আর এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর শত্রু করেছি মানুষ ও জিনের মধ্য থেকে শয়তানদেরকে, তারা প্রতারণার উদ্দেশ্যে একে অপরকে চাকচিক্যপূর্ণ কথার কুমন্ত্রণা দেয় এবং তোমার রব যদি চাইতেন, তবে তারা তা করত না। সুতরাং তুমি তাদেরকে ও তারা যে মিথ্যা রটায়, তা ত্যাগ কর। আল-বায়ান
এভাবে আমি প্রত্যেক নাবীর জন্য মানুষ আর জ্বীন শয়তানদের মধ্য হতে শত্রু বানিয়ে দিয়েছি, প্রতারণা করার উদ্দেশে তারা একে অপরের কাছে চিত্তাকর্ষক কথাবার্তা বলে। তোমার প্রতিপালক ইচ্ছে করলে তারা তা করত না, কাজেই তাদেরকে আর তাদের মিথ্যে চর্চাকে উপেক্ষা করে চল। তাইসিরুল
আর এমনিভাবেই আমি প্রত্যেক নাবীর জন্য বহু শাইতানকে শত্রুরূপে সৃষ্টি করেছি; তাদের কতক মানুষ শাইতানের মধ্য হতে এবং কতক জিন শাইতানের মধ্য হতে হয়ে থাকে, এরা একে অন্যকে কতকগুলি মনোমুগ্ধকর ধোকাপূর্ণ ও প্রতারণাময় কথা দ্বারা প্ররোচিত করে থাকে। তোমার রবের ইচ্ছা হলে, তারা এমন কাজ করতে পারতনা। সুতরাং তুমি তাদেরকে এবং তাদের মিথ্যা রচনাগুলিকে বর্জন করে চলবে। মুজিবুর রহমান
And thus We have made for every prophet an enemy - devils from mankind and jinn, inspiring to one another decorative speech in delusion. But if your Lord had willed, they would not have done it, so leave them and that which they invent. Sahih International
১১২. আর এভাবেই আমরা মানব ও জিনের মধ্য থেকে শয়তানদেরকে প্রত্যেক নবীর শক্র করেছি(১), প্রতারণার উদ্দেশ্যে তারা একে অপরকে চমকপ্রদ বাক্যের কুমন্ত্রণা দেয়। যদি আপনার রব ইচ্ছে করতেন তবে তারা এসব করত না; কাজেই আপনি তাদেরকে ও তাদের মিথ্যা রটনাকে পরিত্যাগ করুন।
(১) এখানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সান্তনা দেয়া হয়েছে যে, এরা যদি আপনার সাথে শক্রতা করে, তবে তা মোটেই আশ্চর্যের বিষয় নয়। পূর্ববর্তী সমস্ত নবীদেরও অব্যাহতভাবে শক্র ছিল। তারাও নবী-রাসূলগণ যা নিয়ে আসত, তার বিরুদ্ধে লেগে যেত। অতএব, আপনি এতে মনঃক্ষুন্ন হবেন না। [সা'দী]
তাফসীরে জাকারিয়া(১১২) এরূপে আমি শয়তান মানব ও শয়তান জ্বিনকে প্রত্যেক নবীর শত্রু করেছি।[1] তারা প্রতারণার উদ্দেশ্যে তাদের একে অন্যকে চমকপ্রদ বাক্য দ্বারা প্ররোচিত করে থাকে;[2] যদি তোমার প্রতিপালক ইচ্ছা করতেন, তাহলে তারা এ করত না।[3] সুতরাং তুমি তাদেরকে এবং তাদের মিথ্যা রচনাকে পরিত্যাগ কর।
[1] এটা সেই কথাই, যা বিভিন্নভাবে রসূল (সাঃ)-এর সান্ত্বনার জন্য বলা হয়েছে। অর্থাৎ, তোমার পূর্বে যত নবীই এসেছিল, তাদের সকলকে মিথ্যাজ্ঞান করা হয়েছে, তাদেরকে কষ্ট দেওয়া হয়েছে এবং আরো অনেক কিছু তাদের সাথে করা হয়েছে। বলার উদ্দেশ্য হল, যেভাবে তারা ধৈর্য ও সাহসিকতার সাথে কাজ করেছে, তুমিও ঐভাবে সত্যের এই শত্রুদের বিরুদ্ধে ধৈর্য ও দৃঢ়তা প্রদর্শন কর। এ থেকে এটাও জানা গেল যে, শয়তানের অনুসারী দল জ্বিনদের মধ্য থেকেও আছে এবং মানুষদের মধ্য থেকেও। আর এরা হল উভয় দলের অবাধ্য, সীমালঙ্ঘনকারী এবং দাম্ভিক প্রকৃতির লোকেরা।
[2] وَحْيٌ গোপন কথাকে বলে। অর্থাৎ, মানুষ ও জ্বিনদের ভ্রষ্ট করার জন্য একে অপরকে ছল-চাতুরী ও চালাকি শিখায়। যাতে তারা মানুষদেরকে ধোঁকা ও প্রতারণায় ফেলতে পারে। আর সাধারণতঃ এটা দেখাও যায় যে, শয়তানী কর্মসমূহে মানুষ একে অপরকে অতি উৎসাহের সাথে সহযোগিতা করে, যার কারণে অন্যায়ের প্রসার খুব তাড়াতাড়ি ঘটে।
[3] অর্থাৎ, মহান আল্লাহ শয়তানের এই সমস্ত ষড়যন্ত্রকে নিষ্ফল করতে সক্ষম, কিন্তু তিনি জোরপূর্বক এ রকম করবেন না। কেননা, এ রকম করা তাঁর সেই নিয়ম-নীতির বিপরীত, যা তিনি তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী এখতিয়ার করেছেন এবং এর হিকমত ও যৌক্তিকতা তিনিই ভাল জানেন।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান