তা থেকে বিরত থাকেন আল্লাহ যা করতে নিষেধ করেছেন। কোন্ ইসলাম উত্তম, অর্থাৎ- কোন্ শ্রেণীর মুসলিম অধিক সাওয়াবের অধিকারী।

خُلُقٌ এমন ক্ষমতা বা যোগ্যতাকে বলা হয় যার কারণে কোন ব্যক্তির দ্বারা সহজেই কোন কাজ সম্পাদন হয়। কোন্ সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) উত্তম? এর জওয়াবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ‘‘দীর্ঘ কুনূত’’, অর্থাৎ- দীর্ঘ ক্বিয়াম (কিয়াম) অথবা ক্বিরাআত (কিরআত) বা নম্রতা। তবে প্রথম অর্থটিই অধিক প্রকাশমান।

কোন্ হিজরত উত্তম? এ প্রশ্নের কারণ এই যে, হিজরত অনেক প্রকারের রয়েছে। উত্তরে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তুমি তা পরিত্যাগ করবে যা তোমার রব অপছন্দ করেন। এ প্রকারের হিজরত উত্তম এজন্য যে তা ব্যাপক।

কোন্ প্রকারের জিহাদ বা কোন্ ধরনের মুজাহিদ উত্তম? এর জওয়াবে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জিহাদে যার ঘোড়া নিহত হয়েছে এবং তার নিজের রক্ত প্রবাহিত হয়েছে সেই উত্তম মুজাহিদ। এ মুজাহিদ এজন্য উত্তম যে, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সম্পদও ব্যয় করেছেন এবং নিজেও শাহীদ হয়েছেন।

(جَوْفُ اللَّيْلِ الْاۤخِرُ) দ্বারা উদ্দেশ্য রাতের ২য় ভাগের মধ্যাংশ। আর তা হলো রাতের ছয় ভাগের কম সময়। আর রাতের এ অংশেই আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন। ইমাম তিরমিযী (রহঃ) ‘আমর ইবনু ‘আবাসাহ্  (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, ‘‘শেষ রাতের মধ্যভাগে মহান রব বান্দার অতি নিকটবর্তী হন। যারা এ সময়ে আল্লাহর স্মরণে মত্ত থাকে তুমি সক্ষম হলে তাদের অন্তর্ভুক্ত হও’’।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
বর্ণনাকারীঃ আমর ইবন আবাসা (রাঃ)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৭-[৪৬] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে, (দৈনিক) পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) আদায় করে এবং রমাযানের সিয়াম পালন করে তাঁর কাছে পৌঁছাবে, তাকে মাফ করে দেয়া হবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি এ সুসংবাদ তাদেরকে জানিয়ে দিব না? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (না) তাদেরকে ’আমল করতে দাও। (আহমাদ)[1]

الفصل الثالث

وَعَن مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «مَنْ لَقِيَ اللَّهَ لَا يُشْرِكُ بِهِ شَيْئا يُصَلِّي الْخَمْسَ وَيَصُومُ رَمَضَانَ غُفِرَ لَهُ قُلْتُ أَفَلَا أُبَشِّرُهُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ دَعْهُمْ يَعْمَلُوا» . رَوَاهُ أَحْمد

وعن معاذ بن جبل قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «من لقي الله لا يشرك به شيىا يصلي الخمس ويصوم رمضان غفر له قلت افلا ابشرهم يا رسول الله قال دعهم يعملوا» . رواه احمد

Chapter - Section 3


Mu‘adh b. Jabal said that he heard God’s messenger say, “He who meets his Lord having associated nothing with Him, observed the five times of prayer, and fasted during Ramadan will be forgiven.” Mu'adh asked whether he should not give them the good news, but was told to let them go on doing [good] works.

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যা: এ হাদীসে যাকাত ও হাজ্জের (হজ্জের/হজের) কথা উল্লেখ করা হয়নি কারণ তা ধনীদের জন্য খাস। আর বিশেষভাবে সালাত (সালাত/নামায/নামাজ) ও সিয়াম উল্লেখ করা হয়েছে এজন্য যে, তা উত্তম প্রসিদ্ধ ও ব্যাপক। তাকে ক্ষমা করা হবে, অর্থাৎ- তার সগীরাহ্ গুনাহ্ ক্ষমা করা হবে। আর কাবীরাহ্ (কবিরা) গুনাহসমূহের মধ্যে যেগুলো আল্লাহর হক সেগুলো তার ইচ্ছাধীন। আর যেগুলো বান্দার হক সেগুলোর ব্যাপারে সম্ভব যে আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা তাদেরকে সন্তুষ্ট করে দিবেন।


হাদিসের মানঃ সহিহ (Sahih)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith

পরিচ্ছেদঃ তৃতীয় অনুচ্ছেদ

৪৮-[৪৭] মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলেন, উত্তম ঈমান সম্পর্কে? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কাউকে তুমি ভালোবাসলে আল্লাহর ওয়াস্তেই ভালোবাসবে। অপরদিকে শত্রুতা করলে তাও আল্লাহর ওয়াস্তেই করবে এবং নিজের জিহ্বাকে (খালিস মনে) আল্লাহর যিকরে মশগুল রাখবে। তিনি (মু’আয) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! এছাড়া আমি আর কি করব? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, অপরের জন্য সে-ই জিনিস পছন্দ কর যা নিজের জন্য পছন্দ কর। আর অপরের জন্যও তা অপছন্দ করবে যা নিজের জন্য অপছন্দ করে থাকো (অর্থাৎ- সকলেরই কল্যাণ কামনা করবে)। (আহমাদ)[1]

الفصل الثالث

وَعَن معَاذ أَنَّهُ سَأَلَ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ أَفْضَلِ الْإِيمَانِ قَالَ: «أَنْ تُحِبَّ لِلَّهِ وَتُبْغِضَ لِلَّهِ وَتُعْمِلَ لِسَانَكَ فِي ذِكْرِ اللَّهِ قَالَ وماذا يَا رَسُول الله قَالَ وَأَن تحب للنَّاس مَا تحب لنَفسك وَتَكْرَهُ لَهُمْ مَا تَكْرَهُ لِنَفْسِكَ» . رَوَاهُ أَحْمَدُ

وعن معاذ انه سال النبي صلى الله عليه وسلم عن افضل الايمان قال: «ان تحب لله وتبغض لله وتعمل لسانك في ذكر الله قال وماذا يا رسول الله قال وان تحب للناس ما تحب لنفسك وتكره لهم ما تكره لنفسك» . رواه احمد

Chapter - Section 3


Mu‘adh b. Jabal said that he asked the Prophet what was the most excellent aspect of faith, and received the reply, “That you should love for God’s sake, hate for God’s sake, and employ your tongue in making mention of God.” “What more, messenger of God?” he asked and was told, “That you should like other people to have what you like yourself, and dislike that they should have what you dislike yourself.”

Ahmad transmitted it.

ব্যাখ্যা: ‘‘তুমি মানুষের জন্য তাই পছন্দ করবে যা তুমি নিজের জন্য পছন্দ কর’’। অর্থাৎ- ইহকালীন ও পরকালীন বৈধ বিষয়সমূহ এবং আনুগত্যমূলক কাজসমূহ লোকেদের জন্য তদ্রূপ পছন্দ করবে যেমন তা তুমি নিজের জন্য পছন্দ কর। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো তুমি তাদের জন্য তা অর্জন হওয়া পছন্দ কর যা তুমি নিজের জন্য অর্জন হওয়া পছন্দ কর। বিষয়গুলো চাই ইন্দ্রিয়গত হোক বা না হোক। এর দ্বারা উদ্দেশ্য এটা নয় যে, তোমার নিকট যা আছে তা তার কাছে চলে যাওয়া তুমি পছন্দ করবে। অথবা হুবহু ঐ বস্তু তাদের নিকট থাকবে। কেননা একই বস্তু দুই স্থানে থাকা সম্ভব নয়। আর এ প্রকারের ভালোবাসা বা পছন্দ সাধারণ লোকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। আর বিশেষ লোকেদের ঈমান তখন পূর্ণ হবে যখন সে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য পছন্দ করবে যে, সে তার চেয়েও উঁচু মর্যাদা সম্পন্ন হোক। এজন্য ফুযায়ল ইবনু ‘ইয়ায ‘উয়াইনাকে বলেছিলেন, তুমি মানুষের জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ কল্যাণকামী হতে পারবে না যতক্ষণ না তুমি এটা পছন্দ করবে যে, প্রত্যেক মুসলিম তোমার চেয়ে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন হোক। আর এটা হিংসা বিদ্বেষ ও প্রতারণা পরিত্যাগ ব্যতীত অর্জন সম্ভব নয়।


হাদিসের মানঃ যঈফ (Dai'f)
পুনঃনিরীক্ষণঃ
মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত)
পর্ব-১: ঈমান (বিশ্বাস) (كتاب الإيمان) 1. Faith
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ১৩ পর্যন্ত, সর্বমোট ১৩ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে