আমি অবশ্যই জানি যে, তারা যা বলে তা তোমাকে দুঃখ দেয়। কিন্তু তারা তো তোমাকে অস্বীকার করে না, বরং যালিমরা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে। আল-বায়ান
তারা যা বলে তা তোমাকে কষ্ট দেয় এটা আমি অবশ্যই ভালভাবে অবগত, কেননা তারা তো তোমাকে মিথ্যে মনে করে না, প্রকৃতপক্ষে যালিমরা আল্লাহর আয়াতকেই প্রত্যাখ্যান করে। তাইসিরুল
তাদের কথাবার্তায় তোমার যে দুঃখ ও মনঃকষ্ট হয় তা আমি খুব ভালভাবেই জানি, তারা শুধুমাত্র তোমাকেই মিথ্যা প্রতিপন্ন করছেনা, বরং এই পাপিষ্ঠ যালিমরা আল্লাহর আয়াতসমূহকেও অস্বীকার ও অমান্য করছে। মুজিবুর রহমান
We know that you, [O Muhammad], are saddened by what they say. And indeed, they do not call you untruthful, but it is the verses of Allah that the wrongdoers reject. Sahih International
৩৩. আমরা অবশ্য জানি যে, তারা যা বলে তা আপনাকে নিশ্চিতই কষ্ট দেয়; কিন্তু তারা আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে না, বরং যালিমরা আল্লাহর আয়াতসমূহকে অস্বীকার করে।(১)
(১) অর্থাৎ কাফেররা প্রকৃতপক্ষে আপনার প্রতি মিথ্যারোপ করে না, বরং আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতিই মিথ্যারোপ করে। অর্থাৎ কাফেররা আপনাকে নয়- আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলে। আয়াতের এ অর্থও হতে পারে যে, কাফেররা বাহ্যতঃ যদিও আপনাকে মিথ্যা বলে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আপনাকে মিথ্যা বলার পরিণাম স্বয়ং আল্লাহ্ তা'আলাকে ও তার নিদর্শনাবলীকে মিথ্যা বলা। কাতাদা বলেন, অর্থাৎ তারা জানে যে আপনি আল্লাহর রাসূল কিন্তু তারা ইচ্ছা করে সেটাকে অস্বীকার করছে। [আত-তাফসীরুস সহীহ]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩৩) আমি অবশ্যই জানি যে, তারা যা বলে, তা তোমাকে নিশ্চিতই কষ্ট দেয়। আসলে তারা তো তোমাকে মিথ্যাবাদী বলে না, বরং অত্যাচারিগণ আল্লাহর আয়াতকেই অস্বীকার করে। [1]
[1] নবী করীম (সাঃ)-কে কাফেরদের মিথ্যা ভাবার কারণে যে দুঃখ-কষ্ট তাঁর হত, তা দূরীকরণের এবং তাঁকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য বলা হচ্ছে যে, এই মিথ্যা মনে করা তোমাকে নয় (তোমাকে তো তারা সত্যবাদী ও বিশ্বাসী মনে করে), বরং প্রকৃতপক্ষে তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা মনে করে এবং এটা একটি মস্ত বড় যুলুমের কাজ তারা করছে। তিরমিযী ইত্যাদির একটি বর্ণনায় এসেছে যে, আবূ জাহল একদা রসূল (সাঃ)-কে বলল, ‘হে মুহাম্মাদ, আমরা তোমাকে নয়, বরং তুমি যা নিয়ে এসেছ সেটাকে মিথ্যা মনে করি।’ তার উত্তরে এই আয়াত অবতীর্ণ হয়। তিরমিযীর এই বর্ণনা সনদের দিক দিয়ে দুর্বল হলেও অন্য সহীহ বর্ণনা দ্বারা এ ব্যাপারের সত্যতা প্রমাণিত হয়। মক্কার কাফেররা নবী করীম (সাঃ)-কে আমানতদার, বিশ্বস্ত এবং সত্যবাদী মনে করত, কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর রিসালাতের উপর ঈমান আনা থেকে দূরেই ছিল। বর্তমানেও যারা নবী করীম (সাঃ)-এর উত্তম চরিত্র, গুণ ও কৃতিত্ব, তাঁর অমায়িক ব্যবহার এবং তাঁর আমানত ও বিশ্বস্ততার কথাকে গা-মাথা দুলিয়ে বড় মোহিত হয়ে বর্ণনা করে এবং এ বিষয়ের উপর সাহিত্য-শৈলী ভাষায় ও চমৎকার ভঙ্গিমায় বত্তৃজ্ঞতা, না’ত ও গজলও পরিবেশন করে, কিন্তু রসূল (সাঃ)-এর আনুগত্য ও তাঁর অনুসরণ করার ব্যাপারে কুণ্ঠাবোধ ও শৈথিল্য করে। তাঁর কথার উপর ফিকহ, কিয়াস (অনুমান) এবং ইমামদের কথাকে প্রাধান্য দেয়। তাদের চিন্তা করা উচিত যে, এ আচরণ কার যা তারা অবলম্বন করেছে?
তাফসীরে আহসানুল বায়ান