কখনো নয়, বরং তোমরা ইয়াতীমদের দয়া-অনুগ্রহ প্রদর্শন কর না। আল-বায়ান
না (রিযক) কক্ষনো (মান-সম্মানের মানদন্ড) নয়, বরং তোমরা ইয়াতীমের প্রতি সম্মানজনক আচরণ কর না, তাইসিরুল
না, কখনই নয়। বস্তুতঃ তোমরা ইয়াতীমদেরকে সম্মান করনা। মুজিবুর রহমান
No! But you do not honor the orphan Sahih International
১৭. কখনো নয়।(১) বরং(২) তোমরা ইয়াতীমকে সম্মান কর না,
(১) পূর্ববর্তী ধারণা খণ্ডানোর জন্যই মহান আল্লাহ্ এ আয়াতে বলছেন যে, তোমাদের পূর্ববর্তী আয়াতে বর্ণিত ধারণাসমূহ সম্পূর্ণ ভ্ৰান্ত ও ভিত্তিহীন। দুনিয়াতে জীবনোপকরণের স্বাচ্ছন্দ সৎ ও আল্লাহর প্ৰিয়পাত্র হওয়ার আলামত নয়, তেমনি অভাব-অনটন ও দারিদ্র প্রত্যাখ্যাত ও লাঞ্ছিত হওয়ার দলীল নয়। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যাপার সম্পূর্ণ উল্টো হয়ে থাকে। কোন কোন নবী-রাসূল কঠিন কষ্ট ভোগ করেছেন আবার কোনও কোনও আল্লাহদ্রোহী আরাম-আয়েশ্যে জীবন অতিবাহিত করে দিয়েছেন। [দেখুন: ইবন কাসীর]
(২) এখানে কাফের ও তাদের অনুসারী ফাসিকদের কয়েকটি মন্দ অভ্যাস সম্পর্কে সাবধান করা হচ্ছে। প্রথমেই বলা হয়েছে যে, তোমরা ইয়াতীমকে সম্মান কর না। এখানে আসলে বলার উদ্দেশ্য এই যে, তোমরা ইয়াতীমদের প্রাপ্য আদায় কর না এবং তাদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার গ্রহণ করো না। [ফাতহুল কাদীর] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “জন্নাতে আমি ও ইয়াতীমের তত্ত্বাবধানকারী এভাবে থাকবে” এটা বলে তিনি তার মধ্যমা ও তর্জনী আংগুলদ্বয় একসাথ করে দেখালেন। [বুখারী: ৬০০৫]
তাফসীরে জাকারিয়া১৭। না, কখনই নয়। [1] বস্তুতঃ তোমরা পিতৃহীনকে সমাদর কর না। [2]
[1] অর্থাৎ, ব্যাপার এমন নয়, যেমন লোকেরা ধারণা করে থাকে। আল্লাহ তাআলা মাল-ধন নিজ প্রিয় বান্দাদেরকে দান করে থাকেন এবং অপ্রিয় বান্দাদেরকেও। আবার তাদের উভয়কে সংকীর্ণতাতেও ফেলে থাকেন। উভয় অবস্থাতেই আল্লাহর আনুগত্য জরুরী। অতএব বান্দার উচিত, তিনি মাল-ধন দান করলে তাঁর কৃতজ্ঞতা করা এবং সংকীর্ণতা দিলে ধৈর্য ধারণ করা।
[2] অর্থাৎ, তাদের সাথে সেই সুন্দর আচরণ করা হয় না, যা তাদের প্রাপ্য। নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘সেই গৃহ সব থেকে উত্তম যে গৃহে অনাথের সাথে ভাল ব্যবহার করা হয়। আর সব থেকে খারাপ গৃহ সেটা, যে গৃহে অনাথের সাথে মন্দ ব্যববহার করা হয়।’’ অতঃপর তিনি (সাঃ) নিজ (তর্জনী ও মধ্যমা) আঙ্গুল দ্বারা ইঙ্গিত করে বললেন, ‘‘আমি এবং অনাথের তত্ত্বাবধানকারী জান্নাতে এইভাবে পাশাপাশি অবস্থান করব; যেমন এই দুটি আঙ্গুল মিলিত আছে।’’(আবু দাউদ আদব অধ্যায়, অনাথকে শামিল করার পরিচ্ছেদ) (প্রকাশ থাকে যে, এ হাদীসের প্রথমাংশ আবূ দাঊদে নেই এবং সেটা যয়ীফও। অবশ্য শেষাংটি আবূ দাঊদ তথা বুখারী শরীফেও আছে। -সম্পাদক)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান