রাতের শেষ তৃতীয়াংশে ঘুম থেকে জেগে উঠে দু‘আ পড়ুন।

পেশাব-পায়খানার দরকার হলে সারুন।

দাঁতন করুন।

গোসলের দরকার হলে গোসল নতুবা ওযূ করুন।

তাহিয়্যাতুল ওযূ নামায পড়ুন।

তাহাজ্জুদ পড়ুন।

আযান শুনে আযানের জবাব দিন।

আযানের পর ফজরের সুন্নাত পড়ুন।

ফজরের পর ডানকাতে শুয়ে একটু বিশ্রাম নিন। তবে অবশ্যই ঘুমিয়ে যাবেন না।

আযান হলে জামাআতে নামায পড়তে মসজিদে যান।

মসজিদে যাওয়া ও সেখানে অবস্থান করার নানান আদব খেয়াল রাখুন।

ফরয নামাযের ইকামত হলে সুন্নাত ত্যাগ করে ফরয নামায পড়ুন।

নামাযের পর যথানিয়মে জিকির পড়ুন।

ফজরের নামায পড়ে সূর্য ওঠা পর্যন্ত মুসাল্লায় বসে তিলাওয়াত ও জিকির করুন। তার সওয়াব অনেক। ইল্মী মজলিস থাকলে সেখানে বসুন।

সকালের জিকির-আযকার পড়ুন।

প্রকাশ থাকে যে, সকালে ৭০ হাজার ফিরিশ্তার দু‘আ এবং ঐ দিনে মরলে শহীদের দর্জা পাওয়ার জন্য সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠ করার হাদীস সহীহ নয়। (যয়ীফ তারগীব হা/৩৭৯, যয়ীফুল জামে’ হা/৫৭৩২)

ফজরের ফরয নামাযের পর সূর্য ওঠা পর্যন্ত (ফজরের ছুটে যাওয়া সুন্নাত বা কারণ-ঘটিত কোন নামায ছাড়া) সাধারণ কোন নফল নামায পড়া যাবে না। যেমন সূর্য ওঠা, ডোবা ও ঠিক মাথার উপর থাকার সময় নফল নামায নিষিদ্ধ।

প্রয়োজনে ফজরের পর ঘুমাতে পারেন। তবে উদাসীন ও অলসদের মত খামাখা বিলাস-নিদ্রায় পড়ে থাকা উচিত নয়। বরং কাজ থাকলে সকাল-সকালই সেরে ফেলা কর্তব্য। অবশ্য ‘‘সকালের ঘুম রুযী থেকে বঞ্চিত করে।’’ এ হাদীস সহীহ নয়। (যয়ীফুল জামে’হা/৩৫৩১) যেমন ‘‘সুবহে সাদেকের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ে মানুষের রুযী বন্টন করা হয়’’ এ মর্মে নবী-দুলালী ফাতিমার হাদীসটি মউযূ’ বা জাল। (যয়ীফ তারগীব হা/১০৪৭)

সূর্য ওঠার পর ইশরাক্বের নামায পড়ুন। আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামাআতে পড়ে, অতঃপর সূর্যোদয় অবধি বসে আল্লাহর জিকির করে তারপর দুই রাকআত নামায পড়ে, সেই ব্যক্তির একটি হজ্জ ও উমরার সওয়াব লাভ হয়।’’ বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বললেন, ‘‘পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ, পরিপূর্ণ।’’ অর্থাৎ কোন অসম্পূর্ণ হজ্জ-উমরার সওয়াব নয় বরং পূর্ণ হজ্জ-উমরার সওয়াব।[1]

তিনি আরো বলেছেন, ‘‘ইসমাঈলের বংশধরের চারটি মানুষকে দাসত্বমুক্ত করা অপেক্ষা ফজরের নামাযের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত জিকিরকারী দলের সাথে বসাটা আমার নিকট অধিক প্রিয়। অনুরূপ চারটি জীবন দাসত্বমুক্ত করার চেয়ে আসরের নামাযের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জিকিরকারী সম্প্রদায়ের সাথে বসাটা আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়।’’[2]

নাশ্তার সময় খাওয়ার আদব মনে রাখুন।

পোশাক পরার সময় তার পরিচ্ছদ ও সাজসজ্জার আদব মনে রাখুন।

ঘর থেকে বের হওয়ার আদব এবং সফর, সাক্ষাৎ, যিয়ারত ও যিয়াফতের আদব খেয়াল রাখুন।

যে কাজেই যান ইসলামের বিধান ভুলে যাবেন না।

ঘরে থাকলে চাশ্তের সময় চাশ্তের নামায পড়ুন।

যাওয়ালের পূর্বে যাওয়ালের নামায পড়ুন। যাওয়ালের পরেও ৪ রাকআত পড়ুন।

যোহরের সময় যোহরের নামায মসজিদে গিয়ে আদায় করুন।

দুপুরের খাবারের সময় খাবারের আদব খেয়াল করুন।

খাওয়ার পর একটু বিশ্রাম নিন। যেহেতু রসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘‘তোমরা দুপুরের সময় বিশ্রাম নাও। শয়তানরা এ সময় বিশ্রাম নেয় না।’’[3]

এই বিশ্রাম ও বিরতির ফলে দেহ-মন তরতাজা হয়ে উঠবে। নতুনভাবে কাজ ও ইবাদতে মন বসবে। রাত্রিতে তাহাজ্জুদের জন্য উঠতে সহজ হবে। বিজ্ঞানীরা বলেন, সামান্য দিবানিদ্রা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে।

আসরের সময় আসরের নামায মসজিদে গিয়ে পড়ুন।

আসরের আগে ৪ রাকআত সুন্নাত পড়ুন, আল্লাহ আপনার প্রতি রহম করবেন।

আসরের ফরয নামাযের পর (কারণ-ঘটিত কোন নামায ছাড়া) আর কোন নফল নামায নেই।

আসরের নামাযের পর বসে তিলাওয়াত ও জিকির করুন। ইল্মী মজলিসে বসুন।

আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেছেন, ‘‘ইসমাঈলের বংশধরের চারটি মানুষকে দাসত্বমুক্ত করা অপেক্ষা ফজরের নামাযের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত জিকিরকারী দলের সাথে বসাটা আমার নিকট অধিক প্রিয়। অনুরূপ চারটি জীবন দাসত্বমুক্ত করার চেয়ে আসরের নামাযের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত জিকিরকারী সম্প্রদায়ের সাথে বসাটা আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়।’’

আসরের পর কস্নান্ত থাকলে অথবা বিশ্রাম বা ঘুমের প্রয়োজন হলে আপনি ঘুমাতে পারেন। এ সময় ঘুম নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে অথবা ঘুমালে মস্তিষ্ক-বিকৃতি ঘটতে পারে বলে যে হাদীস বর্ণনা করা হয় তা সহীহ নয়।

মাগরেবের নামায মসজিদে গিয়ে আদায় করুন।

ইচ্ছা হলে ও সময় থাকলে মাগরেবের ফরযের আগে ২ রাকআত নামায পড়ুন। সুন্নাত ও নফল নামায ঘরে পড়ার চেষ্টা করুন। মাগরেবের সুন্নতের পর আর নির্দিষ্ট কোন নফল নামায নেই।

এশার আযান হলে জামাআতে এশার নামায পড়ুন। সুন্নাত পড়ে বাড়ি ফিরে রাতের খানা খেয়ে বেশী রাত না জেগে যথাসম্ভব আগে আগে ঘুমিয়ে যান। যাতে রাত্রের শেষ তৃতীয়াংশে উঠতে আপনার কষ্ট না হয়। আর কোন বৈধ কারণবশতঃ রাত হয়েই গেলে ওযূ করে ২/৪ রাকআত নামায পড়ে বিত্র পড়ে শুয়ে যান। পক্ষান্তরে রাতে উঠতে পারবেন না -এই আশঙ্কা হলে এশার সুন্নতের পরে বিত্র পড়ে নিন।

আর জেনে রাখুন যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) এশার আগে ঘুমাতে এবং পরে (অপ্রয়োজনীয়) কথাবার্তা বলতে নিষেধ করেছেন।[4]

প্রকাশ থাকে যে, এশার নামাযের পর বাড়ি ফিরে ৪ অথবা ৬ রাকআত নামায পড়ার হাদীস সহীহ নয়।

কোন কর্মে দ্বিধাগ্রস্ত হলে নিজ রবের কাছে পরামর্শ নিন এবং তার জন্য ইস্তিখারার নামায পড়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করুন।

কঠিন বিপদে বা সমস্যায় পড়লে অথবা কোন প্রয়োজন পূরণ করার দরকার হলে স্বালাতুল হা-জাহ পড়ে আল্লাহর কাছে আবেদন জানান।

কোন পাপ করে ফেললে আল্লাহর কাছে ক্ষমা লাভের জন্য স্বালাতুত তাওবাহ পড়ে তাঁর কাছে প্রার্থনা জানান।

চন্দ্রে অথবা সূর্যে গ্রহণ লাগলে যথানিয়মে জামাআত সহকারে তার নামায পড়ুন।

অনাবৃষ্টি দেখা দিলে যথানিয়মে জামাআত সহকারে স্বালাতুল ইস্তিস্কা পড়ে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করুন।

জুমআর দিন বেশী বেশী দরূদ পড়ুন, সূরা কাহফ পড়ুন। সকাল সকাল গোসল করে মসজিদে উপস্থিত হন। নিয়মিতভাবে জুমআর নামায আদায় করুন। এই দিনে দু‘আ কবুল হওয়ার সময় খুঁজতে আল্লাহর ইবাদতে ও দু‘আয় মশ্গুল থাকুন। অবশ্য রুযী সন্ধানের প্রয়োজন থাকলে কাজে বেরিয়ে যান।

প্রত্যেক সোম বৃহস্পতিবার রোযা রাখুন।

প্রত্যেক হিজরী মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ এই তিনদিন রোযা রাখুন।

যেহেতু আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘‘প্রত্যেক মাসে তিনটি রোযা রাখা সারা বছর রোযা রাখার সমতুল্য।’’[5]

আবূ যার্র (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক মাসে ৩টি করে রোযা রাখবে, তার সারা বছর রোযা রাখা হবে। আল্লাহ আযযা অজাল্লা এর সত্যায়ন অবতীর্ণ করে বলেন, مَنْ جَاءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهُ عَشْرُ أَمْثَالِهَا

কেউ কোন ভাল কাজ করলে, সে তার ১০ গুণ প্রতিদান পাবে।[6] এক দিন ১০ দিনের সমান।’’[7]

ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, ‘‘ধৈর্যের (রমযান) মাসে রোযা আর প্রত্যেক মাসের তিনটি রোযা অন্তরের বিদ্বেষ ও খট্কা দূর করে দেয়।’’[8]

মুহার্রাম মাসের অধিকাংশ দিন রোযা রাখার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে ৯ ও ১০ তারীখে আশূরার রোযা রেখে এক বছরের পাপ মাফ করিয়ে নিন।

শা’বান মাসের অধিকাংশ দিন রোযা রাখার চেষ্টা করুন। রমযানের মাসের রোযা রাখার সাথে সাথে নিয়মিত তারাবীহ পড়ুন। বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ রাত্রি শবেকদরের রাত্রির খোঁজে শেষ দশকের সমস্ত বেজোড় রাত্রি জাগরণ করে ইবাদত করার চেষ্টা করুন। রমযানের পর শওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখুন। আপনার সারা বছর রোযা রাখা হবে।

বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন যুল-হজ্জ মাসের প্রথম নয় দিন সর্বপ্রকার নেক আমল করার চেষ্টা করুন। এই নয় দিনে রোযা রাখুন। বিশেষ করে এ মাসের ৯ তারীখে আরাফার রোযা রেখে গত ও আগামী এক বছরের (সর্বমোট দুই বছরের) গোনাহ মাফ করিয়ে নিন। ১০ তারীখে সাধ্যমত কুরবানী করুন। ঈদের নামায পড়ে খুশী হন, অপরকে খুশী করুন।

খুব বেশী শক্তি থাকলে একদিন পর একদিন দাঊদী রোযা রাখুন। যৌন-পীড়ায় পীড়িত হলে রোযা রেখে তার উপশম খুঁজুন।

প্রত্যহ সামর্থ্য হলে কিছু না কিছু দান করুন। অন্নহীনকে অন্নদান করুন। অক্ষম ব্যক্তির সহযোগিতা করুন। এতীম-বিধবার খোঁজ খবর রাখুন। জানাযায় অংশগ্রহণ করুন। সামাজিক কাজ করুন। সৎকাজে আদেশ করুন ও মন্দ কাজে বাধা দিন। বিবদমান গোষ্ঠীর মাঝে সন্ধি স্থাপন করুন। যুলম থেকে বিরত রেখে যালেমের ও যুলম প্রতিহত করে মযলূমের সহযোগিতা করুন। নিজের জন্য যা পছন্দ করেন, তা অপরের জন্য পছন্দ করুন। অপরের ত্রুটি গোপন করুন। অপরকে ক্ষমা প্রদর্শন করুন।

বড়দের সম্মান করুন। আলেমদের শ্রদ্ধা করুন এবং তাঁদের পাশে বসুন। দৈনিক কিছু কিছু করে কুরআন ও হাদীসের জ্ঞান অর্জন করুন। সহীহ দলীল-ভিত্তিক আকীদা, ফারায়েয ও হারাম-হালাল শিখুন।

বিদআত থেকে সুদূরে থাকুন। ইসলামী ক্যাসেট শুনুন। ইসলামী বই পড়ুন। হিকমতের সাথে আল্লাহর দিকে মানুষকে আহবান করুন। বিপদ ও কষ্টের সময় ধৈর্য ধারণ করুন। প্রত্যেক কষ্টে সর্বপ্রথম আল্লাহর কাছেই সাহায্য ভিক্ষা করুন। বিশ্বজাহানের মুসলিমদের জন্য দু‘আ করুন। জিহাদের সামর্থ্য থাকলে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করুন।

সর্বদা আল্লাহর উপর ভরসা রাখুন। আপনার মন আল্লাহর সাথে সংযুক্ত থাক। আপনার হৃদয় মসজিদের সাথে লটকে থাক। সংসারের কাজ থাকলে কাজ করুন। পিতামাতা ও স্ত্রীর কাজে সহযোগিতা করুন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে আল্লাহকে স্মরণ করুন। আযান হলে আবার মসজিদে আসুন।

পিতামাতার হক আদায় করুন। আদায় করুন স্ত্রী-সন্তানের হক। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও সাক্ষাৎকারীর হকও ভুলে গিয়ে নির্জনে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন হবেন না। যেহেতু সেগুলিও তুলনামূলক বড় ইবাদত। অসংখ্য বন্ধন মাঝে মহানন্দময় মুক্তির স্বাদ লাভ করতে হবে আপনাকে।

কোন কিছুতে অবজ্ঞা ও অতিরঞ্জন প্রদর্শন করবেন না। খরচে কার্পণ্য ও অপচয় করবেন না। ব্যবহারে সুন্দর চরিত্র প্রকাশ পাবে আপনার দৈনন্দিন জীবনে।

[1]. তিরমিযী, সহীহ তারগীব ৪৬১

[2]. আবু দাঊদ, সহীহ তারগীব ৪৬২

[3]. ত্বাবারানী, আবূ নুআইম, সহীহুল জা’মে হা/৪৪৩১

[4]. সহীহুল জা’মে হা/৬৯১৫

[5]. বুখারী তাওহীদ পাবঃ হা/১৯৭৯, মুসলিম আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা হা/১১৫৯

[6]. সূরা আনআম-৬: ১৬০

[7]. তিরমিযী, ইবনে মাজাহ আল-মাকতাবাতুশ-শামেলা. হা/১৭০৮

[8]. বাযযার, সহীহ তারগীর হা/১০১৮

১। শির্ক (অতি মহাপাপ)

২। দুনিয়া কামানোর উদ্দেশ্যে ইল্ম শিখা

৩। শরয়ী ইল্ম গোপন করা

৪। বিশ্বাসঘাতকতা করা

৫। গণকের কথা বিশ্বাস করা

৬। গায়রুল্লাহর নামে যবেহ করা

৭। গায়রুল্লাহর নামে নযর মানা

৮। গায়রুল্লাহর নামে কসম করা

৯। যাদু করা

১০। আল্লাহর প্রতি কুধারণা রাখা

১১। মুসলিমের প্রতি কুধারণা রাখা

১২। মুসলিমকে বিনা দলীলে কাফের বলা

১৩। কাফেরকে কাফের না জানা

১৪। আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি মিথ্যা আরোপ করা

১৫। আল্লাহর আযাব থেকে নিজেকে নিরাপদ ভাবা

১৬। আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া

১৭। তকদীর অস্বীকার করা

১৮। তাবীয বাঁধা

১৯। প্রাণ হত্যা করা

২০। আত্নহত্যা করা

২১। যুলম করা

২২। অপমান ও অপদস্থ করা

২৩। মিথ্যা বলা

২৪। পরচর্চা বা গীবত করা

২৫। চুগলখোরী করা

২৬। গালি দেওয়া

২৭। মাদকদ্রব্য সেবন করা

২৮। মৃত বা হারাম পশুর মাংস খাওয়া

২৯। বাজে তর্ক করা

৩০। সত্য প্রত্যাখান করা

৩১। ঠাট্টা বা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করা

৩২। গালি দেওয়া

৩৩। অহংকার করা

৩৪। নিজের প্রশংসা নিজেই করা

৩৫। অপরের দোষ খোঁজা

৩৬। মূর্তি বা ছবি তৈরী করা

৩৭। এতীমের মাল ভক্ষণ করা

৩৮। জুয়া (ফ্লাশ) খেলা

৩৯। লটারী খেলা

৪০। চুরি করা

৪১। আমানতে খেয়ানত করা

৪২। পরের সম্পদ আত্মসাৎ করা

৪৩। জমি-জায়গা দাবিয়ে নেওয়া

৪৪। ঘুস খাওয়া

৪৫। সূদ খাওয়া

৪৬। ওজনে নেওয়ার সময় বেশী এবং দেওয়ার সময় কম দেওয়া

৪৭। মিথ্যা কসম খাওয়া

৪৮। ধোকা দেওয়া

৪৯। কসম করে মাল বিক্রি করা

৫০। প্রতিশ্রুতি পালন না করা

৫১। চুক্তি ভঙ্গ করা

৫২। মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া

৫৩। সাক্ষ্য গোপন করা

৫৪। মালে ভেজাল দেওয়া

৫৫। প্রয়োজনের সময় মাল গুদামজাত করে রাখা

৫৬। অসিয়ত পালন না করা

৫৭। আল্লাহর ভাগ করা ভাগ্যে সন্তুষ্ট না হওয়া

৫৮। পুরুষের সোনা ও রেশম ব্যবহার

৫৯। পুরুষের গোড়ালীর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পরা

৬০। দান করে গেয়ে বেড়ানো

৬১। গান-বাজনা শোনা

৬২। ফরয নামায ত্যাগ করা

৬৩। সময় পার করে নামায পড়া

৬৪। লোক দেখিয়ে ইবাদত করা

৬৫। যাকাত না দেওয়া

৬৬। রোযা না রাখা

৬৭। হজ্জ না করা

৬৮। জিহাদ না করা

৬৯। জিহাদের ময়দানে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করা

৭০। জুমআহ ত্যাগ করা

৭১। জামাআত ত্যাগ করা

৭২। সামর্থ্য থাকতে সৎকাজের আদেশ এবং মন্দকাজে বাধা না দেওয়া

৭৩। পেশাবের ছিটা থেকে না বাঁচা

৭৪। ইলম অনুযায়ী আমল না করা

৭৫। ব্যভিচার করা

৭৬। মাসিক অবস্থায় সহবাস করা

৭৭। পায়খানাদ্বারে সঙ্গম করা

৭৮। অবৈধ প্রেম করা

৭৯। সমকাম করা

৮০। হস্তমৈথুন করা

৮১। মিথ্যা অপবাদ দেওয়া

৮২। মহিলার বেপর্দা হওয়া

৮৩। পুরুষের নারীর মত এবং নারীর পুরুষের মত বেশ ধারণ করা

৮৪। দাড়ি চাঁছা

৮৫। মা-বাপের অবাধ্য হওয়া

৮৬। আত্মীয়তার বন্ধন ছেদন করা

৮৭। স্বামীর কথা না মানা

৮৮। পর্যাপ্ত কারণ ছাড়া তালাক দেওয়া

৮৯। পর্যাপ্ত কারণ ছাড়া তালাক নেওয়া

৯০। তালাক দেওয়ার পর স্ত্রীকে ফেরৎ নিতে হালালা বিবাহ দেওয়া ও করা

৯১। এগানা পুরুষ ছাড়া মহিলার একা সফর করা

৯২। পরের বাপকে বাপ বলা

৯৩। বাড়ির মহিলার ব্যাপারে ঈর্ষাহীন (ভেঁড়া) হওয়া

৯৪। প্রতিবেশীকে কষ্ট দেওয়া

৯৫। মহিলার ভ্রূ, মুখের লোম চাঁছা

৯৬। মহিলার পরচুলা ব্যবহার

৯৭। দেহ দেগে নক্সা করা

৯৮। দাঁত ঘষে ফাঁক ফাঁক করা

৯৯। কানাচি পেতে পরের গোপন কথা শোনা

১০০। শোকে মাতম করা

পরিশেষে স্মরণ করিয়ে দিই যে, ‘‘সর্বশ্রেষ্ঠ দ্বীন হল পরহেযগারী।’’[1] ‘‘সর্বশ্রেষ্ঠ দ্বীন হল, যা (পালন করা) সহজ।’’[2] ‘‘সেই (ধরনের) আমল আল্লাহর অধিক পছন্দনীয়, যে আমল নিরবচ্ছিন্নভাবে করে যাওয়া হয়; যদিও তা পরিমাণে কম হয়।’’[3]

আল্লাহর বান্দাদের নিকট পরীক্ষা নিয়ে দেখবেন যে, তাদের মধ্যে কে সবচেয়ে ভালো আমল করেছে। সুতরাং আমল যত বেশীই হোক, ভালো না হলে মূল্যহীন।

রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘‘তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর। যেহেতু আল্লাহ (সওয়াব দানে) বিরক্তিবোধ করবেন না, যতক্ষণ না তোমরা (আমলে) বিরক্তিবোধ ক’রে বসবে।’’[4]

‘‘তোমরা (আমলে) অতিরঞ্জন ও অবজ্ঞা প্রদর্শন করো না। তোমরা সুসংবাদ নাও ও জেনে রাখ যে, তোমাদের মধ্যে কেউই আর না আমি (আল্লাহর রহমত ছাড়া) নিজ আমলের বলে পরিত্রাণ পেতে পারব। যদি না আল্লাহ আমাকে তাঁর করুণা ও অনুগ্রহ দ্বারা আচ্ছাদিত করেন।’’[5]

‘‘যদি কোন ব্যক্তিকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে তার জন্মদিন থেকে নিয়ে বৃদ্ধ হয়ে মৃত্যুদিন পর্যন্ত মাটির উপর উবুড় ক’রে টেনে নিয়ে বেড়ানো হয়, তবুও কিয়ামতের দিন সে তা তুচ্ছ মনে করবে!’’[6]

ফাল্লাহুল মুস্তাআন। আল্লাহ আমাকে ও আপনাকে নেক কাজ করার এবং বদ কাজ থেকে দূরে থাকার তওফীক দান করুন এবং ‘ইসলামী জীবনধারা’র উপর চলার প্রয়াস দান করুন। আমীন। অলা হাউলা অলা কুউঅতা ইল্লা বিল্লাহ।

وصلى الله على نبينا محمد وعلى آله وصحبه أجمعين

[1]. সহীহুল জা’মে হা/৩৩০৮

[2]. ঐ ৩৩০৯

[3]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১২৪২

[4]. সহীহুল জা’মে হা/২৭৪৭

[5]. আহমাদ, মুসলিম, ইবনে মাজাহ

[6]. আহমাদ প্রমুখ, সহীহুল জা’মে হা/৫২৪৯
দেখানো হচ্ছেঃ থেকে ২ পর্যন্ত, সর্বমোট ২ টি রেকর্ডের মধ্য থেকে