যখন আসমান ফেটে যাবে। আল-বায়ান
যখন আসমান ফেটে যাবে, তাইসিরুল
যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে, মুজিবুর রহমান
When the sky has split [open] Sahih International
১. যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে(১),
(১) আর সেটা হবে কিয়ামতের দিন। [ইবন কাসীর]
তাফসীরে জাকারিয়া১। যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে। [1]
[1] অর্থাৎ, যখন কিয়ামত সংঘটিত হবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর তার রবের নির্দেশ পালন করবে এবং এটাই তার করণীয়। আল-বায়ান
এবং স্বীয় রব-এর নির্দেশ পালন করবে, আর তাই তার করণীয়। তাইসিরুল
এবং ওটা স্বীয় রবের আদেশ পালন করবে, আর ওকে তদুপযোগী করা হবে, মুজিবুর রহমান
And has responded to its Lord and was obligated [to do so] Sahih International
২. আর তার রবের আদেশ পালন করবে এবং এটাই তার করণীয়।(১)
(১) এখানে কেয়ামতের দিন আকাশ ও পৃথিবীর উপর আল্লাহ্ তা'আলার কর্তৃত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, (وَأَذِنَتْ لِرَبِّهَا وَحُقَّتْ) এর মধ্যে أَذِنَتْ অর্থ শুনেছে তথা আদেশ পালন করেছে। সে হিসেবে (وَأَذِنَتْ لِرَبِّهَا) এর শাব্দিক অর্থ হয়, “সে নিজের রবের হুকুম শুনবে।” এর মানে শুধুমাত্র হুকুম শুনা নয় বরং এর মানে সে হুকুম শুনে একজন অনুগতের ন্যায় নির্দেশ পালন করেছে এবং একটুও অবাধ্যতা প্রকাশ করেনি। [সা’দী] আর حُقَّتْ এর অর্থ “আদেশ পালন করাই তার ওয়াজিব কর্তব্য ছিল”। কারণ সে একজন মহান বাদশার কর্তৃত্বাধীন ও পরিচালনাধীন। যাদের নির্দেশ অমান্য করা যায় না, আর তার হুকুমের বিপরীত করা যায় না। [ইবন কাসীর; সা’দী]
তাফসীরে জাকারিয়া২। এবং তা স্বীয় প্রতিপালকের আদেশে কর্ণপাত করবে।[1] আর এটিই তার কর্তব্য। [2]
[1] অর্থাৎ, আল্লাহ তাকে ফেটে যাওয়ার যে আদেশ করবেন, তা সে শুনবে ও পালন করবে।
[2] অর্থাৎ, তার জন্য এটা কর্তব্য যে, সে শ্রবণ করে এবং আনুগত্য করে। এই জন্য যে, তিনি হলেন সবারই উপর প্রভাবশালী এবং সবাই তাঁর আয়ত্তে। কে আছে, যে তাঁর হুকুম অমান্য করতে পারে?
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর যখন যমীনকে সম্প্রসারিত করা হবে। আল-বায়ান
এবং যমীনকে যখন প্রসারিত করা হবে, তাইসিরুল
এবং পৃথিবীকে যখন সম্প্রসারিত করা হবে, মুজিবুর রহমান
And when the earth has been extended Sahih International
৩. আর যখন যমীনকে সম্প্রসারিত করা হবে।(১)
(১) مُدَّتْ এর অর্থ টেনে লম্বা করা, ছড়িয়ে দেয়া। [ইবন কাসীর] পৃথিবীকে ছড়িয়ে দেবার মানে হচ্ছে, সাগর নদী ও সমস্ত জলাশয় ভরে দেয়া হবে। পাহাড়গুলো চুৰ্ণবিচূর্ণ করে চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়া হবে। পৃথিবীর সমস্ত উঁচু নীচু জায়গা সমান করে সমগ্ৰ পৃথিবীটাকে একটি সমতল প্রান্তরে পরিণত করা হবে। কুরআনের অন্যত্র এই অবস্থাটিকে নিম্নোক্তভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, মহান আল্লাহ “তাকে একটা সমতল প্রান্তরে পরিণত করে দেবেন। সেখানে তোমরা কোন উচু জায়গা ও ভাঁজ দেখতে পাবে। না।” [সূরা ত্ব-হা: ১০৬–১০৭] হাদীসে এসেছে, ‘কেয়ামতের দিন পৃথিবীকে চামড়ার ন্যায় টেনে সম্প্রসারিত করা হবে। তারপর মানুষের জন্য সেখানে কেবলমাত্র পা রাখার জায়গাই থাকবে।” [মুস্তাদরাকে হাকিম: ৪/৫৭১]
একথাটি ভালোভাবে বুঝে নেয়ার জন্য এ বিষয়টিও সামনে রাখতে হবে যে, সেদিন সৃষ্টির প্রথম দিন থেকে নিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষের জন্ম হয়েছে ও হবে সবাইকে একই সংগে জীবিত করে আল্লাহর আদালতে পেশ করা হবে। এ বিরাট জনগোষ্ঠীকে এক জায়গায় দাঁড় করাবার জন্য সমস্ত সাগর, নদী, জলাশয়, পাহাড়, পর্বত, উপত্যকা, মালভূমি, তথা উঁচু-নীচু সব জায়গা ভেঙ্গে-চুরে ভরাট করে সারা দুনিয়াটাকে একটি বিস্তীর্ণ প্রান্তরে পরিণত করা হবে। [দেখুন: ফাতহুল কাদীর; সা’দী]
তাফসীরে জাকারিয়া৩। এবং পৃথিবীকে যখন সম্প্রসারিত করা হবে। [1]
[1] অর্থাৎ, পৃথিবীকে অধিকভাবে লম্বা-চওড়া করে দেওয়া হবে। অথবা উদ্দেশ্য এটা যে, তার উপরে যে পাহাড় ইত্যাদি রয়েছে সমস্তকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করে তাকে পরিষ্কার-পরিছন্ন এবং সমতল করে বিছিয়ে দেওয়া হবে। তাতে কোন রকমের উঁচু-নিচু থাকবে না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর তার মধ্যে যা রয়েছে তা নিক্ষেপ করবে এবং খালি হয়ে যাবে। আল-বায়ান
আর তা তার ভেতরে যা আছে তা বাইরে নিক্ষেপ করবে ও খালি হয়ে যাবে। তাইসিরুল
এবং পৃথিবী তার অভ্যন্তরে যা আছে তা বাইরে নিক্ষেপ করবে ও শূন্য গর্ভ হয়ে যাবে, মুজিবুর রহমান
And has cast out that within it and relinquished [it] Sahih International
৪. আর যমীন তার অভ্যন্তরে যা আছে তা বাইরে নিক্ষেপ করবে ও শূন্যগর্ভ হবে।(১)
(১) অর্থাৎ পৃথিবী তার গর্ভস্থত সবকিছু উদগিরণ করে একেবারে শূন্যগর্ভ হয়ে যাবে। পৃথিবীর গর্ভে গুপ্ত ধন-ভাণ্ডার, খনি এবং সৃষ্টির আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত মৃত মানুষের দেহকণা ইত্যাদি রয়েছে। যমীন এসব বস্তু আপন গৰ্ভ থেকে বাইরে নিক্ষেপ করবে। অনুরূপভাবে যত মৃত মানুষ তার মধ্যে রয়েছে সবাইকে ঠেলে বাইরে বের করে দেবে। [ফাতহুল কাদীর; সা’দী]
তাফসীরে জাকারিয়া৪। এবং পৃথিবী তার অভ্যন্তরে যা আছে তা বাইরে নিক্ষেপ করবে এবং খালি হয়ে যাবে। [1]
[1] অর্থাৎ, তাতে যেসব মুর্দা দাফন থাকবে, সমস্ত জীবিত হয়ে বের হয়ে আসবে। আর যেসব গুপ্ত ধন (খনিজ পদার্থ) তার গর্ভে মজুদ রয়েছে, তা বের করে ফেলবে। আর সে একেবারে খালি হয়ে যাবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর তার রবের নির্দেশ পালন করবে এবং এটাই তার করণীয়। আল-বায়ান
এবং স্বীয় রব-এর নির্দেশ পালন করবে আর তাই তার করণীয়। তাইসিরুল
এবং তার রবের আদেশ পালন করবে, আর ওকে তদুপযোগী করা হবে (তখন তোমরা পুনরুত্থিত হবেই)। মুজিবুর রহমান
And has responded to its Lord and was obligated [to do so] - Sahih International
৫. এবং তার রবের আদেশ পালন করবে এটাই তার করণীয়।(১)
(১) যখন এসব ঘটনাবলী ঘটবে তখন কি হবে, একথা পরিষ্কার করে বলা হয়নি। কারণ এ পরবর্তী বক্তব্যগুলো নিজে নিজেই তা প্ৰকাশ করে দিচ্ছে। এ বক্তব্যগুলোতে বলা হচ্ছেঃ হে মানুষ! তুমি তোমার রবের দিকে এগিয়ে চলছে। শীঘ্র তাঁর সামনে হাযির হয়ে যাবে। তখন তোমার আমলনামা তোমার হাতে দেয়া হবে। আর তোমার আমলনামা অনুযায়ী তোমাকে পুরস্কার দেয়া হবে। [কুরতুবী] সুতরাং উপরোক্ত ঘটনাবলী ঘটলে কি হবে তা সহজেই বুঝা যায় যে, মানুষ তখন পুনরুত্থিত হবে। তখন পুনরুত্থানের ব্যাপারে কেউ সন্দেহ পোষণ করবে না। কারণ বাস্তবতা যখন এসে যাবে তখন সন্দেহ করার আর সুযোগ কোথায়?
তাফসীরে জাকারিয়া৫। এবং তার প্রতিপালকের আদেশে কর্ণপাত করবে।[1] আর এটিই তার কর্তব্য।
[1] অর্থাৎ, তাকে বের করে এবং খালি করে দেওয়ার যে আদেশ করা হবে, তা সে শ্রবণ ও পালন করবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানহে মানুষ, তোমার রব পর্যন্ত (পৌঁছতে) অবশ্যই তোমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। অতঃপর তুমি তাঁর সাক্ষাৎ পাবে। আল-বায়ান
হে মানুষ! তোমাকে তোমার রব পর্যন্ত পৌঁছতে বহু কষ্ট স্বীকার করতে হবে, অতঃপর তুমি তার সাক্ষাৎ লাভ করবে। তাইসিরুল
হে মানবসকল! তোমরা কঠোর পরিশ্রম করতে থাক, তোমাদের আমাল অনুযায়ী তোমাদের রবের সাক্ষাত লাভ করবে, আর এটাতো অবশ্যম্ভাবি। মুজিবুর রহমান
O mankind, indeed you are laboring toward your Lord with [great] exertion and will meet it. Sahih International
৬. হে মানুষ! তুমি তোমার রবের কাছে পৌছা পর্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করতে হবে, অতঃপর তুমি তাঁর সাক্ষাত লাভ করবে।(১)
(১) كدح এর অর্থ কোন কাজে পূর্ণ চেষ্টা ও শক্তি ব্যয় করা। [ফাতহুল কাদীর] মানুষের প্রত্যেক চেষ্টা ও অধ্যবসায় আল্লাহর দিকে চূড়ান্ত হবে। অর্থাৎ মানুষ দুনিয়ায় যা কিছু কষ্ট-সাধনা প্ৰচেষ্টা ও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে সে সম্পর্কে সে মনে করতে পারে যে তা কেবল দুনিয়ার জীবন পর্যন্তই সীমাবদ্ধ এবং দুনিয়াবী স্বাৰ্থ লাভ করাই এর উদ্দেশ্য। কিন্তু আসলে সে সচেতন বা অচেতনভাবে নিজের রবের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং অবশেষে তাকে তার কাছেই পৌছতে হবে। মানুষ এখানে যে চেষ্টা-চরিত্র করছে, পরিশেষে তার পালনকর্তার কাছে পৌছে এর সাথে তার সাক্ষাৎ ঘটবে এবং এর শুভ অথবা অশুভ পরিণতি সামনে এসে যাবে। অথবা এর অর্থ প্রত্যেক মানুষ আখেরাতে তার পালনকর্তার সাথে সাক্ষাৎ করবে এবং হিসাবের জন্যে তার সামনে উপস্থিত হবে। [দেখুন: কুরতুবী]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাত করতে চায়, আল্লাহও তার সাক্ষাত করতে পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাত করতে চায় না, আল্লাহও তার সাথে সাক্ষাত করতে অপছন্দ করেন।” আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা (অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অন্য কোন স্ত্রী) বলেন, “আমরা তো মৃত্যুকে অপছন্দ করি।” রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “তা নয়। কিন্তু মুমিন ব্যক্তির যখন মৃত্যু ঘণিয়ে আসে, তখন তাকে আল্লাহ তা'আলার সস্তুষ্টি ও সম্মানের সুসংবাদ দেওয়া হয়। তখন তার কাছে মৃত্যু অপেক্ষা অন্য কিছু প্রিয় হতে পারে না। এভাবে সে আল্লাহর সাক্ষাত করতে পছন্দ করে, তাই আল্লাহ্ তা'আলাও তার সাথে সাক্ষাত করতে পছন্দ করেন। আর কাফির ব্যক্তিকে মৃত্যুর সময় আল্লাহর আযাব ও শাস্তির সংবাদ দেওয়া হয়, তখন মৃত্যু অপেক্ষা অপ্রিয় আর কিছু থাকে না। সে আল্লাহর সাক্ষাত অপছন্দ করে বিধায় আল্লাহ্ তা'আলা তার সাথে সাক্ষাত অপছন্দ করেন”। [বুখারী: ৬৫০৭, মুসলিম: ২৬৮৩]
তাফসীরে জাকারিয়া৬। হে মানব! তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট পৌঁছানো পর্যন্ত যে কঠোর সাধনা করে থাকো তা তুমি দেখতে পাবে।[1]
[1] এখানে ‘মানব’ শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহূত হয়েছে। যাতে মু’মিন এবং কাফের উভয় শামিল। كدح কঠোর সাধনা বা পরিশ্রম করাকে বলা হয়; চাহে সে সাধনা বা পরিশ্রম ভালো কাজের জন্য হোক অথবা মন্দ কাজের জন্য। উদ্দেশ্য হল যে, যখন উল্লিখিত বস্তুসমূহ প্রকাশ পাবে; অর্থাৎ কিয়ামত আসবে তখন হে মানুষ! তুমি ভাল-মন্দ যা করেছ তা নিজ সম্মুখে দেখতে পাবে এবং সেই অনুযায়ী তোমাকে ভাল-মন্দ বদলা দেওয়া হবে। সামনে এর বিস্তারিত বর্ণনা আসছে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅতঃপর যাকে তার আমলনামা তার ডান হাতে দেয়া হবে; আল-বায়ান
অতঃপর যার ‘আমালনামা তার ডান হাতে দেয়া হবে। তাইসিরুল
অতঃপর যাকে ডান হাতে তার কর্মলিপি প্রদত্ত হবে – মুজিবুর রহমান
Then as for he who is given his record in his right hand, Sahih International
৭. অতঃপর যাকে তার আমলনামা তার ডান হাতে দেয়া হবে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া৭। সুতরাং যাকে তার ডান হাতে নিজ আমলনামা (কর্মলিপি) দেওয়া হবে,
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ানঅত্যন্ত সহজভাবেই তার হিসাব-নিকাশ করা হবে। আল-বায়ান
তার হিসাব সহজভাবেই নেয়া হবে। তাইসিরুল
তার হিসাব-নিকাশতো সহজভাবে গৃহীত হবে, মুজিবুর রহমান
He will be judged with an easy account Sahih International
৮. তার হিসেব-নিকেশ সহজেই নেয়া হবে।(১)
(১) এতে মুমিনদের অবস্থা বর্ণনা করা হয়েছে যে, তাদের আমলনামা ডান হাতে আসবে। এবং তাদের সহজ হিসাব নিয়ে জান্নাতের সুসংবাদ দান করা হবে। তারা তাদের পরিবার-পরিজনের কাছে হৃষ্টচিত্তে ফিরে যাবে। তার হিসেব নেয়ার ব্যাপারে কড়াকড়ি করা হবে না। তাকে জিজ্ঞেস করা হবে না, ওমুক ওমুক কাজ তুমি কেন করেছিলে? ঐসব কাজ করার ব্যাপারে তোমার কাছে কি কি ওযর আছে? নেকীর সাথে সাথে গোনাহও তার আমলনামায় অবশ্যি লেখা থাকবে। কিন্তু গোনাহের তুলনায় নেকীর পরিমাণ বেশী হবার কারণে তার অপরাধগুলো উপেক্ষা করা হবে এবং সেগুলো মাফ করে দেয়া হবে। কুরআন মজিদে অসৎকর্মশীল লোকদের কঠিন হিসেবা-নিকেশের জন্য “সু-উল হিসাব” (খারাপভাবে হিসেব নেয়া) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। [সূরা আর-রা'দ ১৮]
সৎ লোকদের সম্পর্কে বলা হয়েছেঃ “এরা এমন লোক যাদের সৎকাজগুলো আমি গ্ৰহণ করে নেবো এবং অসৎকাজগুলো মাফ করে দেবো।” [সূরা আল-আহকাফঃ ১৬] আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, কেয়ামতের দিন যার হিসাব নেয়া হবে, সে আযাব থেকে রক্ষা পাবে না। এ কথা শুনে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা প্রশ্ন করলেন, কুরআনে কি (فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا) বলা হয়নি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এই আয়াতে যাকে সহজ হিসাব বলা হয়েছে, সেটা প্রকৃতপক্ষে পরিপূর্ণ হিসাব নয়; বরং কেবল আল্লাহ রাব্বুল আলমীনের সামনে পেশ করা। যে ব্যক্তির কাছ থেকে তার কাজকর্মের পুরোপুরি হিসাব নেয়া হবে, সে আযাব থেকে কিছুতেই রক্ষা পাবে না। [বুখারী: ৪৯৩৯, মুসলিম: ২৮৭৬l
তাফসীরে জাকারিয়া৮। তার হিসাব নেওয়া হবে সহজভাবে। [1]
[1] সহজ হিসাব এই যে, মুমিনের আমল-নামা পেশ করা হবে। তার ভুল-ত্রুটিও সামনে উপস্থিত করা হবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা নিজের রহমত এবং অনুগ্রহে তাদেরকে মার্জনা করে দেবেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন যে, রসূল (সাঃ) বলেছেন, ‘‘যার হিসাব নেওয়া হবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ আমাকে আপনার জন্য কুরবান করুন, আল্লাহ তাআলা কি এ কথা বলেননি যে, যার ডান হাতে আমল-নামা দেওয়া হবে তার হিসাব সহজ হবে?’’ (মা আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহার উদ্দেশ্য ছিল যে, এই আয়াত অনুপাতে হিসাব তো মু’মিনদেরও হবে কিন্তু সে ধ্বংসগ্রস্ত হবে না।) তিনি (সাঃ) স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে বললেন যে, ‘‘পেশ করা হবে মাত্র।’’ (অর্থাৎ, মুমিনের সাথে হিসাবের ব্যাপার হবে না বরং নামমাত্র পেশ করা হবে।) মু’মিনদেরকে আল্লাহর সম্মুখে পেশ করা হবে। কিন্তু যাকে জেরা করা হবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। (সহীহ বুখারী, তাফসীর সূরা ইনশিক্বাক পরিচ্ছেদ)
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর সে তার পরিবার-পরিজনের কাছে আনন্দিত হয়ে ফিরে যাবে। আল-বায়ান
সে তার স্বজনদের কাছে সানন্দে ফিরে যাবে। তাইসিরুল
এবং সে তার স্বজনদের নিকট প্রফুল্ল চিত্তে ফিরে যাবে। মুজিবুর রহমান
And return to his people in happiness. Sahih International
৯. এবং সে তার স্বজনদের কাছে(১) প্ৰফুল্লচিত্তে ফিরে যাবে;
(১) কোনো কোনো মুফাস্সির বলেন, নিজের লোকজন বলতে পরিবার-পরিজন, আত্মীয়স্বজন ও সাথী-সহযোগীদের কথা বুঝানো হয়েছে। তাদেরকেও একইভাবে মাফ করে দেয়া হয়ে থাকবে। কাতাদাহ বলেন, এখানে পরিবার বলে জান্নাতে তার যে পরিবার থাকবে তাদের বোঝানো হয়েছে। [কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর]
তাফসীরে জাকারিয়া৯। এবং সে তার স্বজনদের নিকট প্রফুল্লচিত্তে ফিরে যাবে।[1]
[1] স্বজন বলতে তার পরিবারের মধ্যে থেকে যারা জান্নাতী হবে তারা অথবা এ হতে উদ্দেশ্য হল, সেই সমস্ত বেহেশ্তী হুর ও গিলমান, যা জান্নাতীগণ লাভ করবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ানআর যাকে তার আমলনামা পিঠের পেছনে দেয়া হবে, আল-বায়ান
আর যাকে তার ‘আমালনামা তার পিঠের পিছন দিক থেকে দেয়া হবে, তাইসিরুল
এবং যাকে তার কর্মলিপি তার পৃষ্ঠের পশ্চাদ্ভাগে দেয়া হবে – মুজিবুর রহমান
But as for he who is given his record behind his back, Sahih International
১০. আর যাকে তার আমলনামা তার পিঠের পিছনদিক থেকে দেয়া হবে,
-
তাফসীরে জাকারিয়া১০। পক্ষান্তরে যাকে তার আমলনামা তার পিঠের পিছন দিক থেকে দেওয়া হবে,
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান