তোমার জীবনের কসম, নিশ্চয় তারা তাদেরকে নেশায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। আল-বায়ান
তোমার জীবনের শপথ হে নাবী! তারা উন্মত্ত নেশায় আত্মহারা হয়ে পড়েছিল। তাইসিরুল
তোমার জীবনের শপথ! ওরাতো আপন নেশায় মত্ত ছিল। মুজিবুর রহমান
By your life, [O Muhammad], indeed they were, in their intoxication, wandering blindly. Sahih International
৭২. আপনার জীবন(১), নিশ্চয় তারা তাদের নেশায় বিভ্রান্ত হয়ে ঘুরছিল।
(১) এ কালেমাটির দুটি অর্থ রয়েছে, কেউ কেউ এর অর্থ করেছেন এই যে, এখানে আল্লাহ তা'আলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনের শপথ করেছেন। এর মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। ইবনে আব্বাস বলেন, আল্লাহ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মত এমন কোন আত্মা সৃষ্টি ও পয়দা করেন নি। আমি আল্লাহকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া আর কারও নামে শপথ করতে শুনিনি। [ইবন কাসীর] এখানে এটা জানা আবশ্যক যে, আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর যে কোন সৃষ্টজীবের কসম বা শপথ করতে পারেন। কারণ এর মাধ্যমে তিনি সেটাকে সম্মানিত করেন। কিন্তু বান্দার জন্য একমাত্র আল্লাহ ও তাঁর নাম ও গুণাবলীর মাধ্যমেই শপথ করা যায়। নতুবা তা শির্কে পরিণত হয়।
তাছাড়া, কাতাদা রাহেমাহুল্লাহ এ আয়াতের অর্থ করেছেন যে, এখানে শপথ উদ্দেশ্য নয়। বরং এটা আরবী ব্যবহার বিধির একটি নিয়ম। এটা দ্বারা কসম বা শপথ উদ্দেশ্য না হয়ে কথায় জোর দেয়া উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। [তাবারী]
তাফসীরে জাকারিয়া(৭২) (হে নবী!) তোমার আয়ুর শপথ! অবশ্যই ওরা নিজেদের মত্ততায় বিমূঢ় ছিল। [1]
[1] মহান আল্লাহ নবী (সাঃ)-কে সম্বোধন করে নবীর জীবনের শপথ করছেন; যাতে তাঁর সম্মান ও ফযীলত সুস্পষ্ট। তবে অন্য কারো জন্য আল্লাহ ছাড়া আর কারো শপথ করা বৈধ নয়। মহান আল্লাহ হচ্ছেন একচ্ছত্র অধিপতি। তিনি যার ইচ্ছা শপথ করতে পারেন, তাকে বাধা দেওয়ার কে আছে? মহান আল্লাহ বলেন, যেরূপ নেশাগ্রস্ত ব্যক্তি নেশা করার ফলে জ্ঞানশূন্য হয়ে যায় এবং ভালোমন্দ কিছু বুঝে আসে না, অনুরূপ এরাও কুকর্মের নেশার ঘোরে ও ভ্রষ্টতায় এমনভাবে বিভোল ছিল যে, লূত (আঃ)-এর এমন যুক্তিগ্রাহ্য ও নৈতিকতাপূর্ণ কথা তাদের বুঝে এলো না।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান