পরিচ্ছেদঃ ১০/১. আযানের সূচনা।
وَقَوْلُهُ عَزَّ وَجَلَّ) وَإِذَا نَادَيْتُمْ إِلَى الصَّلاَةِ اتَّخَذُوهَا هُزُؤًا وَلَعِبًا ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَوْمٌ لاَ يَعْقِلُونَ( وَقَوْلُهُ )إِذَا نُودِيَ لِلصَّلاَةِ مِنْ يَوْمِ الْجُمُعَةِ)
আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ ’’আর যখন তোমরা সালাতের জন্য আহবান কর, তখন তারা একে হাসি-তামাশা ও খেলা বলে মনে করে। কারণ তারা এমন লোক যাদের বোধশক্তি নেই-’’ (সূরাহ্ আল-মায়িদাহ ৫/৫৮)। আল্লাহ্ তা’আলা আরো বলেছেনঃ ’’আর যখন জুমু’আর দিনে সালাতের জন্য ডাকা হয়।’’ (সূরাহ্ আল-জুমু’আহ ৬২/৯)
৬০৩. আনাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, (জামা’আতে সালাত আদায়ের জন্য) সাহাবা-ই কিরাম (রাযি.) আগুন জ্বালানো অথবা নাকূস বাজানোর কথা আলোচনা করেন। আবার এগুলোকে (যথাক্রমে) ইয়াহুদী ও নাসারাদের প্রথা বলে উল্লেখ করা হয়। অতঃপর বিলাল (রাযি.)-কে আযানের বাক্য দু’বার করে ও ইক্বামাত(ইকামত/একামত)ের বাক্য বেজোড় করে বলার নির্দেশ দেয়া হয়।* (৬০৫, ৬০৬, ৬০৭, ৩৪৫৭; মুসলিম ৪/২, হাঃ ৩৭৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৫৭৬)
হাফিয আবূ ‘উমার বিন ‘আবদুর বর বলেন, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল, ইসহাক বিন রাহওয়াইহি, দাঊদ বিন আলী, মোহাম্মদ বিন জরীর প্রভৃতি ইক্বামাতের শব্দগুলি একবার বা দু’বার করে বলার উভয়বিধ অভিমত গ্রহণ করেছেন। তাঁদের দৃষ্টিতে উভয় নিয়মই বিশুদ্ধ, বৈধ ও গ্রহণযোগ্য এবং ঐচ্ছিক ব্যাপারÑ যে ইচ্ছা করবে একবারও বলতে পারবে এবং অপরপক্ষে যে ইচ্ছা করবে দু’বার করেও বলতে পারবে। (তুহফা সহ তিরমিযী ১ম খণ্ড ১৭৪ পৃঃ)
হাফিয আবূ আওয়ানাহ তদীয় মসনদ গ্রন্থে ১ম খণ্ড ৩৩০ পৃষ্ঠায় বলেন, বিলালের আযানের ইক্বামাত একবার করে বলার নিয়ম মনসূখ হয়নি। আবূ মাহযূরাহ্র হাদীস হতে ইক্বামাত দু’বার করে বলা প্রমাণিত হলেও তা হতে অধিক সহীহ আনাসের হাদীসে একবার করে বলা প্রমাণিত হয়েছে। সুতরাং উসূলে হাদীস শাস্ত্রের বিধান ও ন্যায়নীতির ভিত্তিতে বিরোধক্ষেত্রে যা অধিক সহীহ তা-ই গ্রহণ করা উত্তম ও একান্ত বাঞ্ছনীয়।
ইমাম আবদুল ওয়াহহাব শা’রানী হানাফী ‘কাশ্ফুল গুম্মা’ ১ম খণ্ড ১২৮ পৃষ্ঠায় আবদুল্লাহ বিন যায়দের আযানের সাথে উল্লেখিত ইক্বামাতের শব্দগুলি একবার করে বলার নিয়মের উল্লেখ করেছেন। উক্ত গ্রন্থে ১২৯ পৃষ্ঠায় তিনি রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলালকে আযানের শব্দগুলি দু’বার করে এবং ইক্বামাতের শব্দগুলো একবার করে বলার নির্দেশ সম্বলিত হাদীসের উল্লেখ করেছেন।
শায়খ আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) তদীয় সুপ্রসিদ্ধ গ্রন্থ ‘গুনিয়াতুত্ তালেবীন’-এর ৮ পৃষ্ঠায় ইক্বামাতের শব্দগুলি একবার করে বলার স্বপক্ষে তাঁর নিজের মন্তব্য পেশ করেছেন।
মোটের উপর আমরা ইমাম আহমাদ, ইসহাক বিন রাহওয়াইহি এবং অন্যান্য ওলামায়ে কিরামের ন্যায় ইক্বামাতের শব্দগুলি একবার করে অথবা দু’বার করে বলার উভয়বিধ অভিমতের বৈধতা ও প্রামাণিকতা স্বীকার করি; অধিকন্তু আমরা উভয়বিধ ‘আমলকে জায়েয বলে মনে করি। কিন্তু যেহেতু ইকামাতের শব্দগুলি দু’বার করে বলার নির্দেশ সম্বলিত হাদীস হতে একবার করে বলার নির্দেশ সম্বলিত হাদীস অধিক প্রামাণ্য ও বিশুদ্ধ এবং তা বহু সূত্রে বর্ণিত এমনকি ইমাম বুখারী ও মুসলিম উভয় কর্তৃক গৃহীত, কাজেই আমরা ইকামাতের শব্দগুলি একবার করে বলা সর্বোত্তম মনে করি।
بَاب بَدْءُ الأذَانِ
عِمْرَانُ بْنُ مَيْسَرَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ ذَكَرُوا النَّارَ وَالنَّاقُوسَ فَذَكَرُوا الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى فَأُمِرَ بِلاَلٌ أَنْ يَشْفَعَ الْأَذَانَ وَأَنْ يُوتِرَ الْإِقَامَةَ.
Narrated Anas:
The people mentioned the fire and the bell (they suggested those as signals to indicate the starting of prayers), and by that they mentioned the Jews and the Christians. Then Bilal was ordered to pronounce Adhan for the prayer by saying its wordings twice, and for the Iqama (the call for the actual standing for the prayers in rows) by saying its wordings once. (Iqama is pronounced when the people are ready for the prayer).
পরিচ্ছেদঃ ১০/১. আযানের সূচনা।
৬০৪. নাফি‘ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু ‘উমার (রাযি.) বলতেন যে, মুসলিমগণ যখন মদিনা্য় আগমন করেন, তখন তাঁরা সালাতের সময় অনুমান করে সমবেত হতেন। এর জন্য কোন ঘোষণা দেয়া হতো না। একদা তাঁরা এ বিষয়ে আলোচনা করলেন। কয়েকজন সাহাবী বললেন, নাসারাদের ন্যায় নাকূস বাজানোর ব্যবস্থা করা হোক। আর কয়েকজন বললেন, ইয়াহূদীদের শিঙ্গার ন্যায় শিঙ্গা ফোঁকানোর ব্যবস্থা করা হোক। ‘উমার (রাযি.) বললেন, সালাতের ঘোষণা দেয়ার জন্য তোমরা কি একজন লোক পাঠাতে পার না? তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে বিলাল, উঠ এবং সালাতের জন্য ঘোষণা দাও। (মুসলিম ৪/১, হাঃ ৩৭৭, আহমাদ ৬৩৬৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৫৭৭)
بَاب بَدْءُ الأذَانِ
مَحْمُودُ بْنُ غَيْلَانَ قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ قَالَ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ يَقُولُ كَانَ الْمُسْلِمُونَ حِينَ قَدِمُوا الْمَدِينَةَ يَجْتَمِعُونَ فَيَتَحَيَّنُونَ الصَّلاَةَ لَيْسَ يُنَادَى لَهَا فَتَكَلَّمُوا يَوْمًا فِي ذَلِكَ فَقَالَ بَعْضُهُمْ اتَّخِذُوا نَاقُوسًا مِثْلَ نَاقُوسِ النَّصَارَى وَقَالَ بَعْضُهُمْ بَلْ بُوقًا مِثْلَ قَرْنِ الْيَهُودِ فَقَالَ عُمَرُ أَوَلاَ تَبْعَثُونَ رَجُلاً يُنَادِي بِالصَّلاَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا بِلاَلُ قُمْ فَنَادِ بِالصَّلاَةِ.
Narrated Ibn `Umar:
When the Muslims arrived at Medina, they used to assemble for the prayer, and used to guess the time for it. During those days, the practice of Adhan for the prayers had not been introduced yet. Once they discussed this problem regarding the call for prayer. Some people suggested the use of a bell like the Christians, others proposed a trumpet like the horn used by the Jews, but `Umar was the first to suggest that a man should call (the people) for the prayer; so Allah's Messenger (ﷺ) ordered Bilal to get up and pronounce the Adhan for prayers.