এরাই তারা, যাদেরকে আল্লাহ হিদায়াত করেছেন। অতএব তাদের হিদায়াত তুমি অনুসরণ কর। বল, ‘আমি তোমাদের কাছে এর উপর কোন বিনিময় চাই না। এটা তো সৃষ্টিকুলের জন্য উপদেশমাত্র। আল-বায়ান
ওরা হল তারা যাদেরকে আল্লাহ হিদায়াত দান করেছিলেন, তুমি তাদের পথ অনুসরণ কর; বল, এর জন্য (অর্থাৎ বাণী পৌঁছে দেয়ার জন্য) আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না। এটা সারা দুনিয়ার মানুষের জন্য উপদেশ বাণী। তাইসিরুল
এরা হচ্ছে ওরাই, যাদেরকে আল্লাহ সুপথ প্রদর্শন করেছিলেন। সুতরাং তুমি তাদের পথ অনুসরণ করে চল। তুমি বলে দাওঃ আমি কুরআন ও দীনের তাবলীগের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাইনা। এই কুরআন সমগ্র জগতবাসীর জন্য উপদেশের ভান্ডার ছাড়া কিছুই নয়। মুজিবুর রহমান
Those are the ones whom Allah has guided, so from their guidance take an example. Say, "I ask of you for this message no payment. It is not but a reminder for the worlds." Sahih International
৯০. এরাই তারা, যাদেরকে আল্লাহ হিদায়াত করেছেন, কাজেই আপনি তাদের পথের অনুসরণ করুন(১)। বলুন, এর জন্য আমি তোমাদের কাছে পারিশ্রমিক চাই না, এ তো শুধু সৃষ্টিকুলের জন্য উপদেশ।(২)
(১) আলোচ্য আয়াতসমূহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সম্বোধন করে মক্কাবাসীদেরকে শোনানো হয়েছে যে, কোন জাতির পূর্বপুরুষরা শুধু পিতৃপুরুষ হওয়ার কারণেই অনুসরণীয় হতে পারে না যে, তাদের প্রত্যেকটি কথা ও কাজকে অনুসরণযোগ্য মনে করতে হবে। আরবদের সাধারণ ধারণা তাই ছিল। অনুসরণের ক্ষেত্রে প্রথমে দেখতে হবে যে, যার অনুসরণ করা হবে, সে নিজেও বিশুদ্ধ পথে আছে কি না। তাই নবীগণ আলাইহিমুস সালামদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, “এরা এমন লোক, যাদেরকে আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেছেন”। এরপর বলেছেন, “আপনিও তাদের হেদায়াত ও কর্মপন্থা অনুসরণ করুন”। এতে দুটি নির্দেশ রয়েছে- (এক) আরববাসী ও সমগ্র উম্মতকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, পৈত্রিক অনুসরণের কুসংস্কার পরিত্যাগ কর এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে সুপথপ্রাপ্ত নবী-রাসূলদের অনুসরণ কর। (দুই) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, আপনিও পূর্ববতী নবীগণের পন্থা অবলম্বন করুন।
(২) এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বিশেষভাবে একটি ঘোষণা করতে বলা হয়েছে, যা পূর্ববর্তী নবীগণও করেছেন। ঘোষণাটি হচ্ছে, আমি তোমাদের জীবনকে পরিশুদ্ধ করার জন্য যেসব নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি, তজ্জন্য তোমাদের কাছে কোন ফি বা পারিশ্রমিক চাই না। তোমরা এসব নির্দেশ মেনে নিলে আমার কোন লাভ নাই এবং না মানলে তাতেও কোন ক্ষতি নেই। এটি হচ্ছে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য উপদেশ ও শুভেচ্ছার বার্তা। বস্তুত: শিক্ষা ও প্রচারকার্যের জন্য কোনরূপ পারিশ্রমিক গ্রহণ না করা সব যুগে সব নবীর নিকট অভিন্ন রীতি ছিল। প্রচারকার্য কার্যকরী হওয়ার ব্যাপারে এর প্রভাব অনস্বীকার্য।
তাফসীরে জাকারিয়া(৯০) এদেরকেই আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেছেন। সুতরাং তুমি তাদের পথ অনুসরণ কর।[1] বল, ‘এর জন্য আমি তোমাদের নিকট পারিশ্রমিক চাই না।[2] এ তো শুধু বিশ্ব-জগতের জন্য উপদেশ।’ [3]
[1] এ থেকে বুঝানো হয়েছে উল্লিখিত নবীগণকে। এঁদের অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাওহীদের বিষয়ে এবং এমন সব বিধি-বিধানের ব্যাপারে যেগুলো রহিত নয়। (ফাতহুল ক্বাদীর) কেননা, দ্বীনের মূল বিষয়গুলো প্রত্যেক শরীয়তে একই ছিল, যদিও বিধি-বিধান ও নিয়ম-পদ্ধতির মধ্যে সামান্য কিছু পার্থক্য ছিল। যেমন, {شَرَعَ لَكُمْ مِنَ الدِّينِ مَا وَصَّى بِهِ نُوحًا} (الشورى: ১৩) আয়াত থেকেও এ কথা পরিষ্কার।
[2] অর্থাৎ, দ্বীনের তবলীগ ও দাওয়াতের জন্য। কারণ, এর প্রতিদান যা আমি আখেরাতে আল্লাহর কাছে পাব, তাই আমার জন্য যথেষ্ট।
[3] বিশ্ববাসী এ থেকে উপদেশ অর্জন করুক। সুতরাং এই কুরআন তাদেরকে কুফরী ও শিরকের অন্ধকার থেকে বের করে হিদায়াতের আলো দান করবে এবং ভ্রষ্টতার বক্র পথসমূহ থেকে বের করে হিদায়াতের সরল ও সোজা পথে পরিচালিত করবে। তবে শর্ত হল, এ থেকে উপদেশ গ্রহণ করার ইচ্ছা থাকতে হবে। তা না হলে অন্ধকে বাতি দেখানোর মত ব্যাপার হবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান