১০ সূরাঃ ইউনুস | Yunus | سورة يونس - আয়াত নং - ৬২ - মাক্কী

১০ : ৬২ اَلَاۤ اِنَّ اَوۡلِیَآءَ اللّٰهِ لَا خَوۡفٌ عَلَیۡهِمۡ وَ لَا هُمۡ یَحۡزَنُوۡنَ ﴿ۚۖ۶۲﴾

শুনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই, আর তারা পেরেশানও হবে না। আল-বায়ান

জেনে রেখ! আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই আর তারা দুঃখিতও হবে না। তাইসিরুল

মনে রেখ, আল্লাহর বন্ধুদের না কোন আশংকা আছে, আর না তারা বিষন্ন হবে। মুজিবুর রহমান

Unquestionably, [for] the allies of Allah there will be no fear concerning them, nor will they grieve Sahih International

৬২. জেনে রাখা আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।(১)

(১) আলোচ্য আয়াতসমূহে আল্লাহর অলীদের বিশেষ বৈশিষ্ট্য, তাদের প্রশংসা ও পরিচয় বর্ণনার সাথে সাথে তাদের প্রতি আখেরাতের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে- যারা আল্লাহর অলী তাদের না থাকবে কোন অপছন্দনীয় বিষয়ের সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা, আর না থাকবে কোন উদ্দেশ্যে ব্যর্থতার গ্লানি। এদের জন্য পার্থিব জীবনেও সংবাদ রয়েছে এবং আখেরাতেও। দুনিয়াতেও তারা দুঃখ-ভয় থেকে মুক্ত। আর আখেরাতে তাদের মনে কোন চিন্তা-ভাবনা না থাকার অর্থ জান্নাতে যাওয়া। এতে সমস্ত জান্নাতবাসীই অন্তর্ভুক্ত।

আয়াতে উল্লেখিত ‘আওলিয়া’ শব্দটি অলী শব্দের বহুবচন। আরবী ভাষায় অলী অর্থ নিকটবর্তীও হয় এবং দোস্ত-বন্ধুও হয়। শরীআতের পরিভাষায় অলী বলতে বুঝায়ঃ যার মধ্যে দুটি গুণ আছেঃ ঈমান এবং তাকওয়া। মহান আল্লাহ বলেন, “জেনে রাখ! আল্লাহর অলী তথা বন্ধুদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবেনা, যারা ঈমান আনে এবং তাকওয়া অবলম্বন করে।” [সূরা ইউনুসঃ ৬২–৬৩] যদি আল্লাহর অলী বলতে ঈমানদার ও মুত্তাকীদের বুঝায় তাহলে বান্দার ঈমান ও তাকওয়া অনুসারে আল্লাহর কাছে তার বেলায়াত তথা বন্ধুত্ব নির্ধারিত হবে। সুতরাং যার ঈমান ও তাকওয়া সবচেয়ে বেশী পূর্ণ, তার বেলায়াত তথা আল্লাহর বন্ধুত্ব সবচেয়ে বেশী হবে। ফলে মানুষের মধ্যে তাদের ঈমান ও তাকওয়ার ভিত্তিতে আল্লাহর বেলায়াতের মধ্যেও তারতম্য হবে।

আল্লাহর অলীদের সম্পর্কে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ঃ

১. আল্লাহর নবীরা তার সর্বশ্রেষ্ঠ অলী হিসাবে স্বীকৃত। নবীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেন তার রাসূলগণ। রাসূলদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেনঃ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাসূলগণ তথা নূহ, ইবরাহীম, মূসা, ঈসা এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর সমস্ত দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রাসূলদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলেনঃ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

২. এখানে এটা জানা আবশ্যক যে, আল্লাহর অলীগণ দুশ্রেণীতে বিভক্তঃ প্রথম শ্রেণীঃ যারা অগ্রবর্তী ও নৈকট্যপ্রাপ্ত। দ্বিতীয় শ্রেণীঃ যারা ডান ও মধ্যম পন্থী। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে তাদের উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেনঃ “যখন যা ঘটা অবশ্যম্ভাবী (কিয়ামত) তা ঘটবে, তখন তার সংঘটনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করার কেউ থাকবে না। তা কাউকে নীচ করবে, কাউকে সমুন্নত করবে। যখন প্রবল কম্পনে প্রকম্পিত হবে যমীন। পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে। ফলে তা উৎক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পর্যবসিত হবে। এবং তোমরা বিভক্ত হয়ে পড়বে তিন শ্রেনীতে- ডান দিকের দল; ডান দিকের দলের কি মর্যাদা! আর বাম দিকের দল; বাম দিকের দলের কি অসম্মান। আর অগ্রবর্তীগণই তো অগ্রবর্তী। তারাই নৈকট্যপ্রাপ্ত- নেয়ামত পূর্ণ জান্নাতে। [সূরা আল-ওয়াকি'আহঃ ১–১২]

এখানে তিন শ্রেণীর লোকের উল্লেখ করা হয়েছেঃ যাদের একদল জাহান্নামের, তাদেরকে বামদিকের দল বলা হয়েছে। আর বাকী দু’দল জান্নাতের, তারা হলেনঃ ডানদিকের দল এবং অগ্রবর্তী ও নৈকট্যপ্রাপ্তগণ। তাদেরকে আবার এ সূরা আলওয়াকি'আরই শেষে আল্লাহ তা'আলা উল্লেখ করে বলেছেন, “তারপর যদি সে নৈকট্যপ্রাপ্তদের একজন হয় তবে তার জন্য রয়েছে আরাম, উত্তম জীবনোপকরণ ও নেয়ামত পূর্ণ জান্নাত। আর যদি সে ডান দিকের একজন হয় তবে তোমার জন্য সালাম ও শান্তি; কারণ সে ডানপন্থীদের মধ্যে”। [সূরা আল-ওয়াকি'আহঃ ৮৮–৯১]

অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও অলীদের সাথে সংশ্লিষ্ট বিখ্যাত হাদীসে বলেনঃ “মহান আল্লাহ বলেনঃ যে ব্যক্তি আমার কোন অলীর সাথে শক্রতা পোষণ করে আমি তার সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দিলাম। আমার বান্দার উপর যা আমি ফরয করেছি তা ছাড়া আমার কাছে অন্য কোন প্রিয় বস্তু নেই যার মাধ্যমে সে আমার নৈকট্য লাভ করতে পারে। আমার বান্দা আমার কাছে নফল কাজসমূহ দ্বারা নৈকট্য অর্জন করতেই থাকে, শেষ পর্যন্ত আমি তাকে ভালবাসি। তারপর যখন আমি তাকে ভালবাসি তখন আমি তার শ্রবণশক্তি হয়ে যাই যার দ্বারা সে শুনে, তার দৃষ্টি শক্তি হয়ে যাই যার দ্বারা সে দেখে, তার হাত হয়ে যাই যার দ্বারা সে ধারণ করে আর তার পা হয়ে যাই যার দ্বারা সে চলে। তখন আমার কাছে কিছু চাইলে আমি তাকে তা অবশ্যই দেব, আমার কাছে আশ্রয় চাইলে আমি তাকে অবশ্যই উদ্ধার করব।” [বুখারী: ৬৫০২]

এর মর্ম হলো এই যে, তার কোন গতি-স্থিতি ও অন্য যে কোন কাজ আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে হয় না। বস্তুতঃ এই বিশেষ ওলীত্ব বা নৈকট্যের স্তর অগণিত ও অশেষ। এর সর্বোচ্চ স্তর নবী-রাসূলগণের প্রাপ্য। কারণ, প্রত্যেক নবীরই ওলী হওয়া অপরিহার্য। আর এর সর্বোচ্চ স্তর হলো সাইয়্যেদুল আম্বীয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর। এর পর প্রত্যেক ঈমানদার তার ঈমানের শক্তি ও স্তরের বৃদ্ধি-ঘাটতি অনুসারে বেলায়েতের অধিকারী হবে। সুতরাং নেককার লোকেরা হলোঃ ডান দিকের দল, যারা আল্লাহর কাছে ফরয আদায়ের মাধ্যমে নৈকট্য লাভ করে। তারা আল্লাহ তাদের উপর যা ফরয করেছেন তা আদায় করে, আর যা হারাম করেছেন তা পরিত্যাগ করে। তারা নফল কাজে রত হয় না। কিন্তু যারা অগ্রবর্তী নৈকট্যপ্রাপ্ত দল তারা আল্লাহর কাছে ফরয আদায়ের পর নফলের মাধ্যমে নৈকট্য লাভে রত হয়।

৩. এখানে আরও একটি বিষয় জানা আবশ্যক যে, আল্লাহর অলীগণ অন্যান্য মানুষদের থেকে প্রকাশ্যে কোন পোষাক বা বেশ-ভূষা দ্বারা বিশেষভাবে পরিচিত হন না। বরং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মাতের মধ্যে প্রকাশ্য বিদ'আতকারী ও অন্যায়কারী ছাড়া সর্বস্তরে আল্লাহর অলীগণের অস্তিত্ব বিদ্যমান। তাদের অস্তিত্ব রয়েছে কুরআনের ধারক-বাহকদের মাঝে, জ্ঞানী-আলেমদের মাঝে, জিহাদকারী ও তরবারী-ধারকদের মাঝে, ব্যবসায়ী, কারিগর ও কৃষকের মাঝে।

৪. আল্লাহর অলীগণের মধ্যে নবী-রাসূলগণ ছাড়া আর কেউ নিষ্পাপ নন, তাছাড়া কোন অলীই গায়েব জানেনা, সৃষ্টি বা রিযক প্রদানে তাদের কোন প্রভাবও নেই। তারা নিজেদেরকে সম্মান করতে অথবা কোন ধন-সম্পদ তাদের উদ্দেশ্যে ব্যয় করতে মানুষদেরকে আহবান করেন না। যদি কেউ এমন কিছু করে তাহলে সে আল্লাহর অলী হতে পারে না, বরং মিথ্যাবাদী, অপবাদ আরোপকারী, শয়তানের আলী হিসাবে বিবেচিত হবে।

৫. আল্লাহর অলী হওয়ার জন্য একটিই উপায় রয়েছে, আর তা হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রঙে রঞ্জিত হওয়া, তার সুন্নাতের হুবহু অনুসরণ করা। যারা এ ধরনের অনুসরণ করতে পেরেছেন তাদের মর্যাদাই আলাদা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহর এমন কিছু বান্দা রয়েছে যাদেরকে শহীদরাও ঈর্ষা করবে। বলা হলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? হয়ত তাদের আমরা ভালবাসবো। রাসূল বললেনঃ “তারা কোন সম্পদ বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ব্যতীতই একে অপরকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবেসেছে। নূরের মিম্বরের উপর তাদের চেহারা হবে নূরের। মানুষ যখন ভীত হয় তখন তারা ভীত হয় না। মানুষ যখন পেরেশান ও অস্থির হয় তখন তারা অস্থির হয় না।” তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন। [ইবনে হিব্বানঃ ৫৭৩, আবু দাউদঃ ৩৫২৭]

অন্য বর্ণনায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “বিভিন্ন দিক থেকে মানুষ আসবে এবং বিভিন্ন গোত্র থেকে মানুষ এসে জড়ো হবে, যাদের মাঝে কোন আতীয়তার সম্পর্ক থাকবে না। তারা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একে অপরকে ভালবেসেছে, আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে যুদ্ধে স্থাপন করবেন, তারপর তাদেরকে সেগুলোতে বসাবেন। তাদের বৈশিষ্ট হলো মানুষ যখন ভীত হয় তখন তারা ভীত হয় না, মানুষ যখন পেরেশান হয় তখন তারা পেরেশান হয় না। তারা আল্লাহর অলী, তাদের কোন ভয় ও পেরেশানী কিছুই থাকবে না। [মুসনাদে আহমাদ ৫/৩৪৩]। [উসুলুল ঈমান ফী দাওয়িল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ, বাদশাহ ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত, পৃ. ২৮২–২৮৬ (বাংলা সংস্করণ)]

তাফসীরে জাকারিয়া

(৬২) মনে রেখো যে, আল্লাহর বন্ধুদের[1] না কোন আশংকা আছে আর না তারা বিষণ´ হবে। [2]

[1] অবাধ্য ব্যক্তিদের কথা আলোচনার পর আল্লাহ তাআলা তাঁর অনুগত ব্যক্তিদের কথা আলোচনা করছেন। তাঁরা হলেন আল্লাহর আওলিয়া। ‘আওলিয়া’ শব্দটি ওলীর বহুবচন। যার আভিধানিক অর্থ হল, নিকটবর্তী। এর পরিপ্রেক্ষিতে আওলিয়াউল্লাহর অর্থ হবে, ঐ সকল নেক ও খাঁটি মু’মিন ব্যক্তিগণ, যাঁরা আল্লাহর আনুগত্য করে এবং তাঁর অবাধ্যতা থেকে দূরে থেকে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই জন্য পরের আয়াতে আল্লাহ তাআলা নিজেই এই শব্দ দ্বারা তাঁদের প্রশংসা করেছেন, ‘‘তারা হচ্ছে সেই লোক যারা বিশ্বাস করেছে (ঈমান এনেছে) এবং সাবধানতা (পরহেযগারি) অবলম্বন করে থাকে।’’ আর ঈমান ও পরহেযগারি বা তাকওয়াই হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্য লাভের মূল ভিত্তি এবং একমাত্র উপায়। এই হিসাবে সকল মুত্তাকী মু’মিনই হচ্ছে আল্লাহর ওলী (বন্ধু)। পক্ষান্তরে কিছু মানুষের ধারণা যে, ওলী হতে হলে কারামত দেখানো জরুরী। অতঃপর তারা মনগড়া ওলীদের জন্য সত্য-মিথ্যা কিছু কারামতের কথা প্রচার করে থাকে। এ ধারণা ও কর্ম নেহাতই ভ্রান্ত। ওলী হওয়ার সাথে কারামতের না কোন সম্পর্ক আছে, আর না কারামত ওলী হওয়ার জন্য শর্ত। এটা স্বতন্ত্র ব্যাপার যে, যদি কোন ওলী দ্বারা কোন কারামত প্রকাশ হয়ে যায়, তবে তা আল্লাহর ইচ্ছা, তাতে সেই বুযুর্গের ইচ্ছা প্রবিষ্ট থাকে না। কিন্তু কোন মুত্তাকী মু’মিন এবং সুন্নতের অনুসারী দ্বারা কোন কারামত প্রকাশ হোক বা না হোক, তাঁর বিলায়াতে কোন সন্দেহ থাকতে পারে না।

[2] আশংকা বা ভীতির সম্পর্ক ভবিষ্যতের সাথে এবং বিষণ্ণতা ও চিন্তার সম্পর্ক অতীতের সাথে। উদ্দেশ্য এই যে, যেহেতু তাঁদের পার্থিব জীবন আল্লাহ-ভীতির সাথে অতিবাহিত হয়ে থাকে, ফলে কিয়ামতের ভয়াবহতায় তাঁদের সে রকম ভয় থাকবে না, যেমন অন্যান্যদের থাকবে। বরং তাঁরা নিজ ঈমান ও তাকওয়ার কারণে আল্লাহর রহমত ও বিশেষ দয়ার আশাধারী এবং তাঁর প্রতি সুধারণা পোষণকারী হবেন। অনুরূপ পৃথিবীতে তাঁরা যা কিছু ছেড়ে যাবেন অথবা পৃথিবীর সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য লাভে বঞ্চিত থাকার ফলে তাঁদের কোন দুশ্চিন্তা ও আফসোস হবে না। এর দ্বিতীয় এক অর্থ এই যে, পৃথিবীতে তাঁদের আকাঙ্ক্ষিত যে সব বস্তু তাঁরা অর্জন করতে পারেননি, তার জন্য তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করবেন না, কারণ তাঁরা জানেন যে, এসব কিছু আল্লাহর ফায়সালা ও ভাগ্যের ব্যাপার। তাতে তাঁদের অন্তর রুষ্ট হয় না; বরং তাঁদের অন্তর আল্লাহর ফায়সালার উপর খুশি ও সন্তুষ্ট থাকে।

তাফসীরে আহসানুল বায়ান