হে মানুষ, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট প্রমাণ এসেছে এবং আমি তোমাদের নিকট স্পষ্ট আলো নাযিল করেছি। আল-বায়ান
হে মানবমন্ডলী! তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তোমাদের কাছে উজ্জ্বল প্রমাণ এসে পৌঁছেছে, আর আমি তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট জ্যোতি অবতীর্ণ করেছি। তাইসিরুল
হে লোক সকল! তোমাদের রবের সন্নিধান হতে তোমাদের নিকট প্রত্যক্ষ প্রমাণ এসেছে এবং আমি তোমাদের প্রতি সমুজ্জ্বল জ্যোতি অবতীর্ণ করেছি। মুজিবুর রহমান
O mankind, there has come to you a conclusive proof from your Lord, and We have sent down to you a clear light. Sahih International
১৭৪. হে লোকসকল! তোমাদের রবের কাছ থেকে তোমাদের কাছে প্রমাণ এসেছে(১) এবং আমরা তোমাদের প্রতি স্পষ্ট জ্যোতি(২) নাযিল করেছি।
(১) ‘বুরহান’ শব্দের আভিধানিক অর্থ অকাট্য দলীল-প্রমাণ। এ আয়াতে এর দ্বারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সত্তা ও মহান ব্যক্তিত্বকে বুঝানো হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহান ব্যক্তিত্বের জন্য ‘বুরহান’ শব্দ প্রয়োগ করার তাৎপর্য এই যে, তার বরকতময় সত্তা, অনুপম চরিত্র মাধুর্য, অপূর্ব মু'জিযাসমূহ, তার প্রতি বিস্ময়কর কিতাব আল-কুরআন নাযিল হওয়া ইত্যাদি তার রেসালাতের অকাট্য দলীল ও প্রকৃষ্ট প্রমাণ। যার পরে আর কোন সাক্ষ্য প্রমাণের আবশ্যক হয় না। অতএব, তার মহান ব্যক্তিত্বই তার সত্যতার অকাট্য প্রমাণ।
(২) আলোচ্য আয়াতে نور (নূর) শব্দ দ্বারা কুরআন মাজীদকে বোঝানো হয়েছে। যেমন, সূরা আল-মায়েদার ১৫ নং আয়াতে বলা হয়েছে, (قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِينٌ) অর্থাৎ তোমাদের কাছে আল্লাহ্ তা'আলার পক্ষ থেকে এক উজ্জ্বল আলো তথা এক প্রকৃষ্ট কিতাব অর্থাৎ আল-কুরআন এসেছে। আবার নুর অর্থ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং আল-কুরআনও হতে পারে। তখন এর অর্থ হবে, হেদায়াতের নূর। যে আলোর ছোয়া লাগলে মানুষের হিদায়াত নসীব হয়। তবে তার অর্থ এই নয় যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানবীয় দৈহিকতা থেকে মুক্ত শুধু নূর ছিলেন, যেমনটি কোন কোন ভ্ৰষ্ট সম্প্রদায় বিশ্বাস করে থাকে।
তাফসীরে জাকারিয়া(১৭৪) হে মানব! তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তোমাদের নিকট প্রমাণ এসে পৌঁছেছে[1] এবং আমি তোমাদের প্রতি স্পষ্ট জ্যোতিঃ অবতীর্ণ করেছি। [2]
[1] برهان বলা হয় এমন অকাট্য ও স্পষ্ট প্রমাণকে যার পর আর কোন আপত্তি থাকার অবকাশ নেই এবং এমন অকাট্য প্রমাণ যার দ্বারা সন্দেহ নিরসন হয়। আর এই কারণেই পরবর্তীতে একে ‘নূর’ বা জ্যোতির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
[2] এই আয়াতে ‘নূর’ (জ্যোতি)র অর্থ ও উদ্দেশ্য হচ্ছে, ‘কুরআন কারীম’ যা কুফর ও শিরকের অন্ধকারের মাঝে হিদায়াতের আলো এবং ভ্রষ্টতার ঘুরপাকে সরল ও সোজা পথ এবং আল্লাহর মজবুত ও শক্ত রজ্জু। সুতরাং এর প্রতি ঈমান আনয়নকারী আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর রহমতের হকদার হবে।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান