যিয়ারত শব্দের অর্থ সাক্ষাত করা, দেখা করা, বেড়ান (visit, call) ইত্যাদি। জীবিত মানুষদের, বিশেষত আত্মীয় স্বজন ও নেককার মানুষদের যিয়ারত করা বা সাক্ষাত করা একটি হাদীস নির্দেশিত নেক কাজ। বিভিন্ন হাদীসে মুমিনদেরকে ‘তাযাউর ফিল্লাহ’ (التزاور في الله) বা আল্লাহর ওয়াস্তে একে অপরের যিয়ারত বা দেখা সাক্ষাত করতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।[1]
অনুরূপভাবে মৃত মানুষদের ‘কবর’ যিয়ারত করা, অর্থাৎ সাক্ষাত করা বা বেড়ানোও হাদীস সম্মত একটি মুস্তাহাব ইবাদত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কবর শরীফ যিয়ারত নিঃসন্দেহে অন্যতম শ্রেষ্ঠ যিয়ারত। এছাড়া তাঁকে ভালবাসা ঈমানের অংশ ও অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত। আর সুন্নাত সম্মত যিয়ারতের মাধ্যমে এ মহববত বৃদ্ধি পায়। এছাড়া তাঁর পবিত্র কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দরুদ-সালাম প্রদানের মর্যাদা হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। এভাবে আমরা দেখতে পাই যে, কবর শরীফ যিয়ারত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।
তবে এ ইবাদতের জন্য বিশেষ কোনো হাদীস আছে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেউ কেউ এ বিষয়ক সকল হাদীস জাল ও ভিত্তিহীন বলে উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ সেগুলোকে দুর্বল বা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। এখানে সে বিষয়ে কিছুটা বিস্তারিত আলোচনা করতে চাই।
এ বিষয়ক হাদীসগুলোকে অর্থের দিক থেকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর যিয়ারতকারী অথবা তাঁর বরকতময় কবর যিয়ারতকারীর জন্য শাফা‘আত বা রহমতের সুসংবাদ। দ্বিতীয়, রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর ইন্তিকালের পরে তাঁর পবিত্র কবর যিয়ারতকারীকে তাঁর জীবদ্দশাতেই তাঁর সাথে সাক্ষাতকারীর মর্যাদার সুসংবাদ প্রদান। তৃতীয়, যিয়ারত পরিত্যাগকারীর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ।