পরিচ্ছেদঃ ৫৬. ইলমের মর্যাদা দান প্রসঙ্গে
৬৭১. যাইদ আল আম্মী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন: জনৈক ফকীহ বলেছেন:
হে জ্ঞানী! তুমি তোমার ইলম অনুযায়ী আমল করো। আর তোমার প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ তুমি দান করো। তোমার রবের নিকট তোমার উপকারে আসবে এমন কথা ছাড়া আর যে কোনো প্রকার অতিরিক্ত কথা বলা হতে বিরত থাকো।
হে জ্ঞানী! তুমি যা জান, এরপরও তোমার ইলম অনুযায়ী আমল না করো, তাহলে তুমি যখন তোমার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন তা তোমার রবের নিকট তোমার পক্ষে কৈফিয়ত ও ওজর-আপত্তি ছিন্নকারী বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
হে জ্ঞানী! যে সকল কাজে তোমাকে আল্লাহর আনুগত্য করার আদেশ দেয়া হয়েছে, তা যেন তোমাকে আল্লাহর অবাধ্যতা থেকে বিরত রাখে, যা থেকে তোমাকে নিষেধ করা হয়েছে।
হে জ্ঞানী! তুমি অপরের কাজের ব্যাপারে শক্তিশালী, আর নিজের আমলের ক্ষেত্রে দুর্বল হয়ো না।
হে জ্ঞানী! অন্যের কাজ যেন তোমাকে তোমার আপন কাজ হতে অবশ্যই বিরত না রাখে।
হে জ্ঞানী! আলিমগণকে সম্মান করো। আর তাদের নিকটে ভীঁড় জমাও এবং তাদের কথা শোনো এবং তাদের সাথে ঝগড়া-বিতর্ক করা থেকে দূরে থাকো।
হে জ্ঞানী! আলিমগণকে তাদের ইলমের কারণে সম্মান করো এবং জাহিলদেরকে তাদের জাহালাত (মুর্খতা)-এর কারণে ছোট জানো। আর তাদেরকে দূরে ঠেলে দিওনা, বরং তাদের নিকটবর্তী হও এবং তাদেরকে ইলম শিক্ষা দাও।
হে জ্ঞানী! তুমি কোনো মাজলিসে এমন বক্তব্য দেবে না, যতক্ষণ না তা নিজে বুঝো। আর তুমি কোনো লোকের কোনো কথার জবাব দেবে না, যতক্ষণ না তুমি জানতে পারবে, তোমাকে কী বলা হলো।
হে জ্ঞানী! তুমি আল্লাহর ব্যাপারে ধোঁকায় পড়ো না, আর লোকদের ব্যাপারেও ধোকাগ্রস্ত হবে না। আর আল্লাহর বিষয়ে ধোঁকায় পড়া হলো তাঁর নির্দেশ পরিত্যাগ করা। আর লোকদের ব্যাপারে ধোঁকায় পড়া হলো তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করা। আল্লাহকে ভয় করো, যেভাবে তোমাকে তাঁর আপন সত্তার ভয় দেখানো হয়েছে। আর লোকদের ফিতনাকে তুমি ভয় করো।
হে জ্ঞানী! যেভাবে সূর্য ব্যতীত দিনের আলো পূর্ণতা লাভ করে না, তদ্রূপ আল্লাহর আনুগত্য ব্যতীত হিকমাত (গভীর জ্ঞান) পূর্ণতা পায় না।
হে জ্ঞানী! পানি ও মাটি ব্যতীত যেমন ফসল ভাল হয় না, তদ্রূপ ইলম ও আমল ব্যতীত ঈমান পূর্ণতা লাভ করে না।
হে জ্ঞানী! প্রত্যেক মুসাফির (অভিযাত্রী) যেমন পাথেয় সাথে নেয় এবং যা সে সাথে নিয়েছে, তার চেয়েও অধিক প্রয়োজন হলে দ্রুতই সে তা লাভ করে, ঠিক তদ্রূপ আখিরাতে যখন প্রত্যেক আমলকারী তার এ আমলের মুখাপেক্ষী হবে, তখন সে অবিলম্বেই তা পেয়ে যাবে, যা সে দুনিয়াতে আমল করেছিলো।
হে জ্ঞানী! আল্লাহ যখন তোমাকে তাঁর ইবাদতের দিকে উদ্বুদ্ধ করেন, তখন জেনে রেখো যে, তাঁর নিকট তোমার যে মর্যাদা-সম্মান রয়েছে, তা তোমার নিকট প্রকাশ করাই তাঁর উদ্দেশ্য। তাই তিনি ব্যতীত আর কারও নিকট তুমি যাবে না। (যদি যাও), তাহলে তাঁর প্রদত্ত সম্মান-মর্যাদার আসন থেকে লাঞ্ছনা-অপমানের দিকেই তুমি ফিরে যাবে। হে জ্ঞানী! তোমার কথা যে অনুধাবন করে না, তার নিকট তোমার কথা বলার চেয়ে পাথর ও শিলাখণ্ড সরানোও তোমার জন্য অধিকতর সহজ হবে। যে ব্যক্তি তার কথা অনুধাবন করে না, এমন ব্যক্তির নিকট কথা বলার দৃষ্টান্ত হচ্ছে সেই ব্যক্তির মতো যে মৃত ব্যক্তিকে আহবান করে এবং কবরবাসীর জন্য খাবার প্রস্তুত করে (যারা কখনো ডাকে সাড়া দিতে পারে না এবং খেতে পারে না)।[1]
তাখরীজ: আমি এ ব্যতীত অন্য কোথাও এটি আছে বলে জানি না।
بَابٌ: فِي إِعْظَامِ الْعِلْمِ
أَخْبَرَنَا أَبُو عُثْمَانَ الْبَصْرِيُّ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ مُسْلِمٍ الْقَسْمَلِيِّ أَخْبَرَنَا زَيْدٌ الْعَمِّيُّ عَنْ بَعْضِ الْفُقَهَاءِ أَنَّهُ قَالَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ اعْمَلْ بِعِلْمِكَ وَأَعْطِ فَضْلَ مَالِكَ وَاحْبِسْ الْفَضْلَ مِنْ قَوْلِكَ إِلَّا بِشَيْءٍ مِنْ الْحَدِيثِ يَنْفَعُكَ عِنْدَ رَبِّكَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّ الَّذِي عَلِمْتَ ثُمَّ لَمْ تَعْمَلْ بِهِ قَاطِعٌ حُجَّتَكَ وَمَعْذِرَتَكَ عِنْدِ رَبِّكَ إِذَا لَقِيتَهُ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّ الَّذِي أُمِرْتَ بِهِ مِنْ طَاعَةِ اللَّهِ لَيَشْغَلُكَ عَمَّا نُهِيتَ عَنْهُ مِنْ مَعْصِيَةِ اللَّهِ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ لَا تَكُونَنَّ قَوِيًّا فِي عَمَلِ غَيْرِكَ ضَعِيفًا فِي عَمَلِ نَفْسِكَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ لَا يَشْغَلَنَّكَ الَّذِي لِغَيْرِكَ عَنْ الَّذِي لَكَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ جَالِسْ الْعُلَمَاءَ وَزَاحِمْهُمْ وَاسْتَمِعْ مِنْهُمْ وَدَعْ مُنَازَعَتَهُمْ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ عَظِّمْ الْعُلَمَاءَ لِعِلْمِهِمْ وَصَغِّرْ الْجُهَّالَ لِجَهْلِهِمْ وَلَا تُبَاعِدْهُمْ وَقَرِّبْهُمْ وَعَلِّمْهُمْ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ لَا تُحَدِّثْ بِحَدِيثٍ فِي مَجْلِسٍ حَتَّى تَفْهَمَهُ وَلَا تُجِبْ امْرَأً فِي قَوْلِهِ حَتَّى تَعْلَمَ مَا قَالَ لَكَ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ لَا تَغْتَرَّ بِاللَّهِ وَلَا تَغْتَرَّ بِالنَّاسِ فَإِنَّ الْغِرَّةَ بِاللَّهِ تَرْكُ أَمْرِهِ وَالْغِرَّةَ بِالنَّاسِ اتِّبَاعُ أَهْوَائِهِمْ وَاحْذَرْ مِنْ اللَّهِ مَا حَذَّرَكَ مِنْ نَفْسِهِ وَاحْذَرْ مِنْ النَّاسِ فِتْنَتَهُمْ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّهُ لَا يَكْمُلُ ضَوْءُ النَّهَارِ إِلَّا بِالشَّمْسِ كَذَلِكَ لَا تَكْمُلُ الْحِكْمَةُ إِلَّا بِطَاعَةِ اللَّهِ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّهُ لَا يَصْلُحُ الزَّرْعُ إِلَّا بِالْمَاءِ وَالتُّرَابِ كَذَلِكَ لَا يَصْلُحُ الْإِيمَانُ إِلَّا بِالْعِلْمِ وَالْعَمَلِ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ كُلُّ مُسَافِرٍ مُتَزَوِّدٌ وَسَيَجِدُ إِذَا احْتَاجَ إِلَى زَادِهِ مَا تَزَوَّدَ وَكَذَلِكَ سَيَجِدُ كُلُّ عَامِلٍ إِذَا احْتَاجَ إِلَى عَمَلِهِ فِي الْآخِرَةِ مَا عَمِلَ فِي الدُّنْيَا يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِذَا أَرَادَ اللَّهُ أَنْ يَحُضَّكَ عَلَى عِبَادَتِهِ فَاعْلَمْ أَنَّهُ إِنَّمَا أَرَادَ أَنْ يُبَيِّنَ لَكَ كَرَامَتَكَ عَلَيْهِ فَلَا تَحَوَّلَنَّ إِلَى غَيْرِهِ فَتَرْجِعَ مِنْ كَرَامَتِهِ إِلَى هَوَانِهِ يَا صَاحِبَ الْعِلْمِ إِنَّكَ إِنْ تَنْقُلْ الْحِجَارَةَ وَالْحَدِيدَ أَهْوَنُ عَلَيْكَ مِنْ أَنْ تُحَدِّثَ مَنْ لَا يَعْقِلُ حَدِيثَكَ وَمَثَلُ الَّذِي يُحَدِّثُ مَنْ لَا يَعْقِلُ حَدِيثَهُ كَمَثَلِ الَّذِي يُنَادِي الْمَيِّتَ وَيَضَعُ الْمَائِدَةَ لِأَهْلِ الْقُبُورِ