সূরাঃ আল-আন'আম | Al-An'am | سورة الأنعام - আয়াত নং - ১৬০ - মাক্কী

৬ : ১৬০ مَنۡ جَآءَ بِالۡحَسَنَۃِ فَلَهٗ عَشۡرُ اَمۡثَالِهَا ۚ وَ مَنۡ جَآءَ بِالسَّیِّئَۃِ فَلَا یُجۡزٰۤی اِلَّا مِثۡلَهَا وَ هُمۡ لَا یُظۡلَمُوۡنَ ﴿۱۶۰﴾

যে সৎকাজ নিয়ে এসেছে, তার জন্য হবে তার দশ গুণ। আর যে অসৎকাজ নিয়ে এসেছে, তাকে অনুরূপই প্রতিদান দেয়া হবে এবং তাদেরকে যুলম করা হবে না। আল-বায়ান

যে ব্যক্তি সৎকর্ম করবে তার জন্য আছে দশ গুণ পুরস্কার, আর যে ব্যক্তি অসৎকাজ করবে তাকে শুধু কৃতকর্মের তুল্য প্রতিফল দেয়া হবে, তাদের উপর অত্যাচার করা হবে না। তাইসিরুল

কেহ কোন ভাল কাজ করলে সে তার দশ গুণ প্রতিদান পাবে, আর কেহ পাপ ও অসৎ কাজ করলে তাকে শুধু ততটুকুই প্রতিফল দেয়া হবে যতটুকু সে করেছে, আর তারা অত্যাচারিত হবেনা। মুজিবুর রহমান

Whoever comes [on the Day of Judgement] with a good deed will have ten times the like thereof [to his credit], and whoever comes with an evil deed will not be recompensed except the like thereof; and they will not be wronged. Sahih International

১৬০. কেউ কোন সৎকাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে। আর কেউ কোন অসৎ কাজ করলে তাকে শুধু তার অনুরূপ প্রতিফলই দেয়া হবে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।(১)

(১) এ আয়াতে আখেরাতের প্রতিদান ও শাস্তির একটি সহৃদয় বিধি বর্ণিত হয়েছে যে, যে ব্যক্তি একটি সৎকাজ করবে, তাকে দশগুণ প্রতিদান দেয়া হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি একটি গোনাহ করবে, তাকে শুধু একটি গোনাহর সমান বদলা দেয়া হবে। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের প্রতিপালক অত্যন্ত দয়ালু। যে ব্যক্তি কোন সৎকাজের শুধু ইচ্ছা করে, তার জন্য একটি নেকী লেখা হয়- ইচ্ছাকে কার্যে পরিণত করুক বা না করুক। অতঃপর যখন সে সৎকাজটি সম্পাদন করে, তখন তার আমলনামায় দশটি নেকী লেখা হয়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি কোন পাপ কাজের ইচ্ছা করে, অতঃপর তা কার্যে পরিণত না করে, তার আমলনামায়ও একটি নেকী লেখা হয়। অতঃপর যদি সে ইচ্ছাকে কার্যে পরিণত করে, তবে একটি গোনাহ লেখা হয়। কিংবা একেও মিটিয়ে দেয়া হয়। এহেন দয়া ও অনুকম্পা সত্বেও আল্লাহর দরবারে ঐ ব্যক্তিই ধ্বংস হতে পারে, যে ধ্বংস হতেই দৃঢসংকল্প। [বুখারী: ৬৪৯১; মুসলিম: ১৩১]

অপর হাদীসে এসেছে, যে ব্যক্তি একটি সৎকাজ করে, সে দশটি সৎকাজের সওয়াব পায় বরং আরো বেশী পায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি একটি গোনাহ করে সে তার শাস্তি এক গোনাহর সমপরিমাণ পায় কিংবা তাও আমি মাফ করে দেব। যে ব্যক্তি পৃথিবী ভর্তি গোনাহ করার পর আমার কাছে এসে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আমি তার সাথে ততটুকুই ক্ষমার ব্যবহার করব। যে ব্যক্তি আমার দিকে অর্ধহাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই এবং যে ব্যক্তি আমার দিকে একহাত অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে বা (অর্থাৎ দুই বাহু প্রসারিত) পরিমাণ অগ্রসর হই। যে ব্যক্তি আমার দিকে লাফিয়ে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই। [মুসনাদে আহমাদ: ৫/১৫৩] এসব হাদীস থেকে জানা যায়, আয়াতে যে সৎকাজের প্রতিদান দশগুণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে, তা সর্বনিম পরিমাণ। আল্লাহ্ তাআলা স্বীয় কৃপায় তা আরো বেশী দিতে পারেন এবং দিবেন। অন্যান্য হাদীস দ্বারা সত্তর গুণ বা সাতশ গুণ পর্যন্ত প্রমাণিত রয়েছে।

তাফসীরে জাকারিয়া

(১৬০) কেউ সৎকাজ করলে, সে তার দশগুণ (প্রতিদান) পাবে[1] এবং কেউ অসৎকাজ করলে, তাকে শুধু তার সমপরিমাণ প্রতিফলই দেওয়া হবে।[2] আর তারা অত্যাচারিত হবে না।

[1] এটা হল আল্লাহ তাআলার সেই দয়া ও অনুগ্রহের বর্ণনা, যা ঈমানদারদের উপর তিনি করবেন। আর তা হল, একটি নেকীর বিনিময় তিনি দশটি নেকী দ্বারা দেবেন। আর এটা হল কমসে কম প্রতিদান। তাছাড়া কুরআন ও হাদীস থেকে প্রমাণিত যে, কোন কোন নেকীর প্রতিদান কয়েক শ’ এমন কি কয়েক হাজার গুণ পর্যন্ত দেওয়া হবে।

[2] অর্থাৎ, যে পাপমূহের শাস্তি নির্ধারিত নয় এবং যেগুলো করার পর পাপী তা থেকে তওবাও করেনি অথবা তার পুণ্যের হার পাপের তুলনায় কম হবে কিংবা আল্লাহ তাঁর বিশেষ অনুগ্রহে তা ক্ষমা করবেন না, (কেননা, এই সমস্ত অবস্থায় প্রতিদানের নীতি প্রয়োগ করা হবে না) তখন আল্লাহ এই পাপের দরুন শাস্তি দেবেন এবং তা পাপের সমপরিমাণই দেবেন।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান