৩৩ সূরাঃ আল-আহযাব | Al-Ahzab | سورة الأحزاب - আয়াতঃ ২১
৩৩:২১ لَقَدۡ كَانَ لَكُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰهِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ كَانَ یَرۡجُوا اللّٰهَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَكَرَ اللّٰهَ كَثِیۡرًا ﴿ؕ۲۱﴾
لقد كان لكم فی رسول الله اسوۃ حسنۃ لمن كان یرجوا الله و الیوم الاخر و ذكر الله كثیرا ﴿۲۱﴾

অবশ্যই তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ তাদের জন্য যারা আল্লাহ ও পরকাল প্রত্যাশা করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। আল-বায়ান

তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের আশা রাখে আর আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে। তাইসিরুল

তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসূলের অনুসরণের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। মুজিবুর রহমান

There has certainly been for you in the Messenger of Allah an excellent pattern for anyone whose hope is in Allah and the Last Day and [who] remembers Allah often. Sahih International

২১. অবশ্যই তোমাদের জন্য রয়েছে রাসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম আদর্শ(১), তার জন্য যে আশা রাখে আল্লাহ ও শেষ দিনের এবং আল্লাহকে বেশী স্মরণ করে।

(১) এরপর অকপট ও খাঁটি মুসলিমগণের বর্ণনা প্রসঙ্গে এদের অসম দৃঢ়তার প্রশংসা করা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অনুসরণ অনুকরণের প্রয়োজনীয়তা ও অপরিহার্যতাকে মূলনীতিরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য রাসূলের মধ্যে উত্তম অনুপম আদর্শ রয়েছে’। এদ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণীসমূহ ও কার্যাবলী উভয়ই অনুসরণের হুকুম রয়েছে বলে প্রমাণিত হয়। [দেখুন: মুয়াস্‌সার]

তাফসীরে জাকারিয়া

(২১) তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে[1] তাদের জন্য রাসূলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে। [2]

[1] অর্থাৎ হে মুসলিমগণ এবং হে মুনাফিকদল! তোমাদের জন্য রসূল (সাঃ)-এর ব্যক্তিত্বে উত্তম আদর্শ রয়েছে, অতএব তোমরা জিহাদে এবং ধৈর্যশীলতা ও পদদৃঢ়তায় তাঁরই অনুসরণ কর। মহানবী (সাঃ) ক্ষুধার্ত থেকে জিহাদ করেছেন; এমনকি তাঁকে পেটে পাথর বাঁধতে হয়েছে। তাঁর চেহারা মুবারক যখম হয়েছে, তাঁর দাঁত ভেঙ্গে গেছে, তিনি নিজ হাতে পরিখা খনন করেছেন এবং প্রায় এক মাস শত্রু বাহিনীর অবরোধের মুখে সাহসিকতার সাথে মুকাবেলা করেছেন। উক্ত আয়াত যদিও আহযাব যুদ্ধের সময় অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে যুদ্ধের সময় বিশেষভাবে রসূল (সাঃ)-এর আদর্শকে সামনে রাখা ও তাঁর অনুসরণ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এটি একটি ব্যাপক আদেশ। অর্থাৎ নবী (সাঃ)-এর সকল কথা, কাজ ও অবস্থাতে মুসলিমের জন্য তাঁর অনুসরণ আবশ্যিক; তা ইবাদত সম্পর্কিত হোক বা সমাজ সম্পর্কিত, জীবিকা সম্পর্কিত হোক বা রাজনীতি সম্পর্কিত, জীবনের সকল ক্ষেত্রে তাঁরই নির্দেশ পালন করা একান্ত কর্তব্য। (ومَآاََتَكُمُ الرَّسُوْلُ فَخُذُوْهُ ) সূরা হাশরের ৭নং আয়াত এবং (اِنْ كُنْتُمْ تُحِبُّوْنَ اللهَ) সূরা আলে ইমরানের ৩১নং আয়াতের দাবীও তাই।

[2] এই আয়াতে পরিষ্কার হয়ে গেল যে, রসূল (সাঃ)-এর আদর্শে ঐ ব্যক্তি আদর্শবান হবে, যে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সাথে সাক্ষাতে বিশ্বাসী এবং যে বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করে থাকে। বর্তমানে অধিকাংশ মুসলমান উক্ত দুই গুণ থেকে বঞ্চিত। যার ফলে তাদের অন্তরে রসূল (সাঃ)-এর আদর্শের কোন গুরুত্ব নেই। এদের মধ্যে যারা দ্বীনদার তাদের আদর্শ হল পীর ও বুযুর্গরা। আর যারা দুনিয়াদার বা রাজনৈতিক তাদের আদর্শ ও পথপ্রদর্শক হল পাশ্চাত্যের নেতারা। রসূল (সাঃ)-এর প্রতি ভক্তি ও ভালোবাসার কথা এরা মুখে খুব দাবী করে, কিন্তু কার্যতঃ তাঁকে নিজেদের আদর্শ, নেতা ও পথপ্রদর্শক মানার ব্যাপারে অধিকাংশই পিছনে। সুতরাং এ বিচার আল্লাহই করবেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান