নিশ্চয়ই তোমাদের নিজদের মধ্য থেকে তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন, তা তার জন্য কষ্টদায়ক যা তোমাদেরকে পীড়া দেয়। তিনি তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, পরম দয়ালু। আল-বায়ান
তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের নিকট একজন রসূল এসেছেন, তোমাদেরকে যা কিছু কষ্ট দেয় তা তার নিকট খুবই কষ্টদায়ক। সে তোমাদের কল্যাণকামী, মু’মিনদের প্রতি করুণাসিক্ত, বড়ই দয়ালু। তাইসিরুল
তোমাদের নিকট আগমন করেছে তোমাদেরই মধ্যকার এমন একজন রাসূল যার কাছে তোমাদের ক্ষতিকর বিষয় অতি কষ্টদায়ক মনে হয়, যে হচ্ছে তোমাদের খুবই হিতাকাংখী, মু’মিনদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল, করুণাপরায়ণ। মুজিবুর রহমান
There has certainly come to you a Messenger from among yourselves. Grievous to him is what you suffer; [he is] concerned over you and to the believers is kind and merciful. Sahih International
১২৮. অবশ্যই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য হতেই একজন রাসূল এসেছেন, তোমাদের যে দুঃখ-কষ্ট হয়ে থাকে তা তার জন্য বড়ই বেদনাদায়ক। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী, মুমিনদের প্রতি তিনি করুণাশীল ও অতি দয়ালু।(১)
(১) এ আয়াতে আল্লাহ তা'আলা মুমিনদের উপর তার ইহসানের কিছু বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেন, তিনি তাদের মধ্যে তাদেরই সমগোত্রীয় এবং তাদেরই সমভাষার লোককে প্রেরণ করেছেন। [ইবন কাসীর] একথাটিই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে জাফর ইবন আবি তালিব নাজাসীর দরবারে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'আল্লাহ আমাদের মধ্যে আমাদেরই একজনকে রাসূলরুপে পাঠিয়েছেন যাকে আমরা চিনি, তার বংশ ও গুণাগুণ সম্পর্কেও আমরা অবহিত। তার ভিতর ও বাহির সম্পর্কে, সত্যবাদিতা, আমানতদারী সম্পর্কেও আমরা জ্ঞাত। [মুসনাদে আহমাদ ১/২০১] আরও বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল সৃষ্টির উপর, বিশেষতঃ মুমিনদের উপর বড় দয়াবান ও স্নেহশীল।
তাফসীরে জাকারিয়া(১২৮) অবশ্যই তোমাদের নিকট আগমন করেছে তোমাদেরই মধ্যকার এমন একজন রসূল,[1] যার কাছে তোমাদের ক্ষতিকর বিষয় অতি কষ্টদায়ক মনে হয়,[2] যে তোমাদের খুবই হিতাকাঙ্ক্ষী,[3] বিশ্বাসীদের প্রতি বড়ই স্নেহশীল, করুণাপরায়ণ। [4]
[1] নবী (সাঃ)-কে প্রেরণ করে মুসলিমদের প্রতি যে বৃহৎ অনুগ্রহ করা হয়েছে, সূরার শেষে তারই আলোচনা করা হয়েছে। নবী (সাঃ)-এর প্রথম বৈশিষ্ট্য এই বর্ণনা করা হয়েছে যে, তিনি আমাদের মতই মানুষ। তিনি নূর বা অন্য কিছু নন; যেমন বিকৃত আকীদার শিকার কিছু মানুষ জনসাধারণকে এই শ্রেণীর গোলক-ধাঁধায় ফেলে থাকে।
[2] عنت এমন বস্তুকে বলা হয় যার দ্বারা মানুষ কষ্ট পায়, ইহলৌকিক দুঃখ-কষ্ট এবং পারলৌকিক শাস্তি উভয়ই এর অন্তর্ভুক্ত। নবী (সাঃ)-এর দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য এই যে, তাঁর পক্ষে আমাদের যাবতীয় দুঃখ-কষ্ট দুঃসহ। তাঁর দ্বীনও সহজ। নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘আমাকে সহজ ও সরল একনিষ্ঠ দ্বীন দিয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।’’ (মুসনাদে আহমাদ) অন্য এক হাদীসে বলেন, ‘‘নিশ্চয় এই দ্বীন সহজ।’’ (সহীহ বুখারী)
[3] নবী (সাঃ)-এর তৃতীয় বৈশিষ্ট্য এই যে, তিনি আমাদের হিদায়াত এবং আমাদের ইহ-পরকালের কল্যাণ কামনা করেন এবং আমাদের জাহান্নামী হওয়াকে অপছন্দ করেন। এই জন্যই নবী (সাঃ) বলেছেন, ‘‘আমি তোমাদেরকে তোমাদের কোমর ধরে টানি, কিন্তু তোমরা আমার হাত ছাড়িয়ে জবরদস্তির সাথে জাহান্নামে প্রবেশ কর।’’ (বুখারী)
[4] এটা নবী (সাঃ)-এর চতুর্থ বৈশিষ্ট্য। এই সমস্ত উত্তম আচরণ তাঁর সর্বোচ্চ চরিত্র এবং মহান গুণের বহিঃপ্রকাশ। নিশ্চয় তিনি মহান চরিত্রের অধিকারী। সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান