তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের নিকট এজন্য এসেছ যে, আমরা এক আল্লাহর ইবাদাত করি এবং ত্যাগ করি আমাদের পিতৃপুরুষগণ যার ইবাদাত করত? সুতরাং তুমি আমাদেরকে যে ওয়াদা দিচ্ছ, তা আমাদের কাছে নিয়ে এসো, যদি তুমি সত্যবাদী হও’। আল-বায়ান
তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের কাছে এজন্য এসেছ যাতে আমরা এক আল্লাহর ‘ইবাদাত করি আর আমাদের পিতৃপুরুষগণ যার ‘ইবাদাত করত তা ত্যাগ করি? কাজেই তুমি যদি সত্যবাদী হও তাহলে আমাদেরকে যে জিনিসের ওয়াদা করছ (ভয় দেখাচ্ছ) তা নিয়ে এসো।’ তাইসিরুল
তারা বললঃ তুমি কি আমাদের নিকট শুধু এই উদ্দেশে এসেছো যে, আমরা যেন একমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করি এবং আমাদের পূর্ব-পুরুষরা যাদের পূজা করত তাদেরকে বর্জন করি? তুমি তোমার কথা ও দাবীতে সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যে শাস্তির ভয় দেখাচ্ছ তা আনয়ন কর। মুজিবুর রহমান
They said, "Have you come to us that we should worship Allah alone and leave what our fathers have worshipped? Then bring us what you promise us, if you should be of the truthful." Sahih International
৭০. তারা বলল, তুমি কি আমাদের কাছে এ উদ্দেশ্যে এসেছ যে, আমরা যেন এক আল্লাহর ইবাদাত করি এবং আমাদের পিতৃপুরুষরা যার ইবাদত করত তা ছেড়ে দেই?(১) কাজেই তুমি সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যা ভয় দেখাচ্ছে(২) তা নিয়ে এস।
(১) এখানে একথাটি উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, এ জাতিটিও আল্লাহকে অস্বীকার করতো না, আল্লাহ সম্পর্কে অজ্ঞ ছিল না। অথবা তাঁর ইবাদাত করতে অস্বীকার করছিল না। আসলে তারা হুদ আলাইহিস সালামের একমাত্র আল্লাহর ইবাদাত করতে হবে এবং তার ইবাদাতের সাথে আর কারোর ইবাদাত যুক্ত করা যাবে না- এ বক্তব্যটি মেনে নিতে অস্বীকার করছিল।
(২) মূলে تَعِدُنَا শব্দ এসেছে। যার সাধারণ অর্থ, তুমি যার ওয়াদা আমাদের কাছে করছ। কিন্তু এখানে খারাপ কোন পরিণতির ভয় প্রদর্শন উদ্দেশ্য। [মুয়াসসার] আলেমগণ বলেন, এখানে وعد শব্দটি وعيد এর অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। [আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর] উল্লেখ্য যে, পবিত্র কুরআনের সূরা আল-আ’রাফের ৭৭, সূরা হুদ এর ৩২ এবং সূরা আল-আহকাফের ২২ নং আয়াতেও এ শব্দটি একই অর্থে এসেছে।
তাফসীরে জাকারিয়া(৭০) তারা বলল, ‘তুমি কি আমাদের নিকট এ উদ্দেশ্যে এসেছে যে, আমরা যেন শুধু আল্লাহর উপাসনা করি এবং আমাদের পূর্বপুরুষগণ যার উপাসনা করত তা বর্জন করি?[1] সুতরাং তুমি সত্যবাদী হলে আমাদেরকে যে (আযাবের) ভয় দেখাচ্ছ তা আনয়ন কর।’ [2]
[1] পূর্বপুরুষদের অন্ধ অনুকরণই হচ্ছে প্রত্যেক যুগে ভ্রষ্টতার মূল কারণ। আ’দ সম্প্রদায়ও এই দলীলের ভিত্তিতে শিরক ত্যাগ করে তাওহীদ তথা একত্বতার রাস্তা অবলম্বন করতে প্রস্তুত হয়নি। দুর্ভাগ্যবশতঃ (দাদুপন্থী) মুসলিমদের মাঝেও এই বড়দের অন্ধ অনুকরণের রোগ ব্যাপক।
[2] যেভাবে মক্কার কুরাইশরাও রসূল (সাঃ)-এর একত্ববাদের দাওয়াতের উত্তরে বলেছিল, {اَللّٰهُمَّ إِنْ كَانَ هَذَا هُوَ الْحَقَّ مِنْ عِنْدِكَ فَأَمْطِرْ عَلَيْنَا حِجَارَةً مِنَ السَّمَاءِ أَوِ ائْتِنَا بِعَذَابٍ أَلِيمٍ} ‘‘হে আল্লাহ! এটা যদি তোমার পক্ষ হতে (আগত) সত্য দ্বীন হয়ে থাকে, তবে আমাদের উপর আকাশ থেকে প্রস্তর বর্ষণ কর কিংবা আমাদের উপর বেদনাদায়ক আযাব অবতীর্ণ কর।’’ (সূরা আনফাল ৩২) অর্থাৎ, শিরক করতে করতে মুশরিকদের বিবেক-বুদ্ধিও লোপ পেয়ে যায়। অথচ জ্ঞান-বুদ্ধির দাবী এটাই ছিল যে, তারা বলত, ‘হে আল্লাহ! যদি এটা সত্য হয় এবং তোমার পক্ষ থেকে আগত হয়, তবে তুমি আমাদেরকে তা গ্রহণ করার তাওফীক দান কর।’ যাই হোক, আ’দ সম্প্রদায় তাদের নবী হূদ (আঃ)-কে বলে দিল, ‘তুমি যদি সত্য হও, তবে তোমার আল্লাহকে বল, যে আযাবের তিনি ভয় দেখাচ্ছেন, সে আযাব যেন পাঠিয়ে দেন!
তাফসীরে আহসানুল বায়ান