৩৭ : ১
وَ الصّٰٓفّٰتِ صَفًّا ۙ﴿۱﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১. শপথ তাদের যারা সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান।(১)
(১) কাতাদাহ বলেন, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর সৃষ্টির শপথ করেছেন, তারপর আরেক সৃষ্টির শপথ করেছেন, তারপর অপর সৃষ্টির শপথ করেছেন। এখানে কাতারবন্দী দ্বারা ফেরেশতাদেরকে বুঝানো হয়েছে। যারা আকাশে কাতারবন্দী হয়ে আছেন। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(১) তাদের শপথ যারা (যে ফিরিশতারা) সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৩৭ : ২
فَالزّٰجِرٰتِ زَجۡرًا ۙ﴿۲﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
২. অতঃপর যারা কঠোর পরিচালক(১)
(১) মুজাহিদ বলেন, এখানে কঠোর পরিচালক বলে ফেরেশতাদেরকে বুঝানো হয়েছে। [তাবারী] পক্ষান্তরে কাতাদাহ বলেন, এর দ্বারা কুরআনে যে সমস্ত জিনিসের ব্যাপারে আল্লাহ সতর্ক করেছেন তাই বুঝানো হয়েছে। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(২) ও যারা সজোরে ধমক দিয়ে থাকে,
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৩৭ : ৩
فَالتّٰلِیٰتِ ذِكۡرًا ۙ﴿۳﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৩. আর যারা যিকর আবৃত্তিতে রত-(১)
(১) মুজাহিদ বলেন, এখানে তেলাওয়াতে রত বলে ফেরেশতাদেরকে বোঝানো হয়েছে। আর কাতাদাহ বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য, কুরআন থেকে মানুষের ঘটনাবলী ও পূর্ববর্তী উম্মতদের কাহিনী যা তোমাদের উপর তেলাওয়াত করে শোনানো হয়। [তাবারী] আল্লামা শানকীতী বলেন, এখানে কাতারবন্দী, কঠোর পরিচালক ও তেলাওয়াতকারী বলে ফেরেশতাদের কয়েকটি দলকে বুঝানো হয়েছে। কারণ, এ সূরারই অন্যত্র কাতারবন্দী থাকা ফেরেশতাদের গুণ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। বলা হয়েছে, “আর আমরা তো সারিবদ্ধভাবে দণ্ডায়মান এবং আমরা অবশ্যই তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণাকারী। [১৬৫–১৬৬]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩) এবং যারা কুরআন আবৃত্তিতে রত--
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৩৭ : ৪
اِنَّ اِلٰـهَكُمۡ لَوَاحِدٌ ﴿ؕ۴﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৪. নিশ্চয় তোমাদের ইলাহ এক,
-
তাফসীরে জাকারিয়া(৪) নিশ্চয়ই তোমাদের উপাস্য এক। [1]
[1] صآفَّات , زاجرات , تاليات - এসব ফিরিশতাগণের গুণ। আকাশে আল্লাহর ইবাদতের জন্য সারিবদ্ধ অথবা আল্লাহর আদেশের অপেক্ষায় সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান, ওয়ায-নসীহতের মাধ্যমে মানুষকে ডাঁট-ধমককারী অথবা মেঘমালাকে আল্লাহর আদেশক্রমে হাঁকিয়ে নিয়ে যায় এমন ফিরিশতা এবং আল্লাহর যিকর ও কুরআন তেলাঅতকারী; এই সকল ফিরিশতাগণের শপথ করে আল্লাহ তাআলা বর্ণনা করলেন যে, সকল মানুষের উপাস্য এক, একাধিক নয়; যেমন মুশরিকরা বানিয়ে রেখেছে। সাধারণতঃ তাকীদের জন্য এবং সন্দেহ দূরীভূত করার জন্য কথায় শপথ করা হয়। এখানে আল্লাহ তাআলা তাঁর একত্ব ও উপাস্য হওয়ার বিষয়ে মুশরিকদের যে সন্দেহ ছিল তা দূরীভূত করার জন্য শপথ করেছেন। এ ছাড়া সকল বস্তুই আল্লাহর সৃষ্টি ও মালিকানাধীন, ফলে যে কোন বস্তুকে সাক্ষী বানিয়ে তার শপথ করা (বা কসম খাওয়া) তাঁর জন্য বৈধ। কিন্তু মানুষের জন্য আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও শপথ করা একেবারে অবৈধ ও হারাম। কারণ শপথে, যার শপথ করা হয় তাকে সাক্ষী রাখার উদ্দেশ্য থাকে। আর গায়বী বিষয়ে আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেউ সাক্ষী হতে পারে না। কারণ একমাত্র ‘আলেমুল গায়েব’ তিনিই, তিনি ব্যতীত গায়বের খবর অন্য কেউ জানে না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৩৭ : ৫
رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ مَا بَیۡنَهُمَا وَ رَبُّ الۡمَشَارِقِ ؕ﴿۵﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৫. যিনি আসমানসমূহ, যমীন ও তাদের অন্তর্বর্তী সবকিছুর রব এবং রব সকল উদয়স্থলের।(১)
(১) সুদ্দী বলেন, এর বহু বচনের কারণ হচ্ছে, শীত কাল এবং গ্ৰীষ্ম কালে সূর্য উদিত হওয়ার স্থানের ভিন্নতা। তিনি আরও বলেন, সারা বছরে সূর্যের ৩৬০টি উদিত হওয়ার স্থান রয়েছে, অনুরূপভাবে সূর্যস্ত যাওয়ারও অনুরূপ স্থান রয়েছে। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫) যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী এবং ওদের অন্তর্বর্তী সমস্ত কিছুর রক্ষক, রক্ষক পূর্বাচলের।[1]
[1] উদ্দ্যেশ্য হল, উদয়াচল ও অস্তাচলসমূহের প্রতিপালক ও রক্ষক। বহুবচন এই জন্য ব্যবহার করা হয়েছে যেমন অনেকে বলেন যে, বছরের দিনসমূহের সংখ্যা পরিমাণ উদয় ও অস্তস্থল আছে। সূর্য প্রতিদিন এক উদয়স্থল থেকে উদিত হয় এবং এক অস্তস্থলে অস্তমিত হয়। সূরা রাহমানে مشرقين এবং مغربين দ্বিবচন শব্দ ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ দুই উদয়াচল এবং দুই অস্তাচল। তার অর্থ সেই দুই উদয়াচল ও অস্তাচল যেখান থেকে সূর্য গ্রীষ্ম ও শীতকালে উদিত ও অস্তমিত হয়। অর্থাৎ প্রথমটি দূরবর্তী শেষ উদয়াচল ও অস্তাচল এবং দ্বিতীয়টি নিকটবর্তী শুরুর উদয়াচল ও অস্তাচল। আর যেখানে মাশরিক ও মাগরিব একবচন বর্ণনা করা হয়েছে তার অর্থ হল দিক; যেদিক থেকে সূর্য উদিত ও যে দিকে অস্তমিত হয়। (ফাতহুল ক্বাদীর)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৩৭ : ৬
اِنَّا زَیَّنَّا السَّمَآءَ الدُّنۡیَا بِزِیۡنَۃِۣ الۡكَوَاكِبِ ۙ﴿۶﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৬. নিশ্চয় আমরা কাছের আসমানকে নক্ষত্ররাজির সুষমা দ্বারা সুশোভিত করেছি।(১)
(১) এর সমার্থে দেখুন, সূরা ফুসসিলাত: ১২; সূরা আল-হিজর: ১৬; সূরা আল-মুলক: ৫।
তাফসীরে জাকারিয়া(৬) আমি তোমাদের নিকটবর্তী আকাশকে নক্ষত্ররাজি দ্বারা সুশোভিত করেছি,
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৩৭ : ৭
وَ حِفۡظًا مِّنۡ كُلِّ شَیۡطٰنٍ مَّارِدٍ ۚ﴿۷﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৭. এবং রক্ষা করেছি প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান থেকে।(১)
(১) অনুরূপ দেখুন, সূরা আল-হিজর: ১৭–১৮।
তাফসীরে জাকারিয়া(৭) এবং একে প্রত্যেক বিদ্রোহী শয়তান হতে রক্ষা করেছি।[1]
[1] অর্থাৎ, পৃথিবীর নিকটতম আকাশে, সৌন্দর্য ছাড়াও তারকারাজি সৃষ্টির আরও একটি উদ্দেশ্য এই যে, বিদ্রোহী শয়তানদল থেকে তার হিফাযত। শয়তান আকাশে (অহীর) কোন কথাবার্তা শোনার জন্য উপস্থিত হয়, তখন তাদের উপর তারকা (উল্কা) নিক্ষেপ করা হয়, যাতে অধিকাংশ সময়ে অনেক শয়তান পুড়ে যায়। যেমন এ কথা পরবর্তী আয়াতে এবং হাদীসে পরিষ্কারভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তারকারাজি সৃষ্টির তৃতীয় উদ্দেশ্য রাত্রের অন্ধকারে পথ প্রদর্শনও; যেমন কুরআনের অন্য স্থানে বর্ণনা করা হয়েছে। উক্ত তিন প্রকার উদ্দেশ্য ছাড়া তারকারাজির অন্য আর কোন উদ্দেশ্য বর্ণনা করা হয়নি।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৩৭ : ৮
لَا یَسَّمَّعُوۡنَ اِلَی الۡمَلَاِ الۡاَعۡلٰی وَ یُقۡذَفُوۡنَ مِنۡ كُلِّ جَانِبٍ ٭ۖ﴿۸﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৮. ফলে ওরা ঊর্ধ্ব জগতের কিছু শুনতে পারে না।(১) আর তাদের প্রতি নিক্ষিপ্ত হয় সব দিক থেকে—
(১) কাতাদাহ বলেন, (الْمَلَإِ الْأَعْلَىٰ) বলে ফেরেশতাদের ঐ দলটিকে বোঝানো হয়েছে, যারা তাদের নীচে যারা আছে তাদের উপরে অবস্থান করছে। সেখান থেকে কোন কিছু শোনা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(৮) ফলে, শয়তানরা ঊর্ধ্ব জগতের কিছু শ্রবণ করতে পারে না। ওদের ওপর সকল দিক হতে (উল্কা) নিক্ষিপ্ত হয়;
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৩৭ : ৯
دُحُوۡرًا وَّ لَهُمۡ عَذَابٌ وَّاصِبٌ ۙ﴿۹﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
৯. বিতাড়নের জন্য(১) এবং তাদের জন্য আছে অবিরাম শাস্তি।
(১) কি নিক্ষিপ্ত হয়, তা বলা হয়নি। কাতাদাহ বলেন, তাদের উপর অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বা উল্কাপিণ্ড নিক্ষেপ করা হয়। [তাবারী] আর মুজাহিদ বলেন, এখানে دحوراً শব্দটির অন্য অর্থ বিতাড়িত অবস্থায় [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(৯) ওদেরকে বিতাড়নের জন্য। আর ওদের জন্য আছে অবিরাম শাস্তি।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান৩৭ : ১০
اِلَّا مَنۡ خَطِفَ الۡخَطۡفَۃَ فَاَتۡبَعَهٗ شِهَابٌ ثَاقِبٌ ﴿۱۰﴾
-আল-বায়ান
-তাইসিরুল
-মুজিবুর রহমান
-Sahih International
১০. তবে কেউ হঠাৎ কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে।
-
তাফসীরে জাকারিয়া(১০) তবে কেউ গোপনে হঠাৎ কিছু শুনে ফেললে জ্বলন্ত ঊল্কাপিন্ড তার পশ্চাদ্ধাবন করে।
-
তাফসীরে আহসানুল বায়ান