তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশান্তি নাযিল করেছিলেন যেন তাদের ঈমানের সাথে ঈমান বৃদ্ধি পায়; এবং আসমানসমূহ ও যমীনের বাহিনীগুলো আল্লাহরই; আর আল্লাহ হলেন সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। আল-বায়ান
তিনিই মু’মিনদের দিলে প্রশান্তি নাযিল করেন যাতে তারা তাদের ঈমানের সাথে আরো ঈমান বাড়িয়ে নেয়। আসমান ও যমীনের যাবতীয় বাহিনী আল্লাহর কর্তৃত্বের অধীন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময়। তাইসিরুল
তিনিই মু’মিনদের অন্তরে প্রশান্তি দান করেন যেন তারা তাদের ঈমানের সাথে ঈমান বৃদ্ধি করে নেয়; আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহই সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। মুজিবুর রহমান
It is He who sent down tranquillity into the hearts of the believers that they would increase in faith along with their [present] faith. And to Allah belong the soldiers of the heavens and the earth, and ever is Allah Knowing and Wise. Sahih International
৪. তিনিই মুমিনদের অন্তরে প্রশাস্তি নাযিল করেছেন(১) যেন তারা তাদের ঈমানের সাথে ঈমান বৃদ্ধি করে নেয়।(২) আর আসমানসমূহ ও যমীনের বাহিনীসমূহ আল্লাহরই এবং আল্লাহ হলেন সর্বজ্ঞ, হিকমতওয়ালা।
(১) سَكِيْنَةٌ আরবী ভাষায় স্থিরতা, প্রশান্তি ও দৃঢ় চিত্ততাকে বুঝায়। হুদাইবিয়া থেকে প্রত্যাবর্তনের পথে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ‘কুরা গামীম’ নামক স্থানে পৌছেন, তখন আলোচ্য ‘সূরা ফাতহ’ অবতীর্ণ হয়। তিনি সাহাবায়ে কেরামকে সূরাটি পাঠ করে শুনালেন। তাদের অন্তর পূর্বেই আহত ছিল। এমতাবস্থায় সূরায় একে প্রকাশ্য বিজয় আখ্যা দেয়ায় উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু আবার প্রশ্ন করে বসলেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! এটা কি বিজয়? তিনি বললেনঃ যার হাতে আমার প্রাণ সে সত্তার কসম, এটা প্ৰকাশ্য বিজয়। [মুসনাদে আহমাদ: ৩/৪২০, আবু দাউদ: ২৭৩৬, ৩০১৫]
(২) তাদের যে ঈমান এ অভিযানের পূর্বে ছিল, তার সাথে আরো ঈমান তারা অর্জন করলো এ কারণে যে, এ অভিযান চলাকালে একের পর এক যত পরীক্ষা এসেছে তার প্রত্যেকটিতে তারা নিষ্ঠা, তাকওয়া ও আনুগত্যের নীতির ওপর দৃঢ়পদ থেকেছে। এ আয়াত ও অনুরূপ আরো কিছু আয়াত ও হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি আছে। আর এটাই আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আতের আকীদা। [আদওয়াউল-বায়ান] ইমাম বুখারী তার গ্রন্থে এ আয়াত থেকে ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধির উপর দলীল গ্রহণ করেছেন।
তাফসীরে জাকারিয়া(৪) তিনিই বিশ্বাসীদের অন্তরে প্রশান্তি দান করেন, যেন তারা তাদের ঈমানের সাথে ঈমান (বিশ্বাস) বৃদ্ধি করে নেয়, [1] আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর বাহিনীসমূহ আল্লাহরই[2] এবং আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
[1] অর্থাৎ, সেই অস্থিরতা ও অশান্তির পর, যা হুদাইবিয়া সন্ধির শর্তাবলীর কারণে মুসলিমদের উপর এসেছিল। মহান আল্লাহ তাদের অন্তরে প্রশান্তি প্রক্ষিপ্ত করেন। যার ফলে তাদের অন্তরে শান্তি, স্বস্তি ও ঈমান আরো বেড়ে যায়। এই আয়াতও প্রমাণ করে যে, ঈমান বাড়ে ও কমে।
[2] অর্থাৎ, আল্লাহ চাইলে তার যে কোন সৈন্যের (যেমন, ফিরিশতাগণ) দ্বারা কাফেরদেরকে ধ্বংস করে দিতে পারেন। কিন্তু তিনি তাঁর পূর্ণ কৌশলের ভিত্তিতে এ রকম না করে তার পরিবর্তে মু’মিনদেরকে যুদ্ধ ও জিহাদ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এই কারণেই পরে (আয়াতের শেষে) তাঁর সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাময় হওয়ার গুণ উল্লেখ করেছেন। অথবা অর্থ হল, আকাশ ও পৃথিবীর ফিরিশতাগণ, অনুরূপ অন্যান্য সমস্ত প্রতাপ ও বিক্রমশালী সেনাবাহিনী আল্লাহরই অধীনস্থ। তিনি যেভাবে চান তাদের দ্বারা কাজ নেন। বলার উদ্দেশ্য হল, হে মু’মিনগণ! মহান আল্লাহ তোমাদের মুখাপেক্ষী নন। তিনি তাঁর রসূল এবং তাঁর দ্বীনের সাহায্যের কাজ যে কোন দল ও সৈন্য দিয়ে নিতে পারেন। (ইবনে কাসীর, আয়সারুত তাফাসীর)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান