১৭:৫১ اَوۡ خَلۡقًا مِّمَّا یَكۡبُرُ فِیۡ صُدُوۡرِكُمۡ ۚ فَسَیَقُوۡلُوۡنَ مَنۡ یُّعِیۡدُنَا ؕ قُلِ الَّذِیۡ فَطَرَكُمۡ اَوَّلَ مَرَّۃٍ ۚ فَسَیُنۡغِضُوۡنَ اِلَیۡكَ رُءُوۡسَهُمۡ وَ یَقُوۡلُوۡنَ مَتٰی هُوَ ؕ قُلۡ عَسٰۤی اَنۡ یَّكُوۡنَ قَرِیۡبًا ﴿۵۱﴾
او خلقا مما یكبر فی صدوركم فسیقولون من یعیدنا قل الذی فطركم اول مرۃ فسینغضون الیك رءوسهم و یقولون متی هو قل عسی ان یكون قریبا ﴿۵۱﴾

‘অথবা এমন কোন সৃষ্টি, যা তোমাদের অন্তরে বড় মনে হয়।’ তবুও তারা বলবে, ‘কে আমাদের পুনরায় (সৃষ্টি) করবে?’ বল, ‘যিনি তোমাদের প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন।’ অতঃপর তারা তোমার সামনে মাথা নাড়বে এবং বলবে, ‘কবে এটা?’ বল, ‘আশা করা যায় যে, তা নিকটেই হবে।’ আল-বায়ান

অথবা এমন কিছু যা তোমাদের ধারণায় (জীবিত হওয়া) খুবই কঠিন (তবুও তোমাদেরকে উঠানো হবে)।’ তারা বলবে, ‘কে আছে এমন যে আমাদেরকে পুনরায় জীবনে ফিরিয়ে আনবে?’ বল, ‘তিনিই যিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন।’ তখন তারা (ঠাট্টার ছলে) তোমার সামনে মাথা নাড়বে আর বলবে, ‘সেটা কখন ঘটবে?’ বল, ‘হতে পারে সেটা শীঘ্রই ঘটবে।’ তাইসিরুল

অথবা এমন কিছু যা তোমাদের ধারণায় খুবই কঠিন। তারা বলবেঃ কে আমাদেরকে পুনরুত্থিত করবে? বলঃ তিনিই যিনি তোমাদেরকে প্রথম বার সৃষ্টি করেছেন; অতঃপর তারা তোমার সামনে মাথা নাড়াবে এবং বলবেঃ ওটা কবে হবে? বলঃ হবে সম্ভবতঃ শীঘ্রই – মুজিবুর রহমান

Or [any] creation of that which is great within your breasts." And they will say, "Who will restore us?" Say, "He who brought you forth the first time." Then they will nod their heads toward you and say, "When is that?" Say, "Perhaps it will be soon - Sahih International

৫১. ‘অথবা এমন কোন সৃষ্টি যা তোমাদের অন্তরে খুবই বড় মনে হয়;(১) তবুও তারা বলবে, কে আমাদেরকে পুনরুখিত করবে? বলুন, তিনিই, যিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন(২) অতঃপর তারা আপনার সামনে মাথা নাড়বে(৩) ও বলবে, সেটা কবে?(৪) বলুন, সম্ভবত সেটা হবে শীঘ্রই,

১. মুজাহিদ বলেন, এখানে যা বড় মনে হয় বলে আসমান, যমীন ও পাহাড় বোঝানো হয়েছে। অন্য বর্ণনায় তিনি বলেছেন, এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে, যা ইচ্ছে তা হয়ে যাও, কিন্তু আল্লাহ তোমাদেরকে অবশ্যই মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করবেন। [ইবন কাসীর] ইবন আব্বাস, সায়ীদ ইবনে জুবাইর, আবু সালেহ, হাসান, কাতাদা এবং দাহহাক বলেন, তাদের উদ্দেশ্য মৃত্যু। কারণ বনী আদমের কাছে এর চেয়ে বড় বিষয় আর নেই। অর্থাৎ যদি তোমরা মৃতই হয়ে যাও তারপরও তিনি তোমাদেরকে মৃত্যু দিবেন। তারপর জীবিত করবেন। [ফাতহুল কাদীর]

২. অর্থাৎ যিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন তিনিই তোমাদেরকে পুনরায় সৃষ্টি করবেন। এ আয়াতে তাদের সন্দেহের দু'টি উত্তর দেয়া হয়েছে, এক. তোমাদেরকে প্রথম যিনি সৃষ্টি করেছেন সে মহান প্ৰভু সম্পর্কে তোমাদের ধারণা কেমন হতে পারে? কিভাবে মনে করতে পারলে যে, তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করতে পারবেন না? তোমরা তার শক্তি সামর্থ সম্পর্কে এতই অজ্ঞ রয়ে গেলে? দুই. তোমরা যদি পুনরায় সৃষ্টি করাকে অসম্ভব মনে করে থাক তবে অত্যান্ত বাজে ধারণা ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করছ। কারণ, তোমরা জান যে, প্রথমবার সৃষ্টি করা যত কঠিন দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করা তার থেকেও সহজ কাজ। আল্লাহ্ তা'আলাই তোমাদেরকে প্রথম সৃষ্টি করেছেন তাঁর জন্য পুনরায় সৃষ্টি করা কোন ব্যাপারই নয়। এ ধরনের আলোচনা অন্য সূরায়ও উল্লেখ করা হয়েছে। [যেমন, সূরা আর রূমঃ ২৭]

৩. আরবীতে ব্যবহৃত “ইনগাদ” শব্দের মানে হচ্ছে, উপর থেকে নিচের দিকে এবং নিচ থেকে উপরের দিকে মাথা নাড়া। এভাবে মাথা নেড়ে বিস্ময় প্রকাশ বা ঠাট্টা-বিদ্রূপ। করা হয়। [ইবন কাসীর]

৪. তারা দুটি কারণে একথাটি বলেছে, এক. তারা পুনরুত্থানকে অসম্ভব মনে করে এভাবে উপর-নীচ মাথা ঝাকাচ্ছিল। [ইবন কাসীর] দুই. তারা এ পুনরুত্থান কেন তাড়াতাড়ি হচ্ছেনা। সে প্রশ্ন তুলছে। কুরআনের অন্যান্য আয়াতেও তাদের এ ধরনের আচরণ উল্লেখ করা হয়েছে। [যেমন সূরা আল-মুলকঃ ২৫, আস-শূরাঃ ১৮]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৫১) অথবা এমন কোন সৃষ্টি যা তোমাদের ধারণায় খুবই কঠিন।[1] তারা বলবে, ‘কে আমাদেরকে পুনরুত্থিত করবে?’ বল, ‘তিনিই যিনি তোমাদেরকে প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন।’ অতঃপর তারা তোমার সামনে মাথা নাড়বে[2] ও বলবে, ‘ওটা কবে?’ বল, ‘সম্ভবতঃ তা নিকটেই।[3]

[1] অর্থাৎ, তোমাদের জানা মতে এর থেকেও অধিক শক্ত জিনিস হয়ে যাও এবং তারপর জিজ্ঞাসা কর যে, কে জীবিত করবে?

[2] أَنْغَضَ يُنْغِضُ এর অর্থ হল, মাথা নাড়া। অর্থাৎ, বিদ্রূপ স্বরূপ মাথা নেড়ে তারা বলবে, পুনর্জীবন কখন হবে?

[3] নিকটেই বলতে যা সংঘটিত হবেই। যেহেতু كُلُّ مَا هُوَ آتٍ فَهُوَ قَرِيْبٌ ঘটবে এমন প্রত্যেকটি জিনিসই নিকটে। عَسى (সম্ভবতঃ) শব্দটিও কুরআনে নিশ্চিত ও অবশ্যম্ভাবীর অর্থে ব্যবহার হয়েছে। অর্থাৎ, কিয়ামত সংঘটন সুনিশ্চিত ও অবশ্যম্ভাবী।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান