১০৪ সূরাঃ আল-হুমাযা | Al-Humaza | سورة الهمزة - আয়াত নং - ১ - মাক্কী
দুর্ভোগ প্রত্যেকের যে সামনে নিন্দাকারী ও পেছনে গীবতকারী। আল-বায়ান
দুর্ভোগ এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য যে (সামনাসামনি) মানুষের নিন্দা করে আর (অসাক্ষাতে) দুর্নাম করে, তাইসিরুল
দুর্ভোগ প্রত্যেকের, যে পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে, মুজিবুর রহমান
Woe to every scorner and mocker Sahih International
১. দুর্ভোগ প্রত্যেকের, যে পিছনে ও সামনে লোকের নিন্দা করে(১),
(১) আয়াতে ‘হুমাযাহ’ ও ‘লুমাযাহ’ দু'টি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অধিকাংশ তাফসীরকারের মতে همز এর অর্থ গীবত অর্থাৎ পশ্চাতে পরনিন্দা করা এবং لمز এর অর্থ সামনাসামনি দোষারোপ করা ও মন্দ বলা। এ দুটি কাজই জঘন্য গোনাহ। [আদওয়াউল বায়ান]। তাফসীরকারগণ এ শব্দ দুটির আরও অর্থ বর্ণনা করেছেন। তাদের বর্ণিত তাফসীর অনুসারে উভয় শব্দ মিলে এখানে যে অর্থ দাঁড়ায় তা হচ্ছে: সে কাউকে লাঞ্ছিত ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। কারোর প্রতি তাচ্ছিল্য ভরে অংগুলি নির্দেশ করে। চোখের ইশারায় কাউকে ব্যঙ্গ করে কারো বংশের নিন্দা করে। কারো ব্যক্তি সত্তার বিরূপ সমালোচনা করে। কারো মুখের ওপর তার বিরুদ্ধে মন্তব্য করে। কারো পেছনে তার দোষ বলে বেড়ায়। কোথাও এর কথা ওর কানে লাগিয়ে বন্ধুদেরকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। কোথাও ভাইদের পারস্পরিক ঐক্যে ফাটল ধরায়। কোথাও লোকদের নাম বিকৃত করে খারাপ নামে অভিহিত করে। কোথাও কথার খোঁচায় কাউকে আহত করে এবং কাউকে দোষারোপ করে। এসব তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অথচ এসবই মারাত্মক গোনাহ।
পশ্চাতে পরনিন্দার শাস্তির কথা কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। এর কারণ এরূপ হতে পারে যে, এ গোনাহে মশগুল হওয়ার পথে সামনে কোন বাধা থাকে না। যে এতে মশগুল হয়, সে কেবল এগিয়েই চলে। ফলে গোনাহ বৃহৎ থেকে বৃহত্তর ও অধিকতর হতে থাকে। সম্মুখের নিন্দা এরূপ নয়। এতে প্রতিপক্ষও বাধা দিতে প্ৰস্তুত থাকে। ফলে গোনাহ দীর্ঘ হয় না। এছাড়া কারও পশ্চাতে নিন্দা করা এ কারণেও বড় অন্যায় যে, সং ব্যক্তি জানতেও পারে না যে, তার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ উত্থাপন করা হচ্ছে। ফলে সে সাফাই পেশ করার সুযোগ পায় না। আবার একদিক দিয়ে لمز তথা সম্মুখের নিন্দা গুরুতর। যার মুখোমুখি নিন্দা করা হয়, তাকে অপমানিত ও লাঞ্ছিত করা হয়। এর কষ্টও বেশি, ফলে শাস্তিও গুরুতর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে নিকৃষ্টতম তারা, যারা পরোক্ষ নিন্দা করে, বন্ধুদের মধ্যে বিচ্ছেদ সৃষ্টি করে এবং নিরপরাধ লোকদের দোষ খুঁজে ফিরে।” [মুসনাদে আহমাদ: ৪/২২৭] [দেখুন: কুরতুবী]
তাফসীরে জাকারিয়া১। দুর্ভোগ প্রত্যেকের, যে পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা করে। [1]
[1] কিছু উলামা هُمَزَة ও لُمَزَة এর একই অর্থ বলেছেন। আর কিছু সংখ্যক উলামা উভয়ের মাঝে কিছুটা পার্থক্য করে বলেন, هُمَزَة বলা হয় সেই ব্যক্তিকে, যে সামনা-সামনি নিন্দা গায়। আর لُمَزَة বলা হয় সেই ব্যক্তিকে, যে পশ্চাতে গীবত (পরর্চ্চা) করে। আবার কেউ এর বিপরীত অর্থ করেন। অনেকের মতে هَمز চোখ ও হাতের ইশারায় নিন্দা প্রকাশ করা এবং لَمز জিহ্বা দ্বারা পরনিন্দা করাকে বলা হয়।
তাফসীরে আহসানুল বায়ান