বড় শির্ক ও ছোট শির্ক বড় শির্কের প্রকারভেদ মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি
৩১. একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়াও অন্য কেউ কাউকে সন্তান-সন্ততি দিতে পারে এমন মনে করার শির্ক

একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলাই যাকে চান তাকে সন্তান-সন্ততি দিয়ে থাকেন। তিনি ভিন্ন অন্য কেউ কাউকে ইচ্ছে করলেই সন্তান-সন্ততি দিতে পারে না। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:

«لِلهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَآءُ، يَهَبُ لِـمَنْ يَّشَآءُ إِنَاثًا وَّيَهَبُ لِـمَنْ يَّشَآءُ الذُّكُوْرَ، أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَّإِنَاثًا، وَيَجْعَلُ مَنْ يَّشَآءُ عَقِيْمًا، إِنَّهُ عَلِيْمٌ قَدِيْرٌ»

‘‘আকাশ ও পৃথিবীর সার্বভৌমত্ব একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলারই। তিনি যা চান তাই সৃষ্টি করেন। তিনি যাকে ইচ্ছা কন্যা সন্তান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা পুত্র সন্তান। আর যাকে ইচ্ছা পুত্র ও কন্যা উভয়টাই দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে রাখেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ ও সর্বশক্তিমান’’। (শূরা : ৪৯-৫০)

ইমাম ইবনু শিহাব যুহরী (রাহিমাহুল্লাহ্) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন:

وَلَـمَّا تُوُفِّيَتْ رُقَيَّةُ زَوْجَةُ عُثْمَانَ زَوَّجَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أُمَّ كُلْثُوْمَ، فَتُوُفِّيَتْ عِنْدَهُ، وَلَـمْ تَلِدْ شَيْئًا، وَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم: لَوْ كَانَ لِيْ عَشْرٌ لَزَوَّجْتُكَهُنَّ

‘‘’উসমান (রা.) এর স্ত্রী এবং রাসূল (সা.) এর মেয়ে রুক্বাইয়াহ্ (রাযিয়াল্লাহু আনহা) যখন ইন্তিকাল করেন তখন রাসূল (সা.) তাঁর আর এক মেয়ে উম্মে কুল্সুম (রাযিয়াল্লাহু আনহা) কে ’উসমান (রা.) এর নিকট বিবাহ দেন। অতঃপর উম্মে কুলসুম (রাযিয়াল্লাহু আনহা) ও ইন্তিকাল করেন। তবে তাঁর কোন সন্তান হয়নি। এরপর নবী (সা.) ’উসমান (রা.) কে উদ্দেশ্য করে বলেন: যদি আমার দশটি মেয়েও থাকতো এবং পর পর সবাই ইন্তিকাল করতো তাহলেও আমি একটির পর আর একটি মেয়ে তোমার নিকট বিবাহ দিতাম। (ত্বাবারানী, হাদীস ১০৬১, ১০৬২)

উম্মে কুল্সুম (রাযিয়াল্লাহু আনহা) এর কোন সন্তান হয়নি এমতাবস্থায় তিনি ইন্তিকাল করেন। যদি আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়া কেউ কাউকে সন্তান দিতে পারতো তা হলে নবী (সা.) অবশ্যই তাঁর মেয়েকে সন্তান দিতেন। কারণ, তিনি ’উসমান (রা.) কে খুব বেশি ভালোবাসতেন। তাঁর ভালোবাসার চিহ্ন এটাও যে তিনি তার আনন্দ দেখবেন। আর এ কথা সবারই জানা যে, যে কোন ব্যক্তি (সে পাগলই হোক না কেন) তার ঘরে নব সন্তান আসলে সে অত্যধিক খুশি হয়। উপরন্তু নবীর মেয়ের ঘরের সন্তান।

অপর দিকে নবী (সা.) ’উসমান (রা.) কে বেশি ভালোবাসার দরুন তাকে উদ্দেশ্য করে আপসোস করে এ কথা বললেন যে, যদি আমার দশটি মেয়েও থাকতো এবং পর পর সবাই ইন্তিকাল করতো তা হলেও আমি একটির পর আর একটি মেয়ে তোমার নিকট বিবাহ দিতাম। এ কথা এটাই প্রমাণ করে যে, সন্তান দেয়া আল্লাহ্ তা’আলার হাতে। তাঁর হাতে এর কিছুই নেই। নতুবা তিনি আরো কয়েকটি মেয়ে সন্তান জন্ম দিয়ে পর পর ’উসমান (রা.) এর নিকট বিবাহ দিতেন।