৭৬:৮ وَ یُطۡعِمُوۡنَ الطَّعَامَ عَلٰی حُبِّهٖ مِسۡكِیۡنًا وَّ یَتِیۡمًا وَّ اَسِیۡرًا ﴿۸﴾
و یطعمون الطعام علی حبهٖ مسكینا و یتیما و اسیرا ﴿۸﴾

তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে। আল-বায়ান

আর তারা আল্লাহর প্রতি তাদের ভালবাসার কারণে মিসকীন, ইয়াতীম ও কয়েদীকে খাবার খাওয়ায়। তাইসিরুল

তাদের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মিসকীন, ইয়াতীম ও বন্দীকে আহার্য দান করে। মুজিবুর রহমান

And they give food in spite of love for it to the needy, the orphan, and the captive, Sahih International

৮. আর তারা মহব্বত থাকা সাপেক্ষে(১) অভাবগ্ৰস্ত, ইয়াতীম ও বন্দীকে(২) খাবার দান করে(৩),

(১) অর্থাৎ জান্নাতীদের এসব নেয়ামত এ কারণেও যে, তারা দুনিয়াতে অভাবগ্ৰস্ত, এতীম ও বন্দীদেরকে আহার্য দান করত। অধিকাংশ তাফসীরকারকের মতে, এখানে حبه এর সর্বনাম দ্বারা طعام বা খাবার উদ্দেশ্য। অর্থাৎ খাদ্য অত্যন্ত প্রিয় ও আকর্ষণীয় হওয়া সত্বেও এবং নিজেরাই খাদ্যের মুখাপেক্ষী হওয়া সত্বেও নেককার লোকেরা তা অন্যদেরকে খাওয়ান। আবু সুলাইমান আদ-দারানী বলেন, حبه এর সর্বনাম দ্বারা আল্লাহ্‌ তা'আলাকেই উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তারা আল্লাহ তা’আলার মহব্বতে এরূপ করে থাকে। পরবর্তী আয়াতাংশ ‘আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যেই তোমাদের খাওয়াচ্ছি’ এ অর্থকেই সমর্থন করে। [কুরতুবী; ইবন কাসীর]

(২) এ আয়াতে বন্দী বলতে কাফের হোক বা মুসলিম, যুদ্ধবন্দী হোক বা অপরাধের কারণে বন্দী হোক সব রকম বন্দীকে বুঝানো হয়েছে। বন্দী অবস্থায় তাদেরকে খাদ্য দেয়া, মুসলিম কিংবা অমুসলিম, সর্বাবস্থায় একজন অসহায় মানুষকে-যে তার খাবার সংগ্রহের জন্য নিজে কোন চেষ্টা করতে পারে না- খাবার দেয়া অতি বড় সওয়াবের কাজ। [দেখুন: কুরতুবী]

(৩) কোন গরীবকে খেতে দেয়া যদিও বড় নেকীর কাজ, কিন্তু কোন অভাবী মানুষের অন্যান্য অভাব পূরণ করাও একজন ক্ষুধার্ত মানুষকে খেতে দেয়ার মতই নেক কাজ। এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমরা কয়েদি মুক্ত কর, ক্ষুধার্তকে খাওয়াও এবং অসুস্থদের সুশ্রুষা কর”। [বুখারী: ৩০৪৬]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৮) আহার্যের প্রতি আসক্তি সত্ত্বেও[1] তারা অভাবগ্রস্ত, ইয়াতীম ও বন্দীকে অন্নদান করে।

[1] অথবা সে আল্লাহর মহব্বতে অভাবীদেরকে খাদ্য দান করে। বন্দী অমুসলিম হলেও তার সাথে উত্তম ব্যবহার করার তাকীদ করা হয়েছে। যেমন বদর যুদ্ধের কাফের বন্দীদের ব্যাপারে নবী (সাঃ) সাহাবাদেরকে নির্দেশ দিলেন যে, তাদের সম্মান কর। তাই সাহাবায়ে কেরাম প্রথমে তাদেরকে খাবার খাওয়াতেন এবং তাঁরা নিজেরা পরে খেতেন। (ইবনে কাসীর) অনুরূপ ক্রীতদাস এবং চাকর-ভৃত্যরাও এরই অন্তর্ভুক্ত। তাদের সাথেও উত্তম ব্যবহার করার তাকীদ করা হয়েছে। নবী (সাঃ)-এর শেষ অসিয়ত এটাই ছিল যে, ‘‘তোমরা নামায এবং নিজেদের ক্রীতদাস-দাসীদের প্রতি খেয়াল রাখবে।’’ (আহমাদ, ইবনে মাজাহ, অসীয়ত অধ্যায়)

তাফসীরে আহসানুল বায়ান