বড় শির্ক ও ছোট শির্ক বড় শির্কের প্রকারভেদ মোস্তাফিজুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল-মাদানী ১ টি
২৩. একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলা ছাড়াও অন্য কেউ কাউকে ধনী বা গরিব বানাতে পারে এমন মনে করার শির্ক

একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলাই বিশ্বের সকল কিছুর মালিক। অতএব তিনি ইচ্ছা করলেই কেউ ধনী বা গরিব হতে পারে। অন্য কারোর ইচ্ছায় কেউ ধনী বা গরিব হয় না।

আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:

«لِلهِ مَا فِيْ السَّمٰوَاتِ وَمَا فِيْ الْأَرْضِ»

‘‘আকাশে ও জমিনে যা কিছুই রয়েছে তা একমাত্র আল্লাহ্ তা’আলারই’’। (বাক্বারাহ্ : ২৮৪)

তিনি আরো বলেন:

«هُوَ اللهُ الَّذِيْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ، الْـمَلِكُ الْقُدُّوْسُ ... »

‘‘তিনিই আল্লাহ্, যিনি ছাড়া অন্য কোন সত্য মা’বূদ নেই। তিনিই সব কিছুর মালিক এবং তিনিই পবিত্র’’। (হাশর : ২৩)

আল্লাহ্ তা’আলা যাকে ইচ্ছা ধনী বানান। আর যাকে ইচ্ছা গরিব বানান। এতে তিনি ভিন্ন অন্য কারোর সামান্যটুকুও হাত নেই।

আল্লাহ্ তা’আলা বলেন:

«اللهُ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِـمَنْ يَّشَآءُ وَيَقْدِرُ»

‘‘আল্লাহ্ তা’আলা যার জন্য ইচ্ছা করেন তার জীবনোপকরণ বর্ধিত করেন এবং তেমনিভাবে সংকুচিতও’’। (রা’দ : ২৬)

তিনি আরো বলেন:

« إِنَّ رَبَّكَ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَّشَآءُ وَيَقْدِرُ »

‘‘নিশ্চয়ই আপনার প্রভু যার জন্য ইচ্ছা করেন তার জীবনোপকরণ বর্ধিত করেন এবং তেমনিভাবে সংকুচিতও’’। (ইস্রা’/বানী ইস্রাঈল : ৩০)

তিনি আরো বলেন:

«قُلْ إِنَّ رَبِّيْ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَّشَآءُ وَيَقْدِرُ، وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لاَ يَعْلَمُوْنَ»

‘‘(হে নবী) আপনি বলে দিন: নিশ্চয়ই আমার প্রভু যার জন্য ইচ্ছা করেন তার জীবনোপকরণ বর্ধিত করেন এবং তেমনিভাবে সংকুচিতও। তবুও অধিকাংশ লোক এ সম্পর্কে অবগত নয়’’। (সাবা : ৩৬)

তিনি আরো বলেন:

«وَلاَ تَقْتُلُوْا أَوْلاَدَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلاَقٍ، نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ، إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْأً كَبِيْرًا»

‘‘তোমরা নিজ সন্তানদেরকে দরিদ্রতার ভয়ে হত্যা করোনা। একমাত্র আমিই ওদেরকে এবং তোমাদেরকে রিযিক দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই ওদেরকে হত্যা করা মহাপাপ’’। (ইস্রা’/বানী ইস্রাঈল : ৩১)

আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী (সা.) ইরশাদ করেন:

يَا عِبَادِيْ! كُلُّكُمْ جَائِعٌ إِلاَّ مَنْ أَطْعَمْتُهُ فَاسْتَطْعِمُوْنِيْ أُطْعِمْكُمْ، يَا عِبَادِيْ! كُلُّكُمْ عَارٍ إِلاَّ مَنْ كَسَوْتُهُ فَاسْتَكْسُوْنِيْ أَكْسُكُمْ

‘‘(আল্লাহ্ তা’আলা নিজ বান্দাহদেরকে বলেন) হে আমার বান্দাহ্রা! তোমরা সবাই ক্ষুধার্ত। শুধু সেই আহারকারী যাকে আমি আহার দেবো। অতএব তোমরা আমার নিকট আহার চাও। আমি তোমাদেরকে আহার দেবো। হে আমার বান্দাহ্রা! তোমরা সবাই বিবস্ত্র। শুধু সেই আবৃত যাকে আমি আবরণ দেবো। অতএব তোমরা আমার নিকট আবরণ চাও। আমি তোমাদেরকে আবরণ দেবো’’। (মুসলিম, হাদীস ২৫৭৭)

যতই দান করা হোক তাতে আল্লাহ্ তা’আলার ধন ভান্ডার এতটুকুও খালি হবে না। এর বিপরীতে মানুষ যতই দান করবে ততই তার ধন ভান্ডার খালি হতে থাকবে।

আবু হুরাইরাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী (সা.) ইরশাদ করেন:

قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: أَنْفِقْ أُنْفِقْ عَلَيْكَ، وَقَالَ: يَدُ اللهِ مَلْأَى لاَ تَغِيْضُـهَا نَفَقَةٌ، سَحَّاءُ اللَّيْلَ وَالنَّهَارَ، وَقَالَ: أَرَأَيْتُمْ مَا أَنْفَقَ مُنْذُ خَلَقَ السَّمَاءَ وَالْأَرْضَ، فَإِنَّهُ لَـمْ يَغِضْ مَا فِيْ يَدِهِ

‘‘আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ (হে বান্দাহ্!) তুমি অন্যের উপর ব্যয় করো। আমি তোমার উপর ব্যয় করবো। রাসূল (সা.) বলেন: আল্লাহ্’র হাত সর্বদা ভর্তি। প্রচুর ব্যয়েও তা খালি হয়ে যায়না। তিনি রাত ও দিন সকলকে দিচ্ছেন আর দিচ্ছেন। তাঁর দানে কোন বিরতি নেই। রাসূল (সা.) আরো বলেন: তোমরা কি দেখছোনা যে, আল্লাহ্ তা’আলা আকাশ ও জমিন সৃষ্টির শুরু থেকে আজ পর্যন্ত শুধু দিচ্ছেন আর দিচ্ছেন। কিন্তু তাঁর হাতে যা রয়েছে তা কখনোই শেষ হচ্ছে না’’। (বুখারী, হাদীস ৪৬৮৪, ৭৪১১ মুসলিম, হাদীস ৯৯৩)

আল্লাহ্’র রাসূল বা অন্য কোন পীর-বুযুর্গ কাউকে ধনী বা গরীব করতে পারেন না।

আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর রাসূলকে উদ্দেশ্য করে বলেন:

« قُلْ لاَ أَقُوْلُ لَكُمْ عِنْدِيْ خَزَآئِنُ اللهِ، وَلاَ أَعْلَمُ الْغَيْبَ»

‘‘(হে নবী!) আপনি ওদেরকে বলে দিনঃ আমি তোমাদেরকে এ কথা বলছিনা যে, আমার নিকট আল্লাহ্’র ধন ভান্ডার রয়েছে। যাকে ইচ্ছা তাকে আমি ধনী বানিয়ে দেবো। আর এমনো বলছিনা যে, আমি গায়েব জানি তথা অদৃশ্য জগতের কোন খবর রাখি’’। (আন’আম : ৫০)