আর ‘আদ ও সামূদকে (আমি ধ্বংস করেছিলাম), তাদের আবাসভূমির কিছু তোমাদের জন্য উন্মোচিত হয়েছে। আর শয়তান তাদের কাজ তাদের চোখে শোভিত করে তাদেরকে সৎপথ থেকে বিরত রেখেছিল, যদিও তারা ছিল বিদগ্ধ। আল-বায়ান
(স্মরণ কর) ‘আদ ও সামূদ (জাতির) কথা, তাদের বাড়ীঘর হতেই তাদের (করুণ পরিণতি) সম্পর্কে সুস্পষ্টরূপে তোমাদের জানা হয়ে গেছে। তাদের কাজগুলোকে শয়ত্বান তাদের দৃষ্টিতে মনোমুগ্ধকর করেছিল। যার ফলে সৎপথে চলতে তাদেরকে বাধা দিয়েছিল, যদিও তারা ছিল তীক্ষ্ণ দৃষ্টির অধিকারী। তাইসিরুল
এবং আমি ‘আদ ও ছামূদকে ধ্বংস করেছিলাম; তাদের বাড়ীঘরই তোমাদের জন্য এর সুস্পষ্ট প্রমাণ। শাইতান তাদের কাজকে তাদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করেছিল এবং তাদেরকে সৎপথ অবলম্বনে বাধা দিয়েছিল, যদিও তারা ছিল বিচক্ষণ। মুজিবুর রহমান
And [We destroyed] 'Aad and Thamud, and it has become clear to you from their [ruined] dwellings. And Satan had made pleasing to them their deeds and averted them from the path, and they were endowed with perception. Sahih International
৩৮. আর আমরা আদ ও সামূদকে ধ্বংস করেছিলাম; তাদের বাড়ীঘরের কিছু তোমাদের জন্য উন্মোচিত হয়েছে।(১) আর শয়তান তাদের কাজকে তাদের দৃষ্টিতে শোভন করেছিল এবং তাদের সৎপথ অবলম্বনে বাধা দিয়েছিল, যদিও তারা ছিল বিচক্ষণ।(২)
(১) আরবের যেসব এলাকায় এ সব জাতির বসতি ছিল আরবের লোকেরা তা জানতো। দক্ষিণ আরবের যেসব এলাকা বর্তমানে আহকাফ, ইয়ামন ও হাদরামাউত নামে পরিচিত, প্রাচীনকালে সে এলাকাগুলোতে ছিল আদ জাতির বাস। হিজাযের দক্ষিণ অংশে রাবেগ থেকে আকাবাহ পর্যন্ত শু'আইব জাতির এবং মদীনার ওয়াদিউল কুরা থেকে তাইমা ও তাবুক পর্যন্ত সমগ্র এলাকা আজো সামূদ জাতির ধ্বংসাবশেষে পরিপূর্ণ দেখা যায়। কুরআন নাযিল হবার যুগে এ ধ্বংসাবশেষগুলোর অবস্থা বর্তমানের তুলনায় আরো কিছু বেশী সুস্পষ্ট থেকে থাকবে। [দেখুন: ইবন কাসীর]
(২) مُسْتَبْصِر এর অর্থ বিচক্ষণ বা চক্ষুষ্মান। উদ্দেশ্য এই যে, যারা কুফর ও শির্ক করে আযাব ও ধ্বংসে পতিত হয়েছে, তারা মোটেই বেওকুফ অথবা উম্মাদ ছিল না। তারা দলীল-প্রমাণাদি থেকে সত্য গ্ৰহণ করতে সমর্থ ছিল, কিন্তু পার্থিব স্বাৰ্থ তাদেরকে অস্বীকারে বাধ্য করে রেখেছিল। তারা ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে চিন্তে ও খোলা চোখে শয়তান যে পথ দেখিয়েছিল এবং যে পথে তারা বড়ই লাভ ও ভোগের সন্ধান পেয়েছিল সে পথে পাড়ি জমিয়েছিল এবং এমন পথ পরিহার করেছিল যা তাদের কাছে নীরস, বিস্বাদ এবং নৈতিক বিধি-নিষেধের বেড়াজালে আবদ্ধ হবার কারণে কষ্টকর মনে হচ্ছিল। [দেখুন, ফাতহুল কাদীর] অন্যত্র বলা হয়েছে: “তারা জাগতিক কাজ কর্ম খুব বোঝে; কিন্তু আখেরাতের ব্যাপারে উদাসীন।” [সূরা আর-রূম: ৭]
তাফসীরে জাকারিয়া(৩৮) আর আমি আ’দ ও সামূদকে ধ্বংস করেছিলাম; ওদের বাড়ি-ঘরই তোমাদের জন্য এর সুস্পষ্ট প্রমাণ।[1] শয়তান ওদের কাজকে ওদের দৃষ্টিতে সুশোভিত করেছিল এবং ওদেরকে সৎপথ অবম্বনে বাধা দিয়েছিল; যদিও ওরা ছিল বিচক্ষণ। [2]
[1] আ’দ জাতির বসতি আহ্কাফ ইয়ামানের ‘হাযরামাওত’-এর নিকটে অবস্থিত ছিল। আর সামূদের বসতি ‘হিজর’ আজকাল যাকে ‘মাদায়েনে সালেহ’ বলা হয় এবং যা হিজাজের (মদীনার) উত্তরে অবস্থিত। উক্ত এলাকার উপর দিয়ে আরবের বাণিজ্য কাফেলা যাতায়াত করত। সেই জন্য ঐ সকল বসতি তাদের অজানা ছিল না। বরং তাদের নিকট পরিচিত ছিল।
[2] অর্থাৎ, তারা জ্ঞানী ও চালাক-চতুর তো ছিল; কিন্ত দ্বীন ও ধর্মের ব্যাপারে তারা নিজেদের জ্ঞান কাজে লাগায়নি। সেই জন্য তাদের জ্ঞান-গরিমা তাদের কোন কাজে আসেনি।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান