আর তাদের দান কবূল থেকে একমাত্র বাধা এই ছিল যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছে, আর তারা সালাতে আসে না, তবে অলস অবস্থায় এবং তারা দান করে না, তবে অপছন্দকারী অবস্থায়। আল-বায়ান
তাদের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য গ্রহণ নিষিদ্ধ করার কারণ এ ছাড়া আর কিছু নয় যে তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে অস্বীকার করে, সলাতে আসলে আসে শৈথিল্যভরে আর দান করলেও করে অনিচ্ছা নিয়ে। তাইসিরুল
আর তাদের দান খয়রাত গ্রহণ না হওয়ার কারণ এই যে, তারা আল্লাহর সাথে ও তাঁর রাসূলের সাথে কুফরী করেছে, আর তারা শৈথিল্যের সাথে ছাড়া সালাত আদায় করেনা, আর তারা দান করেনা। কিন্তু অনিচ্ছার সাথে। মুজিবুর রহমান
And what prevents their expenditures from being accepted from them but that they have disbelieved in Allah and in His Messenger and that they come not to prayer except while they are lazy and that they do not spend except while they are unwilling. Sahih International
৫৪. আর তাদের অর্থসাহায্য গ্রহণ করা নিষেধ করা হয়েছে এজন্যেই যে, তারা আল্লাহ ও তার রাসূলের সাথে কুফরী করেছে(১) এবং সালাতে উপস্থিত হয় কেবল শৈথিল্যের সাথে, আর অর্থসাহায্য করে কেবল অনিচ্ছাকৃতভাবে।(২)
(১) কারণ, ঈমান থাকা আমল কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত। কাফের যত আমলই করুক না কেন ঈমান না থাকার কারণে সেটা আখেরাতে তার কোন কাজে আসবে না। কাফের যদি কোন ভাল কাজ করে, যেমন আত্মীয়দের দান করে, অসহায়কে সহায়তা দেয়, কাউকে বিপদ থেকে উত্তরণে সহায়তা করে, সে এ সমস্ত ভাল কাজের দ্বারা আখেরাতে উপকৃত হতে পারবে না। তবে দুনিয়াতেই তাকে সেটার কারণে পর্যাপ্ত রিযক দেয়া হবে। হাদীসে এসেছে, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ইবন জুদ'আন, সে তো জাহেলিয়াতের যুগে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করত, মিসকীনদের খাওয়াত, এগুলো কি তার কোন উপকার দিবে? তিনি বললেনঃ না, তার কোন উপকার দিবে না। কেননা, সে কোন দিন বলেনি, হে রব! কিয়ামতের দিন আমার অপরাধ ক্ষমা করে দাও। [মুসলিম: ২১৪]
অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয় আল্লাহ কোন মুমিনের সামান্যতম সৎকাজও নষ্ট হতে দেন না। দুনিয়াতে সেটার বিনিময় দেন আর আখেরাতে তো তার জন্য প্রতিফল রয়েছেই। পক্ষান্তরে কাফের, তাকে তার প্রশংসনীয় কাজগুলোর বিনিময় দুনিয়াতে জীবিকা প্রদান করেন। অবশেষে যখন আখেরাতে পৌছবে, তখন তার এমন কোন কাজ থাকবে না যার প্রতিফল তিনি তাকে দেবেন। [মুসলিম: ২৮০৮]
(২) আয়াতে মুনাফিকদের দুটি আলামত বর্ণিত হয়েছে। সালাতে অলসতা ও দান খয়রাতে কুন্ঠাবোধ। এতে মুসলিমদের প্রতি হুশিয়ার প্রদান করা হয়েছে, যেন তারা মুনাফিকদের এই দুপ্রকার অভ্যাস থেকে দুরে থাকে। বরং তারা যেন সালাতে অত্যন্ত তৎপরতা ও আগ্রহের সাথে হাজির হয়, তাদের মধ্যে বিমৰ্ষভাব, অনীহা না থাকে। দানের ক্ষেত্রেও তারা যেন মন খুলে খুশী মনে একমাত্র আল্লাহর কাছে সওয়াবের আশা করে দান করে। কোনক্রমেই মুনাফিকদের মত না হয়। [সা’দী]
তাফসীরে জাকারিয়া(৫৪) আর তাদের দান-খয়রাত গ্রহণযোগ্য না হওয়ার কারণ এ ছাড়া আর কিছুই নয় যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে কুফরী করেছে, আর তারা নামাযে শৈথিল্যের সাথেই উপস্থিত হয় এবং তারা অনিচ্ছাকৃতভাবেই দান করে থাকে। [1]
[1] এখানে তাদের স্বাদক্বাহ কবুল না হওয়ার তিনটি কারণ দর্শানো হয়েছে। প্রথম হল, তাদের কুফর ও অবাধ্যাচরণ। দ্বিতীয় হল, শৈথিল্যের সাথে নামায আদায় করা। যেহেতু, না তারা নামাযের সওয়াবের আশা রাখে, আর না-ই তা ত্যাগ করা দরুন শাস্তিকে ভয় করে। কেননা, আশা ও ভয় হল ঈমানের নিদর্শন, যা হতে তারা বঞ্চিত। আর তৃতীয় হল, তারা সন্তুষ্টচিত্তে খুশীর সাথে দান-খয়রাত করে না। আর যে কাজে অন্তর সন্তুষ্ট থাকে না, সে কাজ কবুল হয় কি করে? আসল কথা হল এই তিনটি কারণ এমন যে, তার মধ্যে একটি কারণই আমল কবুল না হওয়ার জন্য যথেষ্ট। তাহলে যে আমলে এই তিনটি কারণই একত্রিত হবে, সে আমল যে আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য নয়, তাতে কি কোন সন্দেহ থাকতে পারে?
তাফসীরে আহসানুল বায়ান