আর তাদের মধ্যে এমন লোক আছে, যারা নবীকে কষ্ট দেয় এবং বলে, ‘তিনি (সব বিষয়ে) শ্রবণকারী’। বল, তোমাদের জন্য যা কল্যাণের তা শ্রবণকারী। সে আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং মুমিনদের বিশ্বাস করে, আর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার তাদের জন্য সে রহমত এবং যারা আল্লাহর রাসূলকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব। আল-বায়ান
তাদের মাঝে এমন লোকও আছে যারা নাবীকে কষ্ট দেয় আর বলে তিনি কান কথা শুনেন। বল, ‘তোমাদের যাতে ভালো আছে সে তাই শোনে’। সে আল্লাহয় বিশ্বাস রাখে, আর মু’মিনদেরকেও বিশ্বাস করে, আর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদের জন্য রহমত। অপরপক্ষে আল্লাহর রসূলকে যারা কষ্ট দেয় তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ ‘আযাব। তাইসিরুল
আর তাদের মধ্যে এমন কতিপয় লোক আছে, যারা নাবীকে যাতনা দেয় এবং বলেঃ তিনি প্রত্যেক কথায় কর্ণপাত করে থাকেন। বলে দাওঃ এই নাবীতো কর্ণপাত করে সেই কথায় যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, সে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে, আর মু’মিনদের বিশ্বাস করে, আর সে ঐ সব লোকের প্রতি রাহমাত স্বরূপ যারা মু’মিন। আর যারা আল্লাহর রাসূলকে যাতনা দেয় তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। মুজিবুর রহমান
And among them are those who abuse the Prophet and say, "He is an ear." Say, "[It is] an ear of goodness for you that believes in Allah and believes the believers and [is] a mercy to those who believe among you." And those who abuse the Messenger of Allah - for them is a painful punishment. Sahih International
৬১. আর তাদের মধ্যে এমন লোকও আছে যারা নবীকে কষ্ট দেয় এবং বলে, সে তো কর্ণপাতকারী। বলুন, তার কান তোমাদের জন্য যা মঙ্গল তা-ই শুনে। তিনি আল্লাহর উপর ঈমান আনেন এবং মুমিনদেরকে বিশ্বাস করে; আর তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার তিনি তাদের জন্য রহমত। আর যারা আল্লাহ্র রাসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য আছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।(১)
(১) ইবনে আব্বাস বলেন, নবতাল ইবনুল হারেস রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে এসে বসত। তারপর সেখানে যা শুনত তা মুনাফিকদের কাছে পাচার করত। তখন আল্লাহ তা'আলা এ আয়াত নাযিল করেন। [আত-তাফসীরুস সহীহ] অর্থাৎ সে তাদের কাছে গিয়ে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করে বলেছিল যে, তিনি কান কথা বেশী শুনেন। তিনি সবার কথা শুনেন। [তাবারী] অথবা তারা বলতে চেয়েছিল যে, আমরা যা বলছি তা যদি মুহাম্মাদের কানে যায়, তারপরও কোন অসুবিধা নেই, কারণ তার কাছে গিয়ে ওজর পেশ করব। আর তিনি সব কথাই শুনে থাকেন। সুতরাং এ ব্যাপারে আমাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। এভাবে তারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে এমন খারাপ মন্তব্য করতে লাগল যে, তিনি সত্য-মিথ্যা ও ভাল-মন্দের মধ্যে পার্থক্য করতে সক্ষম নন। অথচ তিনি তাদের হিদায়াতের জন্যই প্রেরিত। এটা নিঃসন্দেহে রাসূলকে কষ্ট দেয়া। [সা’দী]
আল্লাহ্ তা'আলা তার জবাবে বললেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভাল কথা শুনেন। তার কথাগুলো ঈমানদারদের জন্য কল্যাণকর। তিনি আল্লাহর উপর ঈমান রাখেন এবং মুমিনদেরকে বিশ্বাস করেন। [তাবারী] শানকীতী বলেন, আয়াতে সে সমস্ত লোকদের জন্য কঠোর শাস্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অন্য আয়াতে তাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশপ্ত ও তাদের জন্য লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তির কথা বলা হয়েছে। সেখানে এসেছে, “নিশ্চয় যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতে লা'নত করেন এবং তিনি তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি। [সূরা আল-আহযাব: ৫৭]
তাফসীরে জাকারিয়া(৬১) তাদের মধ্যে এমন কতিপয় লোক আছে, যারা নবীকে কষ্ট দেয় এবং বলে, ‘সে প্রত্যেক কথায় কর্ণপাত করে থাকে।’ তুমি বলে দাও, ‘সে কর্ণপাত তো তোমাদের জন্য কল্যাণকর।[1] সে আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করে এবং মুমিনদের (কথাকে) বিশ্বাস করে। আর সে তোমাদের মধ্যে বিশ্বাসী লোকদের জন্য করুণাস্বরূপ। যারা আল্লাহর রসূলকে কষ্ট দেয় তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।’
[1] এখানে পুনরায় মুনাফিক্বদের কথা আলোচনা করা হচ্ছে। নবী (সাঃ)-এর বিরুদ্ধে এক অশালীন আচরণ প্রদর্শন করে বলতে লাগল যে, সে বড় কান-পাতলা! অর্থাৎ, সে প্রত্যেকের (প্রত্যেক) কথা শোনে (ও মেনে) নেয়। (সম্ভবতঃ নবী (সাঃ)-এর সহনশীলতা, দয়া, ক্ষমাশীলতা ও সৌজন্যমূলক ব্যবহার দেখে তাদের এ ব্যাপারে ধোকা হয়েছিল।) আল্লাহ তাআলা বললেন, না! আমার পয়গম্বর মন্দ ও অশান্তির কোন কথা শোনে না। যা শোনে তা তোমাদের জন্য মঙ্গলদায়ক এবং ভাল। (যেমন তোমরা মিথ্যা কসম খেয়ে ও মিথ্যা ওজর পেশ করে তার কাছে ক্ষমা চাইলে সে তোমাদের মুখের কথা শুনে ক্ষমা করে দেয়। আর এটা তোমাদের জন্য অবশ্যই উত্তম।)
তাফসীরে আহসানুল বায়ান