মিথ্যা বলা বৈধ নয়। মিথ্যা বললে কবিরাহ গোনাহ হয়। রাসুল (সঃ) বলেছেন, “নিশ্চয় সত্যবাদিতা পুণ্যের পথ দেখায়। আর পুণ্য জান্নাতের দিকে পথ নির্দেশনা করে। আর মানুষ সত্য কথা বলতে থাকে, সেস পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে “ মহাসত্যবাদী” রূপে লিপিবদ্ধ করা হয়। আর নিরসন্দেহে মিথ্যাবাদিতা নির্লজ্জতা ও পাপাচার এর দিকে নিয়ে যায়। আর পাপাচার জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা বলতে থাকে, সেস পর্যন্ত আল্লাহর নিকট তাকে ‘মহামিথ্যাবাদি” রুপে লিপিবদ্ধ করা হয়। (বুখারি ও মুসলিম)
উপহাস ছলেও মিথ্যা বলা বৈধ নয়। আল্লাহর রাসুল (সঃ) বলেছেন, “আমি সেই ব্যক্তির জন্য একটু জান্নাতের পার্শ্বদেশ , একটু জান্নাতের মধ্যভাগ এবং অপর আর একটি জান্নাতের উপরিভাগে গৃহের জমিন হচ্ছি, যে ব্যক্তি সত্যাশ্রয়ী হওয়া সত্ত্বেও তর্ক পরিহার করে, উপহাসছলে হলেও মিথ্যা কথা বর্জন করে, আর নিজ চরিত্রকে সুন্দর করে।” (বাযযার, ত্বাবারানী, সহিহ তারগিব ১৩৪ নং )
কাউকে হাসাবার উদেশ্যেও কৌতুক করে মিথ্যা বলা বৈধ নয়। মহানবী (সঃ) বলেছেন, “সর্বনাশ সেই ব্যক্তির, যে লোককে হাসাবার উদেশ্যে মিথ্যা বলে। তাঁর জন্য সর্বনাশ, তাঁর জন্য সর্বনাশ।” (সহিহুল জ’মে ৭০১৩ নং)
শিশুদের ভোলাবার জন্য মিথ্যা বলা বৈধ নয়।
আব্দুল্লাহ বিন আমের (রঃ) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সঃ) একদা আমাদের বাড়িতে এলেন, আমি তখন শিশু ছিলাম। এমতবস্থায় আমি খেলার জন্য বাড়ির বাইরে বের হতে যাচ্ছিলাম। তা দেখে আমার মা আমার উদ্দেশ্যে বললেন, ‘আব্দুল্লাহ (বাইরে যেও না , আমার নিকট) এস, তোমাকে একটি মজা দেব।’ এ কথা শুনে নবী (সঃ) বললেন, ‘তুমি ওকে কি দেবে ইচ্ছা করেছ?’ মা বললেন, ‘খেজুর’। তখন রাসুল (সঃ) বললেন, ‘জেনে রাখ, যদি তুমি ওকে কিছু না দাও, তাহলে তোমার ওপর একটি মিথ্যা লেখা হবে।’ (আবু দাউদ ৪৯৯১, সিলসিলাহ সহিহাহ ৭৪৮ নং)
তবে তিন ক্ষেত্রে প্রয়জনে মিথ্যা বলা বৈধ। উম্মে কুলসুম বিনতে উকবাহ (রঃ ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সঃ) কে বলতে শুনেছি, “ওই ব্যক্তি মিথ্যাবাদী নয়, যে মানুষের মধ্যে সৎভাব স্থাপনের জন্য (বানিয়ে) ভাল কথা পৌঁছে দেয় অথবা ভাল কথা বলে।” (বুখারি ও মুসলিম)
মুসলিমের এক বর্ণনায় বর্ধিত আকারে আছে, উম্মে কুলসুম (রঃ) বলেন, “আমি নবী (সঃ) কে কেবল মাত্র তিন অবস্থায় মিথ্যা বলার অনুমতি দিতে শুনেছিঃ যুদ্ধের ব্যাপারে, লোকের মধ্যে আপোষ মীমাংসা করার সময় এবং স্বামী স্ত্রী পরস্পরের (প্রেম) আলাপ আলোচনায়।’