পরিচ্ছেদঃ ৫৬. ইলমের মর্যাদা দান প্রসঙ্গে
৬৬৯. হাজ্জাজ আল আসওয়াদ বলেন, ইবনু মুনাব্বিহ বলেছেন: ইতিপূর্বে ইলমের অধিকারী ব্যক্তিবর্গ দুনিয়াদার লোকদেরকে তাদের ইলম প্রদান করতে কার্পণ্য করতেন। ফলে দুনিয়াদার লোকেরা তাদের (আহলে ইলমদের) ইলমের প্রতি আগ্রহী হতো। ফলে তারা তাদের দুনিয়া (এর মাল-সম্পদ) তাদের (আহলে ইলমদের) জন্য নিয়োজিত বা ব্যয় করতো। কিন্তু আজকের আহলে ইলম (ইলমের অধিকারীগণ) তাদের ইলমকে দুনিয়াদারদের জন্যই নিয়োজিত করেছেন। এতে দুনিয়াদাররা তাদের (ইলমের অধিকারীগণ) ইলমের ব্যাপারে অনাগ্রহী হয়েছে। ফলে তারা তাদের দুনিয়া (এর ধন-সম্পদ) এদের (আহলে ইলমদের)কে প্রদান করতে কার্পণ্য করে।[1]
তাখরীজ: মুহাক্বিক্ব এর কোন তাখরীজ করেননি- অনুবাদক।
بَابٌ: فِي إِعْظَامِ الْعِلْمِ
أَخْبَرَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا رَوْحٌ حَدَّثَنَا حَجَّاجٌ الْأَسْوَدُ قَالَ قَالَ ابْنُ مُنَبِّهٍ كَانَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِيمَا مَضَى يَضَنُّونَ بِعِلْمِهِمْ عَنْ أَهْلِ الدُّنْيَا فَيَرْغَبُ أَهْلُ الدُّنْيَا فِي عِلْمِهِمْ فَيَبْذُلُونَ لَهُمْ دُنْيَاهُمْ وَإِنَّ أَهْلَ الْعِلْمِ الْيَوْمَ بَذَلُوا عِلْمَهُمْ لِأَهْلِ الدُّنْيَا فَزَهِدَ أَهْلُ الدُّنْيَا فِي عِلْمِهِمْ فَضَنُّوا عَلَيْهِمْ بِدُنْيَاهُمْ
إسناده ضعيف لانقطاعه: حجاج الأسود لم يدرك وهبا فيما نعلم والله أعلم
পরিচ্ছেদঃ ৫৬. ইলমের মর্যাদা দান প্রসঙ্গে
৬৭০. দাহহাক ইবনু মুসা বলেন: সুলায়মান ইবনু আব্দুল মালেক মক্কার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে মদীনা অতিক্রম করছিলেন। সেখানে তিনি কয়েকদিন অবস্থান করেন। তখন তিনি বলেন, মদীনাতে এমন কেউ আছেন কি যিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কোনো সাহাবীর সাক্ষাৎ লাভ করেছেন? তখন লোকেরা তাকে বলল, আবু হাযিম রয়েছেন। তখন তিনি তার নিকট লোক পাঠালেন। আর যখন তিনি তার কাছে এলেন, তিনি তাকে বললেন: হে আবু হাযিম, (আপনার) এই কঠোরতার কারণ কী? আবু হাযিম বলেন: হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি আমার পক্ষ থেকে কী কঠোরতা দেখলেন? তিনি বললেন: আমার নিকট মদীনার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ সকলেই এলো, কিন্তু আপনি এলেন না।
তিনি বললেন: হে আমীরুল মু’মিনীন! আমি আল্লাহর নিকট আপনার থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যে, যা হয়নি আপনি তা বলবেন। আজকের আগে আপনি আমাকে চিনতেন না, আর আমিও আপনাকে দেখিনি।
বর্ণনাকারী বলেন: এরপর সুলায়মান মুহাম্মদ ইবনু শিহাব যুহরী রাহ. দিকে ফিরে বললেন: এ শাইখ ঠিকই বলেছেন, আমিই ভুল করেছি। সুলায়মান বলেন: হে আবু হাযিম, আমাদের কী হলো যে, আমরা মৃত্যুকে অপছন্দ করছি? তিনি জবাবে বলেন: আপনারা আখিরাতকে বরবাদ বা শূন্য করে দিচ্ছেন এবং দুনিয়াকে আবাদ বা সমৃদ্ধ করছেন। ফলে সমৃদ্ধ (দুনিয়া) হতে বিরাণ বা শূন্য (আখিরাতে)’র দিকে স্থানান্তরিত হতে আপনারা অপছন্দ করছেন।
তিনি (সুলাইমান) বললেন: আপনি ঠিকই বলেছেন, হে আবু হাযিম। তাহলে আমরা আগামীকাল কিভাবে আল্লাহর সামনে যাবো? তিনি বললেন: মুহসিন বা নেককার ব্যক্তিগণ ঠিকমতোই উপস্থিত হবেন, যেভাবে অনুপস্থিত ব্যক্তি তার পরিবারের নিকট উপস্থিত হয়। আর খারাপ লোকেরা সেভাবেই যাবে, যেভাবে পলায়নকারী গোলাম তার মনিবের নিকট (লাঞ্ছিত ও ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায়) উপস্থিত হয়।
তখন সুলাইমান কাঁদতে লাগলেন। এরপর বললেন: হায়! আমি যদি জানতে পারতাম আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য কী রয়েছে! তিনি বললেন: আল্লাহর কিতাবের সামনে আপনার আমলকে উপস্থাপন করুন (মিলিয়ে দেখুন)। তিনি (সুলাইমান) বলেন: আমি এটি (কুরআনে) কোন্ স্থানে পাব? তিনি (আবু হাযিম) বলেন: “
إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِي نَعِيمٍ وَإِنَّ الْفُجَّارَ لَفِي جَحِيمٍ
অর্থ: নিশ্চয় নেককারগণ জান্নাতে এবং পাপীগণ জাহান্নামে থাকবে।” –সূরা ইনফিতার: ১৩।
সুলাইমান বলেন: হে আবু হাযিম! তাহলে আল্লাহর রহমত কোথায়? আবু হাযিম তিলাওয়াত করলেন:
رَحْمَةَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِنْ الْمُحْسِنِينَ
অর্থ:আল্লাহর রহমত নেককারগণের অতি নিকটবর্তী ।” সূরা আ’রাফ: ৫৬।
সুলাইমান তাকে বললেন: হে আবু হাযিম! আল্লাহর কোন্ বান্দা সবচেয়ে সম্মানিত? তিনি বলেন: মানবতা ও বিচক্ষণতার অধিকারী ব্যক্তিগণ। সুলাইমান তাকে বললেন: হে আবু হাযিম! কোন্ আমল সবচেয়ে উত্তম? আবু হাযিম বলেন: হারাম কাজসমূহ পরিত্যাগ করার সাথে সাথে ফরয ইবাদতসমূহ পালন করা। সুলাইমান তাকে বললেন: কোন্ দো’আ সর্বাধিক কবুল হয়? আবু হাযিম বলেন: যাকে ইহসান করা হয়, ইহসানকারীর জন্য তার দু’আ। তিনি বলেন: তারপর কোন্ সাদাকাহ বা দান সর্বোত্তম? তিনি (আবু হাযিম) বলেন: বিপদগ্রস্ত যাচ্ণাকারীকে করা দান এবং দরিদ্র-অভাবী পরিশ্রমের (উপার্জন হতে কৃত দান) যাতে কোনো খোঁটা ও কষ্ট প্রদান করা হয় নাই। তিনি বলেন: সবচেয়ে ন্যায্য কথা কোনটি? তিনি বলেন: সে যাকে ভয় করে এবং সে যার নিকট কিছু আশা করে- এমন লোকের সামনে ন্যায়সঙ্গত কথা বলা। তিনি বলেন: আর কোন্ মু’মিন সবচেয়ে বুদ্ধিমান? তিনি (আবু হাযিম) বলেন: এমন লোক যে আল্লাহর আনুগত্যমূলক কাজ করে এবং লোকদেরকে সে কাজের দিকে আহবান করে।
তিনি বলেন: কোন্ মু’মিন সর্বাধিক বোকা? তিনি বলেন: এমন লোক যে তার জালিম ভাইয়ের (কু-)প্রবৃত্তিতে অংশগ্রহণ করে। ফলে সে অপরের দুনিয়ার বিনিময়ে নিজের আখেরাতকে বিক্রয় করে দেয়। সুলাইমান তাকে বললেন: আপনি ঠিকই বলেছেন। তাহলে আমরা যে অবস্থায় রয়েছি, সে ব্যাপারে আপনি কী বলেন? তিনি বললেন: হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি আমাকে মাফ করবেন কি? সুলাইমান তাকে বললেন: না, তবে আপনি আমাকে নসীহত করুন। তিনি বললেন: হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনার বাপ-দাদা তলোয়ার দিয়ে লোকদেরকে বশীভূত করেছেন। আর এ রাজ্য মুসলিমগণের সাথে পরামর্শ ছাড়াই জোরপূর্বক দখল করেছেন এবং তারা এতে সন্তুষ্ট ছিল না। এমনকি তারা তাদেরকে ব্যাপক আকারে হত্যা করেছেন। এরপর তারা গত হয়েছেন। আর আপনার জানা আছে, তারা কী বলেছে এবং তাদেরকে কী বলা হয়েছে? তখন মাজলিসে উপবিষ্ট লোকদের মধ্যেকার এক ব্যক্তি বলে উঠলো: হে আবু হাযিম, আপনি যা বললেন, তা কতই না মন্দ! আবু হাযিম বললেন: তুমি মিথ্যাচার করছো। আল্লাহ আলিমগণের নিকট থেকে এ অঙ্গীকার নিয়েছেন, যে তারা যেন অবশ্যই লোকদেরকে সবকিছু জানিয়ে দেয়, আর কোনো কিছু গোপন না করে। সুলাইমান তাকে বললেন: তাহলে এখন আমরা কিভাবে সংশোধিত হতে পারি? তিনি (আবু হাযিম) বলেন: আপনারা গর্ব-অহংকার পরিত্যাগ করুন এবং মানবিকতাকে আঁকড়ে ধরুন এবং (লোকদের মাঝে) সমানভাবে বণ্টন করুন।
সুলাইমান তাকে বললেন: (লোকদের নিকট থেকে আমাদের কর) গ্রহণ করার ত্রুটি কেমন? তিনি (আবু হাযিম) বলেন: এর হালালকে গ্রহণ করুন এবং যথাযোগ্য পাত্রে তা খরচ করুন। সুলাইমান তাকে বললেন: হে আবু হাযিম, আপনি কি আমাদেরকে সঙ্গ দান করবেন, যাতে আমরা আপনার নিকট থেকে কিছু লাভ করতে পারি এবং আপনিও আমাদের নিকট হতে কিছু লাভ করতে পারি। তিনি বলেন: আউযুবিল্লাহ (তা থেকে আমি আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি)! সুলাইমান তাকে বললেন: তা কেন? তিনি বলেন: আমার ভয় হয়, যদি আমি যদি আপনাদের দিকে সামান্যও ঝুঁকে যাই, হয়তো আল্লাহ আমাকে জীবন ও মৃত্যুতে দ্বিগুণ (শাস্তির) স্বাদ আস্বাদন করাবেন। সুলাইমান তাকে বললেন: আপনি আমাদের নিকট আপনার প্রয়োজনসমূহ বলুন। তিনি বলেন: আপনি আমাকে জাহান্নাম হতে মুক্তি দিন এবং আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন। সুলাইমান বলেন: তা আমার আয়ত্বে নেই। আবু হাযিম বলেন: তাহলে এছাড়া আপনার নিকট আমার আর কোনো প্রয়োজন নেই।
তিনি বলেন: আমার জন্য আপনি দো’আ করুন। আবু হাযিম বলেন: হে আল্লাহ, সুলাইমান যদি আপনার বন্ধু হয়ে থাকে, তবে দুনিয়া ও আখিরাতের সকল কল্যাণ লাভ তার জন্য সহজ করে দিন। আর যদি সে আপনার শত্রু হয়ে থাকে, তাকে তার কপালের চুল ধরে আপনি যা পছন্দ করেন এবং যাতে সন্তুষ্ট হন, সেদিকে ফিরিয়ে দিন। সুলাইমান বললেন: ব্যস! আর নয়। আবু হাযিম বলেন: আমি সংক্ষেপ করেছি অথচ অনেক বেশিও করে ফেলেছি, অবশ্য যদি আপনি এর উপযুক্ত হন। আর আপনি যদি এর উপযুক্ত না হন, তবে যে ধনুকের ছিলা নেই, তা থেকে তীর নিক্ষেপ করাতে আমার কী লাভ হবে?
সুলাইমান তাকে বললেন: আপনি আমাকে উপদেশ দিন। আবু হাযিম বলেন: আমি আপনাকে উপদেশ দিচ্ছি এবং সংক্ষেপ করছি: আপনি আপনার রবের মহত্ব-বড়ত্ব প্রচার করুন এবং তিনি আপনাকে যে স্থানে থাকতে নিষেধ করেছেন, সেখানে আপনাকে দেখা হতে তাকে মুক্ত রাখুন (সে স্থান হতে আপনি দূরে থাকুন)। অথবা, তিনি যা করতে আদেশ করেছেন, সেই সকল স্থানে তিনি যেন আপনাকে অনুপস্থিত না পান।
এরপর যখন তার নিকট থেকে তিনি চলে গেলেন, তারপর তিনি তার নিকট একশ’ দীনার পাঠিয়ে দিলেন। আর তার নিকট লিখে পাঠালেন: আপনি এ থেকে ব্যয় করুন। আর আপনার জন্য আমার নিকট এরূপ আরো অনেক রয়েছে।
তিনি (রাবী) বলেন: কিন্তু তিনি তার নিকট তা ফেরত দিলেন এবং লিখে পাঠালেন: হে আমীরুল মু’মিনীন, আমি আপনার থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি তামাশা স্বরূপ একমাত্র আমাকেই আপনার প্রশ্ন করা হতে কিংবা আপনার নিকট দান স্বরূপ আমার (এ অর্থ) ফিরিয়ে দেয়া হতে । আর যা আমি আপনার জন্যই পছন্দ করিনা, তা আমার নিজের জন্য কিভাবে পছন্দ করতে পারি?
তিনি তার নিকট আরও লিখেছিলেন: মূসা ইবনু ইমরান যখন মাদায়েনে পানির কুপের নিকট পৌঁছলেন, তখন একদল রাখালকে তাদের জন্তুদের পানি পান করাতে দেখলেন এবং তারা ছাড়াও তিনি দু’জন বালিকাকে দেখলেন তাদের পশুগুলোকে থামিয়ে রাখছে। তখন তিনি তাদের দু’জনকে জিজ্ঞাসা করলেন, তখন তারা জবাবে বললেন:
لَا نَسْقِي حَتَّى يُصْدِرَ الرِّعَاءُ وَأَبُونَا شَيْخٌ كَبِيرٌ فَسَقَى لَهُمَا ثُمَّ تَوَلَّى إِلَى الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
অর্থ: রাখালরা চলে না যাওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের পশুদেরকে পানি পান করাতে পারিনা। আমাদের পিতা অত্যন্ত বৃদ্ধ। তখন তিনি তাদের জানোয়ারগুলিকে পানি পান করালেন। অতঃপর গাছের ছায়ার নীচে আশ্রয় গ্রহণ করলেন এবং বললেন: হে আমার প্রতিপালক। আপনি আমার প্রতি যে অনুগ্রহই করবেন, আমি তারই মুখাপেক্ষী।” সূরা ক্বসাস: ২৩-২৪।
এর কারণ হলো যে, তিনি ছিলেন ক্ষুধার্ত, ভীত এবং অনিরাপদ। তাই তিনি তার প্রতিপালকের নিকট চেয়েছিলেন, আর তিনি মানুষের কাছে চাননি। আর রাখালরা বুঝতে পারেনি, কিন্তু বালিকা দু’টি বুঝতে পেরেছিল। ফলে যখন তারা তাদের পিতার নিকট ফিরে এলো, তখন তারা দু’জন তাকে এ ঘটনা ও তাঁর কথা জানালো। তখন তাদের পিতা -যিনি ছিলেন শুয়াইব আ:, তিনি বললেন: এ লোকটি তো ক্ষুধার্ত। তিনি তাদের একজনকে বললেন: যাও, তাকে ডেকে নিয়ে আস। আর যখন সে তার নিকট আসল, তখন সে তার মুখ ঢেকে তাঁকে যথাযথ সম্মানের সাথে বললো:
(إِنَّ أَبِي يَدْعُوكَ لِيَجْزِيَكَ أَجْرَ مَا سَقَيْتَ لَنَا)
অর্থ: “আমার পিতা আপনাকে ডেকেছেন কারণ আপনি আমাদের (পশুগুলি)কে পানি পান করিয়েছেন, তার বিনিময় দানের জন্য।” [সূরা ক্বসাস: ২৫]।
সে যখন উল্লেখ করল যে, আপনি আমাদের পশুকে যে পান করিয়েছেন, তা বিনিময় দেবেন,- এ কথাটি মূসা আ: এর উপর অত্যন্ত কষ্টকর বোধ হলো। কিন্তু তিনি তাকে অনুসরণ করা ব্যতীত আর কোনো উপায় খুঁজে পেলেন না। কারণ, তিনি এ পাহাড়ী এলাকার মাঝে একজন ক্ষুধার্ত আপনজনহীন ব্যক্তি। ফলে যখন তিনি তার অনুসরণ করলেন, তখন (সজোরে) বাতাস প্রবাহিত হচ্ছিল ফলে তার কাপড় তার পিছনে আছড়ে পড়ছিল। আর তার নিতম্ব তাঁর দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। আর সে ছিল উঁচু নিতম্ব বিশিষ্টা। ফলে মূসা আ: একবার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন, আরেকবার দৃষ্টি নিচু করে ফেলছিলেন। এভাবে (একসময়) যখন তিনি ধৈর্য্য হারিয়ে ফেললেন, তখন বললেন, হে আল্লাহর বান্দী! আমার পিছনে পিছনে চলো এবং পেছন থেকে আমাকে রাস্তা বলে দাও।
অতঃপর যখন তিনি শুয়াইব আ:-এর নিকট উপস্থিত হলেন, তখন তিনি রাতের খাবার প্রস্তুত করছিলেন। তখন শুয়াইব তাঁকে বললেন: হে যুবক! বসে পড়ো এবং তিনি তাকে রাতের খাবার পরিবেশন করলেন।
তখন মূসা আ: তাঁকে বললেন: আউযুবিল্লাহ! তখন শুয়াইব তাঁকে বললেন: কেন? তুমি কি ক্ষুধার্ত নও? তিনি বললেন: অবশ্যই। কিন্তু আমার ভয় হয় যে, আমি যে তাদের পশুকে পানি করিয়েছিলাম, এ খাবার তার বিনিময় হয়ে যাচ্ছে। আর আমি হলো সেই বংশের সন্তান যে, আমরা দুনিয়া ভর্তি সোনার বিনিময়েও আমাদের দীনের সামান্য অংশও বিক্রয় করি না।
তখন শুয়াইব আ: তাঁকে বললেন: না, হে যুবক (এটি কোনো বিনিময় নয়)। তবে এটি আমার এবং আমার পূর্বপুরুষদের রীতি যে, আমরা মেহমানদের আপ্যায়ন করি এবং তাদেরকে খাদ্য খাওয়াই। তখন মূসা আ: বসে গেলেন এবং খাবার খেলেন।’ (আবু হাযিম বললেন:) আমি আপনাকে যা বলেছি, এই একশ দীনার যদি তার বিনিময় হয়, তবে অপারগ অবস্থায় মৃত জন্তু, রক্ত এবং শুকরের মাংশ এর চেয়েও অধিক হালাল। আর এটা যদি বায়তুল মালের (রাষ্ট্রীয় কোষাগারের) থেকে গৃহীত হয়, তবে আমার জন্য এটি বিতর্কিত জিনিস। অবশ্য যদি আপনি আমাদের মাঝে সমতা বিধান করতে পারেন (তবে সেটি ভিন্ন কথা)। তা না হলে আমার এর কোনো প্রয়োজন নেই।[1]
তাখরীজ: আবু নুয়াইম, হিলইয়া ৩/২৩৪-২৩৭।
بَابٌ: فِي إِعْظَامِ الْعِلْمِ
أَخْبَرَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُمَرَ بْنِ الْكُمَيْتِ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ وَهْبٍ الْهَمْدَانِيُّ حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ بْنُ مُوسَى قَالَ مَرَّ سُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ بِالْمَدِينَةِ وَهُوَ يُرِيدُ مَكَّةَ فَأَقَامَ بِهَا أَيَّامًا فَقَالَ هَلْ بِالْمَدِينَةِ أَحَدٌ أَدْرَكَ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالُوا لَهُ أَبُو حَازِمٍ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ فَلَمَّا دَخَلَ عَلَيْهِ قَالَ لَهُ يَا أَبَا حَازِمٍ مَا هَذَا الْجَفَاءُ قَالَ أَبُو حَازِمٍ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ وَأَيُّ جَفَاءٍ رَأَيْتَ مِنِّي قَالَ أَتَانِي وُجُوهُ أَهْلِ الْمَدِينَةِ وَلَمْ تَأْتِنِي قَالَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أُعِيذُكَ بِاللَّهِ أَنْ تَقُولَ مَا لَمْ يَكُنْ مَا عَرَفْتَنِي قَبْلَ هَذَا الْيَوْمِ وَلَا أَنَا رَأَيْتُكَقَالَ فَالْتَفَتَ سُلَيْمَانُ إِلَى مُحَمَّدِ بْنِ شِهَابٍ الزُّهْرِيِّ فَقَالَ أَصَابَ الشَّيْخُ وَأَخْطَأْتُ قَالَ سُلَيْمَانُ يَا أَبَا حَازِمٍ مَا لَنَا نَكْرَهُ الْمَوْتَ قَالَ لِأَنَّكُمْ أَخْرَبْتُمْ الْآخِرَةَ وَعَمَّرْتُمْ الدُّنْيَا فَكَرِهْتُمْ أَنْ تُنْقَلُوا مِنْ الْعُمْرَانِ إِلَى الْخَرَابِ قَالَ أَصَبْتَ يَا أَبَا حَازِمٍ فَكَيْفَ الْقُدُومُ غَدًا عَلَى اللَّهِ قَالَ أَمَّا الْمُحْسِنُ فَكَالْغَائِبِ يَقْدُمُ عَلَى أَهْلِهِ وَأَمَّا الْمُسِيءُ فَكَالْآبِقِ يَقْدُمُ عَلَى مَوْلَاهُ فَبَكَى سُلَيْمَانُ وَقَالَ لَيْتَ شِعْرِي مَا لَنَا عِنْدَ اللَّهِ قَالَ اعْرِضْ عَمَلَكَ عَلَى كِتَابِ اللَّهِ قَالَ وَأَيُّ مَكَانٍ أَجِدُهُ قَالَ إِنَّ الْأَبْرَارَ لَفِي نَعِيمٍ وَإِنَّ الْفُجَّارَ لَفِي جَحِيمٍ قَالَ سُلَيْمَانُ فَأَيْنَ رَحْمَةُ اللَّهِ يَا أَبَا حَازِمٍ قَالَ أَبُو حَازِمٍ رَحْمَةَ اللَّهِ قَرِيبٌ مِنْ الْمُحْسِنِينَ قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ يَا أَبَا حَازِمٍ فَأَيُّ عِبَادِ اللَّهِ أَكْرَمُ قَالَ أُولُو الْمُرُوءَةِ وَالنُّهَى قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ فَأَيُّ الْأَعْمَالِ أَفْضَلُ قَالَ أَبُو حَازِمٍ أَدَاءُ الْفَرَائِضِ مَعَ اجْتِنَابِ الْمَحَارِمِ قَالَ سُلَيْمَانُ فَأَيُّ الدُّعَاءِ أَسْمَعُ قَالَ أَبُو حَازِمٍ دُعَاءُ الْمُحْسَنِ إِلَيْهِ لِلْمُحْسِنِ قَالَ فَأَيُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ قَالَ لِلسَّائِلِ الْبَائِسِ وَجُهْدُ الْمُقِلِّ لَيْسَ فِيهَا مَنٌّ وَلَا أَذًى قَالَ فَأَيُّ الْقَوْلِ أَعْدَلُ قَالَ قَوْلُ الْحَقِّ عِنْدَ مَنْ تَخَافُهُ أَوْ تَرْجُوهُ قَالَ فَأَيُّ الْمُؤْمِنِينَ أَكْيَسُ قَالَ رَجُلٌ عَمِلَ بِطَاعَةِ اللَّهِ وَدَلَّ النَّاسَ عَلَيْهَا قَالَ فَأَيُّ الْمُؤْمِنِينَ أَحْمَقُ قَالَ رَجُلٌ انْحَطَّ فِي هَوَى أَخِيهِ وَهُوَ ظَالِمٌ فَبَاعَ آخِرَتَهُ بِدُنْيَا غَيْرِهِ قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ أَصَبْتَ فَمَا تَقُولُ فِيمَا نَحْنُ فِيهِ قَالَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أَوَ تُعْفِينِي قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ لَا وَلَكِنْ نَصِيحَةٌ تُلْقِيهَا إِلَيَّ قَالَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ إِنَّ آبَاءَكَ قَهَرُوا النَّاسَ بِالسَّيْفِ وَأَخَذُوا هَذَا الْمُلْكَ عَنْوَةً عَلَى غَيْرِ مَشُورَةٍ مِنْ الْمُسْلِمِينَ وَلَا رِضَاهُمْ حَتَّى قَتَلُوا مِنْهُمْ مَقْتَلَةً عَظِيمَةً فَقَدْ ارْتَحَلُوا عَنْهَا فَلَوْ أُشْعِرْتَ مَا قَالُوا وَمَا قِيلَ لَهُمْ فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ مِنْ جُلَسَائِهِ بِئْسَ مَا قُلْتَ يَا أَبَا حَازِمٍ قَالَ أَبُو حَازِمٍ كَذَبْتَ إِنَّ اللَّهَ أَخَذَ مِيثَاقَ الْعُلَمَاءِ لَيُبَيِّنُنَّهُ لِلنَّاسِ وَلَا يَكْتُمُونَهُ قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ فَكَيْفَ لَنَا أَنْ نُصْلِحَ قَالَ تَدَعُونَ الصَّلَفَ وَتَمَسَّكُونَ بِالْمُرُوءَةِ وَتَقْسِمُونَ بِالسَّوِيَّةِ قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ كَيْفَ لَنَا بِالْمَأْخَذِ بِهِ قَالَ أَبُو حَاَزِمٍ تَأْخُذُهُ مِنْ حِلِّهِ وَتَضَعُهُ فِي أَهْلِهِ قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ هَلْ لَكَ يَا أَبَا حَازِمٍ أَنْ تَصْحَبَنَا فَتُصِيبَ مِنَّا وَنُصِيبَ مِنْكَ قَالَ أَعُوذُ بِاللَّهِ قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ وَلِمَ ذَاكَ قَالَ أَخْشَى أَنْ أَرْكَنَ إِلَيْكُمْ شَيْئًا قَلِيلًا فَيُذِيقَنِي اللَّهُ ضِعْفَ الْحَيَاةِ وَضِعْفَ الْمَمَاتِ قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ ارْفَعْ إِلَيْنَا حَوَائِجَكَ قَالَ تُنْجِينِي مِنْ النَّارِ وَتُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ قَالَ سُلَيْمَانُ لَيْسَ ذَاكَ إِلَيَّ قَالَ أَبُو حَازِمٍ فَمَا لِي إِلَيْكَ حَاجَةٌ غَيْرُهَا قَالَ فَادْعُ لِي قَالَ أَبُو حَازِمٍ اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ سُلَيْمَانُ وَلِيَّكَ فَيَسِّرْهُ لِخَيْرِ الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَإِنْ كَانَ عَدُوَّكَ فَخُذْ بِنَاصِيَتِهِ إِلَى مَا تُحِبُّ وَتَرْضَى قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ قَطُّ قَالَ أَبُو حَازِمٍ قَدْ أَوْجَزْتُ وَأَكْثَرْتُ إِنْ كُنْتَ مِنْ أَهْلِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ مِنْ أَهْلِهِ فَمَا يَنْفَعُنِي أَنْ أَرْمِيَ عَنْ قَوْسٍ لَيْسَ لَهَا وَتَرٌ قَالَ لَهُ سُلَيْمَانُ أَوْصِنِي قَالَ سَأُوصِيكَ وَأُوجِزُ عَظِّمْ رَبَّكَ وَنَزِّهْهُ أَنْ يَرَاكَ حَيْثُ نَهَاكَ أَوْ يَفْقِدَكَ حَيْثُ أَمَرَكَ فَلَمَّا خَرَجَ مِنْ عِنْدِهِ بَعَثَ إِلَيْهِ بِمِائَةِ دِينَارٍ وَكَتَبَ إِلَيْهِ أَنْ أَنْفِقْهَا وَلَكَ عِنْدِي مِثْلُهَا كَثِيرٌ قَالَ فَرَدَّهَا عَلَيْهِ وَكَتَبَ إِلَيْهِ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ أُعِيذُكَ بِاللَّهِ أَنْ يَكُونَ سُؤَالُكَ إِيَّايَ هَزْلًا أَوْ رَدِّي عَلَيْكَ بَذْلًا وَمَا أَرْضَاهَا لَكَ فَكَيْفَ أَرْضَاهَا لِنَفْسِي وَكَتَبَ إِلَيْهِ إِنَّ مُوسَى بْنَ عِمْرَانَ لَمَّا وَرَدَ مَاءَ مَدْيَنَ وَجَدَ عَلَيْهَا رِعَاءً يَسْقُونَ وَوَجَدَ مِنْ دُونِهِمْ جَارِيَتَيْنِ تَذُودَانِ فَسَأَلَهُمَا فَقَالَتَا لَا نَسْقِي حَتَّى يُصْدِرَ الرِّعَاءُ وَأَبُونَا شَيْخٌ كَبِيرٌ فَسَقَى لَهُمَا ثُمَّ تَوَلَّى إِلَى الظِّلِّ فَقَالَ رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنْزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ وَذَلِكَ أَنَّهُ كَانَ جَائِعًا خَائِفًا لَا يَأْمَنُ فَسَأَلَ رَبَّهُ وَلَمْ يَسْأَلْ النَّاسَ فَلَمْ يَفْطِنْ الرِّعَاءُ وَفَطِنَتْ الْجَارِيتَانِ فَلَمَّا رَجَعَتَا إِلَى أَبِيهِمَا أَخْبَرَتَاهُ بِالْقِصَّةِ وَبِقَوْلِهِ فَقَالَ أَبُوهُمَا وَهُوَ شُعَيْبٌ هَذَا رَجُلٌ جَائِعٌ فَقَالَ لِإِحْدَاهُمَا اذْهَبِي فَادْعِيهِ فَلَمَّا أَتَتْهُ عَظَّمَتْهُ وَغَطَّتْ وَجْهَهَا وَقَالَتْ إِنَّ أَبِي يَدْعُوكَ لِيَجْزِيَكَ أَجْرَ مَا سَقَيْتَ لَنَا فَشَقَّ عَلَى مُوسَى حِينَ ذَكَرَتْ أَجْرَ مَا سَقَيْتَ لَنَا وَلَمْ يَجِدْ بُدًّا مِنْ أَنْ يَتْبَعَهَا إِنَّهُ كَانَ بَيْنَ الْجِبَالِ جَائِعًا مُسْتَوْحِشًا فَلَمَّا تَبِعَهَا هَبَّتْ الرِّيحُ فَجَعَلَتْ تَصْفِقُ ثِيَابَهَا عَلَى ظَهْرِهَا فَتَصِفُ لَهُ عَجِيزَتَهَا وَكَانَتْ ذَاتَ عَجُزٍ وَجَعَلَ مُوسَى يُعْرِضُ مَرَّةً وَيَغُضُّ أُخْرَى فَلَمَّا عِيلَ صَبْرُهُ نَادَاهَا يَا أَمَةَ اللَّهِ كُونِي خَلْفِي وَأَرِينِي السَّمْتَ بِقَوْلِكِ ذَا فَلَمَّا دَخَلَ عَلَىشُعَيْبٍ إِذَا هُوَ بِالْعَشَاءِ مُهَيَّأً فَقَالَ لَهُ شُعَيْبٌ اجْلِسْ يَا شَابُّ فَتَعَشَّ فَقَالَ لَهُ مُوسَى أَعُوذُ بِاللَّهِ فَقَالَ لَهُ شُعَيْبٌ لِمَ أَمَا أَنْتَ جَائِعٌ قَالَ بَلَى وَلَكِنِّي أَخَافُ أَنْ يَكُونَ هَذَا عِوَضًا لِمَا سَقَيْتُ لَهُمَا وَإِنَّا مِنْ أَهْلِ بَيْتٍ لَا نَبِيعُ شَيْئًا مِنْ دِينِنَا بِمِلْءِ الْأَرْضِ ذَهَبًا فَقَالَ لَهُ شُعَيْبٌ لَا يَا شَابُّ وَلَكِنَّهَا عَادَتِي وَعَادَةُ آبَائِي نُقْرِي الضَّيْفَ وَنُطْعِمُ الطَّعَامَ فَجَلَسَ مُوسَى فَأَكَلَ فَإِنْ كَانَتْ هَذِهِ الْمِائَةُ دِينَارٍ عِوَضًا لِمَا حَدَّثْتُ فَالْمَيْتَةُ وَالدَّمُ وَلَحْمُ الْخِنْزِيرِ فِي حَالِ الِاضْطِرَارِ أَحَلُّ مِنْ هَذِهِ وَإِنْ كَانَ لِحَقٍّ لِي فِي بَيْتِ الْمَالِ فَلِي فِيهَا نُظَرَاءُ فَإِنْ سَاوَيْتَ بَيْنَنَا وَإِلَّا فَلَيْسَ لِي فِيهَا حَاجَةٌ
إسناده مسلسل بالمجاهيل
পরিচ্ছেদঃ ৫৬. ইলমের মর্যাদা দান প্রসঙ্গে
৬৭১. যাইদ আল আম্মী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: জনৈক ফকীহ বলেছেন:
হে জ্ঞানী! তুমি তোমার ইলম অনুযায়ী আমল করো। আর তোমার প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ তুমি দান করো। তোমার রবের নিকট তোমার উপকারে আসবে এমন কথা ছাড়া আর যে কোনো প্রকার অতিরিক্ত কথা বলা হতে বিরত থাকো।
হে জ্ঞানী! তুমি যা জান, এরপরও তোমার ইলম অনুযায়ী আমল না করো, তাহলে তুমি যখন তোমার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন তা তোমার রবের নিকট তোমার পক্ষে কৈফিয়ত ও ওজর-আপত্তি ছিন্নকারী বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
হে জ্ঞানী! যে সকল কাজে তোমাকে আল্লাহর আনুগত্য করার আদেশ দেয়া হয়েছে, তা যেন তোমাকে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বিরত রাখে, যা থেকে তোমাকে নিষেধ করা হয়েছে।
হে জ্ঞানী! তুমি অপরের কাজের ব্যাপারে শক্তিশালী, আর নিজের আমলের ক্ষেত্রে দুর্বল হয়ো না।
হে জ্ঞানী! অন্যের কাজ যেন তোমাকে তোমার আপন কাজ হতে অবশ্যই বিরত না রাখে।
হে জ্ঞানী! আলিমগণকে সম্মান করো। আর তাদের নিকটে ভীঁড় জমাও এবং তাদের কথা শোনো এবং তাদের সাথে ঝগড়া-বিতর্ক করা থেকে দূরে থাকো।
হে জ্ঞানী! আলিমগণকে তাদের ইলমের কারণে সম্মান করো এবং জাহিলদেরকে তাদের জাহালাত (মুর্খতা)-এর কারণে ছোট জানো। আর তাদেরকে দূরে ঠেলে দিওনা, বরং তাদের নিকটবর্তী হও এবং তাদেরকে ইলম শিক্ষা দাও।
হে জ্ঞানী! তুমি কোনো মাজলিসে এমন বক্তব্য দেবে না, যতক্ষণ না তা নিজে বুঝো। আর তুমি কোনো লোকের কোনো কথার জবাব দেবে না, যতক্ষণ না তুমি জানতে পারবে, তোমাকে কী বলা হলো।
হে জ্ঞানী! তুমি আল্লাহর ব্যাপারে ধোঁকায় পড়ো না, আর লোকদের ব্যাপারেও ধোকাগ্রস্ত হবে না। আর আল্লাহর বিষয়ে ধোঁকায় পড়া হলো তাঁর নির্দেশ পরিত্যাগ করা। আর লোকদের ব্যাপারে ধোঁকায় পড়া হলো তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করা। আল্লাহকে ভয় করো, যেভাবে তোমাকে তাঁর আপন সত্তার ভয় দেখানো হয়েছে। আর লোকদের ফিতনাকে তুমি ভয় করো।
হে জ্ঞানী! যেভাবে সূর্য ব্যতীত দিনের আলো পূর্ণতা লাভ করে না, তদ্রূপ আল্লাহর আনুগত্য ব্যতীত হিকমাত (গভীর জ্ঞান) পূর্ণতা পায় না।
হে জ্ঞানী! পানি ও মাটি ব্যতীত যেমন ফসল ভাল হয় না, তদ্রূপ ইলম ও আমল ব্যতীত ঈমান পূর্ণতা লাভ করে না।
হে জ্ঞানী! প্রত্যেক মুসাফির (অভিযাত্রী) যেমন পাথেয় সাথে নেয় এবং যা সে সাথে নিয়েছে, তার চেয়েও অধিক প্রয়োজন হলে দ্রুতই সে তা লাভ করে, ঠিক তদ্রূপ আখিরাতে যখন প্রত্যেক আমলকারী তার এ আমলের মুখাপেক্ষী হবে, তখন সে অবিলম্বেই তা পেয়ে যাবে, যা সে দুনিয়াতে আমল করেছিলো।
হে জ্ঞানী! আল্লাহ যখন তোমাকে তাঁর ইবাদতের দিকে উদ্বুদ্ধ করেন, তখন জেনে রেখো যে, তাঁর নিকট তোমার যে মর্যাদা-সম্মান রয়েছে, তা তোমার নিকট প্রকাশ করাই তাঁর উদ্দেশ্য। তাই তিনি ব্যতীত আর কারও নিকট তুমি যাবে না। (যদি যাও), তাহলে তাঁর প্রদত্ত সম্মান-মর্যাদার আসন থেকে লাঞ্ছনা-অপমানের দিকেই তুমি ফিরে যাবে। হে জ্ঞানী! তোমার কথা যে অনুধাবন করে না, তার নিকট তোমার কথা বলার চেয়ে পাথর ও শিলাখণ্ড সরানোও তোমার জন্য অধিকতর সহজ হবে। যে ব্যক্তি তার কথা অনুধাবন করে না, এমন ব্যক্তির নিকট কথা বলার দৃষ্টান্ত হচ্ছে সেই ব্যক্তির মতো যে মৃত ব্যক্তিকে আহবান করে এবং কবরবাসীর জন্য খাবার প্রস্তুত করে (যারা কখনো ডাকে সাড়া দিতে পারে না এবং খেতে পারে না)।[1]
তাখরীজ: আমি এ ব্যতীত অন্য কোথাও এটি আছে বলে জানি না।
بَابٌ: فِي إِعْظَامِ الْعِلْمِ
أَخْبَرَنَا أَبُو عُثْمَانَ الْبَصْرِيُّ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ مُسْلِمٍ الْقَسْمَلِيِّ أَخْبَرَنَا زَيْدٌ الْعَمِّيُّ عَنْ بَعْضِ الْفُقَهَاءِ أَنَّهُ قَالَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ اعْمَلْ بِعِلْمِكَ وَأَعْطِ فَضْلَ مَالِكَ وَاحْبِسْ الْفَضْلَ مِنْ قَوْلِكَ إِلَّا بِشَيْءٍ مِنْ الْحَدِيثِ يَنْفَعُكَ عِنْدَ رَبِّكَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّ الَّذِي عَلِمْتَ ثُمَّ لَمْ تَعْمَلْ بِهِ قَاطِعٌ حُجَّتَكَ وَمَعْذِرَتَكَ عِنْدِ رَبِّكَ إِذَا لَقِيتَهُ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّ الَّذِي أُمِرْتَ بِهِ مِنْ طَاعَةِ اللَّهِ لَيَشْغَلُكَ عَمَّا نُهِيتَ عَنْهُ مِنْ مَعْصِيَةِ اللَّهِ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ لَا تَكُونَنَّ قَوِيًّا فِي عَمَلِ غَيْرِكَ ضَعِيفًا فِي عَمَلِ نَفْسِكَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ لَا يَشْغَلَنَّكَ الَّذِي لِغَيْرِكَ عَنْ الَّذِي لَكَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ جَالِسْ الْعُلَمَاءَ وَزَاحِمْهُمْ وَاسْتَمِعْ مِنْهُمْ وَدَعْ مُنَازَعَتَهُمْ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ عَظِّمْ الْعُلَمَاءَ لِعِلْمِهِمْ وَصَغِّرْ الْجُهَّالَ لِجَهْلِهِمْ وَلَا تُبَاعِدْهُمْ وَقَرِّبْهُمْ وَعَلِّمْهُمْ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ لَا تُحَدِّثْ بِحَدِيثٍ فِي مَجْلِسٍ حَتَّى تَفْهَمَهُ وَلَا تُجِبْ امْرَأً فِي قَوْلِهِ حَتَّى تَعْلَمَ مَا قَالَ لَكَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ لَا تَغْتَرَّ بِاللَّهِ وَلَا تَغْتَرَّ بِالنَّاسِ فَإِنَّ الْغِرَّةَ بِاللَّهِ تَرْكُ أَمْرِهِ وَالْغِرَّةَ بِالنَّاسِ اتِّبَاعُ أَهْوَائِهِمْ وَاحْذَرْ مِنْ اللَّهِ مَا حَذَّرَكَ مِنْ نَفْسِهِ وَاحْذَرْ مِنْ النَّاسِ فِتْنَتَهُمْ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّهُ لَا يَكْمُلُ ضَوْءُ النَّهَارِ إِلَّا بِالشَّمْسِ كَذَلِكَ لَا تَكْمُلُ الْحِكْمَةُ إِلَّا بِطَاعَةِ اللَّهِ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّهُ لَا يَصْلُحُ الزَّرْعُ إِلَّا بِالْمَاءِ وَالتُّرَابِ كَذَلِكَ لَا يَصْلُحُ الْإِيمَانُ إِلَّا بِالْعِلْمِ وَالْعَمَلِ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ كُلُّ مُسَافِرٍ مُتَزَوِّدٌ وَسَيَجِدُ إِذَا احْتَاجَ إِلَى زَادِهِ مَا تَزَوَّدَ وَكَذَلِكَ سَيَجِدُ كُلُّ عَامِلٍ إِذَا احْتَاجَ إِلَى عَمَلِهِ فِي الْآخِرَةِ مَا عَمِلَ فِي الدُّنْيَا يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِذَا أَرَادَ اللَّهُ أَنْ يَحُضَّكَ عَلَى عِبَادَتِهِ فَاعْلَمْ أَنَّهُ إِنَّمَا أَرَادَ أَنْ يُبَيِّنَ لَكَ كَرَامَتَكَ عَلَيْهِ فَلَا تَحَوَّلَنَّ إِلَى غَيْرِهِ فَتَرْجِعَ مِنْ كَرَامَتِهِ إِلَى هَوَانِهِ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّكَ إِنْ تَنْقُلْ الْحِجَارَةَ وَالْحَدِيدَ أَهْوَنُ عَلَيْكَ مِنْ أَنْ تُحَدِّثَ مَنْ لَا يَعْقِلُ حَدِيثَكَ وَمَثَلُ الَّذِي يُحَدِّثُ مَنْ لَا يَعْقِلُ حَدِيثَهُ كَمَثَلِ الَّذِي يُنَادِي الْمَيِّتَ وَيَضَعُ الْمَائِدَةَ لِأَهْلِ الْقُبُورِ